নাটক রিভিউ-প্রশংসায় পঞ্চমুখ|
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি@monira999। আমি একজন বাংলাদেশী। আজকে আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিতে একটি নাটক রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। নাটক দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে। সময় পেলে নাটক দেখি। বিশেষ করে বাংলাদেশের নাটক গুলো দেখতে আমার বেশি ভালো লাগে। তাই তো আজকে আমি দারুন একটি নাটক রিভিউ সবার মাঝে উপস্থাপন করতে চলে এসেছি। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।
নাম | প্রশংসায় পঞ্চমুখ |
---|---|
পরিচালনা | মহিদুল মাহিম |
সম্পাদনা | রমজান আলী |
অভিনয়ে | আফরান নিশো, মেহজাবিন চৌধুরী ও আরো অনেকে |
দৈর্ঘ্য | ৪৫ মিনিট |
মুক্তির তারিখ | ১৬ই আগস্ট ২০১৯ |
ধরন | ড্রামা |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
- আফরান নিশো- ইমতিয়াজ
- মেহজাবিন চৌধুরী- প্রিয়া
নাটকের শুরুতেই আমরা দেখতে পাই ইমতিয়াজ সাহেব এবং উনার স্ত্রী প্রিয়াকে। প্রিয়া সুন্দর করে শাড়ি পড়ে সেজেগুজে ইমতিয়াজ সাহেবের সামনে এসেছে। অথচ ইমতিয়াজ সাহেব তার কোন প্রশংসা করলো না। তাইতো প্রিয়া কিছুটা বিরক্ত হয়ে সেখান থেকে চলে গেল। অফিসে গিয়ে অফিসের কাজ করতে লাগলো। আর অফিসের অন্য এক কলিগ থাকে ফাইল আনার জন্য বারবার ডাকতে লাগলো। ইমতিয়াজ সাহেব উনার কলিগের ব্যবহারে বললেন কিছুদিন আগেও আমরা একই লেভেলে কাজ করেছি। আর পাশাপাশি বসে কাজ করেছি। এখন আপনার প্রমোশন হয়েছে বলে এভাবে আমার সাথে কথা বলতে পারছেন এবং আমাকে আদেশ করতে পারছেন। এবার ইমতিয়াজ সাহেবের অফিসের কলিং বললেন আসলে আপনার প্রমোশন অনেক আগেই হয়ে যেত। কিন্তু আপনি কাউকে প্রশংসা করতে জানেন না। বসের প্রশংসা করলে আপনি এতদিনে আরো ভালো পজিশনে যেতে পারতেন।
ব্যাপারটি ইমতিয়াজ সাহেব ভেবে দেখলেন এবং তৎক্ষণাৎ বসের রুমে গিয়ে বসের প্রশংসা করতে লাগলেন। বসের প্রশংসায় সে একেবারে পঞ্চমুখ হয়ে গেল। আর অন্যদিকে বস খুশিতে আত্মহারা। এরপর ধীরে ধীরে তার প্রমোশন হতে লাগলো। অন্যদিকে বাসায় এসে দেখল তার শালাবাবু এবং তার স্ত্রী গান গাইছে আর ভিডিও বানাচ্ছে। তার শালাবাবুর গানের গলা তার কাছে বিরক্তিকর শোনালেও শালার প্রশংসায় একেবারে ভাসিয়ে দিল। সেই সাথে শালাকে ইয়ার্কি মশকারি করলো। শালা ও স্ত্রী দুজনেই খুশি হয়ে গেল। মিথ্যে মিথ্যে প্রশংসা শুনে দুজনেই খুশি হয়ে গেল। এবার তার বউ বললো আজ সে নিজের হাতে অনেক কিছু রান্না করেছে। আর ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেছিল। সবাই অনেক প্রশংসা করেছে। তাই তো সেই খাবারগুলো তার জন্য রেখে দিয়েছে। খেতে বসে ইমতিয়াজ সাহেবের গলা দিয়ে খাবার নাম ছিল না। কারণ রান্না খুবই বাজে হয়েছিল। তবুও নিজের স্ত্রীর রান্নার প্রশংসা করতে হয়েছিল। তাকে কারণ সবাই যে প্রশংসা শুনতে পছন্দ করে।
