প্রিয় পরিবার " নাটকের সম্পূর্ণ রিভিউ।
আজ - ২৬ই, বৈশাখ |১৪৩০ বঙ্গাব্দ, | গ্রীষ্ম-কাল |
আসসালামু-আলাইকুম। আদাব - নমস্কার। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্ল এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন।

ছবিঃস্ক্রিনশট এর মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।
নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলীঃ
নাম | প্রিয় পরিবার। |
---|---|
পরিচালক | রুবেল হাসান। |
অভিনয় | অপূর্ব, তারিন, শাওন, চমক, মাহিমা, রুবেল |
দৈর্ঘ্য | ১ ঘন্টা ৭ মিনিট। |
ধরন | পারিবারিক । |
ভাষা | বাংলা। |
মুক্তির তারিখ | ২৫.০৪.২০২৩ইং। |
নাটকের সারসংক্ষেপ
এদিকে তার এত দিনের পুরানো অভ্যাস সে এখনো ত্যাগ করতে পারেনি। তাই ঘুম থেকে উঠেই রেডি হয়ে নিয়েছে অফিস যাওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু সে তো ভুলেই গিয়েছে রিটারমেন্ট এর কথা। এদিকে সে তার পেনশনের টাকাগুলো নিয়ে ভাবছে একটি বাড়ি করবে যাতে তার তিন ছেলে মেয়ে গুলো একই ছাদের নিচে থাকতে পারে। সে তার বড় ছেলেকে নিয়ে তাদের কেনা জমিতে যায়। কিন্তু জমিটি যেহেতু শহর থেকে কিছুটা দূরে তাই তার ছেলে এই জমিতে বাড়ি করার বিষয়টি নিয়ে একটু নারাজ।
এদিকে কয়েক দিন ধরে আরিফ সাহেবের শরীরটা কিছুটা খারাপ লাগছে চোখে ঝাপসা এবং মাথা ঘুরাচ্ছে । তাই সে তার পরিচিত ডাক্তার বন্ধুর কাছে যায়। কিন্তু তার ডাক্তার বন্ধু তাকে মাথায় ডাক্তার দেখাতে বলে। কিন্তু সে এই বিষয়টিকে একদমই অবহেলা করে।
এদিকে আরিফ সাহেবের বড় ছেলে বিয়ের দিন এসে হাজির হয়। বিয়েতে সকলে বেশ আনন্দ বিনোদন করলেও আরিফ সাহেবের তখন কিছুটা খারাপ লাগছিল। কিন্তু তার এ খারাপ লাগার বিষয়টি সে কাউকে বলছিল না কেননা সে চাইছিল না তার জন্য যাতে সকলে আনন্দটা কমে যাক। এদিকে হঠাৎ করে সে সকালের সামনে মাথা ঘুরে নিচে পড়ে যায়। এবং সঙ্গে সঙ্গে তার ছেলে মেয়েরা তাকে বিছানায় শুয়ে দেই এবং ডাক্তার নিয়ে আসে। কিছুক্ষণ পর আরিফ সাহেবের জ্ঞান ফিরলে সে জানায় তাকে নিয়ে এত ব্যস্ত হওয়ার কিছু নেই সে ঠিক আছে।
তার এমন অসুস্থতার কারণে তাকে পরবর্তীতে বড় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ডাক্তার তাকে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা দেয় এবং সাথে কিছু ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। কিছুদিন পর যখন রিপোর্ট গুলো বের হয় তখন আরিফ সাহেবের শালা রিপোর্টগুলো আনতে গিয়ে জানতে পারে তার ব্রেন ক্যান্সার। আর তার এমন রোগের কথা যখন তার স্ত্রী এবং সন্তানরা জানতে পারে তখন তারা খুবই ভেঙে পড়ে। তারা প্রথমে চেয়েছিল তাদের বাবার এই অসুস্থতার কথা যেন তাদের বাবাকে না জানানো হয় কিন্তু সকলের মন খারাপ দেখে আলিফ সাহেব বিষয়টি বুঝে যায়।
এদিকে দিন কাটতে থাকে আরিফ সাহেব অসুস্থতাও বাড়তে থাকে। সে যেহেতু ক্যান্সারের রোগী তাই তার চিকিৎসার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মধ্যবিত্ত পরিবার তারা তাই তাদের এই সকল অর্থগুলো জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিন্তু কোন ভাবেই তার বাবাকে তারা চিকিৎসা হীন অবস্থায় রাখবে না যত কষ্টই হোক না কেন শেষ পর্যন্ত তারা চালিয়ে যাবে। তাদের বাবার চিকিৎসার জন্য অর্থ জোগাড় করতে তারা এক এক করে তাদের সকল শখের জিনিসগুলো বিক্রি করে দিচ্ছে। প্রত্যেকে প্রত্যেকের মত চেষ্টা করছে তার বাবা চিকিৎসার জন্য অর্থের জোগাড় করার। কিন্তু আরিফ সাহেব চাইনা তার চিকিৎসার জন্য এতগুলো টাকা খরচ করার মধ্যে দিয়ে সে তার পরিবারকে এভাবে পথে বসাতে ।
তাই সে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করে তাকে যেন নিয়ে যাওয়া হয়। সে মৃত্যুর আগে তার সম্পত্তিগুলো তার ছেলে মেয়ের নামে দলিল করে দিয়ে গেছে যাতে চাইলেও তারা বাবার চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করতে না পারে। কেননা তিনি জানতেন যখন কোন উপায় থাকবে না তখন তার সন্তানরা চিকিৎসার জন্য এই জমিটি বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে । তাই সে আগে থেকে তার শালাকে দিয়ে এই দলিল করে নিয়েছেন। যাতে তার সন্তানরা এমন কাজ করতে না পারে। এবং সে তার সন্তানদের জন্য একটি চিঠি লিখে দিয়ে যান যেখানে তিনি লিখেছেন -"প্রিয় পরিবার, যখন তোমরা আমার এই চিঠিটি পাবে তখন হয়তো তোমরা কোন এক কঠিন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে থাকবে, তার সময় এখানে শেষ। এছাড়াও সন্তানদের উদ্দেশ্য করে সে আরো কিছু কথা লেখেন এবং সর্বশেষ তিনি বলেন তাদের মাকে তারা যেন দেখে রাখে কেননা তার চোখে সব থেকে ধৈর্যশীল একজন নারী হচ্ছে তাদের মা।
এইবার দেখা যায় কিছুদিনের মধ্যে আরিফ সাহেব মারা যান। এবং তার সন্তানরা ও পুত্রবধূ নাতনি এবং স্ত্রী সকলে মিলে তাদের বাবার কবর জিয়ারত করছে। আর এখানে নাটকের সমাপ্তি ঘটে।

