জেনারেল রাইটিং- কখনও কখনও স্বার্থের কাছে যোগ্যতা এবং সততা অসহায় ||written by@maksudakar ||

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন সবাই? আজকাল এই কথাটি জিজ্ঞেস করতেও খারাপ লাগে। কারন আমিও তো বুঝি যে এমন প্রচন্ড তাপদাহে কি আর কেউ তেমন ভালো থাকতে পারে? আরে না পারে না। কিন্তু জীবন আর জীবিকা তো আর ভালো বা খারাপ লাগার উপর নির্ভর করে থাকে না। পরিশ্রম করতে পারলে পেট চলমে। আর না করতে পারলে মুখ থুবরে পড়ে যাবে। আর তাই তো এত এত গরমের মধ্যে খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর আর বিশ্রাম নেই। নেই এতটুকু শান্তির পরশও।

চলে আসলাম আজ আবার। প্রতি সপ্তাহেই চেষ্টা করি আপনাদের মাঝে একটি হলেও জেনারেল রাইটিং শেয়ার করতে। তাই তো আজও চলে আসলাম আপনাদের জন্য আরও একটি নতুন জেনারেল রাইটিং নিয়ে। মাঝে মাঝে চারদিকের অবস্থা দেখলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। কেমন যেন সব কিছু কে মেকি মনে হয়। মনে হয় কেন যে এত কষ্ট করে পড়াশুনা করলাম। তাই তো মনের মধ্যে জমে থাকা কিছু কষ্ট কে আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে আসলাম জেনারেল রাইটিং এর মাধ্যম।

কখনও কখনও স্বার্থের কাছে
যোগ্যতা এবং সততা অসহায়

পাওয়ার আপ প্রতিযোগিতা, সিজন-৪, ১০ স্টিম পাওয়ার আপ0 (1).png

CANVA দিয়ে তৈরি

আজ বেশ সকাল সকাল অফিসে পৌঁছে গেছি। মানে সময়ের প্রায় আধ ঘন্টা আগেই চলে আসলাম। তো ভাবলাম একটু রেস্ট করে তারপর অফিসে ঢুকি। মানে আমাদের অফিসের পাশে একটি ছোট পার্ক আছে। যেখানে সবুজ অরণ্যে ভরপুর। আর সেই সবুজ অরণ্য ঘেরা প্রকৃতির মাঝে যদি কিছু সময় বসে কাটানো যায় তাহলে তো খারাপ হয় না। তাই ঢুকে পড়লাম সেখানে। পার্কের ভিতর দুটো অল্প বয়সের নার্স বসে কথা বলছে। আমি তাদের পাশেই বসলাম। তাদের কথার সার্মম যতটুকু বুঝলাম যে তারা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী অবহেলিত হচ্ছে। তাই দুই বান্ধবী বসে তাদের সুখের দুঃখের কথা বলছে।

যাই হোক আমার বিষয় সেটা নয়। আমি ভাবছি যে এমন দুটো ছোট মেয়ের মনে সততা নিয়ে আর যোগ্যতা নিয়ে এত প্রশ্নই বা আসে কেন। আচ্ছা আমরা কেন এমন হয়ে যাই। আমরা একটি অন্যায় কে অন্যায় বলতে দ্বিধাবোধ করি। আমরা যোগ্য মানুষ গুলো কে তাদের যোগ্য পাওনা দিতে কণ্ঠা বোধ করি। কুন্ঠাবোধ করি কারন পাছে আমাদের স্বার্থে না আঘাত লাগে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে যোগ্যতাকে মূল্যায়ণ করতে গিয়ে পাছে নিজের স্বার্থে যদি আঘাত আসে। যদি আমরা আমাদের সুবিধা হতে বঞ্চিত হই।

আার এমন সব কারনেই এখন মানুষ বোবার ভূমিকা পালন করে। মানুষ এখন পুতুল হয়ে গেছে। হয়তো আমাদের মাঝে আমরা অনেকেই এসব কে ঘৃণা করি মন থেকে। কিন্তু বাস্তবতা এবং পারিপাশ্বিক অবস্থার জন্য হয়তো এমন অন্যায় গুলোর প্রতিবাদ করা হয়ে উঠে না। কারন বাস্তবতা যে বেশ কঠিন। বাস্তবতার রষানলে প্রতিনিয়ত যে কত সততা এবং যোগ্যতার বলিদান হচেছ সেটা কেউ খুঁতিয়েও দেখতে যায় না। যায় না খোঁজ করতে।

আবার অন্যদিকে একজন সৎ এবং যোগ্য মানুষ যখন তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয় তখন সে মানুষটি আর সামনের দিকে এগোতে চায় না। চায় না নিজেকে আর যোগ্য করে তুলতে। নিজেকে সরিয়ে নিয়ে যায় নিস্তব্দতার এক পৃথিবীর বুকে। আর এমন করেই ঝড়ে যায় অনেক যোগ্য মানুষ এবং সৎ মানুষ। তাহলে কি সততার জিৎ হলো নাকি হার হলো? এই প্রশ্নই জাতির বিবেকের কাছে।

