কেউ রাগ ভাঙাতে চাইলে রাগ করে থাকা ঠিক না
আজ -২১ য় আষাঢ় | ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | বর্ষাকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
রাগ এক ধরনের অভিমান, আবার অনেক সময় এটা ভালোবাসারই এক রূপ। কিন্তু সবচেয়ে বড় ভুলটা আমরা তখনই করি, যখন কেউ রাগ ভাঙাতে আসে, তখনও আমরা সেই রাগটা ধরে রাখি। হয়ত ভাবি, তাকে আরও একটু সময় ভোগাতে হবে, আরেকটু বুঝতে হবে, সে কতটা ভুল করেছে। অথচ তখন আমরা বুঝতে পারি না, সামনে যে মানুষটা দাঁড়িয়ে আছে, সে ভাঙা সত্ত্বেও তোমার সামনে দাঁড়িয়েছে, ক্ষমা চাচ্ছে, সম্পর্কটা ঠিক করতে চাইছে।
জীবনে এমন মানুষ পাওয়া সহজ না, যারা রাগ ভাঙাতে আসে। কারণ বেশিরভাগই দূরে সরে যায়। অনেকেই রাগ দেখলে বলে, থাক, এই রকম সম্পর্ক রাখার দরকার নেই। কেউ কেউ আবার নিজে কষ্ট পেয়ে চুপ করে যায়। কিন্তু যে মানুষটা তোমার রাগটাকে গুরুত্ব দেয়, তোমার অভিমানে নিজেকে দোষী ভাবে, সে আসলে তোমার ভালোবাসার মর্যাদা বোঝে।
আমরা অনেক সময় নিজের ইগো নিয়ে এতটাই ডুবে থাকি যে সামনে দাঁড়ানো মানুষটার আন্তরিকতা চোখে পড়ে না। ভাবি, আমার কষ্ট সে বুঝুক, আমি কেন আগে ছাড় দেব। অথচ সম্পর্ক মানে একপাক্ষিক কিছু না। দুইজনের চেষ্টায় সম্পর্ক টিকে থাকে। একপক্ষ যদি রাগ করে, আরেক পক্ষ যদি ভাঙাতে আসে, তাহলে সেটা অনেক বড় একটি দায়িত্ব।
জীবনে এমন অনেক সময় আসে, যখন আমরা ছোট্ট একটা ভুলের কারণে বড় একটা মানুষ হারিয়ে ফেলি। শুধু একটু “আচ্ছা, ঠিক আছে” বললেই হয়ত অনেক সম্পর্ক আজও বেঁচে থাকত। কিন্তু আমরা বলিনি। আমরা হয়ত অপেক্ষা করেছি, সে আরও কষ্ট পাক, আরও বুঝুক। কিন্তু সময় কাউকে অপেক্ষা করে না। অনেক সময় মানুষও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। চেষ্টার সীমা থাকে।
তুমি যদি সত্যি কাউকে ভালোবাসো, আর সে যদি রাগ ভাঙাতে আসে, তাহলে রাগ ধরে রাখা মানে নিজের ভালোবাসাকেই আঘাত করা। কেউ যদি একটা বার্তা দেয়, ফোন করে, দেখা করতে চায়, তাহলে বোঝো সে তোমাকে হারাতে চায় না। কেউ তো তোমাকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করছে— সেটা কী কম কিছু?
