শরতের কাশফুল।steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আজ - ৭ই ভাদ্র |১৪৩০ বঙ্গাব্দ, | শরৎকাল |


আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।




grass-3765172_1280.jpg
ছবি এখান হতে নেওয়া হয়েছে।

কেমন আছেন সকালে? আশা করছি ভাল আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। এখন বাংলা ঋতুতে শরৎকাল চলছে। আসলে এই শরৎকালের সৌন্দর্য শুধুমাত্র কবিদের কবিতায় প্রকাশ পায়। বাস্তবে এই শরৎতের সৌন্দর্য দেখাটা অনেকটা আকাশ কুসুম কল্পনার মত। কেননা আমাদের ইট পাথরের শহরগুলোতে থেকে এই শরতের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় না। সত্যি শরতের আগমনের কোন প্রতিফলন আসলেই চোখে পড়ছে না। মনে হচ্ছে সেই গতানুগতিক চিরচেনা ওয়েদারের মতোই রয়েছে সবকিছু। শুধুমাত্র নামেই ঋতুর পরিবর্তন ঘটেছে তবে প্রকৃতির কোন পরিবর্তন ঘটে নিই।

আসলে প্রকৃতি সে আগের মতো ষড়ঋতের নব সাজে সেজে ওঠে না। ইট পাথরের শহরে আমার কাছে শুধুমাত্র শীত গ্রীষ্ম কালটাই চোখে পড়ে আর বাকি ঋতুগুলো কিভাবে কিভাবে কেটে যায় বুঝে উঠা যায় না। আসলে বোঝার সেই উপায় নেই যে প্রকৃতি দিন দিনে এতটাই দূষিত হচ্ছে যে তার চিরচেনা সেই সৌন্দর্যে আর ফিরে আসতে পারছিনা।

ছোট বেলায় যখন গ্রামে ছিলাম তখন দেখা যেতো শরৎকাল আসলে কাশফুলের দেখা পাওয়া যেত পুকুরের পাড়গুলোতে। এবং সেই কাশফুল নিয়ে কত কত যে দুষ্টামি, কত যে খেলেছি। কাশফুল ছিড়তে গিয়ে ধারালো ওই ঘাস গুলোতে কত হাত যে হাত কেটেছি তার আর হিসেব নেই। আমাদের পুকুর পারটাতে ওভাবে করে আসলে কাশবন হতো না একটা দুইটা কাশফুল ফুটে থাকতো আর ওগুলো নিয়ে সারাক্ষণ খেলায় মেতে উঠতাম। তবে আমাদের ফুফিদের বাড়িতে বিশাল বড় একটি কাশবন ছিল। আব্বু যখন বাড়িতে ছুটিতে নিয়ে আসছেন এখন আমরা প্রতিবার কয়েকদিনের জন্য হলেও ফুফিদের বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। ফুফিদের বাড়ির ঠিক সামনের রাস্তাটায় বিশাল বড় একটি কাশবন ছিল। আর ওই কাশবন ছিল আমার খুব বেশি পছন্দের একটি জায়গা। আমার এখনো মনে পড়ে ওই কাশবনে আমার খেলা সে সময় গুলোর কথা। আর এই সময়টার কথা সব থেকে বেশি মনে থাকার কারণ হচ্ছে ওই কাশবনে আমি আমার প্রিয় ঘড়িটা হারিয়ে ফেলেছি। অনেক খোঁজাখুরি করেছি তবে আর ফিরে পাইনি।

কালো রঙের লেদারের ওই ঘড়িটা বিদেশ থেকে পাঠিয়েছে মামা। ঘড়িটার হলুদ কালারের লাইট জ্বলতো ভিতরে। খুবই পছন্দের ছিল ঘড়িটা। ওই দিন মনে হয় নতুন পড়েছিলাম ঘড়িটই । আমি শুকনাশাকনা মানুষ তাই ঘড়িটা আমার হাতের তুলনায় অনেক বেশি বড় ছিল তাই খেলার ছলে কখন যে হাত থেকে পড়ে গিয়েছে তা বুঝে উঠতে পারেনি। বাসায় এসে কান্নাকাটি করেছিলাম অনেকেই ঘড়িটার জন্য। তবে কোন লাভ হয়নি বরং আরো উত্তম মাধ্যম কয়েকটি পড়েছিল পিঠের উপর। ঘড়ি কেন হারিয়েছে সেটা নিয়ে। আমাদের বাঙালি মায়েরা যেমন হয় আর কি। মাইরের উপরে আবার মাইর।

