নাটক রিভিউ- তুই ছাড়া মন ভালো নেই ||Drama Review|
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
নিজেকে নতুন রূপে তুলে ধরার মত এত আনন্দ হয়তো বা অন্য কিছুতে পাওয়া যায় না। আমরা প্রত্যেকেই চাই যে আমাদের ক্রেয়েটিভিটি গুলো অন্যের মাঝে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে। হয়তো এর জন্যই কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত নিজেদের কে সাজাই নতুন রূপে। আমিও প্রায় সকল সময়ই চেষ্টা করে যাই যে আমি যেন নতুন নতুন ব্লগগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করে যেতে পারি। হয়তো ব্যস্ততার কারনে তা হয়ে উঠে না। তবে আজ কিন্তু আবার কিছুটা ভিন্ন রকমের ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের মাঝে।
নাটক আমরা সবাই দেখি। তার উপর আমাদের দেশের নাটক গুলো কিন্তু বেশ দারুন হয়। কিছু কিছু নাটক কিন্তু একেবারে মানের সাথে মিশে যায়। বার বার দেখতে ইচ্ছে করে। বর্তমানে আমাদের দেশে যে কজন অভিনয় শিল্পী আছে তাদের মধ্যে সাদিয়া আয়মান এবং খায়রুল বাসারের জুটি কিন্তু বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বেশ কিছুদিন আগে তাদের একটি নাটক আমি দেখেছিলাম। আমার কাছে নাটকটি বেশ ভালো লেগেছিল। আজ আমি এ দুজন অভিনয় শিল্পীর সেই জনপ্রিয় নাটকের রিভিউ আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচিছ। আশা করি আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।
নাটক রিভিউ-তুই ছাড়া মন ভালো নেই
নাটক রিভিউ-তুই ছাড়া মন ভালো নেই
নাটকের কিছু তথ্য
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | তুই ছাড়া মন ভালো নেই |
---|---|
পরিচালক | শহীদ উন নবী |
রচনা | রাশেদুল ইসলাম ইফাজ এবং মাহমুদুল হাসান |
অভিনয় | খায়রুল বাশার , সাদিয়া আয়মান, হিন্দল রায় এবং আরও অনেকে |
দৈর্ঘ্য | ৫০ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড |
মুক্তির তারিখ | ০২ই অক্টোবর/২০২৩ |
ধরন | নাটক |
ভাষা | বাংলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
প্রচার | ইউটিউব |
চরিত্র
চরিত্র
★ খায়রুল বাশার- সেলিম
★সাদিয়া আয়মান - জোনাকি
কাহিনী সংক্ষেপ
কাহিনী সংক্ষেপ
নাটকের মূল চরিত্র হলো সেলিম এবং জোনাকি। সেলিম একজন গ্রামের ছেলে। গ্রামের ডিসের লাইনের লাইন লাগানোর কাজ করে সে। আর জোনাকি হলো গ্রামের চেয়ারম্যান এর বোন। জোনাকি লেখাপড়া জানা একজন শিক্ষিত মেয়ে। আর এদিকে সেলিম ইন্টারমেডিয়েট পাশ করে বন্ধুর ডিসের ব্যবসায় লাইনম্যান এর কাজ করে। জোনাকির বেশ সিরিয়াল দেখার নেশা থাকে। মাঝে মাঝে টিভিতে দুঃখের সিরিয়াল দেখে জোনাকি কান্না করে। এভাবেই কেটে যায় তাদের জীবন। একদিন জোনাকি তার বান্ধবীর সাথে কলেজে যাচেছ। আর এমন সময় সেলিম এবং তার বন্ধু রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। তখন রাস্তায় সেলিমের বন্ধু কে দেখে জোনাকির বান্ধবী তেড়ে আসে তাকে মারতে। কারন সেলিমের বন্ধুর ডিসের লাইনের জন্য জোনাকির বান্ধবী ঠিক মত সিরিজ দেখতে পারে না। এরই ফাঁকে সেলিম জোনাকি কে দেখে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে। এমন কি এতটাই মুগ্ধ হয় যে সেলিম এর হাত থেকে তার সাইকেলটি মাটিতে পড়ে যায়। সেলিমের এমন অবস্থা দেখে জোনাকিও হতবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
