শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি-" পুতুলের বিয়ে নিয়ে ঝগড়া"II written by @maksudakawsar II

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই বেশ ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালো আছি। আর সব সময়ই চাই ভালো থাকতে। কারন নিজে ভালো না থাকলে পাশের মানুষগুলো কে ভালো রাখাটা মুশকিল হয়ে পড়ে। আর তাই তো সব সময়ে ভালো থাকার কাজ করে যেতে হবে। আর ভালো থাকতে বা নিজেকে ভালো রাখতে যে জিনিস গুলো বেশী প্রয়োজন তা হলো নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে সমস্ত অসুস্থ্যতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা। দোয়া করি সবাই যেb সুস্থ এবং সুন্দর জীবন যাপন করতে পারেন।

শৈশব আমাদের জীবনের সাথে এমন করে মিশে আছে যে আমরা হাজার চাইলেও সেই শৈশব কে ভুলতে পারি না। পারি না শৈশব কে দূরে ঠেলে দিতে। শৈশব আমাদের কে বার বার হাতছানি দেয়। চোখের সামনে মেলে ধরে হাজারও স্মৃতি। আর সেই শৈশব কে আকঁড়ে ধরে আজও আমরা বেঁচে আছি।বন্ধুরা আজও চলে আসলম সুন্দর সেই শৈশবের কিছু দূরন্ত পানার স্মৃতি নিয়ে আপনাদের মাঝে।

শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি
" পুতুলের বিয়ে নিয়ে ঝগড়া"

৩০০ ফিটের রাতের দৃশ্যের.png

Banner credit --@maksudakawsar
Canva দিয়ে তৈরি

image.png

বেশ দূরন্ত ছিলাম শৈশবে। কত যে খেলা খেলেছি আমরা সেই শৈশবে সেটা হয়তো কখনও ভুলার নয়। ভুলার নয় সেই পুতুল খেলার দিনগুলো। আমরা ছেলেবেলায় পুতুল খেলায় মেতে থাকতাম। মেতে থাকতাম আনন্দ আর উদ্দীপনায়। আমরা তখন পুতুলের বিয়ে দিতাম বেশ ধুমধাম করে। দুই বান্ধবীর পুতুল কে বিয়ে দিয়ে আমরা হতাম বিয়াইন বিয়াই। আজ তেমনি একটি সুন্দর শৈশবের স্মৃতি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

ছেলেবেলায় পুতুলের বিয়ে নিয়ে যে কত খেলা খেলতাম। দুই বান্ধবী মিলে ঠিক করে নিতাম যে কার ছেলে আর কার মেয়ে হবে। তারপর একদিন ঠিক করে বাকী বান্ধবীদের দাওয়াত করতাম। গায়ে হলুদ হতো, গেইট ধরা হতো এবং বেশ ভালো করে খাওয়া দাওয়া করা হতো। এমনকি গান বাজনাও হতো। বেশ মজা হতো সেই পুতুলের বিয়ের অনুষ্ঠান। আর আমরাও বান্ধবীরা বেশ মজা করতাম। আর পুতুলের বিয়ে দেওয়ার জন্য আগে বাগেই স্কুলের টিফিন হতে টাকা গুছিয়ে রাখতাম। সেই টাকা দিয়েই পুতুলের বিয়ের জন্য কেনাকাটা আর খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করতাম। অবশ্য বাকী কিছু টাকা আব্বার কাছ হতে নিতাম।

থাকেনা বান্ধবীদের মধ্যে এমন একজন যে কিনা বেশ হিংসুটে। তো আমাদের ও তেমন একজন বান্ধবী ছিল যে কিনা বেশ হিংসুটে। কারও ভালো দেখতে পারতো না। তো একবার হলো কি আমার ছেলে পুতুল আর মনির মেয়ে পুতুলের বিয়ে হবে। আমরা সব কিছু গুছিয়ে তৈরি করে নিয়েছি পরদিন সকালে পুতুলের গায়ে হলুদ। আব্বাকে দিয়ে মিষ্টি কিনিয়ে এনেছি। বান্ধবীদের দাওয়াত করা শেষ। লাল নীল জড়ির কাগজ দিয়ে ঘর সাজানো শেষ। এখন শুধু বিয়ে করে মেয়ে পুতুল ঘরে তোলা।

