কঞ্জুস নাটকের রিভিউ।
আজ - ২, মাঘ |১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | শীতকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্ল এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
![Screenshot_2023-01-13-11-48-19-38_f9ee0578fe1cc94de7482bd41accb329.jpg](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmbbn81CmYRCRk5TiWw4aPcBRpjsPSjnd5X4jjTyAVXrWT/Screenshot_2023-01-13-11-48-19-38_f9ee0578fe1cc94de7482bd41accb329.jpg)
ছবিঃস্ক্রিনশট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীঃ
নাম | কঞ্জুস |
---|---|
পরিচালক | মহিদুল মহিম । |
অভিনয় | মুশফিক আর ফারহান, তানজিন তিশা। |
দৈর্ঘ্য | ৪৯.১৭ মিনিট। |
ধরন | শিক্ষামূলক, বাস্তবধর্মী । |
ভাষা | বাংলা। |
মুক্তির তারিখ | ০৩.০১.২০২৩ইং। |
নাটকের সারসংক্ষেপ
তার বড় মেয়ে তার কাছে এসে জামা ছিঁড়ে যাওয়ার ব্যাপারটি বললে। সে তার মেয়ে জামাটির ছিঁড়া অংশটিকে বেঁধে দেয়। তাছাড়া ও তার স্ত্রী নিলুর সাবান শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করাটাতে ও তার আপত্তি। সে মনে করে এটাও এক ধরনের অপচয়। বেশি সাবান শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করলে সেটা তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে। যদিও স্বামীর এসব বিষয়গুলো নিয়ে নিলু খুবই বিরক্ত তা স্বামীর উপর।
বিয়ের পর থেকে আজ পর্যন্ত একটি গামছাই সে ব্যবহার করে আসছে। গামছাটি ছিঁড়ে জালের মত হয়ে গেছে তারপরেও সে এখনো এটিই ব্যবহার করছে। তার কৃপণ স্বামী তাকে একটা গামছা পর্যন্ত কিনে দেয়নি ।এ সকল বিষয় নিয়ে নিলু তার স্বামীর উপর অনেক অভিযোগ।
এরপর দৃশ্য পরিবর্তিত হয় আর আমরা দেখতে পাই তেপাঙ্গির বসে বসে কান পরিষ্কার করছে। আর ওই সময় তার স্ত্রী নিলু আসে এবং সে একটি কটন বাড নিতে চাই কিন্তু এখানেও তার কিপ্টেমি। সে তার স্ত্রীকে নতুন কটন বাড নিতে না দিয়ে বরং তার ব্যবহার করা কটন বাডের অন্য পাশ কেটে দিয়েছে যাতে সে সেটা ব্যবহার করে। এতে নিলু অনেক রেগে যায়।
এরপর নিলু জানায় তার বাবা আসছে গ্রাম থেকে। এটা শুনেই তেপাঙ্গির এর হিচকি শুরু হয়ে যায় । কেননা তার শশুর যদি তার বাসায় আসে তাহলে এতে তার খরচ বাড়বে। তবে নিলু জানাই তার ভয় পাওয়ার কোন কারন নেই কেননা তার বাবা তার বাসায় আসছে না বরং তার বোনের বাসায় আসছে। এতে তেপাঙ্গির কিছুটা স্বস্তি পায়।
এরপর তেপাঙ্গির তার শ্বশুর কে ফোন দিলে জানতে পারে সে স্টেশনে চলে এসেছে এবং অনেক কিছু নিয়ে এসেছে বাড়ি থেকে। এই কথা শুনে, তেপাঙ্গির ওই সকল জিনিস পাওয়ার জন্য শ্বশুরকে তার বাড়ি নিয়ে আসার পরিকল্পনা করে। প্রথমদিকে তার শ্বশুর এতে রাজি হচ্ছিল না বিধায় সে মেয়েদের শিখিয়ে দেই তাদের নানাকে বাড়িতে আসতে বলার জন্য।
