নাটক রিভিউ || হোসেন এর গল্প
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুরা ,আপনারা সবাই কেমন আছেন ? আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের সামনে একটি নাটকের রিভিউ নিয়ে হাজির হয়েছি। নাটকের নাম হচ্ছে হোসেন এর গল্প। এই নাটকটি ৫ মাস আগে রিলিজ হয়েছে। যাইহোক এই নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছে জিয়াউল হক পলাশ,পারসা ইভানা এবং সাইদুর রহমান পাভেল। এই নাটকটি একেবারে বাস্তব সম্মত,তাই দেখতে খুব ভালো লেগেছে আমার কাছে। মাঝে মধ্যে সময় পেলে আমি বাংলা নাটক দেখি। একসময় হিন্দি মুভি অনেক দেখা হতো, তবে এখন এতোটা সময় নিয়ে মুভি দেখার সময় হয়ে উঠে না। তাই বিনোদনের জন্য অল্প সময়ে বাংলা নাটক দেখা হয়। যাইহোক আপনাদের সাথে এই নাটকের রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
| নাটক | হোসেন এর গল্প |
|---|---|
| রচনা ও পরিচালনা | ইসতিয়াক আহমেদ রুমেল |
| অভিনয়ে | জিয়াউল হক পলাশ,পারসা ইভানা,সাইদুর রহমান পাভেল এবং আরও অনেকে |
| দেশ | বাংলাদেশ |
| ভাষা | বাংলা ভাষা |
| প্রচার | ৫ই এপ্রিল ২০২৫ |
| দৈর্ঘ্য | ৪৮ মিনিট |
| প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
নাটকের সংক্ষিপ্ত কাহিনী নিম্নরুপঃ
নাটকের শুরুতে দেখা যায়, পাভেল তার বন্ধুর সাথে ইভানার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, ইভানাকে দূর থেকে একটু দেখার জন্য। তো ইভানা বারান্দায় আসার পর তাকে দেখতে পেলো। কিন্তু হঠাৎ করে পাশের মহল্লার কিছু পোলাপান পাভেলকে মার দেওয়ার জন্য দৌড়ে আসছে এবং তখন পাভেলের বন্ধু সেখান থেকে পালিয়ে যায় ভয়ে। তারপর দেখা যায়, হঠাৎ করে পলাশ হাতে বটি নিয়ে দৌড় দিচ্ছে পাশের মহল্লার সেই পোলাপানদের মারার জন্য। তো সেই পোলাপান গুলো পলাশকে দেখে পালিয়ে যায়। পলাশ মূলত পাভেলকে বাঁচানোর জন্যই গিয়েছিল। কারণ পলাশ মনে মনে বন্ধু ভাবে পাভেলকে,কিন্তু পাভেল বন্ধু ভাবে না পলাশকে। পাভেলের পরিবার বেশ ধনী এবং পাভেলের বাসার পাশের এক টিন শেড বিল্ডিংয়ে পলাশ থাকে তার মা'কে নিয়ে। পলাশ মূলত মার্কেটের দোকানদারদের খাবার সাপ্লাই দেয় এবং পলাশের মা সব রান্না করে দেয়। তাছাড়া পলাশের মা বাসায় মেয়েদের ড্রেস তৈরি করে এবং পলাশ সেগুলো মার্কেট সহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে। তো পলাশ সবসময়ই ভাবে,পাভেল যদি তার বন্ধু হতো,তাহলে খুবই ভালো লাগতো তার। সে একদিন তার মা'কে বলে,যারা যাকাত দেয় এবং যারা যাকাত নেয়,তারা কি বন্ধু হতে পারে না।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
তার মা বলে পাভেলরা তাদেরকে যাকাত দেয় বলে,তারা মোটামুটি ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারছে। যাইহোক পলাশের মা পলাশের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে,একদিন পাভেলের সাথে দেখা করেন। তারপর পলাশের মা পাভেলকে বলেন,পাভেল যাতে পলাশকে সাথে রাখে। কিন্তু বিনিময়ে কোনো টাকা পয়সা দিতে হবে না। তো পাভেল রাজি হয় এবং তারপর থেকে পাভেলের সাথে পলাশ প্রায় সবসময়ই থাকার চেষ্টা করে। ইভানার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে, ইভানার বাবা পাভেলকে এটা সেটা প্রায়ই বলে। তাই পাভেল সিদ্ধান্ত নেয়, ইভানাকে প্রপোজ করবে। কথায় কথায় পাভেল বলে,পলাশ যে ড্রেস পছন্দ করবে, সেটা পরিধান করে পাভেল ইভানার সামনে যাবে এবং প্রপোজ করবে। তো পলাশ পাভেল এবং তার নিজের জন্য একইরকম দুটি শার্ট কিনে এবং সেই দুই শার্ট পরিধান করে তারা যায় ইভানার বাসার সামনে। পলাশ ও পাভেলের আরেক বন্ধু দূরে দাঁড়িয়ে থাকে এবং পাভেল ইভানার সামনে যায় প্রপোজ করতে। কিন্তু সে অনেক চেষ্টা করেও প্রপোজ করতে পারে না। তো নিজের উপর রাগ করে পাভেল এবং তার বন্ধু বাসায় চলে যায়। তারপর পলাশ ইভানার সামনে যায় এবং ইভানাকে বলে,পাভেল তাকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু তাকে খুলে বলতে পারছে না।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