এখন কেন জানি মাঝে মাঝে মনে হয় কি প্রয়োজন ছিল এত শিক্ষাগত যোগ্যতার? কি দরকার ছিল কষ্ট করে বাসে ঝুলে ঝুলে স্কুল কলেজে যাওয়ার? এসব কিছু না করে যদি গ্রামের নিরহ চাষা ভূষার বউ হয়ে কাটিয়ে দিতাম সময়। যদি একটু কম বুঝতে শিখতাম তাহলে হয়তো এত কষ্ট পেতাম না। পেতাম না এত বেদনা। তাই তো মনে হয় এখন সততা আর যোগ্যতাই হলো উন্নয়নের প্রধান বাধা।

image.png

শেষ কথা

আসলে মাঝে মাঝে চারদিকের এমন অবস্থা দেখে আর মুখ বুঝে সহ্য করতে পারি না। তাই আমার মনে হয় বুকের কষ্ট গুলো কে নিজের লেখার মাঝে স্থান দিতে পারলে কিছুটা হলেও স্বস্থি।

image.png

ধন্যবাদ সকলকে
@maksudakawsar

নিজেকে নিয়ে কিছু কথা

আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।

image.png

Screenshot_1.png

Sort:  
 2 months ago 

পরিস্থিতি মানুষকে নতুন নতুন প্রশ্ন করতে শেখায়। সে ছোট হোক কিংবা বড়। প্রশ্নটা সত্যি বিশাল। যোগ্যতা আর সততা হয়তো একে অপরের পরিপূরক। তবে মাঝে মাঝে পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখলে আমরা হতাশ হয়ে যাই। আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

 2 months ago 

সত্যি আপু বেশ দারুন একটি মন্তব্য করেছেন। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তবব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 months ago 
 2 months ago 

গরম কে কেন্দ্র করে বাসায় বসে থাকলেও তো জীবন চলবেনা আপু,ওই যে বললেন না মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতে হবে ঠিক তেমনটাই হবে।তবে এই গরমের মধ্যে যেনো খেটে খাওয়া মানুষগুলোর প্রতি আল্লাহ যেন একটু সহায় হন এটাই প্রার্থনা করি।সত্যি কথা হলো কি বর্তমান যোগ্যতা সম্পূর্ন মানুষরা অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত জার কারণে আমাদের দেশে প্রখর মেধা সম্পূর্ণ ব্যক্তির তৈরি ও হয়না আপু।কেননা আমরা সঠিক মেধার মূল্যয়ন করতে জানিনা।ধন্যবাদ আপু গতানুগতিক একটি পোস্ট আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন।

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে উৎসাহিত করার জন্য।

 2 months ago 

আসলে এরকম কিছু মানুষ রয়েছে যারা কিনা নিজের স্বার্থের জন্যই চিন্তা করে। আবার অনেকেই যোগ্যতা ও সততাকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও পারেনা। কারণ স্বার্থের কাছে এগুলো একেবারে অসহায়। যাদের ভিতরে যোগ্যতা রয়েছে তারা পারছে না ভালো কিছু করতে। অযোগ্য ব্যক্তি গুলোই এখন দেখা যায় ভালো কিছু করতেছে। তাদের মধ্যে যোগ্যতা না থাকলেও তারা পারছে এগিয়ে যেতে, যোগ্য মানুষগুলো এখন অনেক পিছনে। আপনি অনেক সুন্দর একটা টপিক নিয়ে লিখেছেন আজকের এই লেখাটা। যেটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে পড়তে।

 2 months ago 

আপু আপনিও কিন্তু বেশ সুন্দর করে মন্তব্য করেছেন। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 months ago 

আমরা সব সময় নিজেদের যোগ্যতার কাছে হেরে যাই। তখন আর সততা নিয়ে কিছু হয় না। কখনও কখনও স্বার্থের কাছে যোগ্যতা এবং সততা অসহায় হয়ে পরে। সঠিক মানুষের মূল্যায়ন হয় না। তার জন্য
পার্কের ভিতর দুটো অল্প বয়সের নার্স বসে কথা বলছেন অবহেলিত হওয়ার কারণে। সুন্দর ভাবে বিষয়টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

 2 months ago 

সত্যি ভাইয়া আমরা সব সময় নিজেদের যোগ্যতার কাছে হারিয়ে যাই। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 months ago 

আপু এটা তো এখনকার সময়ের বেশ সহজ একটি বিষয়। আর এই জন্যই তো এখন এ দেশ মেধা শূণ্য হয়ে যাচেছ। এদেশে তো যোগ্য লোকের কোন মূল্যায়ণ হয় না। আবার সৎ মানুষগুলোও হেরে যায় স্বার্থের কাছে। বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে আজকের পোস্টটি শেয়ার করেছেন আপু। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 months ago 

চমৎকার লিখেছেন আপু।কথাগুলো একদম সত্যি ই। এতো শিক্ষিত হয়ে,সততা রেখে কি হবে? আমার ও মনে হয় সততা আর যোগ্যতা আজ বাঁধা হয়ো দাঁড়িয়েছে।আমরা স্বার্থান্বেষী সমাজের কাছে বড্ড অসহায় হয়ে আছি।

 2 months ago 

দোয়া করবেন এমন করে চমৎকার লিখে যেন পাশে থাকতে পারি। ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

 2 months ago 

আপু আজ আপনি সত্যি এবং বাস্তবিক কথাগুলোকে লেখায় রূপান্তর করেছেন দেখে আমার কাছে তো অসম্ভব ভালো লেগেছে। স্বার্থ পূরণ করতে সবাই চায় কিন্তু অন্যের যোগ্যতাকে দূরে সরিয়ে নয়। মানুষের এখন যোগ্যতার মূল্য অন্যরা খুবই কম দিয়ে থাকে। এখন যোগ্যতা দেখে কোন কিছু বিবেচনা করা হয় না। মানুষের যোগ্যতা কতটুকু এটা এখন আর কেউ দেখে না। মানুষ এখন যোগ্যতার থেকে অনেক বেশি বঞ্চিত হয়ে গিয়েছে তাদের যোগ্যতার মূল্য কেউ দেয় না বলে। অনেক সুন্দর লেগেছে আপনার লেখাটা আমার কাছে।

 2 months ago 

ভাইয়া আপনার এমন সুন্দর মন্তব্য পড়ে বেশ মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66120.88
ETH 3555.65
USDT 1.00
SBD 3.12