লাইফ স্টাইল- ভাইরাস জ্বরে ডেঙ্গুর ভয় ||lifestyle by @maksudakawsar ||

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

আসসালামু আলাইকুম

ভাইরাস জ্বরে ডেঙ্গুর ভয়

image.png

শুভ বিকেল ভালোবাসার আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবার। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ। সুস্থতা আল্লাহর বড় নেয়ামত। কেবল একজন অসুস্থ ব্যক্তিই বুঝে যে সুস্থতার কত মূল্য। অসুস্থ মানুষ গুলোর জীবন অনেক অসহায়। হাসপাতালে গেলেই বুঝা যায় যে একজন অসুস্থ মানুষ কতটা কষ্ট ভোগ করে। অসুস্থ মানুষের কষ্ট কেউ বুঝতে চায় না। একজন অসুস্থ মানুষের কাছে পৃথিবীটাকে ফ্যাকাসে মনে হয়। অসুস্থ হয়ে উঠার জন্য তার কত যে আকুতি থাকে সেটা কেবল সেই বুঝে। বিছানায় শুয়ে শুয়ে কাতরাতে কার কাছে ভালো লাগে বলেন না?

এই তো আমি নিজেও কয়েকদিন যাবৎ বেশ অসুস্থ্য। আর আমার সবচেয়ে বাজে অভ্যাস হলো অসুস্থ হলেও ডাক্তারের কাছে না যাওয়া। নিজে নিজে পন্ডিতি করে সুস্থ হওয়া। আর এবারও তাই করলাম। অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় রেস্ট নিলাম। জ্বরের জন্য যে ঔষধ প্রয়োজন তা নেওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু তাও আমাকে সেই ডাক্তারের কাছেই যেতে হলো। আর আজ আমি আপনাদের সাথে এই ঘটনাটি নিয়ে কিছু আলোচনা করবো। কেন আমাকে সেদিন ইচেছর বিরুদ্ধেও ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছে। তো চলুন পড়ে আসি আজকের লাইফ স্টাইল পোস্টটি।

image.png

image.png

এই তো গত শুক্রবারে বাসায় একটু বেশী কাজ করা হয়েছে। তার উপর ঠান্ডার কাজও কিন্তু কম করা হয়নি। যার ফল স্বরূপ শনিবার হতে নিজেই উপলদ্ধি করলাম যে শরীরে ঠান্ডার ভাইরাস বাসা বেধেঁছে। আর এই ভাইরাস কে পাত্তা না দিয়ে অফিসে চলেগেলাম। কিন্তু সময় যত গড়াচ্ছে শরীরের অবস্থা একটু করে খারাপ হতে লাগলো। কিন্তু কি করবো ছুটি তো নেওয়ার উপায় নেই। বছরে মাত্র বিশ দিন ছুটি। তাও তার মধ্যে বার দিন শেষ । হাতে আছে মাত্র ৮ দিন। তাই আর ছুটি নিলাম না। কিন্তু আমার ঠান্ডা তো কিছুতেই ভালো হচ্ছে না। তার সাথে শরীর ও জ্বরের জানান দিলো। তাই বাধ্য হয়ে মঙ্গল বুধ দুদিন ছুটি নিলাম। অবশ্য ছুটি নেওয়ার সময় সবাই বলেছিল আমাদের মেডিকেল কলেজ হতে ডাক্তার দেখিয়ে সব চেকাপ করে নিতে। কারন আমাদের জন্য কোন ফি লাগে না।কিন্তু আমি ভাবলাম ঠান্ডা জ্বর রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবে। তাই চলে আসলাম বাসায়।