তো পলাশ এসব বলার পর ইভানা সব বুঝতে পারে এবং সে রাজি হয়ে যায় পাভেলের সাথে প্রেম করতে। পলাশ তো এতে করে ভীষণ খুশি হয় এবং বাসায় গিয়ে তার মা'কে সবকিছু বলে। আসলে মহল্লার প্রায় সবাই জানে,পাভেল খুব পছন্দ করে ইভানাকে। সবকিছু শোনার পর পলাশের মা ভীষণ খুশি হয়। হঠাৎ করে পাভেল তার বন্ধু এবং একজন লোক নিয়ে পলাশের বাসার সামনে যায় এবং পলাশকে ডাকে। পলাশ বাসা থেকে বের হওয়ার পর পাভেল সহ আরও দুই জন পলাশকে ইচ্ছেমতো মারধর করে। কারণ পাভেল চেয়েছিল সে নিজে ইভানাকে প্রপোজ করবে। কিন্তু পলাশ তার হয়ে ইভানাকে সবকিছু বলেছে বলে,পাভেল অনেক রাগ করেছে। মার খেয়ে পলাশ বাড়িতে যাওয়ার পর, তার মা বুঝতে পারে,পাভেল অনেক মেরেছে পলাশকে। মার খেয়ে পলাশের শরীরে জ্বর চলে আসে। কিন্তু সেদিন কিছু কাপড় ডেলিভারির জন্য পলাশকে সিলেটে যেতে হবে এবং সেজন্য পলাশ বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু তার শরীরে জ্বর ছিলো বলে,সে খুবই বাজেভাবে এক্সিডেন্ট হয় রাস্তায়। যাইহোক এরপর কি হলো সেটা জানতে হলে আপনাদেরকে অবশ্যই নাটকটি দেখতে হবে।
ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া হয়েছে
নাটকের লিংক👇👇
ব্যক্তিগত মতামত
এই নাটকের কাহিনীটা আসলেই খুব ভালো লেগেছে। সত্যি বলতে পলাশের অভিনয় দেখে চোখে পানি চলে এসেছে। পলাশ গরীব বলে পাভেল তাকে কখনোই বন্ধু ভাবতে পারেনি। শুধুমাত্র পলাশের মা অনুরোধ করেছে বলে,পলাশকে কিছুদিন সাথে রেখেছিল পাভেল। পলাশ পাভেলের প্রতিটি ইচ্ছাকে প্রচন্ড গুরুত্ব দিতো এবং তার বিনিময়ে সে পাভেলের কাছ থেকে শুধু কষ্টই পেয়েছে। পাভেলের হয়ে ইভানাকে সবকিছু খুলে বলার পর ইভানা রাজি হয় পাভেলের সাথে প্রেম করতে। এটা কিন্তু পলাশ পাভেলের ভালোর জন্যই করেছে। কিন্তু সেজন্য পলাশকে মারা মোটেই উচিত হয়নি পাভেলের। পাভেল সেটা সত্যিই খুব খারাপ করেছে। আমার মতে মনের সাথে মন মিললে যে কারো সাথেই বন্ধুত্ব হতে পারে। কিন্তু অনেকে ভাবে বন্ধুত্ব হয় সমানে সমানে। অর্থাৎ স্ট্যাটাস মিলতে হয়। কিন্তু এই ধরনের চিন্তা ভাবনার সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করছি। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। নাটকটি এককথায় দুর্দান্ত লেগেছে। সবাই বেশ ভালো অভিনয় করেছে।
আমার রেটিং
পোস্টের বিবরণ
| ক্যাটাগরি | নাটক রিভিউ |
|---|---|
| স্ক্রিনশট ক্রেডিট | @mohinahmed |
| ডিভাইস | Samsung Galaxy S24 Ultra |
| তারিখ | ১২.৯.২০২৫ |
| লোকেশন | নারায়ণগঞ্জ,ঢাকা,বাংলাদেশ |
বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই। আপনাদের কাছে পোস্টটি কেমন লাগলো, তা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আবারো ইনশাআল্লাহ দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। সেই পর্যন্ত ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পরিচয়
