জেনারেল রাইটিং- ভালোবেসে কেটে গেল কয়েকটি বছর | | written by@maksudakar ||
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
ভালোবাসা শব্দটির ব্যাখ্যা করা সত্যি আমার কাছে কঠিন। কারন ভালোবাসা হলো একটি বড় সমীকরণ। দুটি মনের মিলন যদি সঠিক ভাবে না হয় তাহলে কখনও এক সাথে পথ চলা সম্ভব নয়। সম্ভব নয় একই ছাদের নীচে বসবাস করা। যেখানে বিশ্বাস থাকে না, সেখানে ভালোবাসা টিকবে কি করে বলেন তো? আমার কাছে মনে হয় কারও কাছে ভালোবাসা পানির মত সহজ। আর কারও কাছে ভালোবাসা অংকের মত কঠিন।
হ্যাঁ বন্ধুরা আজ আবার চলে আসলাম আপনাদের মাঝে। নতুন একটি ব্লগ নিয়ে। ভাবছেন কেমন আছি আমি, তাই না? হুম আলহামদুলিল্লাহ্ আমি কিন্তু বেশ ভালো আছি। আপনারা ভালো আছেন তো? এই তো গত দিন চলে গেল আমাদের বিবাহ বার্ষিকী। তাই ভাবলাম আজ আপনাদের সাথে প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করবো। শেয়ার করবো পাশে থাকা ভালোবাসার মানুষটির কিছু ভালো লাগার অনুভূতি। আশা করি আপনাদের সবার কাছে আমার আজকের ব্লগটি বেশ ভালো লাগবে।
ভালোবেসে কেটে গেল কয়েকটি বছর
ভালোবেসে কেটে গেল কয়েকটি বছর
Banner credit --@maksudakawsar
Canva দিয়ে তৈরি
গতকাল ভোরে যখন ঘুম ভাঙ্গলো আমি প্রতিদিনের মত করেই তৈরি হচ্ছিলাম অফিসে যাওয়ার জন্য। হঠাৎ পিছন থেকে কেউ একজন বলে উঠলো শুভ বিবাহ বার্ষিকী। মূহূর্তে শিউরে উঠলাম। কে কথা বলে পিছন থেকে? হঠাৎ পিছন ফিরে দেখি আপনাদের ভাইয়া। হ্যাঁ গতকাল ছিল ১৮ই ফেব্রুয়ারি। আর এই দিনটিতেই উপর ওয়ালা আমাদের চারটি হাত এক করে দিয়েছিল। কিন্তু পারিবারিক নানাবিধ টেনশন আর ঝামেলার মাঝে এমন একটি দিনের কথা আমার মনেই ছিল না। মনে ছিল না সেই একই তারিখে প্রিয় মানুষটির যে জন্মদিন সেই কথাটিও। আসলে মানুষের জীবনের স্ট্রেজ এমন একটি বিষয় যা সুন্দর মূহূর্ত গুলো কে ভুলিয়ে দেয় নিমিষে।
প্রতি বছর এই দিনটিতে আমি আমার কথা চিন্তুা করি। চিন্তা করি বিবাহ বার্ষিকী পালন করবো। প্রিয় মানুষটির জন্মদিনের কথা সেদিন ভুলেই যাই। কিন্তু এবার কেন জানি মনে হলো এবার না হয় প্রিয় মানুষটির জন্মদিন টাকেই একটু মনে রাখি। তাই সন্ধ্যায় বের হয়েছিলাম প্রিয় মানুষকে সাথে করে। অনেক ঘুরে তার জন্য একটি ঘড়ি উপহার হিসাবে কিনে নিলাম। যদিও সেই মানুষটির হাজরও বারণ ছিল। কিন্তু কেন জানি বেশ মনে চাইলো তাকে একটি ঘড়ি উপহার দিতে। না রে ভাই জিম এন্ড ডেইলা হওয়ার কোন ইচ্ছেই আমার নেই। জাষ্ট ভালো লাগা থেকে এই অনুভূতি টুকু।
আজ আসলে এমন একটি মানুষ কে নিয়ে আপনাদের সাথে কিছু কথা না বললেই নয়। আপনারা অবশ্যই সবাই জানেন যে আমরা দুজনই চাকরিজীব। সারাদিন ব্যাস্ততায় কেটে যায় দুজনারই। কিন্তু শত ব্যাস্ততার মাঝেও এবং শত পরিশ্রমের পরেও এই মানুষটি আমার পাশে থাকে সব সময় ছায়ার মত করে। সেই কাক ডাকা ভরে ঘুম থেকে উঠে প্রভুর প্রার্থনা শেষে মানুষটি আমার গোসেলের জন্য গরম পানি করে, চুলায় ভাত বসায়, ডিম সেদ্ধ করে। সংসারের টুকটাক কাজ শেষে আমাকে ঘুম থেকে ডাকে। কারন আমি যে বেশ রাত করে ঘুমাই। আর এতটুকু দায়িত্ববোধ উপর ওয়ালা তার মধ্যে দিয়ে দিয়েছে।