image.png

image.png

রাতে আমার জ্বর একটু বেড়ে গেল । থার্মোমিটারে ১০০ । তারপর ফোনে এক পরিচিত ডাক্তারের কাছ হতে পরামর্শ নিয়ে নাপা এক্সটেন্ড শুরু করলাম। কিন্তু পরদিন সকালে জ্বরের তীব্রতা আরও বেড়ে গেল। সারাদিন জ্বরের সাথে যুদ্ধ করে রাতে দেখলাম জ্বরটা থেমে গেছে। যাক বাবা তাহলে একটু স্বস্থি পাওয়া গেল। কিন্তু না সেই স্বস্থিই যে হয়ে গেল আমার ভয়ের কারন। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে লক্ষ্য করলাম হাতে আর বুকে রক্ত জমাট বাধাঁ। আমার তো ভয়ে শরীর কেমন করতে লাগলো। কারন এটা তো ডেঙ্গুর লক্ষন। ডেঙ্গু রোগীর হাজার টা সিনটমের মধ্যে এটা একটি। আর এই সিনটমটি কিন্তু বেশ ভয়ানক। তাই আমি এবং আপনাদের ভাইয়া একটু ভয় পেয়ে গেলাম। বাসায় ফোন দিয়ে আমার বোন কে ডাকিয়ে আনলাম। তারপার ঠান্ডা মাথায় চলে গেলাম আমার অফিসে। সিদ্ধান্ত হলো যদি প্রয়োজন হয় ভর্তি হওয়ার তাহলে সেখানেই ভর্তি হয়ে যাবো। তো দেরী না করে চলে গেলাম। রাস্তায় বার বার শরীরের দিকে চেক করছিলাম। দেখলাম হাতের কব্জিতে নতুন করে হয়েছে। চিন্তা আরও বেড়ে গেল।

image.png

image.png

অফিসে পৌঁছে কোন কিছু চিন্তা না করে প্রথমেই আগে চলে গেলাম আমাদের প্যাথলজীতে প্ল্যান হলো আগে ডেঙ্গু টেস্ট করতে দেওয়া। কারন সরকারি হাসপাতালে আবার ১০.০০ আগে ডাক্তার আসে না। তাই ততক্ষনে রিপোর্টটি হতে পেয়ে যাবো। তাই ফ্রি রিসিট কেটে চলে গেলাম পরিচিত কলিগ এর কাছে। তিনি বেশ সুন্দর করে আমার হাত হতে সিরিজের মাধ্যমে রক্ত বের করে নিয়ে আমাকে ১২.০০ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলল। সাধারনত সরকারি হাসপাতাল গুলোতে পরীক্ষা নিরিক্ষার রিপোর্ট পরদিন দেয়। আর প্রাইভেটে ঐ দিন রাতে দেয়। কিন্তু অফিসের স্টাফ হওয়ায় আমাকে ঐ দিন দুপুর ১২.০০ টার মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এই সুযোগে আমি ডাক্তার দেখানোর কাজটা করে নিতে পারবো। এদিকে আমার এ অবস্থা দেখে অফিসের কলিগরা সবাই বকাঝকা করলো অনেক। তাদের কথা আগে কেন শুনলাম না। আগে চেক আপ করালে তো আর এমন হতো না। তারপর আমাদের স্যার একজন মেডিসিন এর অধ্যাপকের কাছে আমাকে পাঠালো। অফিসের পিয়নের সাথে গেলাম সেই স্যার কে দেখাতে।< /p>

image.png

স্যার বেশ মনযোগ দিয়ে আমার কথা শুনলেন এবং তার হাতে রাখা মেশিনটি দিয়ে আমার পেশার এবং বুকের অবস্থা চেক আপ করলেন। তারপর স্যার ঔষধ লেখার পাশাপাশি আমাকে কয়েকটি টেষ্ট করতে দিলেন। যার মধ্যে ডেঙ্গু টেষ্টটি ছিল সবার আগে। আমি স্যার কে ডেঙ্গু টেষ্টের বিষয়ে আশ্বস্থ করলে তিনি আমাকে শুধু এক্স- রে করে তার ফ্লিমটি এবং ডেঙ্গু টেষ্টের রিপোর্ট জরুরী ভিত্তিতে দেখাতে বলেন। তারপর আমি বেশ তাড়াতাড়ি করে এক্স-রে ডিপার্টমেন্টে যেয়ে এক্স-রে করে রিপোর্ট নিয়ে চলে আসি। যদিও সেখানে অনেক ভিড় ছিল। তবুও যেহেতু আমি সেখানকার একজন স্টাফ তাই আমি একটু অগ্রাধিকার পেয়েছিলাম। তারপর দুপুর ১২.০০ টার মধ্যে একে একে হাতে সব গুলো রিপোর্ট পেয়ে গেলাম। আর রিপোর্ট গুলো হাতে পাওয়ার পর আমার মনের ভয় সব দূর হয়ে গেল।আল্লাহর রহমতে সব রিপোর্টই নরমাল । তাই মনের সকল ভয় গুলোও তখন কেটে গেল। পরে ডাক্তার সাহেব কে রিপোর্ট গুলো দেখালে উনি বলেন লাল যে ছোট ছোট রেস, সেটা এলার্জি। তাই তিনি আমাকে ঔষধ লিখে দিয়ে ছেড়ে দিলেন।