রাগ তো হবেই। কাছের মানুষের প্রতি অভিমান আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই অভিমানের জায়গাটাই যদি ভালোবাসা না বুঝে ইগোতে রূপ নেয়, তাহলে সম্পর্ক ধ্বংস হয়ে যায়। অনেক সময় আমরা এমনভাবে রাগ করে থাকি, যেন আমাদের কষ্টই সবচেয়ে বড়। অথচ যে মানুষটা রাগ ভাঙাতে আসে, তার কষ্ট হয়ত আমাদের চেয়েও বেশি।
মানুষ ভুল করতেই পারে। কিন্তু কেউ যদি আন্তরিকভাবে সেই ভুল বুঝতে পারে, শুধরে নিতে চায়, তাহলে তাকে সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ তুমি জানো না, সামনে হয়ত আর কেউ আসবে না রাগ ভাঙাতে। একবার সে ফিরে গেলে, আর কখনও ফিরে আসবে না।
ভালোবাসার সম্পর্কগুলো অনেকটা ফুলের মতো। সময় মতো পানি না দিলে শুকিয়ে যায়। কেউ যদি পানি দিতে আসে, আর তুমি দরজা বন্ধ করে রাখো, তাহলে পরে দরজা খুললেও কিছু থাকবে না।
সবসময় মনে রাখা দরকার, যারা রাগ ভাঙাতে আসে, তারাও মানুষ। তারা বারবার ফিরেও আসতে পারে না। তাই যখন কেউ এগিয়ে আসে, তখন রাগ ভাঙানোটা শুধু তার দায়িত্ব না— তোমারও দায়িত্ব তাকে বোঝা।
আজ যদি তুমি রাগ ধরে থাকো, কাল হয়ত সেই মানুষটাই আর আসবে না। তখন তোমার ফোনে মেসেজ আসবে না, কারো কণ্ঠে অভিমান থাকবে না, কেউ জিজ্ঞেস করবে না “তুমি ঠিক আছো তো?” তখন তুমি চাইবে, কেউ এসে বলুক, “ভালোবাসি”— কিন্তু কেউ বলবে না।
রাগ করে থাকাটা সহজ, কিন্তু কাউকে বুঝে ক্ষমা করা অনেক বড় কাজ। আর যারা ভালোবাসে, তারাই এই বড় কাজটা করে। যে ভালোবাসে, সে বোঝে, একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে রাগের চেয়ে বোঝাপড়াই বেশি দরকার।
শেষ কথা হলো, তুমি যদি কারো জন্য গুরুত্বপূর্ণ হও, সে একবার না একবার তোমার রাগ ভাঙাতে আসবেই। তখন তোমার কাজ হলো, তাকে দূরে ঠেলে না দিয়ে একটু জায়গা করে দেওয়া। একটু শুনে দেখা, একটু কথা বলা— হয়ত সেটাই আবার নতুন করে সবকিছু শুরু করতে সাহায্য করবে।
কারণ সবসময় মনে রাখতে হবে, সবাই রাগ ভাঙাতে আসে না। যেই আসে, তাকে ধরে রাখো।







রাগ ভাঙাতে চাইলে রাগ করে উত্তর দেওয়া আসলে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। রাগ নিয়ন্ত্রণ করা এবং শান্তভাবে কথা বলা সম্পর্কের উন্নতিতে সাহায্য করে। ভালো পোস্ট!রাগের সময় শান্ত থাকা কঠিন, কিন্তু এটাই সবচেয়ে কার্যকর সমাধান। রাগ কমাতে গভীর শ্বাস নেওয়া বা কিছুক্ষণ চুপ থাকার মতো কৌশল ব্যবহার করা যেতে পারে। ধন্যবাদ এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি শেয়ার করার জন্য!
মাঝে মাঝে ছোট ছোট ভুলগুলো সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়। আর সেই সম্পর্কের মাঝে মান অভিমান বেড়ে যায়। তবে যদি কেউ ভুল স্বীকার করে তাহলে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া উচিত।
একেবারে যথার্থ বলেছেন ভাই,ভালোবাসার মানুষ রাগ ভাঙাতে আসলে,রাগ করে থাকা ঠিক না। কারণ ভালোবাসার সম্পর্কে মান অভিমান,রাগারাগি থাকবেই। কিন্তু সেটাকে কেন্দ্র করে দূরত্ব সৃষ্টি করলে,সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।