বাবার জিবনের গল্প থেকে নেওয়া (পর্ব তৃতীয়)
শিক্ষিত ব্যাক্তির মর্যাদা ও সম্মান সর্বদাই থাকে, সবার মনে,সকল স্থানে। বিশেষ করে দ্বীনি শিক্ষায় আল্লাহ এক বারাক্বাহ দান করেন। বেকার বলে কোন শব্দ নাই।আল্লাহ যে করেই হোক যেভাবেই হোক তার জন্য একটা ব্যবস্থা করে দিবেন রহমতস্বরুপ। তাই জেনারেল শিক্ষার পাশাপাশি দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করা প্রতিটা মুসলমান নরনারীর উপর ফরজ।
আমার বাবা, এখন একজন মাদ্রাসার অসংখ্য শিক্ষার্থীদের শিক্ষক। তার আর এখন আগের মত কষ্ট করে হেঁটে হেঁটে বাড়িতে যেতে হয়না, কারো থেকে টাকা চাইতে হয়না, কারন তিনিও তার কর্মের প্রাপ্য অর্জন করেন। যদিও উচ্চ লেভেলের টাকা পয়সার মত নয়। তবে নিজের বেতন দিয়ে মা বাবাকে সহযোগিতা করতেন, আর জমিয়ে রাখতেন। আমার চাচারা, যারা এখনোও কোন পড়াশোনায় অংশীদার হতে পারেন নি, তারা বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত, একজন কাঠ মিস্ত্রি, আরেকজন তাঁত বস্ত্রের একজন নিম্নমানের কর্মচারী। আর ছোট চাচার বয়স তখন ১৫-১৬ বসর বয়স ছিলো। আব্বু নিজের টাকা খরচ করে তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেন। পরবর্তীতে কুরআন শরীফ মোটামুটি পড়া শিখে গেলে, ধিরে ধিরে পড়াশোনার প্রতি অনীহা চলে আসে। তিনি নাকি পড়াশোনা করবেন না, তার পড়াশোনা করতে ভালো লাগে না। আমার বাবা অনেক চেষ্টা করেছিলো তাকে দিয়ে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত করার, কিন্তু কী আর করার, নিজের ইচ্ছে না থাকলে যা হয় আর কী। যাইহোক, আমার বাবার চাকরীর প্রায় ৭-৮ মাস পর, গ্রামের মুরুব্বি ও পরিবার থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। সময়টি ছিলো আনুমানিক ১৯৯১ সাল। আমার বাবার মাদ্রাসা থেকেও বিয়ের জন্য সবাই আকুতি মিনুতি করেছিলো। যেহেতু তিনি একজন মাদ্রাসার শিক্ষক, ছাত্র গড়ার কারিগর। বিয়ে যেহেতু করতেই হবে, সেই দায়িত্ব টা নিতেও আবার বাবা সক্ষম বলে মনে করেন। তাই আর দেরি না করে, সবাই পাত্রী দেখা শুরু করলো। খুব বেশি দেরি হলো না পাত্রী খুজতে। কারন আমার বাবাকে নিজের এলাকা সহ আশপাশের অনেকে মোটামুটি চেনে জানে। সেটাও আপনারা জানেন কী করনে. ঐ যে বললাম, আগের সময়ে কিন্তু আলেম ওলামা অনেকটাই কম ছিলো, জানা শোনা মানুষ কমই ছিলো, আমাদের এলাকায় ও সেই একই কাহিনি৷ আমার বাবা ব্যতিত কেউ ছিলো না বলতে গেলে৷ যাইহোক, আমাদের গ্রাম থেকে মোটামুটি ৪-৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এক এলাকায়, বলা যায় এক জমিদার বাড়ির মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক হয়। জমিদার এইজন্যই বললাম, কারন জমিজমার অভাব ছিলো না, ছিলো শুধু শিক্ষার অভাব। মেয়েরও বিদ্যালয়ের শিক্ষার অভাব ছিলো, (যিনি হলেন আমার প্রান প্রিয় জননী মা)। যাইহোক আমার নানা, আমার বাবাকে পছন্দ করেন, তার ব্যক্তিত্ব এবং দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য। কারন আমার নানাও একজন স্বল্প পরিমানে দ্বীনি শিক্ষায় অর্জিত ছিলেন। তাই, বাবার আর নানার মধ্যে বোঝাবুঝি অনেকটা ভালো ছিলো, যদিও আমার নানা তখন বয়োবৃদ্ধ ও নানীও বয়োবৃদ্ধা। এভাবেই চললো দেখাদেখি, ভালো লাগা। তারপর দুই পরিবারের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিয়ের সিদ্ধান্তে উপনীত হোন।
আসসালামু আলাইকুম /আদাব
চলবে.......
এই পর্যন্ত লিখেই ইতি টেনে বিদায় নিচ্ছি আপনাদের থেকে, আগামীকাল আবার দেখা হবে ইনশাআল্লাহ। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আসসালামু আলাইকুম / আদাব।
অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার প্রত্যেকটি কথার অনুভব বুঝতে পেরেছি খুবই ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য পেশ করার জন্য।
You had a tough time. But all had moments of joy. Allah will always help you. Moving forward with a smile.
@memamun