জেনারেল রাইটিং-বন্যা দুর্গত মানুষ ও অসহায়ত্ব||
আসসালামু আলাইকুম/নমস্কার
আমি @monira999 বাংলাদেশ থেকে। আজকে আমি ভিন্ন ধরনের একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এসেছি। বর্তমানে সারাদেশে বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা কবলিত মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তাই তো সেই বিষয় নিয়ে কিছু কথা আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করছি আমার এই পোস্ট সবার কাছে ভালো লাগে।
বন্যা দুর্গত মানুষ ও অসহায়ত্ব:
Source
বন্যা দুর্গত মানুষের হাহাকার দেখলে হৃদয় কেঁদে ওঠে। মাথা গোঁজার একটুকু ঠাঁই নেই তাদের। ঘরে বাইরে সব জায়গায় পানিতে একাকার। এসব করুন দৃশ্য o দেখেই কেন জানি ভীষণ খারাপ লাগে। ছোট্ট শিশু বাচ্চাটিকে নিয়েও মা যেন আতঙ্কে দিন পার করছে। কখন জানি তার শিশুটি পানিতে পড়ে যায় এই দুশ্চিন্তা নিয়ে হাজারো মা দিন কাটাচ্ছে। তাদের প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে আতঙ্কের মধ্যে। সন্তানকে আগলে রাখার চেষ্টা করছে তারা। বন্যা দুর্গত এলাকাগুলোতে গেলে সেই সব মানুষের হাহাকার এবং সেসব মায়ের অসহায়ত্ব দেখে সত্যি অনেক খারাপ লাগে। সেই অসহায় মায়েদের কথা ভাবতেই হৃদয় জুড়ে ব্যথার অনুভব হয়। আবার অনেক বাবা মা তাদের আদরের সন্তানকে হারিয়ে ফেলছে বন্যার পানিতে। ভেসে যাচ্ছে তাদের আদরের ছোট্ট শিশুটি। হয়তো তারা নিজের সাধ্যমত নিজের সন্তানকে আগলে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু ভয়াবহ বন্যা মায়ের কোল খালি করে দিয়েছে। আর বন্যার প্রবল স্রোত তাদের সেই আদরের শিশুটিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দূর দূরান্তে। কিংবা ভেসে উঠছে প্রিয় সন্তানের মৃত লাশ।
বন্যায় ভেসে যাচ্ছে ভিটেমাটি ঘরবাড়ি। নিজের শেষ সম্বল টুকু দিয়ে মাথা গোজার ঠাই টুকু হয়তো তারা তৈরি করেছিল। বন্যা তাদের মাথা গোজার ঠাই কেড়ে নিয়েছে। বন্যার ভয়াবহতা দেখে যেমন খারাপ লাগে তেমনি সেই অসহায় মানুষগুলোর কথা ভাবতেই হৃদয় কেঁদে ওঠে। ঘর বাড়ি হারিয়ে সেসব মানুষগুলো অনাহারে দিন পার করছে। সে সব মানুষের খবর নেওয়ার কেউ নেই। তারা হয়তো চাইলেও সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে না। প্রতীক্ষায় থাকে কখন তারা আবার তাদের সেই সম্বল ঢুকে ফিরে পাবে। কখন তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারবে। চরাঞ্চলের মানুষগুলো আতঙ্কে থাকে এই বুঝি পানি চলে এলো। এই বুঝি তারা তলিয়ে গেল পানির নিচে। রাতের শান্তির ঘুম কেড়ে নেয় বন্যা। বন্যার পানি ভাসিয়ে নিয়ে যায় তাদের গৃহপালিত সব পশুপাখিকে। ভেসে ওঠে সব জীবজন্তুর মৃতদেহ। সেই দৃশ্য দেখে অসহায় কৃষকরা হাহাকার করে ওঠে। আদরে পালন করা গাভিটি ছোট বাচ্চাটির দিকে ফেলফেলিয়ে তাকিয়ে থাকে। হয়তো সেই অবুঝ প্রাণীটিও তার বাচ্চাকে রক্ষা করতে চায়। বন্যা দুর্গত এলাকায় গেলে এই দৃশ্যগুলো দেখে অনেক খারাপ লাগে।
আপনজনের সেই ছোট্ট কবরের চিহ্ন যেন বিলীন হয়ে যায় বন্যার পানিতে। প্রিয় মানুষটি যেই মাটিতে শুয়ে আছে সেই মাটির চিহ্নটাও যেন খুঁজে পায় না তারা। প্রতীক্ষায় থাকে সময়ের কখন বন্যা থেকে তারা মুক্তি পাবে। কখন তারা ফিরে পাবে তাদের প্রিয় মানুষের শেষ ঠিকানা। কখনো বা নদী ভাঙ্গলের কবলে পড়ে প্রিয় মানুষের শেষ চিহ্নটাও বিলীন হয়ে যায়। নদী ভাঙ্গন কেড়ে নেয় প্রিয় মানুষের শেষ স্মৃতি চিহ্নটুকু। আর আপনজনেরা দূর থেকে দেখে শুধু হাহাকার করে। আর চিৎকার করে কাঁদে। হয়তো তারা কখনোই তাদের প্রিয়জনের সেই স্মৃতিচিহ্ন দেখতে পাবে না হয়তো কখনোই তার প্রিয়জনের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দুচোখের জল ফেলতে পারবে না। এভাবেই হয়তো কেটে যাচ্ছে অসহায় সেই মানুষগুলোর জীবন।