🥀🌹আমি মহিন আহমেদ। আমি ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করি এবং আমি বিবাহিত। আমি এইচএসসি/ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর, অনার্সে অধ্যয়নরত অবস্থায় দক্ষিণ কোরিয়াতে চলে গিয়েছিলাম। তারপর অনার্স কমপ্লিট করার সুযোগ হয়নি। আমি দক্ষিণ কোরিয়াতে দীর্ঘদিন ছিলাম এবং বর্তমানে বাংলাদেশে রেন্ট-এ- কার ব্যবসায় নিয়োজিত আছি। আমি ভ্রমণ করতে এবং গান গাইতে খুব পছন্দ করি। তাছাড়া ফটোগ্রাফি এবং আর্ট করতেও ভীষণ পছন্দ করি। আমি স্টিমিটকে খুব ভালোবাসি এবং লাইফটাইম স্টিমিটে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি আমি সবসময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে ইচ্ছুক।🥀🌹














ডেইলি টাস্ক স্ক্রিনশট এবং লিংক:
https://x.com/mohin3242127/status/1966170191831982392?t=3aIuYYSrA3GfukExPTOMdA&s=19
https://x.com/mohin3242127/status/1966452107478741040?t=i8tqEeiiGyF0QwioGvOsXg&s=19
X-promotion
আসসালামু আলাইকুম @mohinahmed!
আপনার "হোসেন এর গল্প" নাটকের রিভিউটি অসাধারণ হয়েছে! নাটকের প্রতিটি বিষয় আপনি খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। বিশেষ করে পলাশের অভিনয় যে আপনার হৃদয় ছুঁয়েছে, তা আপনার লেখায় স্পষ্ট। নাটকের কাহিনী সংক্ষেপ এবং আপনার ব্যক্তিগত মতামত পড়ে নাটকটি দেখার আগ্রহ বেড়ে গেল।
আপনার রেটিং একদম যথাযথ মনে হয়েছে। এমন বাস্তবসম্মত গল্পের নাটক আজকাল খুব কমই দেখা যায়। রিভিউ লেখার ধরণটিও খুব গোছানো।
ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি নাটকের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য। আপনার অন্যান্য পোস্টগুলো দেখার অপেক্ষায় রইলাম। ভালো থাকবেন! 😊
আজ আপনি খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। নাটক দেখতে আমার কাছে সব সময় খুব ভালো লাগে। আমি সময় পেলে চেষ্টা করি সুন্দর সুন্দর নাটক গুলো দেখার জন্য। এই নাটকটা এখনো পর্যন্ত দেখিনি। তবে নাটকটার রিভিউ অনেক সুন্দর। এইজন্য ভাবছি নাটকটা আমি সময় পেলে দেখব।
এই নাটকটি একেবারে হার্ট টাচিং একটি নাটক। এতো চমৎকার মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
মাঝেমধ্যে নাটক দেখতে ভালই লাগে। সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। যদিও এই নাটকটি দেখা হয়নি। তবে আপনার নাটকের রিভিউ পড়ে নাটকটি আমার কাছে বেশ ভালই লেগেছে। খুব শীঘ্রই নাটকটি দেখার চেষ্টা করব ।ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
মাঝেমধ্যে নাটক দেখতে আসলেই খুব ভালো লাগে। যথাযথ মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
সময়ের কারণে নাটক যদিও খুব একটা দেখা হয় না, তবে আগে নাটক মাঝেমধ্যেই দেখে থাকতাম। হোসেন এর গল্প এই নাটকটার রিভিউ খুবই সুন্দর লেগেছে আমার কাছে। এই নাটকের কাহিনী অনেকটাই সুন্দর ছিল। যদি পারি নাটকটা অবশ্যই দেখবো আমি। ধন্যবাদ এত সুন্দর রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
এই নাটকের কাহিনী আসলেই খুব সুন্দর। এভাবে সাপোর্ট করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাই আপনি তো দারুন একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন।যদিও নাটক টি দেখি নাই তবে নাটকটির রিভিউ পড়ে খুব ভালো লাগলো।ভাবছি সময় করে নাটকটি দেখে নেওয়ার চেষ্টা করবো।ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
হুম সময় পেলে নাটকটি দেখতে পারেন। আশা করি খুব ভালো লাগবে। গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
নাটক দেখতে আমি পছন্দ করি। আর নাটকের রিভিউ পড়তেও ভালো লাগে। আপনার উপস্থাপন করা এই নাটকের রিভিউ খুবই ভালো লেগেছে ভাই।
নাটকের রিভিউ পড়তে আমারও খুব ভালো লাগে। সবসময় সাপোর্ট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।