খাদ্য অপচয় ।

কেমন আছেন সকলে? আশা করছি ভাল আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। দুইদিন ধরে একটু অসুস্থ থাকার পর এখন আগে তুলনায় অনেকটাই সুস্থ। অসুস্থ থাকলেই বোঝা যায় সুস্থ থাকার মূল্য কতটুকু । আসলে কোন কিছু দিয়ে সুস্থতার মূল্য পরিমাপ করা সম্ভব নয়। আমি সব সময় বলি সুস্থতা সকল কিছুর উর্ধ্বে ।

যাইহোক, আজকে ভাবছি একটি ভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো। আজকের বিষয়টা হচ্ছে খাদ্য নিয়ে। কয়েকদিন আগে একটি প্রতিবেদন চোখে পড়ল। ওই প্রতিবেদনটা ছিল খাদ্য নিয়ে আর প্রতিবেদনটা দেখার পর আমার কাছে বেশ অবাক লেগেছে। তাই চিন্তা করলাম কেননা এই বিষয়টি নিয়ে আপনাদের সাথে একটু আলোচনা করি।

যে পরিমাণ খাদ্য বা শস্য মাঠে উৎপাদন করা হয় ঠিক ওই একই পরিমাণ খাদ্য কিন্তু কখনো আমাদের খাবার টেবিলে এসে পৌঁছায় না। আবার যে পরিমাণে খাদ্য খাবার টেবিলে এসে পৌঁছায় ওই খাদ্যটা পুরোপুরি আমরা সব সময় সময় গ্রহণ করি না। মাঠ থেকে আমাদের খাদ্য গ্রহণ করার এই পুরো প্রক্রিয়াটাতেই কিন্তু অনেক খাদ্য অপচয় হয়ে যায় । এ প্রক্রিয়াটাতে ইচ্ছাকৃত বা আনিচ্ছাকৃত যেভাবেই হোক না কেন খাদ্য কিন্তু ঠিকই অপচয় হয়। আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে বাংলাদেশের মতো এমন একটি দেশেও এক কোটি ছয় লাখ টন বছরে খাদ্য অপচয় হয়। আর এই বিষয়টি ২০২১ সালের ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স নামের একটি রিপোর্টে প্রকাশ প্রকাশ করা হয়।

আমাদের আগে অনেকেরই ধারণা ছিল শুধুমাত্র উন্নত দেশগুলোতে বুঝি খাদ্য বেশি অপচয় হয়। তবে বিষয়টি সেরকম না উচ্চ , মধ্য এমনকি নিম্ন আয়ে দেশগুলোতেও প্রচুর পরিমাণে খাদ্য অপচয় করা হয়। আর এই খাদ্য অপচয় হওয়ার পিছনের কারণ হিসেবে অনেক কিছুই জড়িয়ে রয়েছে। আর আমাদের মত নিম্ন শ্রেণীর দেশগুলোতে খাদ্যগুলো অপচয় হওয়ার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে, খাবারের সঠিক সংরক্ষণের অভাব। যে কোন খাদ্য যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায় তাহলে কিন্তু অনেক দিন পর্যন্ত খাদ্যগুলোকে ভালো রাখা যায়। এছাড়াও খাদ্যে যথাযথ ব্যবহার না থাকার ফলে খাদ্যের অপচয় হয় অনেক। খাদ্যের যথাযথ ব্যবহার এবং খাদ্যের সঠিক সংরক্ষণ করলে খাদ্য অপচয় অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।

পৃথিবীতে অনেক দেশে কিন্তু দুর্ভিক্ষ লেগেই থাকে। আমরা যে পরিমাণের খাদ্য অপচয় করি আসলে ওই পরিমাণে খাদ্যগুলো দিয়ে কিন্তু এই সকল দুর্ভিক্ষগুলোকে ঠেকানো সম্ভব।

খাদ্যা অপচয় মোটেও কোনো ভালো বিষয় না। আমাদের ইসলাম ধর্মেও কিন্তু এই খাদ্য অপচয় নিয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে। তাছাড়া ও আমার মনে হয় না কোন ধর্মের খাদ্য অপচয়ের এই বিষয়টাকে সমর্থন করেন। আনিচ্ছাকৃতিক খাদ্য অপচয়টা যদি ও এটা আমাদের হাতে নেই তারপরে ও যতটুক সম্ভব সচেতন থাকা যাতে খাবার অপচয় না হয়।

আমাদের অনেকের বাসা বাড়িতেই কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে অনেক খাবার অপচয় করা হয়। সেটা একদমই অনুচিত। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার রান্নার কি প্রয়োজন যদি না সেটি খেতে পারি। আর প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবারটি ফেলে না দিয়ে বরং কাউকে দিয়ে দেওয়া উচিত। এতে খাবার আর অপচয় হবে না।

যাইহোক, আজ এখানে বিদায় নিচ্ছি। সকলে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন দেখা হবে পরবর্তী দিন অন্য কোন বিষয় নিয়ে। আল্লাহ হাফেজ।

সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।

---