কর্নেল আবু তাহের (বীর উত্তম)
আসসালামু আলাইকুম
হ্যালো বন্ধুরা!
কেমন আছেন সবাই। আমি @mamunxxx 🇧🇩 বাংলাদেশ থেকে। আজ আমি শ্রেষ্ঠ দুর্ধর্ষ কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের (বীর উত্তম) সম্পর্কে লিখবো।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দুর্ধর্ষ কমান্ডার কর্নেল আবু তাহের (বীর উত্তম) 🙏
.
পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে একমাত্র বাঙালি অফিসার হিসেবে তিনিই কেবল ''মেরুন প্যারাস্যুট উইং' সম্মাননা পেয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান অবর্ণনীয় ও অবিস্মরণীয়।
নিজের জন্মদিনে ধানুয়া কামালপুর যুদ্ধের রণাঙ্গনে অ্যান্টিপারসনাল মাইন বিস্ফোরণে বাম পা উড়ে গিয়েছিলো তাঁর।
.
১৯৭৬ সালের আজকের দিনে সামরিক আদালতে এক মিথ্যা, প্রহসন ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় এই কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়েছিলো।
.
২১শে জুলাই যখন কর্নেল তাহেরকে জানানো হলো 'আজ আপনার ফাঁসি কার্যকর করা হবে।'
আবু তাহের শুনে সংবাদ বাহককে ধন্যবাদ দিলেন। এরপর সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় তিনি তাঁর খাবার শেষ করলেন। এক হুজুর তাঁকে তওবা পড়াতে এলো।
.
তওবার কথা শুনে কর্নেল তাহের বলছিলেন, 'তোমাদের সমাজের পাপাচার আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। আমি কখনো কোনো পাপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমি নিষ্পাপ। তুমি এখন যেতে পারো, আমি ঘুমাবো।’
.
এরপর তিনি নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে গেলেন। রাত ৩টার দিকে তাঁকে জাগানো হলো। সময় জেনে নিয়ে তিনি দাঁত মাজলেন। তারপর শেভ করে গোসল করলেন।
.
উপস্থিত সবাই তাঁর সাহায্যে এগিয়ে এলে তিনি বললেন,
‘আমি আমার পবিত্র শরীরে তোমাদের হাত লাগাতে চাই না।’ তারপর নিজেই তিনি তাঁর কৃত্রিম পা খানি লাগিয়ে প্যান্ট-জুতা পরে নিলেন। চমৎকার একটা শার্ট পরলেন। ঘড়িটি হাতে দিয়ে মাথার চুল আঁচড়ে নিলেন। তারপর উপস্থিত সবার সামনে আম খেলেন, চা খেলেন এবং সিগারেট খেয়ে সবাইকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন,
.
‘তোমরা এমন মনমরা হয়ে পড়েছো কেন? মৃত্যুর চেহারায় আমি হাসি ফোটাতে চেয়েছিলাম। মৃত্যু আমাকে পরাভূত করতে পারে না।’
কোন শেষ ইচ্ছে আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বললেন,
‘আমার মৃত্যুর বদলে আমি সাধারণ মানুষের শান্তি কামনা করছি।’ এরপর ফাঁসির মঞ্চে আবৃত্তি করেন সেই কবিতা-
.
“জন্মেছি, সারা দেশটাকে কাঁপিয়ে তুলতে, কাঁপিয়ে দিলাম।
জন্মেছি, তোদের শোষণের হাত দুটো ভাঙব বলে, ভেঙে দিলাম।
জন্মেছি, মৃত্যুকে পরাজিত করব বলে, করেই গেলাম
জন্ম আর মৃত্যুর বিশাল পাথর রেখে গেলাম
পাথরের নিচে, শোষক আর শাসকের কবর দিলাম
পৃথিবী, অবশেষে এবারের মতো বিদায় নিলাম।”
.
আজ কর্নেল তাহের হত্যা দিবসে পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করি জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। 🙏 এই বাংলাদেশ যতোদিন থাকবে ততোদিন আপনি অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবেন ক্র্যাচের কর্নেল।