❝স্কুলের মডেল টেস্ট পরীক্ষা ফাঁকি দিয়ে চার বন্ধু মিলে নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার ঘটনা❞ [পর্ব-১]
আজ থেকে প্রায় ৪-৫ বছর আগে আমি যখন অষ্টম শ্রেণীতে পড়তাম, তখন স্কুলে গিয়ে বন্ধু-বান্ধবের সাথে অনেক আনন্দ, মজা, খেলাধুলা, মারামারি করতাম।তখন পড়াশোনার সাথে আমরা দুষ্টামিতেও ছিলাম ফার্স্ট ক্লাস।স্কুল শিক্ষকরা আমাদের তেমন বকা দিত না।অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় স্কুলে অনেকগুলো মডেল টেস্ট পরীক্ষা হয়েছিল।তো অষ্টম শ্রেণীতে লাস্ট মডেল টেস্ট দিয়েছিলাম সেপ্টেম্বর মাসে।জেএসসি পরীক্ষার আগে এই মডেল টেস্ট দেওয়ার জন্য আমরা সকলেই খুব ভালোভাবে পড়াশোনা করে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম।মডেল চেস্ট পরীক্ষা যথা সময় শুরু হল।আমার আর সকল বন্ধু-বান্ধব একই কক্ষে পরীক্ষা দিতে বসলাম।পরীক্ষার হলেও আমরা দুষ্টুমি কম করি নাই। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা একে অপরের সাথে মারামারি, ধরা-ধরি,আনন্দ মজা করতাম।
সকাল ১০ টা নাগাদ পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা।পরীক্ষা শুরু হওয়া ঠিক ১০ মিনিট আগে স্যার আমাদের পক্ষে প্রবেশ করল। স্যার আমাদের সবাইকে খাতা দিলেন। দশটা বাজার সাথে সাথে স্যার আমাদের প্রশ্নও দিয়ে দিলেন।আমরা সকলেই মনোযোগ দিয়ে পরীক্ষা দিতে লাগলাম।পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২০ মিনিট পরেই স্যার আমাদের বলল, থাকো একটু নাস্তা করে আসি।ছাড় পক্ষ থেকে বাইর হওয়ার সাথে সাথেই আমরা সাথে কথা বলা, চিল্লাচিল্লি করা শুরু করলাম। এভাবে অনেকক্ষণ পার হয়ে গেল তাও স্যার পরীক্ষার হলে আর আসলো না। দীর্ঘ ৫০ মিনিট পর স্যার আমাদের পরীক্ষা হলে ফিরে আসলেন।স্যার ফিরে এসে আমাদের সবাইকে শান্ত করলেন।কিন্তু তাও আমরা এলোমেলোভাবে সবার সাথে কথা চালিয়ে গেলাম। স্যার আমাদের তেমন শাসন করলেন না। স্যার চুপ করে বসে থাকলে। এর মাধ্যমেই আমি বুঝতে পারলাম যে এই মডেল টেস্ট পরীক্ষা স্যাররা গুরুত্বের সাথে নিচ্ছেন না।বারতি কিছু টাকা কামানোর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ এই মডেল টেস্ট পরীক্ষার আয়োজন করেছে।
যাইহোক প্রথম দিন আমরা সকলে ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়ে বের হলাম।দ্বিতীয় দিন যথারীতিতে আবার পরীক্ষা শুরু হল। সেই দিনেও পরীক্ষার প্রতি স্যারদের অবহেলা বুঝতে পারলাম।তখন আমি সহ আমার চার বন্ধু একটা পরিকল্পনা করলাম। আমি আদিত, সাদি এবং সাদাতকে বললাম, "আজকে আর পরীক্ষা দেব না,পরীক্ষা না দিয়ে স্কুল থেকে বের হয়ে আমরা নদীর পাড়ে ঘুরতে যাব।"তখন ওরা তিনজন বলল,"ঠিক বলেছিস চল আজকে পরীক্ষা না দিয়ে নদীর পাড়ে ঘুরতে যাই।একঘন্টা পরীক্ষা দেওয়ার পর আমরা চারজন খাতা জমা দিয়ে পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে আসলাম। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা চারজন নদীর পাড়ের উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করলাম।