image.png

image.png

সব কাজ শেষ করে অফিস থেকে আরও দুদিনের ছুটি নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। আর রাতে যখন বাসায় একা একা শুয়ে ছিলাম তখন ভাবলাম যে আমার এই ভয়টা নিয়ে যতি প্রাইভেট কোন হাসপাতাল যেতাম তাহলে কি হতো? সেখানে তো পরীক্ষা নিরিক্ষা করতেই চলে যেত ৫-৬ হাজার টাকা। যেখানে আমার একটি টাকাও লাগেনি। আসলে বিপদে মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়। সে যাই হোক । বর্তমানে আমার জ্বর কমলেও ঠান্ডার প্রভাব কমেনি। তার উপর তো আবার আছে এ্যাসিডিটি। সব মিলিয়ে শরীরটা মোটামুটি খারাপই যাচেছ। আপনাদের দোয়ার অপেক্ষায় রইলাম

❤️ধন্যবাদ সকলকে❤️

image.png

Add a heading (1).png

image.png

image.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 11 months ago 

আল্লাহর রহমতে সব রিপোর্ট নরমাল এসেছে তাই চিন্তার খুব একটা কারণ নেই। তবে আপনি অনেক ভোগান্তিতে পড়েছিলেন বুঝতে পারছি আপু। আসলে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে গেলে সত্যিই অনেক খারাপ লাগে। আর অসুস্থ অবস্থায় বুঝা যায় সুস্থ জীবনের মূল্য কতটুকু। যাইহোক আপু আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। অনেক অনেক দোয়া রইল আপনার জন্য।

 11 months ago 

জি আপু দোয়া করবেন যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে উঠি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

আপনি বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ। আসলে কোন কিছু নিয়ে আজকাল বসে থাকা ঠিক নয়।আপনি টেস্ট করলেন আর রিপোর্ট সব নরমাল এসেছে জেনে খুব ভালো লাগলো। যাই হোক ভয়ের কিছু নেই কিছুদিন রেস্টে থাকেন ইনশা আল্লাহ ভালো হয়ে যাবেন।

 11 months ago 

জি আপু তাই তো রেস্ট নিচ্ছি। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

জ্বরের কথা আগেই শুনেছি, কিন্তু এত তীব্রতা, সেটা তো জানতাম না আপু। জেনে খারাপ লাগলো। আর আপনি সোহরাওয়ার্দী তেই চাকরি করেন, তাহলে কিন্তু আসলেই শুরুতে অবহেলা করাটা ঠিক হয় নি। আর এ যে ডেংগু না, এটা জেনে ভালো লাগলো। নিজের যত্ন নেন, রেস্ট নেন। জলদি জলদি ফিট হয়ে উঠুন এই প্রার্থনা রইলো।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

জি দিদি আমাকে কিন্তু বেশ সচেতন হতে হত। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

 11 months ago 

এখন সময়টা বেশ একটা ভালো যাচ্ছে না। মানুষ যথেষ্ট জ্বরে ভুগছে বিভিন্ন প্রকার জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। আর এ জ্বর যেন সহজে যাচ্ছে না। দোয়া করি আপু আপনি যেন পূর্ণাঙ্গ সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে সুন্দরভাবে কাজ করতে পারেন। সর্বদা সব বিষয়ে খেয়াল থাকতে হবে যেন কোন প্রকার ঠান্ডা কাশি সৃষ্টি হওয়ার পর যায় গুলো নিজের মধ্যে না আসে। সর্বদা সজাগ থেকে নিজেকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করুন।

 11 months ago 

জি ভাইয়া আপনাদের দোয়াই আমার সম্বল। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59834.01
ETH 2665.66
USDT 1.00
SBD 2.46