অমাবস্যার রাতে বন্ধুদের সাথে স্মৃতিময় গল্প//পর্ব=১

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

আমার জীবনে আনন্দময় মুহূর্তে ছিল ছোটবেলার সেই দিনগুলো। কারণ ছোটবেলা আমি গ্রামে বসবাস করতাম। আর গ্রামে আমার সমবয়সী অনেক বন্ধু-বান্ধব ছিল। তাদের সাথে সেই ছোটবেলার দিনগুলো খুবই আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি। বিশেষ করে বন্ধুদের সাথে অনেক জায়গায় ভ্রমন করেছি। তবে ছোটবেলা যখন আমাবস্যা আসত তখন বন্ধুদের সাথে নিয়ে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ যেন আমরা উপভোগ করতাম। এই অমাবস্যা রাতে কতই না আমাদের পরিকল্পনা ছিল। সকল বন্ধুবান্ধব এক হয়ে বাজি ফুটানোর আমরা মেতে থাকতাম। তো বন্ধুরা আজকে তাই আপনাদের মাঝে সেই স্মৃতিময় দিনের একটি গল্প নিয়ে এসেছি। এই গল্পটি পড়ে আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।


tree-736877_1280.jpg

Source

আসলে গ্রাম অঞ্চলে আমাবস্যা আসলেই যেন অনেক বেশি মজা হতো, কারণ আমরা আমাবস্যার দু দিন আগে থেকেই বাজি ফোটাতে মেতেউঠতাম বড়দের সাথে নিয়ে। আমরা এই বাজিগুলো নিজেরাই বানাতাম।আবার আমরা অনেক দামি দামি বাজি কিনে আনতাম।সেই মুহূর্ত আনন্দের সাথে উপভোগ করতাম। তাই যখন শুনলাম যে অমাবস্যা আসবে। তার দু দিন আগে থেকে আমরা বাঁজি কিনে রেখেছিলাম। আর বন্ধুদের সাথে এই বাজিগুলো ফুটা ছিলাম। আসলে বাজি ফুটানোর মধ্যে অনেক আনন্দ রয়েছে। তবে বাজি গুলো ফুটানো হয় ছোটবেলায় জানতাম এই বাজি যত ফুটানো হবে, এই বাজে শব্দে ভুত ভয় পাবে। আর অমাবস্যার এই রাতে ভূত আমাদের কাছে আসবেনা। যার কারণে এই বাজিগুলো ফুটাতে আমরা মেতে উঠতাম। আমাদের সাথে অনেক বড়রাও এই বাজি ফুটাতো।


আমরা ছোট ছোট বন্ধুরা ছিলাম, যার কারণে বাজি বড় বাজি রয়েছে যেগুলোতে আগুন দিয়ে ভয় পেতাম। তাই আমাদের সাথে বড়রাও ছিল। তারা এই বাজিগুলো ফোটা তো। আসলে বড়দের দেখেই যেন আমরা এটা শিখতে পেরেছি। আর অমাবস্যার রাতে বাজি ফুটালেও বাড়ির মুরুব্বীরা আমাদের কিছু বলতো না। যার কারণে উৎসবমুখর পরিবেশের সাথে আমরা সেই মুহূর্তটা উপভোগ করতাম।


bonfire-1867275_1280.jpg

Source

আমরা আমাদের বাড়ির আশেপাশে বাজি অনেক ফুটিয়েছি, তখন বন্ধু বলল চল আমরা স্কুল মাঠে যাই। তাই বড় ভাইদের সাথে নিয়ে আমরা স্কুল মাঠে আসলাম। সেখানে একটি দোকান ছিল, সেই দোকানে রকেট সিস্টেম বাজি রয়েছে, এই বাজিগুলো ধরালে এগুলো রকেটের মতো আকাশে উড়ে তারপরে ফুটতো, আর চতুর্দিকে আলু ছিটিয়ে পড়ে এই দৃশ্য গুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো। তবে এগুলোর দাম অনেক বেশি ছিল, তাই আমরা বন্ধুরা মিলে টাকা জোগাড় করে দুইটা মাত্র কিনেছিলাম। সেই বাজিটা যখন ফুটালাম তখন খুবই ভালো লাগতেছিল। আসলে স্কুল মাঠে অনেকের সাথে সেই আমাবস্যা রাতের মুহূর্তটা আনন্দের সাথে উপভোগ করেছি।


স্কুল মাঠে আমরা আনন্দের সাথে সেই মুহূর্তটুকু উপভোগ করলাম। তারপরে বড় ভাইরা আরো কয়েকজন আসলো, তারা বলল যে শশানের কাছে যাবে, আসলে আমাদের গ্রামে হিন্দুদের বড় একটি শশান রয়েছে, সেখানে আমাবস্যার রাতে অনেক মানুষই আসে। আর শ্মশানের পাশে বিশাল বড় একটি ইটের ভাটা রয়েছে।এই ইটের ভাটাতে গিয়ে আমরা বাজি ফুটানো সিদ্ধান্ত নিলাম। তবে আমরা সেই ইটের ভাটাতে অনেকের সাথে বাজি ফুটিয়েছি, আর শশানের দিকে তাকিয়ে দেখতে ছিলাম ওখানে অনেক মানুষ। তবে শ্মশানে যাওয়ার খুবই ইচ্ছা ছিল,কিস্ত বড় ভাই বলেছিল আজকে শ্মশানে যাওয়া যাবে।



তারপরে আমি বললাম যে আমাদের আজকের শ্মশানে গেলে কি সমস্যা হবে, তখন বড়রা বলল আজকে অনেক জাদুকর আসবে এই শশানে।তারা এখান থেকে যাদুবিদ্যা শিখবে। ওখানে অনেক ভয়ংকার জিনিসও আসতে পারে। তোমাদের দেখা যাবে না। তোমরা দেখলে ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারো। অতএব তোমরা এখানে বাজি ফুটাও,আমরা ওদিক দিয়ে একটু ঘুরে আসি। এই বলে বড় ভাইয়েরা কয়েকজন চলে গেল। আর আমরা আরো কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সেখানে বাজি ফোটা ছিলাম। বড়দের বললাম আমাদের বাজে শেষ হয়ে যাবে। আসার সময় আপনারা বাজে নিয়ে আসেন। তারা বলল ঠিক আছে এখানেই থাকবা। কোথাও কোন যাবে না,তাই আমরা সেই ইট ভাটার মধ্যেই আনন্দ করতে ছিলাম। তো বন্ধুরা গল্পের পরবর্তী অংশ আপনাদের সাথে আগামী পর্বে শেয়ার করবেন ইনশাআল্লাহ।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59634.64
ETH 2590.21
USDT 1.00
SBD 2.47