মিথ্যার কখনোই জয় হতে পারে না//পর্ব-৩

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

সত্যকে যতই চাপানো যায় না কেন, এই সত্য একদিন প্রকাশ পাবেই। আসলে মিথ্যার আড়ালে সত্য যেন উঁকি দিয়ে থাকে। হাজারো মিথ্যা দিয়ে সত্যকে চাপিয়ে রাখলেও সেই সত্য একদিন আমাদের মধ্যে প্রকাশ পাবে। আর সত্যের বিজয় হবেই। কারণ সত্য সবসময় সরল পথে চলে আর এই সরল পথে বাধা হয়ে মিথ্যা দিয়ে ঢেকে যতই রাখার চেষ্টা করা হোক না কেন, সত্যকে কখনোই লুকিয়ে রাখা যায় না। তাই সত্যের বিজয় নিয়ে আপনাদের মাঝে একটি গল্প শেয়ার করতেছিলাম। আজকে সেই গল্পের তৃতীয় পর্ব নিয়ে এসেছি। আসলে আমাদের সমাজে হাজার গল্প ঘটে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এগুলো যেন স্মৃতি হয়ে আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই দিনগুলোর কথা। তো বন্ধুরা আশা করছি এই গল্পটি পড়ে ভালো লাগবে।

woman-7306978_1280.jpg

Source

রুবেল ভাইয়ের দোকান থেকে যখন সকল কম্পিউটার চুরি হয়ে যায়। রুবেল ভাই যখন কোন প্রমাণ পাচ্ছিল না, কিছুই করার ছিল না গ্রামের মানুষ সকলেই আফসোস করতে ছিল। কে বা কারা এই রুবেলের ক্ষতি করল। আসলে চেয়ারম্যান রুবেল ভাইকে বলেছিল যদি তোমার কাউকে সন্দেহ হয় তাহলে কাউকে না বলে আমাকে বলবে। আমি সেই সন্দেহের লোকটিকে ধরে এনে ব্যবস্থা করব তার মুখ থেকে সত্যি কথা বের করব। কিন্তু রুবেল ভাইয়ের সাথে এরকম শত্রুতা কারো ছিল না। যার কারণে রুবেল ভাই ঠিক ভাবে বলতে পারছিল না, তার দোকান থেকে কিভাবে চুরি করেছে এবং তার সাথে কে বা এরকম ব্যবহার করতে পারে।


এভাবে প্রায় এক সপ্তাহ চলে যায়। এক সপ্তার মধ্যে কোন খোঁজ খবরই পাওয়া যাচ্ছিল না, কে বা কারা রুবেল ভাইয়ের এই দোকান থেকে কম্পিউটার গুলো চুরি করেছে। তো একদিন আমাদের গ্রামেরি সুজন নামে এক ব্যক্তির মা গাড়ি এক্সিডেন্ট করে।হসপিটালে ভর্তি করানো হয়। আর হসপিটালে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখে তার রক্ত অনেক কমে গেছে। তাকে এখনই রক্ত দিতে হবে। যদি রক্ত দিতে দেরি হয় তাহলে সে হয়তো বা বাঁচবে না। আসলে এক্সিডেন্ট করে তার পায়ে অনেকখানি কেটে গেছে। ডান পা ভেঙ্গেও গেছে, অনেক রক্ত পড়েছে তাই রক্তের শূন্যতা দেখা দিয়েছে। আর সুজনের মায়ের রক্তের গ্রুপ ছিল এ বি নেগেটিভ। আর এ বি নেগেটিভ রক্ত পাওয়া যাচ্ছিল না। কারণ এই রক্ত পাওয়া খুবই কঠিন। আর রুবেল ভাইয়ের রক্তের গ্রুপ ছিল এ বি নেগেটিভ। যখনই রুবেল ভাই এই খবরটি শুনতে পেল তখনই তাড়াতাড়ি করে হসপিটালে চলে গেল রক্ত দেওয়ার জন্য।


