আমি তোমাকে যেভাবে চাই তুমি ও আমাকে সেভাবে চাইতে হবে ।
আজ- ২২ ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, শরৎকাল
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।
ভালোবাসা মানুষের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর এবং সবচেয়ে গভীর অনুভূতি। যখন আমরা কাউকে ভালোবাসি, তখন আমাদের প্রত্যাশা থাকে সেই মানুষটিও আমাদের একইভাবে ভালোবাসবে। মনে হয়, আমি যেমন করে তোমাকে চাই, যেমন করে তোমার জন্য সবকিছু করতে চাই, তুমিও আমাকে তেমন করেই চাইবে, আমার জন্য সবকিছু করবে। কিন্তু বাস্তব জীবনে সবসময় বিষয়টি এমন হয় না। আর সেখান থেকেই জন্ম নেয় কষ্ট, অভিমান আর দূরত্ব।
ভালোবাসার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সমতা। একটি সম্পর্ক তখনই সুন্দর হয় যখন দুজন মানুষ সমানভাবে একে অপরকে চায়, বোঝে এবং সময় দেয়। আমি যদি প্রতিদিন তোমার খোঁজ নেই, তোমার খেয়াল রাখি, তোমার সুখ-দুঃখে পাশে থাকতে চাই, অথচ তুমি যদি নির্লিপ্ত থাকো, তবে সেই সম্পর্ক ধীরে ধীরে ভারসাম্য হারাবে। সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট হলে সেখানে ভালোবাসা টিকে থাকলেও শান্তি টিকে থাকে না।
অনেক সময় একজন মানুষ নিজের ভালোবাসাকে প্রকাশ করতে পারে না। সে হয়তো ভেতরে ভেতরে অনেক ভালোবাসে, কিন্তু বাইরে থেকে নিরাসক্ত মনে হয়। আমি চাই তুমি আমাকে সেভাবেই প্রকাশ করো, যেমনভাবে আমি করি। কারণ ভালোবাসা শুধু মনে রাখলেই হয় না, সেটি প্রকাশ করাও জরুরি। প্রকাশের মাধ্যমেই আমরা একে অপরকে অনুভব করতে পারি।
অন্যদিকে অনেক সময় জীবনের ব্যস্ততাও আমাদের চাওয়ার সমানতা নষ্ট করে দেয়। আমি হয়তো সবসময় সময় দিতে চাই, কিন্তু তুমি হয়তো ব্যস্ততার কারণে তা পারো না। কিন্তু তখন অন্তত প্রয়োজন সামান্য চেষ্টা। কারণ চেষ্টার মাধ্যমেই বোঝা যায় তুমি আমায় কতটা চাও। ভালোবাসায় ছোট ছোট চেষ্টা অনেক বড় পরিবর্তন আনে।
আমি যদি চাই তুমি আমার কথা শুনবে, তবে আমাকেও তোমার কথা শুনতে হবে। আমি যদি চাই তুমি আমার কষ্ট বুঝবে, তবে আমাকেও তোমার কষ্ট বুঝতে হবে। একপাক্ষিক প্রত্যাশা সম্পর্কের ভিত্তি দুর্বল করে। যেমন একটি চেয়ার দাঁড়াতে চারটি পায়ের দরকার, তেমনি একটি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে দুজন মানুষের সমান অবদান প্রয়োজন।
ভালোবাসা কেবল নেওয়ার নাম নয়, এটি দেওয়ারও নাম। আমি যদি সবসময় দিই আর তুমি যদি কেবল নাও, তবে একসময় ক্লান্তি এসে যাবে। আমি চাই তুমি যেমনভাবে আমার হাত ধরো, আমিও যেন তেমনভাবেই তোমার হাত ধরতে পারি। সমানভাবে চাইলে সম্পর্ক হয় দৃঢ়, দীর্ঘস্থায়ী এবং শান্তিময়।
অনেক সম্পর্ক ভেঙে যায় শুধু এই অসমতার কারণে। একজন ভাবে—আমি এত কিছু দিচ্ছি, অথচ সে আমাকে একইভাবে চাচ্ছে না। অপরজন ভাবে—আমি তো ভালোবাসি, তবে সবসময় প্রকাশ করতে হবে কেন? এই ভিন্ন বোঝাপড়াই জন্ম দেয় দূরত্ব। অথচ যদি দুজনই একটু চেষ্টা করত, একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করত, তবে ভুল বোঝাবুঝি জায়গা পেত না।
একটি সম্পর্ক তখনই পূর্ণতা পায় যখন সেখানে ভালোবাসা, বিশ্বাস, বোঝাপড়া এবং সমান চাওয়ার জায়গা থাকে। আমি তোমাকে যেমন চাই, তুমি যদি আমাকে সেভাবে না চাও, তবে আমি একসময় একা বোধ করব। আর একাকীত্বের ভেতরে ভালোবাসা ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যেতে থাকে।
তবে ভালোবাসা কখনোই একতরফা থাকা উচিত নয়। একতরফা ভালোবাসা হয়তো কোনো কোনো সময় আত্মত্যাগের আনন্দ দেয়, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে তা কষ্ট ছাড়া কিছুই দেয় না। তাই ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে দুজনকেই সমানভাবে একে অপরকে চাইতে হবে।
সকলকে ধন্যবাদ অনুচ্ছেদ টি পড়ার জন্য।


250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

VOTE @bangla.witness as witness

OR
This post has been upvoted by @italygame witness curation trail
If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness
Come and visit Italy Community