এর পরে দৃশ্য পরিবর্তিত হয় আর আমরা দেখতে পাই কৃপণ তেপাঙ্গির তার শশুরের আনা জিনিসগুলো পাওয়ার জন্য শ্বশুরকে তার বাসায় নিয়ে আসেন। অনেক দিন পর নিলু তার বাবাকে দেখে খুবই খুশি হয়। এদিকে দেখা যায় নিলু তার স্বামীকে একটি লিস্ট দিয়ে বলছে এই সকল বাজারগুলো আনার জন্য কেননা তার বাবা অনেকদিন পরে তাদের বাসায় এসেছে। তাই ভালো মন্দ কিছু আয়োজন করবে। কিন্তু এতে কৃপণ তেপাঙ্গির জানায় তার শশুরে আনা জিনিসগুলো রান্না করার কথা। কিন্তু এতে নিলু রাজি হয় না বিধায় কৃপণ তেপাঙ্গির বাধ্য হয়ে যায় বাজারে যায়।
তেপাঙ্গির এর বাবা ফেরার সময় সে তার মেয়েদেরকে শিখিয়ে দেয় তার নানার কাছ চিপস জুস খাওয়ার কথা বলতে। আর এতে তার নানা তাদের টাকা দেই চিপ জুস খাওয়ার জন্য । আর তেপাঙ্গির তার মেয়ে থেকে সেই টাকাটা নিয়ে তার শ্বশুরকে দেয় গাড়ি ভাড়া দেওয়ার জন্য। এবং শশুরের মন জয় করেন।
প্রতিটি বিষয়ে তেপাঙ্গির এভাবে কৃপণতা চলতে থাকে। বাড়িতে কেউ আসলে তাকে নাস্তা না দেওয়া। তার চায়ের দোকানে দুধ চিনি কান দিয়ে চা বিক্রি করা।
এদিকে দেখা যায় নিলু ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বেশ কিছুদিন ধরে তা পেটে ব্যথা হতো। তবে সে এ ব্যথাটিকে গুরুত্ব সহকারে না দেখে বরং গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা হিসেবে হেলাফেলা করে আসছে। এছাড়াও তেপাঙ্গির যেহেতু কৃপণ মানুষ তাই টাকা খরচ হবে বিধায় নিলুকে ডাক্তার দেখানো হয়নি।
তবে হঠাৎ করে একদিন নিলুর পেটে ব্যথা প্রচন্ড বেড়ে যাওয়ায় তারা ডাক্তারের কাছে যাই। ডাক্তার নিলুকে দেখার পর জানায় যে এটি কোন গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা নয়। তার টিউমার হয়েছে এটি অপারেশন করতে হবে তা না হলে অন্য সমস্যা হয়ে যেতে পারে।
খুব দ্রুত তার অপারেশন করতে হবে। আর তার এই অপারেশনের জন্য ২ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। নিলু এই কথা শুনে অপারেশন করতে রাজি না হলেও কৃপণ তেপাঙ্গির অপারেশন করানোর জন্য রাজি হয়ে যায়।
এরপর দেখা যায় তেপাঙ্গির তার নিলুর অপারেশনের টাকা জোগাড় করার জন্য জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। পাড়া-প্রতিবেশী এবং বন্ধু-বান্ধব সকলের কাছ থেকে সেই সাহায্য চাই কিন্তু কেউ তাকে সাহায্য করে না। সকালেই তার এই কৃপণতার জন্য কটাক্ষ করতে থাকে। সে কৃপণ বলে টাকা নিলে হয়তো টাকা দিবে না সে আশঙ্কায় কেউ তাকে সাহায্য করছিল না।
তবে শেষ পর্যন্ত একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম তার চায়ের দোকানটি বিক্রি করে তার স্ত্রীর নিলুর অপারেশন করায়।
এতে নিলু বেশ অবাক হয়ে তার স্বামী তার প্রতি এত ভালোবাসা দেখে। কেন সে সব সময় দেখেছে এসেছে তার স্বামীর কৃপণতা। তবে আজ সে বুঝতে পেরেছে তাই স্বামী কৃপণ হলেও তাকে খুব ভালবাসে ।অন্যদিকে তেপাঙ্গির ও তার ভুল বুঝতে পারে যে তার এতটাই কৃপণতা করা ঠিক হয়নি।