বন্যা দুর্গত মানুষের অবস্থা দেখলে মাঝে মাঝে হৃদয় কেঁদে ওঠে। রাস্তার দুপাশে ছোট ছোট ছায়লা করে বসবাস করছে তারা। উঁচু জায়গার খুঁজে দূরদূরান্তে গিয়ে ঘর বাধার চেষ্টা করছে। কিন্তু মনটা পড়ে রয়েছে তার সেই পুরনো ভিটেমাটিতে। যেখানে তারা কাটিয়েছে বছরের পর বছর। প্রতীক্ষায় থাকে কখন বন্যার পানি কমে যাবে। আর তারা আবার সেই পুরনোভিটায় ফিরতে পারবে। সেসব মানুষের অসহায় মুখখানি দেখে হৃদয়ের মাঝে ব্যথা তৈরি হয়। সেসব মানুষের মুখের পানে তাকাতে গিয়ে কেন জানি বারবার মনে হয় এই মানুষগুলো কতই না কষ্ট পাচ্ছে। হয়তো কাউকে বলতে পারছে না। এক বুক আশা নিয়ে প্রতীক্ষায় আছে সেই সুদিনের। তবুও যেন অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে তাদের। হয়তো বছরের পর বছর তাদের প্রতীক্ষা করতে হয়। হয়তো প্রতি বছর এই ভয়াবহতার শিকার হতে হয় তাদের। এইভাবেই কেটে যাচ্ছে সেসব চলাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা। সেই অসহায় মানুষগুলোর কথা ভাবতেই অনেক কষ্ট লাগে।
বন্যা দুর্গত এলাকার চিত্র দেখলে হৃদয় কেঁদে ওঠে। সেই চিত্রগুলো দেখে কেন জানি আর নিজেকে সামলে রাখতে পারিনা। কয়েকদিন আগে বাসায় গিয়েছিলাম। রাস্তার পাশ দিয়ে ছোট ছোট ছায়লা তুলে মানুষ বসবাস করছে। অপেক্ষা করছে বৃষ্টি কমে যাওয়ার। সেই মানুষগুলোর মুখের দিকে তাকিয়ে তাদের ভেতরের হাহাকার অনুভব করার চেষ্টা করেছি। তাইতো ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় কিছু কথা লেখার চেষ্টা করেছি। আশা করছি সবার ভালো লাগবে।
যেকোনো দুর্যোগ মানুষের জীবনে হাহাকার ডেকে আনে। কিন্তু বন্যা কবলিত হলে আসলে নিজের অস্তিত্ব ছাড়া আর কিছুই থাকে না। ছোট্টবেলায় পদ্মা নদীর ভাঙ্গন দেখেছি সত্যি যেটা অবস্থানের পরিবর্তন ঘটায়। মানুষের এই দুর্ভোগ দেখতে খুবই খারাপ লাগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন ভালো লাগলো।
ঠিক বলেছেন ভাইয়া যেকোন দুর্যোগ মানুষের জীবনে হাহাকার ডেকে আনে। বন্যা কবলিত মানুষের জীবন সত্যি অনেক কষ্টের। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আমরা অনেকে আছি বন্যা দেখিনি তাই তো যখন শুনি কোন এলাকায় বন্যা এসেছে আনন্দের সহিত সেখানে দেখতে যাই কিন্তু আমরা যদি কাছ থেকে তাদের কষ্ট গুলো দেখি তাহলে বুঝতে পারবো তারা বন্যায় কত কষ্টে দিন কাটায়।আপনি সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন আপু।
সত্যি আপু সেসব মানুষের কষ্টগুলো হয়তো আমরা অনুভব করতে পারি না। আসলে দূর থেকে বন্যা আমরা শুধু দেখে আফসোস করি। কিন্তু যারা এই ভোগান্তির মধ্যে পড়ে তারা শুধু সেই সমস্যা উপলব্ধি করতে পারে।
আসলেই বন্যা দুর্গত মানুষ খুবই অসহায়। খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে সব ধরনের কষ্ট করতে হয়। বিশেষ করে শিশুদের এবং বৃদ্ধদের জন্য বেশি খারাপ লাগে। আমাদের সবার উচিত তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করা। তাহলে তারা কিছুটা হলেও সাহস পাবে মনের মধ্যে। যাইহোক এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক নিয়ে পোস্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।