শিক্ষা
এই নাটকে দেখানো হয়েছে সুন্দর একটি পরিবারের গল্প। যেখানে প্রত্যেক সদস্যই চেষ্টা করেছে তাদের পরিবারটাকে আগলে রাখার। একটি পরিবারের মাথা হচ্ছে তাদের সন্তানদের বাবা। সে বাবা প্রচন্ড অসুস্থতার মধ্যে দিয়ে নিজের মৃত্যুকে সুন্দর ভাবে মেনে নিয়েছে তার পরিবারের সুখের আশায়। তাদের বাবা মৃত্যুর শেষ দিনটা পর্যন্ত ভেবেছে তার এই প্রিয় পরিবারের কথা ।

ব্যক্তিগত মতামত
নাটকটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এই নাটকটিতে যারা অভিনয় করেছে তারা প্রত্যেকে আমার খুবই পছন্দের আর্টিস্ট। তাদের অভিনয়গুলো বরাবরের মতো ভালো ছিল। আর এই নাটকটি দেখতে কেন জানি আমার নিজের পরিবারের কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। আমি মনে করি এ নাটকটি অনেক পরিবারের একটি বাস্তব চিত্র। পরিবারের সকল সদস্যদের নিয়ে কোন একটি নাটক দেখতে চান তাহলে আমি বলব এ নাটকটি দেখতে পারেন আশা করছি আপনাদের ও ভালো লাগবে। আর যারা নাটকটি দেখেছেন তারা জানাবেন আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে।

ব্যক্তিগত রেটিং

Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
যেহেতু পরিবার নিয়ে নাটকটির সারমর্ম,তাহলে পরিবার নিয়েই দেখার মতো নাটকই হবে।আপনার করা প্রিয় পরিবার নাটকটির রিভিউ পোস্ট অনেক ভালো লেগেছে ভাইয়া। খুব সুন্দর করে নাটকটির রিভিউ আপনি সাজিয়েছেন।এটা দেখে যে কোনো নাটক দেখার আগ্রহ এমনিতেই অনেকটা বেড়ে যাবে সবার।আমারও আগ্রহ বেড়ে গেল নাটকটি দেখার।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর রিভিউ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
একটি পরিবারের বাবা মায়ের দায়িত্বটা থাকে অনেক বেশি। তারা পরিবারকে কিভাবে আগলে রাখবে সেই চিন্তা ভাবনায় তাদের মাথায় সবসময় ঘুরপাক খায়। আসলে সেই বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছি। এই নাটকের রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে । নাটকটি সময় পেলে দেখার চেষ্টা করব।
ভাইয়া, খুবই চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন আপনি। নাটকের রিভিউটি ভরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আরিফ সাহেব মৃত্যুর আগে তার সম্পত্তি গুলো তার সন্তানদের নামে দেওয়ার বিষয়টা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আসলে তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পরিবারের সকলের কথা চিন্তা করেছেন। খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।