কিন্তু কি হলো জানেন? পরদিন মনি আর আসে না। আমি তো বেশ চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমার এক বান্ধবী কে পাঠালাম বিষয়টি জানতে। কেন মনি এখনও আমার ছেলে পুতুলের গায়ে হলুদ দিতে আসলো না? তো আমার সেই মেয়ে বান্ধবী এসে আমাকে জানালো যে মনি তার পুতুলের সাথে আমার পুতুলের বিয়ে দিবে না। কারন আমি নাকি সব সময় ছেলে পুতুল বানিয়ে সব সুন্দর সুন্দর পুতুল নিয়ে এসে আমার ঘরে সাজিয়ে রাখি। হায় হায় এমন সত্য কি করে জানলো। আরে বুঝলেন না। মনির মাথায় এমন বুদ্ধি কখনও আসার কথা না। আমার সেই দুষ্টু একটি বান্ধবি ছিল না সেই এসব কথা লাগিয়েছে। আর আমার তো গেল মেজাজ গরম হয়ে।গেলাম মনির বাসায়।

বেদম ঝগড়া শুরু করে দিলাম। এমন কি ঝগড়া করতে করতে মনির পুতুলের ঘরের সব সাজানো জড়ি গুলো ছিড়ে কুটি কুটি করে দিলাম। মনি তো অনেক রাগ করলো। এক পর্যায়ে মনি এসে আমার মাথার চুল ধরে মাটিতে ফেলে দিলো আর দুপ দুপ করে মারতে লাগলো। ভাগ্যিস সেদিন আমার মা আর মনির মা দৌড়ে এসেছিল। তা না হলে কি আমি বাচঁতে পারতাম। সেই যে পুতুলের বিয়ে নিয়ে মনির সাথে আমার ঝগড়া সেই ঝগড়া প্রায় ৩-৪ বছর কথা বলা হয়নি। অবশ্য পরে আবার মিলে গিয়েছিলাম।

image.png

শেষ কথা

আচছা বন্ধুরা বলেন তো আমার মত এমন কাহিনী আপনাদের কি আছে? ছেলেবেলায় পুতুলের বিয়ে নিয়ে কি কেউ এমন করে ঝগড়া করেছেন? তবে আমার কাছে কিন্তু আজও সেই সব স্মৃতি গুলো সুখের বার্তা হয়ে ফিরে আসে মাঝে মাঝে।

image.png

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

image.png

Screenshot_1.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 4 months ago 

আমাদের সবার জীবনে এমন স্মৃতি রয়েছে যা কখনও ভোলার কথা না। পুতুল বিয়ে নিয়ে খেলা আমিও অনেক খেলেছি। এখনও মনে পরে কাপড় ও লাল কালো সুতা দিয়ে সুন্দর সুন্দর পুতুল ও পুতুলের চুল বানাতাম। আর মা বাবার কাছে বকা খেতাম তারপরও খাটের নিচে বসে পুতুল বানাতাম। ছেলেবেলার এইরকম আরও হাজারও স্মৃতি রয়েছে। যা প্রতিটি ক্ষনে ক্ষনে মনে পরে। ধন্যবাদ আপু। ছেলেবেলার পুতুল খেলা নিয়ে অনেক সুন্দর করে পোস্টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর এবং সাবলীল মন্তব্যের জন্য।

 4 months ago 

ছোটবেলায় এরকম পুতুল খেলা গুলো আসলে বেশ মনে পড়ে । ছোটবেলার আমরা যেরকম খেলেছিলাম আসলে এখনকার ছেলে মেয়ে খেলা গুলো খেলে না। আপনার গল্পটি পড়ে আমার ছোটবেলার কথা খুব মনে পড়ে গেল। আমরা এরকম কাপড় দিয়ে পুতুল বানাতাম এবং কালো সুতা দিয়ে চুল তৈরি করে পুতুলের বিয়ে দিতাম। আপনার ছোটবেলার পুতুল বিয়ে নিয়ে ঝগড়ায় গল্পটি আমার কাছে পড়ে বেশ ভালো লেগেছে ।ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