এরপর আমরা দেখতে পাই, একজন লোক এসে জানায় তার জমা দেওয়ার টাকার মধ্যে ১,০০০ টাকা কম। এতদিনে কৃপণতার অভ্যাস এখনো কিছুটা রয়ে গেছে তাই সে ইচ্ছে করে ওখানে ১ হাজার টাকা কম দিয়েছিল। পরবর্তী সে এক হাজার টাকাটা দিয়ে দেয় আর এর মাধ্যমে নাটকটির সুন্দর সমাপ্তি ঘটে।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRsJKf2r9DWRdqqiCgFRUu5YUjJBJQDYwV131Y9fgbQ7K/asa.png)
শিক্ষা
অন্যের বিপদে সাহায্য করলে তবে নিজের বিপদে অন্যরা সাহায্য করবে এটাই স্বাভাবিক। সঞ্চয় করা, মিতব্যয়ি হওয়া ভালো। তবে সব বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত কৃপণতা মোটেও ভালো কাজ নই। সমাজে বাঁচতে হলে সমাজে মানুষগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে তাদের বিপদ-আপদে সাহায্য করতে হবে। যার যা আছে তা দিয়ে অন্যের সাহায্য করতে হয়।
নাটকের চরিত্রে তেপাঙ্গির সে সব সময় প্রতিটি কাজে কৃপণতা করে গিয়েছে। অন্যের কোন সমস্যা কিংবা কাজে সে কখনোই সাহায্য সহযোগিতা করত না। আর যার প্রতিদানে, তার বড় ধরনের সমস্যা হওয়ার পরেও তার পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়স্বজনদের থেকে কোন সাহায্য সহযোগিতা পায়নি।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRsJKf2r9DWRdqqiCgFRUu5YUjJBJQDYwV131Y9fgbQ7K/asa.png)
ব্যক্তিগত মতামত
কিছুদিনের ব্যবধানে দেখলাম নাটকটি মিলিয়ন ভিউ ছাড়িয়ে গিয়েছে তাই ভাবলাম নাটকটি দেখতে হয়তো খুবই সুন্দর হবে। তবে নাটকের মিলিয়ন ভিউ অনুযায়ী নাটকটি আমার কাছে তেমন একটা ভালো লাগেনি। তবে, মুশফিক ফারহান এবং তানজিন তিশার অভিনয় দুর্দান্ত হয়েছে। আর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক টি খুবই সুন্দর ছিল। গল্পটার দিক থেকে আমি মনে করি নাটকটির মধ্যে তেমন কোনো নতুনত্ব নেই।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRsJKf2r9DWRdqqiCgFRUu5YUjJBJQDYwV131Y9fgbQ7K/asa.png)
ব্যক্তিগত রেটিং
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRsJKf2r9DWRdqqiCgFRUu5YUjJBJQDYwV131Y9fgbQ7K/asa.png)
বাহ বেশ চমৎকার একটা নাটকের রিভিউ দিয়েছেন তো ভাই,যদিও নাটকটি দেখা হয়নি। তবে আপনি যেভাবে রিভিউ দিয়েছেন নাটকটি দেখার ইচ্ছা পোষণ করছি। তবে খুব শীঘ্রই দেখে নেব ধন্যবাদ আপনাকে।
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community
মুভি থেকে নাটক দেখতে আমি খুবই পছন্দ করি সেজন্য মাঝে মাঝে নাটক দেখে থাকি। ভাইয়া কঞ্জুস নাটকের রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো সমাজে এই ধরনের লোক অনেক আছে যারা কৃপণতা এত পরিমান করে যেটা পরিবারের সকল সদস্যদের উপর এক প্রকার অত্যাচার করা হয়। যাইহোক, এই ধরনের মন মানসিকতা কখনো একজন মানুষকে বড় করে নাহ এবং ভালো কিছু দেয় না। বর্তমান বাংলাদেশে অর্থনৈতিক যে পরিস্থিতি হয়তো মধ্যবিত্তদের অনেক কষ্টে থাকতে হচ্ছে তবুও তাদের এই ধরনের কঞ্জুস টাইপের মন মানসিকতা নেই। যেটা থেকে অনেক শিক্ষনীয় বিষয় ছিল।
