শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি- রমজানে ভোরে ঘুম ভাঙ্গাতো যেভাবে II written by @maksudakawsar II
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই বেশ ভালো আছেন। আমিও বেশ ভালো আছি। আর সব সময়ই চাই ভালো থাকতে। কারন নিজে ভালো না থাকলে পাশের মানুষগুলো কে ভালো রাখাটা মুশকিল হয়ে পড়ে। আর তাই তো সব সময়ে ভালো থাকার কাজ করে যেতে হবে। আর ভালো থাকতে বা নিজেকে ভালো রাখতে যে জিনিস গুলো বেশী প্রয়োজন তা হলো নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া এবং স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে সমস্ত অসুস্থ্যতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা। দোয়া করি সবাই যে সুস্থ এবং সুন্দর জীবন যাপন করতে পারেন।
শৈশব আমাদের জীবনের সাথে এমন করে মিশে আছে যে আমরা হাজার চাইলেও সেই শৈশব কে ভুলতে পারি না। পারি না শৈশব কে দূরে ঠেলে দিতে। শৈশব আমাদের কে বার বার হাতছানি দেয়। চোখের সামনে মেলে ধরে হাজারও স্মৃতি। আর সেই শৈশব কে আকঁড়ে ধরে আজও আমরা বেঁচে আছি।বন্ধুরা আজও চলে আসলম সুন্দর সেই শৈশবের কিছু দূরন্ত পানার স্মৃতি নিয়ে আপনাদের মাঝে।
শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি
"রমজানে ভোরে ঘুম ভাঙ্গাতো যেভাবে"
শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি
"রমজানে ভোরে ঘুম ভাঙ্গাতো যেভাবে"
ছেলেবেলাটা কেটেছে আনন্দ আর উদ্দীপনায়। কিন্তু বড় হয়ে যে এমন কষ্টগুলো কোথা হতে উড়ে উড়ে আসছে সেটাই তো বুঝি না। সে যাই হোক। ছেলেবেলা যেহেতু সরকারি কোয়াটারে কেটেছে। আর সেই সুবাদে বেশ আনন্দঘন কিছু স্মৃতিও রয়েছে জীবনে। আর সেই স্মৃতিগুলো আজ হাত বাড়িয়ে ডাকে বারে বারে পিছনে।এই তো চলছে রমজান মাস। আর এই রমজানে কত যে স্মৃতি মনের মাঝে বার বার ভেসে উঠে সেটা হয়তো বলে বুঝানো যাবে না। রমজান আসলেই কোয়াটারে শুরু হতো বিভিন্ন আয়োজন
কোয়াটারের একদল বড় ভাইরা রমজান মাস আসলেই দু তিন দিন আগ হতে বিভিন্ন জনপ্রিয় গান গুলোর কথা পরিবর্তন করে অনুশিলন করতো। তবে সেই সব গানের সুর কিন্তু একই রকমের থাকতো। শুধু গানের কথা গুলো পরিবর্তন হতো। এই যেমন- যদি রোজা রাখো গো তবে সোয়াব পাবে গো, উঠো উঠো রোজা রাখো। এরকম আরও অনেক গানের কলির পরিবর্তন করা হতো। যাতে করে কোয়াটারের মানুষ গুলো ঘুম থেকে জেগে উঠতে পারে। আর তখন তো আর এমন ডিজিটাল যুগ ছিলনা।
প্রথম রোজা হতে শুরু হতো এই অভিনব পদ্ধতিতে ডাকাডাকি। আর এমন ডাকাডাকির জন্য আবার এলাকা ভাগ করাছিল। কোয়াটারের কোন ছেলে বাহিরের এলাকায় যেতে পারবে না। কোয়াটারের ছেলেরা শুধু সেই এলাকার ৮টি কোয়াটারের মধ্যে ভোরে ডাকতে পারবে। আর সেই ভাবেই প্রতিদিন ভোরে একে একে ৮টি কোয়াটারে তারা গান গেয়ে মানুষকে ডেকে তুলতো। যদিও দু একবার এই ডাকাডাকি নিয়ে দু দলের মধ্যে মারামারি হয়েছে। আবার তা মিমাংসাও হয়েছে।
