সৌন্দর্যের রানী পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার তথ্যপট

in Beauty of Creativitylast year

খাগড়াছড়ি জেলা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি পার্বত্য জেলা। এর প্রশাসনিক শহর হলো খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ি জেলা এলাকাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। এখানে বান বন এবং নদীর ঝর্ণার মধ্যে বিচরণ করতে পারেন।

খাগড়াছড়ি প্রাচীন নাম ছিল “তারক”, খাগড়াছড়ি মূলত একটি নদীর নাম। খাগড়াছড়ি শহরে বুক চিরে বয়ে গেছে একটি ছড়া নদী এই ছড়া নদীর দু’পাড়ে খাগড়া বন থাকায় পরবর্তী কালে তা পরিষ্কার করে জনবসতি গড়ে উঠে। তখন থেকেই এটি খাগড়াছড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে।

bbb.jpg

১৯৮৩ সনের ৭ই নভেম্বর খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা গঠিত হয়। ২২.৩৮ডিগ্রী হতে ২৩.৪৪ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ ও ৯১.৪২ ডিগ্রী হতে ৯২.১১ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এর অবস্থান। পাহাড়, ছোট ছোট নদী, ছড়া ও সমতল ভূমি মিলে এটি একটি অপরূপ সৌন্দর্য্যমন্ডিত ঢেউ খেলানো এলাকা। চেঙ্গী, মাইনী ও ফেণী প্রভৃতি এ জেলার উল্লেখযোগ্য নদী। এ ছাড়াও এতে রয়েছে ৩৩৬৮টি পুকুর, জলাশয় ও দীঘি যার ৬৭% খাস।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও জাতিসত্তা সমূহের অধিবাসীদের মধ্যে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চংগ্যা, ম্রো, লুসাই, বোম, পাংখো, খুমি, চাক, খেয়াং প্রভৃতি উপজাতি রয়েছে। অ-উপজাতীয়দের মধ্যে ৪৮ ভাগ মুসলমান এবং বাকীরা হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। এসব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র জাতিস্বত্তা ও অ-উপজাতীয় জনগোষ্ঠী তাদের নিজ নিজ ভাষা, সাংস্কৃতি, ধর্ম, ঐতিহ্য ও কৃষ্টির কীয়তা বজায় রেখে যুগ যুগ ধরে একে অপরের পাশাপাশি বসবাস করে আসছে।

সরকারি ও কথ্য ভাষা হিসেবে বাংলা প্রচলিত। স্থানীয় চাটগাঁইয়ারা চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলে। এছাড়াও অন্যান্য আদিবাসী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা হিসেবে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা ইত্যাদি প্রচলিত।

চাকমাদের বিঝু উৎসব, মারমাদের সাংগ্রাই উৎসব এবং ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসব উল্লেখযোগ্য। এছাড়া প্রত্যেক ধর্মের লোকেরা আলাদা আলাদা ধর্মীয় উৎসব পালন করে থাকে।

image01.jpg

জেলার উত্তর ও পশ্চিমে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে চট্টগ্রাম ও রাঙ্গামাটি জেলা এবং পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলা অবস্থিত। মোট আয়তন ২৬৯৯.৫৫ বর্গ কিলোমিটার। গ্রামের সংখ্যা ৩৫৩, ইউনিয়ন-৩8টি, উপজেলা-০৯টি, থানা-০৯টি, পৌরসভা-০৩টি।

খাগড়াছড়ি জেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক। সব ধরনের যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়। এছাড়া ঢাকা থেকে মীরসরাই- বারাইয়ার হাট হয়ে রামগড় সড়ক হয়ে সরাসরি খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। তবে খাগড়াছড়ি জেলার সাথে রেল ও আকাশ পথে যোগাযোগের ব্যবস্থা নাই।

IMG_20210204_122859.jpg

উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান:

  1. আলুটিলা পাহাড়ের রহস্যময় সুড়ঙ্গ
  2. নুনছড়ি মৌজার দেবতা পুকুর,

IMG_20210204_124726.jpg

  1. রিছাং ঝর্ণা,
  2. ঐতিহাসিক রামগড় (ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস্ বর্তমান বিডিআর এর প্রথম হেডকোয়ার্টার),
  3. রামগড় লেক,
  4. পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের খামার
  5. শান্তিপুর অরণ্য কুটির, পানছড়ি
  6. দীঘিনালা সংরক্ষিত বনাঞ্চল
  7. ভগবান টিলা।

IMG_20210204_114657.jpg

উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্রঃ

  1. আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র।
  2. নূনছড়ি দেবতা পুকুর।

03.jpg

  1. খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ পার্ক।
  2. দীঘিনালা সংরক্ষিত বনাঞ্চল।

IMG_20201111_152729.jpg

  1. খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
  2. দুই টিলা ও তিন টিলা, দীঘিনালা।
  3. ভগবান টিলাপ।

IMG_20210221_170358.jpg

পার্বত্য অঞ্চলের রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত অন্যতম আকর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্র সাজেক ভ্যালি তে যাতায়াত করতে হয় খাগড়াছড়ি জেলা দিয়ে।

ভ্রমন পিয়াসুদের জন্য ও প্রকৃতি প্রেমিরা এই জেলায় মন জুড়ানো প্রকৃতির ছোয়া উপভোগ করতে পারবেন।

সকলকে খাগড়াছড়ি জেলায় বেড়াতে আসার আমন্ত্রন রইলো।

সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 58239.61
ETH 2287.71
USDT 1.00
SBD 2.50