নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন ।
আজ- ১৮ ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, শরৎকাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় শক্তি হলো নিজের প্রতি বিশ্বাস। এই বিশ্বাস একবার যদি দৃঢ়ভাবে গড়ে ওঠে, তবে কোনো বাধা বা প্রতিকূলতাই আপনাকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। জীবনের পথে যতই ঝড় আসুক, যতই ব্যর্থতা সামনে আসুক, নিজের প্রতি আস্থা থাকলে সবকিছু জয় করা সম্ভব।
আমরা অনেক সময় বাইরের স্বীকৃতি খুঁজি। মনে করি, মানুষ যদি প্রশংসা করে, যদি কেউ উৎসাহ দেয়, তাহলে আমি কিছু করতে পারবো। কিন্তু সত্যি হলো—অন্যের প্রশংসা বা স্বীকৃতি না পেলেও আপনি আপনার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন, যদি নিজের ভেতরে বিশ্বাস থাকে। নিজের ভেতরের শক্তি যদি জাগিয়ে তুলতে পারেন, তবে সেটাই হবে আপনার সবচেয়ে বড় সম্পদ।
একজন মানুষ ব্যর্থ হয় তখনই, যখন সে নিজের ওপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। পৃথিবীর কোনো মানুষ প্রথম দিনেই সফল হয়নি। প্রতিটি সাফল্যের পেছনে লুকিয়ে আছে অসংখ্য ব্যর্থতা, কষ্ট আর সংগ্রাম। যারা শেষ পর্যন্ত টিকে থেকেছে, তারাই সফলতার আলো দেখতে পেয়েছে। আর এই টিকে থাকার শক্তি এসেছে নিজের ওপর আস্থার মাধ্যমে।
ভাবুন, আপনি একটি লক্ষ্য নিয়েছেন। শুরুতেই হয়তো অনেক বাধা আসবে—মানুষ বলবে আপনি পারবেন না, ব্যর্থ হবেন, সময় নষ্ট হবে। তখন যদি আপনি নিজের ভেতরে বিশ্বাস না রাখেন, তবে অন্যের কথাই আপনাকে থামিয়ে দেবে। কিন্তু যদি মনে করেন—“আমি পারবো, আমি চেষ্টা করবো, যতোবারই পড়ি আবার উঠে দাঁড়াবো”—তাহলে সাফল্য শুধু সময়ের অপেক্ষা।
নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা মানে অহংকার করা নয়। বরং এটি হলো বাস্তবতার সঙ্গে নিজের সামর্থ্যকে চিনে নেওয়া। অহংকার মানুষকে অন্ধ করে দেয়, কিন্তু আত্মবিশ্বাস মানুষকে সঠিক পথে এগিয়ে নেয়। যে মানুষ নিজের ভেতরের শক্তি চিনতে পারে, সে কখনও ছোট হয়ে যায় না।
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এই বিশ্বাসের গুরুত্ব অপরিসীম। পড়াশোনায়, চাকরিতে, ব্যবসায়, কিংবা সম্পর্কের ক্ষেত্রেও যদি আমরা নিজেদের ওপর ভরসা রাখতে শিখি, তবে কোনো বিপদই আমাদের সহজে ভেঙে দিতে পারবে না। নিজের ওপর আস্থা থাকলে অন্যের নেতিবাচক মন্তব্য আপনার উপর প্রভাব ফেলতে পারবে না।
অনেক সময় আমরা ব্যর্থ হলে নিজেকে দোষারোপ করি। মনে করি, আমি কিছুই পারি না। কিন্তু ভুলবেন না, প্রতিটি ব্যর্থতা হলো শেখার সুযোগ। ব্যর্থতা আসলে সফলতার আরেক নাম, কারণ এটি আপনাকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। যারা সত্যিকারের সফল হতে চায়, তারা ব্যর্থতাকে ভয় পায় না। তারা জানে, প্রতিবার পড়ে গিয়ে আবার উঠে দাঁড়ানোই হলো আসল সাফল্যের চাবিকাঠি।
বিশ্বাস আপনাকে আত্মনির্ভরশীল করে তোলে। আপনি যদি নিজের ওপর আস্থা রাখেন, তবে আপনি অন্যের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হবেন না। নিজের কাজ নিজে করতে শিখবেন, নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে শিখবেন। এতে করে আপনি ধীরে ধীরে এক স্বাবলম্বী মানুষে পরিণত হবেন, যিনি জীবনের যেকোনো পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে পারেন।
পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা দেখি, সব বড় অর্জনের পেছনে ছিলো এক অদম্য আত্মবিশ্বাস। বিজ্ঞানীরা, আবিষ্কারকরা, শিল্পীরা—তারা প্রথমে সমাজ থেকে স্বীকৃতি পাননি। বরং সমালোচনা, উপহাস আর অবহেলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু তারা হাল ছাড়েননি। কারণ তারা নিজের ভেতরের বিশ্বাসকে শক্ত করে ধরে রেখেছিলেন। আর সেই বিশ্বাসই তাদের ইতিহাসে অমর করে রেখেছে।
আজকের এই সময়ে যখন প্রতিযোগিতা তীব্র, তখন নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা আরও বেশি জরুরি। অন্যরা কী বললো, কী ভাবলো—তা নিয়ে ব্যস্ত হলে কখনও এগোনো যাবে না। বরং দরকার নিজের শক্তি, নিজের স্বপ্ন আর নিজের সামর্থ্যে ভরসা রাখা। মনে রাখতে হবে, পৃথিবীতে হাজারো মানুষ একই স্বপ্ন দেখে, কিন্তু সফল হয় কেবল তারাই, যারা নিজের ওপর ভরসা রাখে এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও হাল ছাড়ে না।
তাই জীবনে যতই কষ্ট আসুক, যতই সমালোচনা শুনতে হোক, কখনও নিজের ওপর থেকে আস্থা হারাবেন না। প্রতিটি দিনকে নতুন সুযোগ হিসেবে নিন। মনে রাখবেন, আপনি যা ভাবছেন তার থেকেও বেশি শক্তিশালী, আপনি যা কল্পনা করছেন তার থেকেও বেশি সামর্থ্য আপনার ভেতরে আছে। শুধু দরকার সেই শক্তিকে জাগিয়ে তোলা।
নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন। কারণ আপনি যদি নিজেকে বিশ্বাস না করেন, তাহলে কেউই আপনাকে বিশ্বাস করবে না। আর যদি নিজের ভেতরের আলোকে চিনে নিতে পারেন, তবে সেই আলো একদিন আপনার জীবনকে আলোকিত করে তুলবে।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

VOTE @bangla.witness as witness

OR
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community