দুজন মানুষ পাশাপাশি থাকলে কতই না রাগারাগি হয়। কিন্তু মানুষটি আমার সাথে কখনও কোন দিন রাগ তো দূরের কথা একটি ধমকও দেয় নি। পৃথিবীতে আমার বাবা মা কেউ বেচেঁ নেই। তাই তাদের অবর্তমানে আমার ভাই বোনের প্রতি আমার দায়িত্ব কে মানুষটি কখনও ছোট করে দেখিনি। বরং আমার চেয়ে আমার পরিবার কে সেই বেশী ভালোবাসে। বিয়ের এত গুলো বছর পার হলেও আজ পর্যন্ত মানুষটি জানতে চায়নি আমার মাসিক বেতন কত? বা আমি আমার বেতনের টাকা কি করে খরচ করি। বরং প্রতি মাসের প্রথমেই মানুষটি আমাকে আমার পরিবারে টাকা দেওয়ার জন্য ফোর্স করে।
সারাদিন ঘাম ঝড়া খাটুনি করে মাসের শেষে নিজের একাউন্টে ঢোকা বেতনটিও সে নিজের হাতে আজ অবধি তুলে আনেন নি। কোন কিছু না বুঝার অজুহাতে তার ব্যাংকের এটিিএম কার্ডটি আমার কাছেই রাখা। আজ পর্যন্ত জানতেও চায়নি যে তার সেই এটিএম কার্ডের পাসওয়ার্ড কত। এমন কি হাজার বার বলেও তাকে দিয়ে একটি বারের জন্যও ব্যাংকের টাকা উঠানো যায়নি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমার মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে। যে কোন বিষয়ে আমার মতামতই তার কাছে শ্রেষ্ঠা। আমি রাত বললে রাত, আমি সকাল বললে সকাল। আসলে আমি নিজেও জানিনা এটা কি আমার জন্য ভালোবাসা নাকি অভিশাপ। কারন সবশেষে তো উপর ওয়ালা বলে একটি কথা আছে।
মাঝে মাঝে ভাবী যে আমার মত এমন একজন ক্ষুদ্র মানুষ কে এত ভালোবাসার কি আছে? আমি তো আসলেই তার ভালোবাসার যোগ্য নয়। তবে নিজেকে বেশ ভাগ্যবতী মনে হয়। মনে হয় জীবনে কোন না কোন একটি ভালো কাজ করার ফলেই এমন একজন ভালোবাসার মানুষ উপর ওয়ালা আমার পাশে দিয়েছে। তাই জীবনের এমন একটি পর্যায়ে এসে আপনাদের সবার কাছে দোয়া চাই। বাকীটা জীবন যেন এমন করেই কাটিয়ে দিতে পারি হাতে হাত রেখে এবং এক সাথে পাশে থেকে।
শেষ কথা
শেষ কথা
সত্যি বলতে ভালোবাসতে কোন অর্থের প্রয়োজন পড়ে না। পড়ে না বিশাল কোন রাজ প্রাসাদের প্রয়োজন। প্রিয় মানুষটি যদি ভালো মনের মানুষ হয়, তার সাথে কাটিয়ে দেওয়া যায় গাছের নীচে দিনের পর দিন।
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
প্রথমেই আপনাদের জানাই বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা। সাথে আমাদের ভাইয়াকেও জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা। একসাথে মিলেমিশে বাকি জীবনটাও আপনারা খুব ভালো করে কাটান। আর সব কথা শেষ কথা আপনি পোষ্টের শেষের দিকেই বলে দিয়েছেন। আপনারা দুজনেই একজন ভালো মনের সঙ্গী পেয়েছেন বলেই ভালোবেসে মিলেমিশে এতগুলো বছর একসাথে সুখে শান্তিতে থাকতে পারছেন। এমন ভালোবাসার দিন চলতেই থাকুক অবিরাম। কারোর নজর না লাগুক।
আমিও চাই এমন ভালোবাসার দিন চলতেই থাকুক। দোয়া করবেন দিদি । ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Tweet