ধন্যবাদ আপু এমন উৎসাহ মূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 4 months ago 

বাহ দারুন একটা বিষয় সম্পর্কে ধারণা হলো। আমাদের প্রত্যেকের অতীতের স্মৃতিগুলো সত্যি মনোমুগ্ধকর আর মধুর। যে বিষয়টা জানা ছিল না ঠিক সেই বিষয়টাও জানতে পারলাম আপনার আজকের এই পোষ্টের মধ্যে থেকে। শুধু পুতুলের বিয়ে নয় এভাবে আরো অনেক ঘটনা আমাদের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে। চেষ্টা করবেন আপনি আপনার তরফ থেকে সেই সমস্ত বিষয়গুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরতে, জাস্ট জানতে পেরে খুশি হব। আর আমিও অলরেডি এভাবে আমার অতীতের স্মৃতি স্মরণ করি আপনাদের মাঝে।

 4 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া সব সময় সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।

 4 months ago 

আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন দেখতাম মেয়েরা এভাবে পুতুল পুতুলের বিয়ে দিতো। আমরাও অনেক সময় দাওয়াত খেতে পারতাম। যাইহোক আপনার ছেলে পুতুলের বিয়েটা তাহলে এভাবে ভেঙ্গে দিয়েছিল। পুতুলের বিয়ে ভেঙে দেওয়া নিয়ে দুই বান্ধবী তুমুল ঝগড়াও করলেন। বড়রা না বাঁচালে তো সেদিন হয়তোবা খুনাখুনি হয়ে যেতো😂। যাইহোক পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। শৈশবের এমন মজার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 4 months ago 

ছেলেবেলায় তো সব কিছু নিয়েই ঝগড়া হতো ভাইয়া। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 4 months ago 

ছোটবেলায় আমরাদেরও এরকম বিভিন্ন ধরনের স্মৃতি রয়েছে৷ আজকে আপনি পুতুলের বিয়ে নিয়ে এরকম সুন্দর একটি স্মৃতি শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো৷ আসলে পুতুলের বিয়ে নিয়ে আমরাও অনেক ঝগড়া করতাম৷ আপনার ছেলে পুতুলের বিয়েটা ভেঙ্গে দিয়েছিল৷ এই বিয়ে ভেঙে দেওয়া নিয়ে আপনার দুই বান্ধবী মিলে প্রচুর ঝগড়াও করলেন৷ অনেক ভালো লাগলো আপনার কাছ থেকে সুন্দর পোস্টটি পড়ে৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷

 4 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া এমন সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 4 months ago 

আসলে আপু ছোটবেলার এরকম মজার স্মৃতি আমারও আছে। আমি নিজেও কিন্তু নিজের হাতে পুতুল বানাতাম। তারপর আমার গ্রামের ছোট ছোট বন্ধুদের সাথে পুতুল নিয়ে খেলা করতাম। মাঝে মাঝে পুতুলের বিয়েও দিতাম। আপনার ছোটবেলার বান্ধবীর সাথে পুতুলের যে ব্যাপার নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল, এটা কিন্তু স্বাভাবিক। কারণ ওই সময়টাতে সবাই চায়, যে সুন্দর সাজানো গোছানো পুতুল তার কাছেও থাক। যদিও পুতুলের বিয়ে দিতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ভেঙে গেল বিয়ে, এটা তো অনেক দুঃখের ব্যাপার। হা হা হা....🤭🤭

 4 months ago (edited)

হুম পুতুলের বিয়ে খেলায় ছেলে মেয়ে কোন বিষয় ছিল না। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর এবং সাবলীল মন্তব্যের জন্য।

 4 months ago 

হুম পুতুলের বিয়ে খেলায় ছেলে মেয়ে কোন বিষয় ছিল না।

হ্যাঁ আপু, ঠিক কথা বলেছেন। আমরা সবাই পুতুল খেলার ব্যাপারটা অনেক আনন্দের সাথে খেলতাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 65435.53
ETH 3559.74
USDT 1.00
SBD 2.48