লাইফ স্টাইল- অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কিছুটা প্রয়াস ||lifestyle by @maksudakawsar ||
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
শুভ বিকেল ভালোবাসার আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সকলকে। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে শুরু করছি আমার আজকের ব্লগ। আল্লাহর পরে যদি কেউ পৃথিবীর বুকে থেকে থাকে তাহলে তারা হলেন পিতা - মাতা। পিতা- মাতা যদি না চাইতেন তাহলে হয়তো আমরা পৃথিবীর আলো দেখতে পেতাম না। দেখতে পেতাম না এত সুন্দর রঙিন দুনিয়া। আজ পিতা-মাতার জন্যই আমরা এই পৃথিবীকে দেখতে পাচিছ। মহান মহান আল্লাহ তায়ালা পিতা-মাতাকে সর্বোচ্চ সম্মান দেখানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। যার পিতা- মাতা নেই সেই কেবল বুঝে পিতাা- মাতা ছাড়া পৃথিবীটা কতটা অসহায় মনে হয়। আজ কদিন যাবৎ খুব মা কে মনে হচ্ছে। আসলে দুনিয়াতে আমিই সেই অভাগী যে কিনা মাতা-পিতা দুই জনকেই হারিয়েছি। বেশ কিছুদিন যাবৎ মাকে বেশ মনে পরছে। কিছুতেই যেন মাকে ভুলতে পারছিনা। তাই ভাবলাম যে অসহায় মানুষের মুখে একটু হাসি ফুটালে কেমন হয়? আর তাই সিদ্ধান্ত নিলাম কিছু অসহায় মানুষকে একবেলা আহার করাবো।
কিন্ত সমস্যা হলো এতগুলো মানুষের আহরের ব্যবস্থা করা আমার একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। অনেক চিন্তা ভাবনা করে ননাসকে কে খবর পাঠালাম। আর এমন একটি আয়োজনের কথা শুনে ননাসও না করতে পারলেন না। বলার সাথে সাথে রাজি হয়ে গেলেন। তারপর ননাসের থেকে সব মিলিয়ে ৬০-৭০ জন মানষের একবেলা খাওয়ার আয়োজন করার জন্য বাজারের লিস্ট করে নিলাম। যেহেতু হেড বাবুর্চি উনি। ননাসকে তো বড় একটা লিস্ট পাঠিয়ে দিলেন।তো আর কি করার। এই নিয়ে দুদিন যাবৎ বেশ ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটাতে হলো।বাবুর্চি উনি হলে কি হবে সব আয়োজন তো আমাকেই করতে হয়েছে। এই জন্য গতকাল ছুটিতে ছিলাম।
একদিনে তো আর এত বাজার করা সম্ভব নয়। তাই দুদিন সময় নিয়ে বাজার করালাম। প্রথম দিন করা হলো বড় বড় জিনিস গুলোর বাজার। লিস্ট ধরে ধরে বাজার আনলো। আর আমার ব্যস্ততাও বেড়ে গেল। সব কিছু এক হাতে কোটাবাছা আর ধোয়া পাকলা। সাত কেজি মাংস, সাত কেজি চাউল আর সাথে তো অছে আলু পেঁয়াজ। বুঝতেই পারছেন কতটা ব্যস্ত ছিলাম। সে যাই হোক অন্যের মুখের হাসির জন্য না হয় হলো একটু কষ্ট।
দ্বিতীয় দিন পাঠালাম সব মসলার বাজার করার জন্য।ঐদিন লিস্টে ছিল- আলু বোখারাম কাচাঁ মরিচ, রাঁধুনী মসলা, শসা, ঘি, গরম মসলা সহ যাবতীয় মসলার আইটেম। তারপর সব কিছু নিয়ে আসলে আমার ব্যস্ততা অনেক বেড়ে গেল। কারন রাতেই মাংসটা রান্না করে রাখতে হবে। তাই সব কিছু রেডি করে রান্না করতে করতে রাত দেড়টা বেজে গেল। কি আর করার। নিজেকেই তো করতে হবে। এত রাতে কাজের বুয়া পাবো কোথায়? সব কোটা বাছা আর ধোয়া পাকলা করতে করতে কোমর যেন ব্যথা হয়ে আসছিল। অবশেষে রাতে মাত্র দু ঘন্টা ঘুমিয়ে সকাল সকাল আবার উঠে গেলাম।