প্রথমেই জানাচ্ছি আপনাদের দুজনের হ্যাপি এনিভার্সারি সেই সাথে ভাইয়াকে শুভজন্মদিন শুভেচ্ছা । আমি দোয়া করি। এভাবেই খুশি থাকুক আপনাদের আগামীর দিনগুলো। আপনাদেরকে বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা। আপনার এত সুন্দর করে আপনাদের বিবাহ বাষিকি নিয়ে লেখা পড়ে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আসলে ভাইয়ার মতো এত ভালো মানুষ হয় না। এই যুগে বোনের পাশাপাশ তার হাসবেন্ডও যে, এত আত্মত্যাগী মানুষ হয় তা আপনাদের দুজনের মধ্যেই দেখেছি। ধন্যবাদ আপু আমাদের জন্য জীবনের এতটা ত্যাগ স্বীকার করার জন্য। আমরা আপনাদের দুজনের কাছে চিরঋণী।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার সুন্দর এবং সাবলীল মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনি অবশ্যই অনেক ভাগ্যবতী আপু। তা না হলে আজকালকার যুগে এরকম স্বামী পাওয়া বেশ মুশকিল। ভাইয়া হয়তো আপনাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে। তাছাড়া অনেক শ্রদ্ধা ও করে। তা না হলে এত বছর যাওয়ার পরও আপনার বেতন কতটা আজ পর্যন্ত জানতে চায়নি। শ্রদ্ধা ছাড়া আর কি হবে। দোয়া করি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এরকম ভালোবাসা গুলো বেঁচে থাক।
জি আপু দোয়া করবেন আমাদের জন্য। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
শুভ বিবাহ বার্ষিকী আপু।আপনারা দুজন এমনি ভাবে আজীবন থাকবেন এমনটাই আশাকরি। আপনার ভাগ্য অনেক ভালো বলতে হয়, নয়ত এই সময়ে এসে ও এমন মানুষ পাশে পাওয়া বড়ই ভাগ্যের ব্যাপার।শুধু ভালোবাসা থাকলেই হয়না শ্রদ্ধার জায়গাটা ও থাকা দরকার যেকোনো সম্পর্কের মধ্যে। আপনি ঠিক তেমনটাই পেয়েছেন আপু।
দোয় করবেন আপু আমাদের জন্য আপু। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
শুকরিয়া আপু! আপনি এমন একজন জীবনসঙ্গী পেয়েছেন। আমি বলবো আপনি খুবই লাকি একজন ব্যক্তি! আপনাদের এই স্বামী ত্রীর বন্ধন আীজবন টিকে থাকুক সেই দোয়াই করছি। ভালোবাসার সুন্দর সংজ্ঞা আপনার মাঝে পেলাম 🌼
দোয়া রাখবেন ভাই আমাদের জন্য আমরা যাতে আগামীতে একসাথে পথ চলতে পারি। ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
শুভ বিবাহ বার্ষিকী আপু৷ আশা করি আপনারা যেন সারাজীবন এভাবে একসাথে জীবন চালনা করতে পারেন। আপনার ভাগ্য অনেক ভালো বলতেই হচ্ছে, তা নাহলে এরকম মানুষ পাওয়া অনেক ভাগ্যের বেপার।অনেক ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া এমন সুন্দর করে মন্তব্যের মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
শুভ বিবাহ বার্ষিকী আপু। দোয়া করি সারাটা জীবন যেন একসাথে পাড়ি দিতে পারেন ভাইয়ার সঙ্গে। আপনার ভাগ্য অনেক ভালো ভাইয়ার মত এমন একজন মানুষকে আপনি পেয়েছেন। আসলে এ যুগে এরকম মানুষ পাওয়া অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। আপনারা দুজনেই ভালো এজন্য এত বছর পাশাপাশি থেকে সুখে শান্তিতে সংসার করেছেন। অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর করে মন্তব্যের মাধ্যমে দোয়া করার জন্য।