চমৎকার একটি নাটক রিভিউ করেছেন দাদা ৷ আসলে গত কয়েক দিন আগে আমিও এই নাটকটি দেখেছি ৷ আমার কাছে অবশ্য ভালোই লেগেছে ৷ মুশফিক আর ফারহান ও তানজিন তিশার অভিনয় আসলেই ভালো ছিলো ৷তবে ঠিক বলেছেন নাটকটির মধ্যে তেমন কোনো নতুনত্ব নেই ৷ যাই হোক ভালোই লাগলো আপনার রিভিউ পড়ে ৷ ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ভাবে নাটকটি রিভিউ করার জন্য ৷
আমি এই নাটক দেখেছি আর আজ আপনার নাটকের রিভিউ নতুন করে পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। আমার কাছে বাংলা নাটক দেখতে অনেক ভালো লাগে। বাস্তবেও এমন অনেক কৃপণ মানুষ আছে। অতিরিক্ত কৃপণতা ভালো নয়। যদি কখনো বিপদে পড়ে তখন কেউ এগিয়ে আসতে চায় না। আমাদের যেমন আয় করা প্রয়োজন তেমনি পরিবারের সবার চাহিদাও পূরণ করা দরকার। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
কিছুদিন আগে আমিও নাটকটি দেখেছি ভাইয়া। ফারহান ও তানজিন তিশার অভিনয় আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। একটা কথা ঠিক অন্যের বিপদের সাহায্য করলে পরবর্তীতে নিজের বিপদে সাহায্য পাওয়া যায় । ধন্যবাদ আপনাকে দাদা কঞ্জুস নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Hi @moh.arif,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.
Come and visit Italy Community
নাটকটি আমিও দেখেছি বেশ মজার। তাদের অভিনয় গুলো বেশ ভালো লেগেছে। বাচ্চা গুলোও বেশ কিউট ছিলো।🤣।এটা ঠিক মিতব্যয়ী আর সঞ্চয় করা উচিত তবে অতিরিক্ত কৃপনতা ভালো না।আর সাধ্য অনুযায়ী সকলের বিপদে সাহায্য করা আমাদের সকলেরই উচিত,এতে করে অন্যান্যরা আমাদের বিপদে এগিয়ে আসবে।ধন্যবাদ
নাটকটি আমি দেখেছিলাম। নাটকটি দেখে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। বাংলা নাটক গুলো মাঝেমধ্যে দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। তবে বাস্তবে এরকম কৃপণতা আমার কাছে একদমই ভালো লাগেনা। অতিরিক্ত কৃপণতার কারণে তার বিপদে তার কাছে কেউ এগিয়ে আসেনি। আমি মনে করে যেমন আয় করা উচিত । তেমনি পরিবারের চাহিদাগুলো তার পূরণ করা উচিত। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
কঞ্জুস নাটকটি অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যদিও কিছুদিন আগে আমি এই নাটকটি দেখেছি। আমার কাছে মোটামুটি ভালই লেগেছে। আসলে বাংলা নাটকের মাঝে নতুনত্ব। না আসলে ভালো লাগে না। তবে একটি শিক্ষনীয় বিষয় ছিল যে অন্যের বিপদে সাহায্য করলে নিজের বিপদে অন্যরা পাশে দাঁড়ায়। নাটকের রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। আর তানজিন তিশা ও ফারহান দারুন অভিনয় করেছে।