আমার একটি কাজিন ছিল ফুপাতো ভাই সম্পর্কে, বয়সে আমার আরো অনেক বড়। আমার ঘড়িটি হারানোর এ বিষয়টি নিয়ে সে আমাকে বড্ড ভয় দেখিয়েছে। ও বলেছিল কাশবনে নাকি সাদা ভূত থাকে সে ভূত নাকি আমার এ ঘড়ি নিয়ে নিয়েছে। ওইটুকু বয়স তাই যে যায় বলতো তাই বিশ্বাস করতাম। এরপর থেকে ওই কাশবনে আমার আর পা পড়েনি। এখন অবশ্য ওই কাশবনটা আর নেই। ওখানে একটি বড় ফ্যাক্টরি হয়ে গিয়েছে।

সব মিলিয়ে আমার কাছে শরতের সৌন্দর্যটা ছিল তখন যখন কিনা প্রকৃতিটাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। খোলা আকাশের নিচে বসে নীল আকাশের সাদা মেঘের ভেলা ভেসে যেতে দেখেছি, শরতের কাশফুল আকাশে উড়িয়েছি দুহাত মেলে।

আজ এ পর্যন্তই, সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। দেখা হবে পরবর্তী দিনে অন্য কোন বিষয় নিয়ে আল্লাহ হাফেজ।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



 last year 

হ্যাঁ ভাই সময়ের সাথে সাথে সবকিছুই কেন জানি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ছোট্টবেলা এই কাশফুল নিয়ে কত খেলাধুলা করেছি বাড়ির আশেপাশে রাস্তার পাশে শরৎকালে কাশফুল ফুটতো। এখন নির্দিষ্ট কোন জায়গা ছাড়া এগুলো আর দেখা যায় না। সেই সোনালী অতীত ফেলে এসেছি। যেগুলো এখন শরৎকালে স্মরণ করা ছাড়া আর কোন কিছুই দেখতে পাই না ভালো লাগলো আপনার অনুভূতিগুলো।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

পড়ছিলাম আপনার আগের দিনের স্মৃতিগুলো। ঘড়ি হারানো নিয়ে কাজিন এর ভয় আরও কত কি। সত্যি কিন্তু আগের দিনে অনেক মজা হতো প্রতিটি ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে চারদিকের পরিবেশ এক বিভিন্ন আমেজে সেজে উঠতো। আর এখন সেই ষড়ঋতুর আর দেখা পাওয়া যায় না। বছরের সবগুলো ঋতুকে যেন একই রকমের মনে হয়।

 last year 

ছোটবেলায় যে যা বোঝায় তাই নীরবে মেনে নেয় সবাই। আসলে শৈশবের স্মৃতিগুলো আনন্দমুখর এবং ভোলার মতো না । যে সময় যেটা হওয়ার কথা সবকিছু সে সময় হচ্ছে না
সময়ের সাথে সাথে সব পরিবর্তনশীল হচ্ছে। কাশফুল আমার অনেক ভালো লাগে। অনেকদিন হলো এ কাশফুল দেখা হয়নি। এই কাশফুলগুলো আমার মনে হয় নদীর পাড়ে বেশি দেখা যায়। আপনার ছোটবেলার ঘড়ি হারানো ও ভূতের কথাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 last year 

আপনার ফুপির বাড়ির সামনে বিশাল কাশবন ছিল।আর সেটা আপনার অনেক পছন্দের।আর যেহেতু নতুন পছন্দের ঘড়িটা কাশবনে হারিয়েছিলেন,তাই আরও বেশি মনে আছে কাশবনের কথা।কাশবনের ভুত আপনার ঘড়িটা নিয়েছিল,তাই এর শাস্তি পেয়েছে ওরা।ওদের বসবাসের স্থানে ফ্যাক্টরি হয়েছে হাহা।ভালো লেগেছে ভাইয়া পোস্টটি ।ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 58482.75
ETH 2615.94
USDT 1.00
SBD 2.42