আর যখন এমন করে গানের সুরে সুরে ডাকতে আসতো, আর আমি বা আমরা যদি জেগে উঠতে পারতাম তাহলে জানায় যেয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম তাদের এত রাতে গান গেয়ে জাগিয়ে তোলার দৃশ্য। রাতের আধারে নিজেদের কে বিপদ থেকে হেফাজত করতে প্রত্যেকে। বেশ ভালো লাগতো গানের সাথে সাথে এমন করে ডেকে তোলার দৃশ্য দেখতে। অবশ্য আমরা আবার সেই গানগুলো সবাই মিলে সুর করে করে গাইতাম।
এমন করে সারা মাস রাত জেগে এলাকার মানুষের ঘুম ভাঙ্গানোর পর যখন রমজান মাস শেষের দিকে আসতো, তখন তারা কোয়াটারের প্রতিটি পরিবারের কাছ হতে টাকা তুলতো। আর কোয়াটারের প্রতিটি পরিবার তাদের কে টাকা দিতে না করতো না। আর প্রতিটি পরিবারের কাছ হতে উঠানো সেই টাকা দিয়ে বেশ বড় করে একটি ইফতার পার্টি করা হতো। এবং গরীব এবং মিসকিন কেও খাওয়ানো হতো। আর এমন সন্দর একটি আয়োজনও আমাদের সবার মন কেড়ে নিতো। কিন্তু আজ সেসমস্ত দিন এবং সময় কে বেশ মনে পড়ছে।
শেষ কথা
শেষ কথা
আমরা চাইলেও কিন্তু আমাদের অতীত কে জীবন থেকে মুছে ফেলতে পারবো না। আর তাই তো আজ আবার জীবন থেকে কিছু স্মৃতি আপনাদের মাঝেও ছড়িয়ে দিলাম। আশা করি আমার শৈশবের এমন ঘটনা আপনাদেরও বেশ ভালো লাগবে।
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
Tweet
শৈশবের রমজান মাসের স্মৃতি গুলো মনে পরলে আসলেই খুব ভালো লাগে। সেহরি খাওয়ার জন্য সবাই সবাইকে ডেকে উঠাতো। যাইহোক আপনাদের কোয়ার্টারে তো দেখছি একেবারে ভিন্ন পদ্ধতিতে সবাইকে ডেকে তুলতো সেহরি খাওয়ার জন্য। গান গেয়ে গেয়ে সবাইকে সেহরি খেতে ডেকে তোলার আইডিয়াটা কিন্তু দারুণ ছিলো। তাছাড়া রমজান মাসের শেষের দিকে সবার কাছ থেকে টাকা তুলে ইফতার পার্টির আয়োজন করাটাও দারুণ ছিলো। গরিব মিসকিনদের খাওয়াতে পারলে নিজের কাছেই ভীষণ ভালো লাগে। তাছাড়া তারা মন ভরে দোয়া করে আমাদের জন্য। আপনার এই পোস্টটি পড়ে আমিও কিছুক্ষণের জন্য শৈশবের রমজান মাসের স্মৃতিতে হারিয়ে গিয়েছিলাম। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
যাক কিছু সময়ের জন্য আপনাকে শৈশবে নিয়ে যেতে পেরেছি। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
শৈশবের রমজান মাসের স্মৃতি গুলো পড়লে অনেক ভালো লাগে। সেহরি খাওয়ার সময় সবাই সবাইকে ডাকত৷ আমাদেরকে এখনও আমাদের বন্ধু-বান্ধব ডাকে৷ তবে আগেকার মতো সবাই সকলের বাড়িতে গিয়ে তেমন ডাকা হয় না। তবে আপনাদের এই ডাকার প্রক্রিয়া দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ গান গেয়ে সবাইকে ডাকা হতো শুনে ভালো লাগলো৷ এই প্রথম এরকম একটি ঘটনা শুনতে পারলাম৷ আপনারা সকলে মিলে ইফতার পার্টির আয়োজন করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ আসলে এরকম আয়োজন করলে সকলের অনেক ভালো লাগে৷ একইসাথে সকলে একসাথে ইফতার করার মজাই আলাদা। আর যারা ইফতারি করে তাদের দোয়াই সকলের জন্য অনেক।
অনেক সুন্দর করে মন্তব্য করায় আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।