অন্যদিকে ইমতিয়াজ সাহেবের সেলিকার বিয়ে ঠিক হয়েছে। তাইতো প্রিয়ার বড় আপা, দুলাভাই এবং ছোট বোন তাদের বাসায় এসেছে। ইমতিয়াজ সাহেব তার দুলাভাই ফারুক সাহেবের প্রশংসায় একেবারে ভাসিয়ে দিয়েছেন। ইমতিয়াজ সাহেবের মুখে এত প্রশংসা শুনে ফারুক সাহিত্য ভীষণ খুশি। এরপর সে সবার প্রশংসা করেছে সেই সাথে অন্যান্য ভাইবোনের প্রশংসা করেছে। তারা সবাই প্রশংসা শুনতে পছন্দ করে। তাইতো তারা সবসময় ফেসবুকে বিভিন্ন রকমের ছবি পোস্ট করে প্রশংসা শুনতে চায়। ইমতিয়াজ সাহেব নিজের মতো করে সবার প্রশংসা করতে লাগে। একদিকে মিথ্যে প্রশংসা করে অন্যদিকে সবার ভালোবাসা পেতে থাকে ইমতিয়ার সাহেব। এভাবেই কেটে যায় কিছুদিন। যেহেতু মেহমান এসেছে তাই ইমতিয়াজ সাহেব তার বন্ধুর কাছে কিছু টাকা ধার চায়। কিন্তু প্রথমে তার বন্ধু টাকা ধার দিতে রাজি হচ্ছিল না। এরপর যখন ইমতিয়াজ সাহেব তার বন্ধু এবং তার বন্ধুর ওয়াইফের অনেক প্রশংসা করতে লাগলো তখন বন্ধু টাকা দিয়ে দিল। আসলে সবাই নিজের প্রশংসা শুনতে পছন্দ করে। এবার হঠাৎ একদিন ইমতিয়াজ সাহেব অফিসে কাজ করছিল তখন অফিসের পিয়ন সেখানে কেঁদে কেঁদে দিশেহারা হয়ে যাচ্ছিল। ইমতিয়াজ সাহেব তার কাছে জানতে চাইলো কি হয়েছে। তখন অফিসের সেই পিয়ন বলল তার ভাই অনেক অসুস্থ আর তিন মাস থেকে সে বেতন পায় না। বসের কাছে বেতন চাইতে গিয়ে সে নিজের চাকরি হারিয়েছে এবং বস অনেক কথা শুনিয়েছে।
এই কথা শুনে ইমতিয়াজ সাহেবের ভীষণ রাগ হয় এবং তিনি নানান রকমের গালিগালাজ করেন এবং বলেন এতদিন সে মিথ্যে প্রশংসা করেছে। আসলে তার বস প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য নয়। এরপর তার চাকরি চলে যায়। চাকরি চলে যাওয়ার বিষয়টি যখন জানাজানি হয় তখন বাসার সবাই কথা শুনাতে থাকে। এবার ইমতিয়াজ সাহেব সবাইকে বলে আসলে সে মিথ্যে প্রশংসা করতে পারবেনা। এতদিন সে যাদের প্রশংসা করেছে সেগুলো শুধুমাত্র সবাইকে খুশি করার জন্য বলেছে। ইমতিয়াজ সাহেব সব সত্য কথা সবার সামনে বলতে শুরু করে। ইমতিয়াজ সাহেব বলে তার স্ত্রী খুবই বাজে রান্না করে।অন্যদিকে তার শালা বাজে গান করে। আর তার সেলিকার গায়ের রং শ্যাম বর্ণ। বড় দুলাভাই তো লোক দেখানোর জন্য দান খয়রাত করে। আর বড় আপা সবসময় নিজের প্রশংসা পাওয়ার জন্য বাচ্চাকে মানসিক টর্চার করে। এর চেয়ে আমরা যদি সবার সামনে সত্যিটা বলতাম তাহলে হয়তো সবাই নিজেদের সমস্যাগুলো শুধরে নিতো। আর আমার বউ রান্না শিখে রান্না করতে পারতো। আর আমার শালা হয়তো চেষ্টা করলে ভালো গান করতে পারতো। কিংবা অন্য যাদের প্রশংসা করছি তারাও হয়তো নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নিতে পারতো। এসব বলে সেখান থেকে উঠে চলে যায়। আর এভাবেই নাটকটি শেষ হয়ে যায়।
