নাটক রিভিউ || ফাইন্ডিং ফ্যামিলি
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে ফাইন্ডিং ফ্যামিলি। এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে মুশফিক আর. ফারহান এবং কেয়া পায়েল। এই জুটির নাটক দেখতে আমার বেশ ভালো লাগে। এই নাটকটি গতকাল সন্ধ্যায় দেখেছিলাম। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক নাটকটি প্রথম দিকে দেখে ফানি টাইপের মনে হলেও, পরবর্তীতে বেশ শিক্ষনীয় মনে হয়েছে। আপনাদের সাথে নাটকটি শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
নাটক | ফাইন্ডিং ফ্যামিলি |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | মেহেদী হাসান হৃদয় |
অভিনয়ে | মুশফিক আর. ফারহান,কেয়া পায়েল,মুকিত জাকারিয়া,এলিনা শাম্মী,এসকে রতন,শেলী আহসান,পিন্টু আকন্জী এবং আরো অনেকে। |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা ভাষা |
প্রচার | ১৬ই মার্চ ২০২৩ |
দৈর্ঘ্য | ৪২ মিনিট |
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের শুরুতে দেখতে পাই নাটকের নায়ক মুশফিক আর. ফারহান এর বাবা মা কথা বলছে ফারহানের ব্যাপারে। কারণ ফারহান সারাক্ষণ দুষ্টুমি করতো,আড্ডা দিত বন্ধুদের সাথে এবং পড়াশোনায় একেবারেই মন ছিল না। মোটকথা ফারহান কিছুটা লাফাঙ্গা টাইপের ছিল। সে ল্যাপটপে পড়ার রেকর্ডিং চালু করে রেখে, মই দিয়ে উপর থেকে নিচে নেমে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে গিয়েছিল। এদিকে ল্যাপটপে একই পড়ার রেকর্ডিং বারবার বাজছে। এতে করে পাশের রুমে থাকা ফারহানের বাবার সন্দেহ হয় এবং তার রুমে গিয়ে দেখে ফারহান রুমে নেই। এদিকে ফারহান মই দিয়ে উপরে উঠার পর তার বাবা তাকে অনেক বকাবকি করে। তারপর ফারহানের ভাবি তাকে বকাবকি থেকে বাচায়। তার ভাবি তাকে অনেক আদর করতো। এদিকে নাটকের নায়িকা কেয়া পায়েল হচ্ছে ফারহান এর বেয়াইন। ফারহান প্রায়ই পায়েলকে বিরক্ত করে তাদের বাসার সামনে গিয়ে। তবে ফারহান এর এই বিরক্ত করাটা পায়েল এনজয়ও করতো। সে মনে মনে বেশ খুশি হতো।
একদিন ফারহান দেখে তার বড় ভাইয়ের রুমের একটা টেবিলের ড্রয়ার খোলা। সেখান থেকে টাকা নিয়ে সে বাইক কিনে বাসায় নিয়ে আসে,আর বলে যে লটারিতে বাইক জিতেছে। সবাই তো এটা শুনে বেশ খুশি। এদিকে ফারহান এর ভাই বাসায় আসার পর ফারহান ধরা পরে যায়। তারপর আবারও বকাবকি শুনে তার বাবার কাছ থেকে। যাইহোক ফারহান প্রতিনিয়ত এরকম উল্টো পাল্টা কাজ করতেই থাকে। এদিকে পায়েল এর বিয়ে ঠিক হয় একজনের সাথে। ফারহান যেহেতু পায়েলকে মনে মনে ভালোবাসে, তাই সেই লোকের কাছে উল্টো পাল্টা বলে বিয়ে ভেঙে দেয়। তারপর পায়েলের বাবা ফারহানের বড় ভাইকে অনেক বকাবকি করে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার জন্য। এই ব্যাপারটা নিয়ে তাদের সংসারে ফাটল ধরে। ফারহানের ভাই এবং ভাবি বাসা ছেড়ে পায়েল এর বাসায় চলে যায়। এদিকে ফারহান এর ভাই ছিল তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। সে বাসা ছেড়ে চলে যাওয়াতে ফারহান এবং তার মা বাবার আর্থিক সমস্যা হচ্ছিল প্রতিনিয়ত। এটা দেখে ফারহান এর খুব খারাপ লাগতো এবং সে নিজেকে পুরোপুরি পাল্টে ফেলে।
এদিকে পায়েল একদিন ফারহান এর কাছে এসে বলে তার বিয়ে ঠিক হয়েছে। কিন্তু পায়েল ফারহানকে অনেক ভালোবাসে এবং অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবে না। ফারহানও পায়েলকে প্রচন্ড ভালোবাসে,কিন্তু তার একমাত্র লক্ষ্য নিজের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। নিজের পরিবারের জন্য তার ভালোবাসাকে বিসর্জন দিল ফারহান। ফারহান নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে হঠাৎ একদিন পায়েল এর বাসায় যায়, তার বড় ভাইয়ের ড্রয়ার থেকে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যে অনেক আগে বাইক কিনেছিল সেই টাকা ফেরত দিতে। পায়েল,তার বোন এবং ফারহান এর বড় ভাই তারা তিনজন একসাথেই ছিল সেই বাসায়। ফারহান টাকা ফেরত দিয়ে অভিমানের সুরে তাদের সাথে কিছু কথা বলে নিজের বাসায় চলে যায় তার মা বাবার কাছে। তারপর বলে যে তার মা বাবাকে নিয়ে হজ করতে যাবে এবং সেখান থেকে এসে সিঙ্গাপুর যাবে ফারহানের বাবার চিকিৎসা করাতে। ফারহানের মুখ থেকে এসব কথা শুনে ফারহানের বাবা-মা খুশিতে কান্না করে দেয়। আর এভাবেই নাটকের পরিসমাপ্তি ঘটে।