স্কুল থেকে নদীর পাড়ে দূরত্ব ছিল প্রায় ৪০ মিনিট।৪০ মিনিট ধরে আমরা চারজন হেঁটে হেঁটে নদীর পাড়ে গেলাম। নদীর পাড়ে বসে থেকে আমরা অনেক হাসিঠাট্টা মজা তামাশা করলাম।আমরা চার বন্ধু মিলে নদীর পাড়ে অনেকক্ষণ সময় কাটালাম। পরীক্ষার সময় ছিল তিন ঘণ্টা। আর আমরা একঘন্টা পরীক্ষা দিয়ে নদীর পাড়ে এসেছি। তাই নদীর পাড়ে এসে দুই ঘন্টার মত আমরা সবাই কাটালাম।তারপর আমরা বাসায় ফিরে আসলাম। যাতে বাসায় গেলে আম্মু মনে করে আমরা পরীক্ষা দিয়ে ফিরলাম। তো আমি এমন ভাবে বাসায় প্রবেশ করলাম যেন মনে হল আমি পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফিরলাম।এভাবেই আরা চার বন্ধু মডেল টেস্ট পরীক্ষার দ্বিতীয় পরীক্ষা আমরা ফাঁকি দিয়ে নদীর পাড়ে ঘুরে আসলাম।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺
টুইটার লিংক👇
https://twitter.com/FaisalA45225288/status/1689551888331796480?s=20
এরকম একটি পোস্ট করে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। তবে পরীক্ষাটা সম্পূর্ণ করেই নদীর ধারে বেড়াতে গেলে ভালো হতো ভাইয়া। এক ঘন্টা পরীক্ষা দিয়ে আর বাকি সময় বেশ মজাই করছেন আপনারা। অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এরকম একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
সম্পূর্ণ পরীক্ষা না দিয়ে যে ভালই করেছি, তা পরবর্তী পর্ব থেকেই জানতে পারবেন।
শিক্ষক দের এইরকম দায়িত্বে অবহেলা মোটেও কাম্য নয়। তবে আপনার ঐ বয়সে এইরকম আমিও কম করি নাই। কিন্তু কী জানেন ভাই আমাদের স্কুলের শিক্ষক রা খুবই কঠোর ছিল এসব বিষয়ে সেজন্য সুযোগ পেতাম না। তবে পরীক্ষা ফাঁকি দিয়ে নদীর পাড়ে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টি বেশ দারুণ লেগেছে হা হা।।
আসলে ভাই এখন প্রতিটা স্কুলে প্রায় মডেল টেস্ট পরীক্ষা হয়। আসলে এই পরীক্ষা থেকে আমাদের স্কুলের স্যাররা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়। আসলে ভাই শিক্ষকদের এমন অবহেলা মোটেও ছাত্র-ছাত্রীরা কখনোই সহ্য করবে না। আসলে ভাই পরীক্ষাটি ফাঁকি দিয়ে আপনার যে নদীর পাড়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন বিষয়টা সত্যিই অনেক দুঃখজনক। পরীক্ষাটি শেষ করে গেলে হয়তো আমার কাছে আরও বেশি ভালো লাগতো। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
যেহেতু স্যারেরা মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিতে তেমন কোন গার্ড দেয়নি তার মানে এটা এমনিতেই নেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় দিন আপনারা চার বন্ধু মিলে দেখছি পরীক্ষা ফাঁকি দিয়ে নদীর পাড়ে ঘুরতে চলে গিয়েছিলেন। যদিও এক ঘন্টা কি লিখেছিলেন আল্লাই জানে। তবে আপনার আম্মু তো এই সব কিছু জানতোই না। তবে যাই হোক আমার কাছে কিন্তু সম্পূর্ণটা পড়ে বেশ ভালোই লেগেছে। সত্যি ছোটবেলার দিনগুলো ছিল অনেক আনন্দময়।
ছোটবেলায় আপনার মত আমিও স্কুল ফাঁকি দিয়েছি তবে আপনি পরিক্ষা ফাকিদিয়ে ঘুরতে গিয়েছেন।বেশ ভালো লাগলো আপনার ছোটবেলার গল্পটি পড়ে ধন্যবাদ আপনাকে আপনার ছোটবেলার গল্পগুলো শেয়ার করার জন্য।