bonfire-1867275_1280.jpg

Source

আসলে এই সুজন ও রুবেল ভাইয়ের বন্ধু ছিল। রুবেল ভাইয়ের সাথে তার খুব একটা ভালো সম্পর্ক ছিলো। একই সাথে পড়াশোনা করেছে। আর এই সুজন ভাইয়ের সাথে রুবেল ভাইয়ের অন্যান্য বন্ধুর মতো খুবই ভালো সম্পর্ক ছিলো।আর যারা কম্পিউটার চুরি করেছে তারা আগে সুজন ভাইয়ের সাথে এসে প্রোগ্রাম করেছিল অর্থাৎ পরিকল্পনা করেছিল এই কম্পিউটার গুলো কিভাবে চুরি করা যায়। তখন সুজন ভাই বলেছে না আমি এর মধ্যে নেই এবং চুরি করা যাবে না রুবেল গরিব মানুষের ছেলে আবার আমাদের বন্ধু। আমরা কেন ক্ষতি করব।সুজন ভাইয়ের সাথে শুধু এরকম লাস্ট পরিকল্পনা ছিল। তখন তারা বলেছিল ঠিক আছে আমরা এই পরিকল্পনার মতই আগাবো, কিন্তু সুজন তুই কোন কথা বলতে পারবি না। আসলে সুজন ভাই কথা বলতে পারবে না কারণ হলো ওই বন্ধুদের কাছে সুজন ভাই কোন একটা বিপদের কারণ হয়েছিল। যার কারণে তাদের নিয়ে বেশি বারাবারি করলে সুজন ভাইয়ের বিপদ হবে সেই কারণে সুজন ভাই চুপ করে ছিল।


কিন্তু রুবেল ভাই যখন সুজন ভাইয়ের মাকে রক্ত দিয়ে বাঁচিয়ে দেয়, তখন সুজন ভাইয়ের অনুশোচনা হয়, সে বলে রুবেল তুই সত্যি মহৎ ব্যাক্তি, কারণে আজকে ছেলের অপারেশন হয়েছে এবং রক্ত দেওয়ার কারণে মা সুস্থ হচ্ছে। রুবেলের বিপদ থেকে রক্ষা করতে হবে তাই সুজনকে ডেকে বলল ভাই তোর সাথে আমার কিছু কথা রয়েছে তবে। তুই আগে আমাকে মাফ করে দে, আমি তোর সাথে অন্যায় করেছি রুবেল ভাই বলল যে কোন কিছু করিস নি। তুই আমার বন্ধু তুই কোন অন্যায় করতে পারিসনা। এখন কি হয়েছে আমাকে বল আমি তোকে মাফ করে দেবো।


রুবেল ভাইয়ের কথা শুনে সুজন ভাই তখন অনেকটা সাহস পায়। আর সুজন ভাই তখন রুবেল ভাইকে বলল যে তোর দোকান থেকে কারা চুরি করেছে এই খবর আমি জানি। আমি তোকে সব বলব তোর সাথে অনেক অন্যায় করা হয়েছে। এর বিচার হওয়া উচিত। তখন রুবেল বলল যে আমার দোকান থেকে কে চুরি করেছে তুই কিভাবে জানিস। আমাকে সব খুলে বল। তখন সুজন ভাই সব কিছু খুলে বললো, আর সকল কিছু শুনে খুবি কষ্ট পেলো,যার কারণ সে তার বন্ধুদের অনেক বেশি ভালোবেসে ছিল। আর তার বন্ধুরা তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল।


সুজন ভাইয়ের কথা শুনে রুবেল ভাই সত্যি হতবাক হয়ে গেছে। তার প্রিয় বন্ধুরা তার সাথে এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। কিভাবে এই বন্ধুদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিবে যার কারণে চেয়ারম্যানকে সেদিন বলেননি, দুইদিন পর চেয়ারম্যানকে বলতে গিয়েছিল রুবেল ভাই। বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই বাকি অংশটুকু আপনাদের সাথে পরবর্তী পর্বে শেয়ার করব। চেয়ারম্যানকে বলার পরে চেয়ারম্যান কি পদক্ষেপ নিয়েছিল আশা করছি সেই পর্বের জন্য অপেক্ষা করবেন।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 4 months ago 

আসলে সত্য একদিন না একদিন প্রকাশ পাবেই। রুবেল ভাইয়ের দোকান থেকে তার বন্ধুরা যে কম্পিউটারে চুরি করেছিল এই সত্য আশা করছি আগামী পর্বে বের হবে। তবে রুবেল ভাই খুবই বড় একটি মহৎ কাজ করেছে। এ বি নেগেটিভ রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচিয়েছে। যার কারণে এই জীবন বাঁচানোর কারণেই তার দোকানে চুরি তথ্য সে জানতে পারবে।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.11
JST 0.029
BTC 66255.12
ETH 3564.10
USDT 1.00
SBD 3.15