উপরের সবগুলো ছবি ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
এই নাটকে ঝগড়ার কারণে সংসারে ফাটল ধরার পর, ফারহান এর বড় ভাই মুকিত জাকারিয়া তার পুরো পরিবারকে ছেড়ে বউ নিয়ে শশুর বাড়িতে চলে যায় এবং ঘরজামাই হিসেবে সেখানেই থেকে যায়। এতে করে ফারহান এর পুরো পরিবার আর্থিক বিপদের সম্মুখীন হয়। যেটা ফারহান এর বড় ভাইয়ের মোটেই করা উচিত হয়নি। অপরদিকে ফারহান নিজের ভালোবাসা বিসর্জন দিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ায় এবং সংসারের হাল ধরে। তার মানে কেউ কঠোর পরিশ্রম করলে সফলতা অবশ্যই আসবে। নাটকটি সত্যিই শিক্ষনীয়। সবমিলিয়ে নাটকটি আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
---|---|
স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
ডিভাইস | Samsung Galaxy Note 20 Ultra 5g |
তারিখ | ২৩.৩.২০২৩ |
লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাল্লাহ দেখা হবে অন্য কোন পোস্টে।সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹
আসলেই কেউ চাইলেই কষ্টের মাধ্যমে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। কখনো কষ্ট ছাড়া কেউ হঠাৎ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না। পাঠানের ভাই আসলে এটি খুব বড় ভুল কাজ করলো। তাদের পরিবারটাকে এভাবে একলা করে চলে গেল। এখন তো তাদের পরিবারে তার বড় ভাইয়ের এই থাকার উচিত ছিল। আপনার নাটকের ভিডিও দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। অনেক শিক্ষনীয় বিষয় ছিল আসলেই। আমার নাটকটি দেখা হয়নি আশা করতেছি আপনার রিভিউ দেখে নাটকটি দেখব। চমৎকার রিভিউ শেয়ার করলেন আজকে।
জি আপু ফারহান এর ভাই নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছে। ফারহান যদি সেই সময় কিছু না করতে পারত,তাহলে তার পরিবারে অনেক ধরনের বিপদ হতে পারত। যাইহোক আপনার মন্তব্য পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ফারহান এবং কেয়া পায়েল অভিনীত এই জনপ্রিয় নাটকের রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। আসলে নাটকটি অনেক শিক্ষনীয় ছিল। একজন মানুষ চেষ্টা করলেই সফল হতে পারে। সফল হতে গেলে প্রথমে প্রয়োজন চেষ্টা করা। নাটকটি আমার অনেক ভালো লেগেছে। খুব শীঘ্রই সময় করে ভিডিওটি দেখে নেব। দারুন একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া।
জি আপু একজন মানুষ যদি আপ্রাণ চেষ্টা করে তাহলে সফলতা নিশ্চিত। এতো সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনি খুবই চমৎকার একটা নাটকের রিভিউ পোস্ট করেছেন যা পড়ে এবং দেখে আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। ফারহানের নাটক গুলো এমনিতেই খুবই ভালো হয় তার অভিনয়ে আমার কাছে একটু বেশি ভালো লাগে। আসলে এই নাটকটি কিন্তু সত্যিই খুবই শিক্ষনীয় একটি নাটক। আমরা অনেক রকমের শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি এই নাটকটির থেকে। যাইহোক সম্পূর্ণটা খুবই সুন্দরভাবে লিখেছেন। অসম্ভব ভালো ছিল কিন্তু বলতে হয়।
জি আপু আপনি ঠিকই বলেছেন, এই নাটক থেকে আমরা শিক্ষা নিয়ে নিজেদের জীবনে কাজে লাগাতে পারি। এমন প্রশংসনীয় মন্তব্যের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ফারহানের এই নাটকটি আমি কিছুদিন আগে দেখেছি। নাটকটা প্রাথমিক পর্যায়ে আমার খুব বেশি ভালো লেগেছিল। তবে একজন মানুষের পাগলামি যে একটা পরিবার ধ্বংস অথবা আপনজনদের মাঝে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করে তার বাস্তব প্রমাণ এখানে দেখানো হয়েছে। যাইহোক নাটকটা অসাধারণ ছিল আর আজকে আপনি তার রিভিউ করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে ভালো লাগলো
জি ভাই প্রথম দিকে ফারহান প্রচন্ড পাগলামি করেছিল। যখন যা খুশি তাই করতো। অনেক ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাইয়া এই নাটকটি আমি আজকে দেখেছি। অনেক ভাল লেগেছে নাটকটি। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ফারহানের অভিনয় ধারুন ছিল। বিশেষ করে যখন মদ নিয়ে বাসায় ঢুকে তখনের অভিনয়টা ধারুন ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ঠিক বলেছেন ভাই, ফারহান পুরো নাটকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মদ খাওয়ার অভিনয়টা সত্যিই দারুণ ছিল। আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।