প্রশংসা শুনতে সবাই ভালোবাসে। আসলে মিথ্যা প্রশংসা আমাদের জন্য কতটা ভয়াবহ সেটা কেউ বুঝতে পারে না। হয়তো আমরা যদি সত্যটা বলতাম তাহলে হয়তো তারা নিজেদের ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ পেত। আসলে এই নাটকে বাস্তবতার অনেক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আমার কাছে মনে হয় এই নাটকটির মাধ্যমে আমরা সবাই নিজেদের ভুলগুলো বুঝতে পেরেছি। সব মিলিয়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।
আমি মনিরা মুন্নী। আমার স্টিমিট আইডি নাম @monira999 । আমি ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। গল্প লিখতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মাঝে পেইন্টিং করতে ভালো লাগে। অবসর সময়ে বাগান করতে অনেক ভালো লাগে। পাখি পালন করা আমার আরও একটি শখের কাজ। ২০২১ সালের জুলাই মাসে আমি স্টিমিট ব্লগিং ক্যারিয়ার শুরু করি। আমার এই ব্লগিং ক্যারিয়ারে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আমি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির একজন সদস্য।
আফরান নিশো এবং মেহজাবিন চৌধুরী দুজনের অভিনয় আমার অনেক পছন্দের। প্রশংসায় পঞ্চমুখ নাটকটার রিভিউ আপনি পুরোটা অনেক সুন্দর করে করেছেন। আসলে প্রশংসা শুনতে সবাই ভালোবাসে এটা একেবারে ঠিক কথা। কিন্তু মিথ্যা প্রশংসা একটা মানুষকে একেবারে অন্যরকম করে ফেলে। এত সুন্দর করে নাটকটার সম্পূর্ণ কাহিনী রিভিউর মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে দেখে ভালো লেগেছে।
ঠিক বলেছেন আপু আফরান নিশো এবং মেহজাবিন চৌধুরী দুজনের অভিনয় দারুন। এই নাটকটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিলো। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বাহ্ আপু আপনি খুব সুন্দর একটি রিভিউ পোস্ট শেয়ার করেছেন।রিভিউ পড়ে নাটকটি দেখার আগ্রহ অনেকটা বেড়ে গেল।সময় করে দেখে নিব নাটকটি।নাটকের গল্পটি ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ সুন্দর রিভিউ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আপনি সময় পেলে নাটকটি দেখবেন আপু। আমার শেয়ার করা নাটক রিভিউ দেখে আপনার নাটকটি দেখতে ইচ্ছে করছে জেনে ভালো লাগলো আপু।
আফরান নিশোর নাটকগুলো আমার কাছে অনেক ভালো লাগে দেখতে। এ সময়ের সেরা অভিনেতা তাকে বলা হয়। যদিও পঞ্চমুখ নাটকটা এখনো দেখা হয়নি তবে দেখে নিব কোন এক সময়। পঞ্চমুখ নাটকের রিভিউ টা পড়ে বেশ ভালো লাগলো মনে হচ্ছে নাটকটি অনেক সুন্দর।
আরফান নিশো আমারও খুবই পছন্দের একজন অভিনয় শিল্পীm উনার নাটক দেখতে সত্যি অনেক ভালো লাগে। এই নাটকটিও দারুন ছিল।