এদিকে শুক্রবারে ভোরে ঘুম থেকে উঠে লেগে পড়লাম রান্নার কাজে। ধোয়া পাকলার কাজগুলো আমাকে করতে হলো। আর রান্নার সমস্ত কাজ করলো আমার ননাসকে । ধাপে ধাপে তিন পাতিলে রান্না হলো অসহায় মানুষের জন্য তেহারী। তারপর রান্না গুলো কমপ্লিট করা হয়ে গেলে সেগুলো কে প্যাকেট করতে হলো। আর সেখানেও আমি। তারপর সবগুলো কে প্যাকেট করে আলাদা ব্যাগে করে অসহায়দের জন্য পাঠানো হলো। আর এভাবেই কেটে গেলা আমার ব্যস্তময় কয়েকটি দিন।
তবে একটি জিনিস কিন্তু উপলব্দি করলাম। অন্য কে খাওয়ানোর মাঝে কিন্তু বেশ আনন্দ আছে। আর সেটা যদি হয় কোন অসহায় মানুষ। মনের ভিতর কেমন যেন একটি প্রশান্তির স্রোত বয়ে যাচেছ। আপনাদের কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু। আজ এখানেই শেষ করছি। আবার আসবো আপনাদের মাঝে নতুন কিছু নিয়ে। সে পর্যন্ত সকলে ভালো থাকবেন।
tweeter
আসলে যাদের বাবা-মা এই পৃথিবীতে বেঁচে নেই, সে বাবা-মায়ের কথা তো মনে পড়বে। আপনার ননাস আপনাকে আপনার উদ্যোগে সাহায্য করেছিল এটা জেনে ভালো লাগলো। অসহায় মানুষের মুখে এক বেলা খাবার তুলে দেওয়ার জন্য এবং হাসি ফোটানোর জন্য আপনারা অনেক কিছুই করেছেন। আলাদা আলাদা প্যাকেটের মাধ্যমে অসহায় মানুষদের জন্য এগুলো পাঠানো হয়েছে এটা জেনে ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করায়।
যাদের মা-বাবা দুনিয়া থেকে চলে গিয়েছেন তারাই জানেন এদের মর্ম কতটা বেশি। মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আপনি চেষ্টা করেছেন এটা দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনি সাইট থেকে ৭০ জন অসহায় মানুষকে খাবার খেতে দিয়েছেন এটা খুবই মহৎ একটা কাজ। এটা ঠিক কথা মানুষদের খাওয়ানোর মধ্যে অন্য রকমের একটা মজা রয়েছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
আপু মা হারিয়ে গেলেও মাকে ভুলে থাকা আসলে যায়না।আমাদের প্রতিটি কাজে,কথায় মা-বাবা বিশেষ করে মা চলেই আসেন।এই মাকে ভোলা আসলে সম্ভব নয়।মাকে মনে করে গরীব অসহায় মানুষদের মাঝে আহারের ব্যবস্থা করেছেন জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। আসলে এতো কিছু একার করা সম্ভব নয়। তাইতো ননাসকে খবর দিলেন।আর এ ধরনের কাজে কেউ আসলে না এসে পারেনা।আপনি সব জোগাড় করে দিলেন, উনি রান্না করলো।খুব ভালো লাগলো জেনে।আশাকরি সবাই খুব মজা করেই খেয়েছে।এ ধরনের কাজ আরো করবেন এমনটা ই প্রত্যাশা করি।আল্লাহ আপনার মাকে বেহেশত নসীব করুন,আমিন।
জি আপু দোয়া করবেন এভাবেই যেন অসহায় মানুষগুলোর পাশে থাকতে পারি। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।