এরপর সেলিম জানতে পারে যে জোনাকি চেয়ারম্যানের বোন। কিন্তু তাতেও কিছু যায় আসে না। তাই যখন তখন সে জোনাকি কে দেখতে অজুহাত খুঁজে। একদিন তো রাতে বন্ধুকে ডেকে নিয়ে জোনাকি কে দেখার জন্য তাদের বাসায় চলে যায়। এমন অনেক ঘটনা সেলিম ঘটাতে থাকে। গ্রামের গাছে গাছে সেলিম লেখে দেয় যে জোনাকি +সেলিম। আবার কখনও কখনও জোনাকিদের বাসায় চলে যায়। আবার রাস্তায় জোনাকির পিছু নেয়। হঠাৎ জোনাকি একদিন সেলিম কে জিজ্ঞেস করে কেন তার পিছে এমন করে ঘুরে। কিন্তু সেলিম কিছু বলে না। শুধু বলে জোনাকি কে না দেখলে সেলিমের খারাপ লাগে।আর এ কথা শুনে জোনাকি বেশ খুশি হয়। এদিকে গ্রামে বিদ্যুৎ চলে গেলে সেলিম রাত বিরাত খাম্বায় উঠে জোনাকিদের বাসায় বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করে দেয়। যাতে করে জোনাকি তার প্রিয় সিরিয়াল গুলো দেখতে পারে। এসব কথা শোনার পর জোনাকি সেলিম কে শাসন করার জন্য ডাকে এবং বিভিন্ন কথা বলে বকা দেয়। আর এরই মাঝে দুজনার মধ্যে মন দেওয়া নেওয়া হয়ে যায়।
এরপর জোনাকি এবং সেলিম মনের আনন্দে ঘুরে বেড়ায় আর চুটিয়ে প্রেম করে। এদিকে সেলিম তার মায়ের কাছে জোনাকির কথা বলে। তখন সেলিমের মা জোনাকির ভাইয়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। জোনাকির ভাই সেলিম এর মাকে বিভন্ন কথা বলে অপমান করে । তখন সেলিমের মা জোনাকির ভাইকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে সেলিমের বাবার জায়গা জোনাকির বাবা এক সময় লিখে নিয়েছে বলে আজ সেলিমদের এমন অবস্থা। কিন্তু তবুও জোনাকির ভাই সেলিম এর মাকে অপমান করে তাড়িয়ে দেয়। তারপর জোনাকির ভাই জোনাকিকে এই বলে শাসন করে যে এরপর যদি জোনাকিকে সেলিমের সাথে দেখা যায় তাহলে জোনাকি সেলিমের মরা মুখ দেখবে।
এদিকে সেলিমের মা সেলিম কে বেশ বকা দেয়। সেলিমের মা বলে ছেড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন না দেখতে। আর অন্যদিকে জোনাকি সেলিম কে ডেকে বলে যে এটা তাদের জীবনে একটি ভুল ছিল। সেলিম যাতে আর কখনও জোনাকির সামনে না আসে। এরপর সেলিম ও জোনাকি দুজনেই বেশ কষ্ট পেতে থাকে। কেউ যেন কাউকে ছাড়া বাঁচবে না। হঠাৎ একদিন সেলিম জোনাকিকে রাস্তায় আটকিয়ে কথা বলে। সেলিম জোনাকিকে বলে তাকে ছাড়া সেলিম ভালো নেই। এমনকি সেলিম এও বলে যে সেলিম কে ছাড়া যে জোনাকি ভালো নেই সেটা সেলিম জানে।তাই সেলিম জোনাকিকে বলে তারা দুজনে দূরে কোথাও যেয়ে বাসা বাধঁবে। থাকবে না তাদের সাথে যারা তাদের স্বপ্নকে দাম দেয় না। সেলিম জোনাকিকে নিয়ে পালিয়ে যেতে চায়। আর সেলিম এর কথায় জোনাকি রাজি হয়ে যায়। কিন্তু তারা পালিয়ে যেতে চেয়ে ও পারে নি। কারন পালিয়ে যাওয়ার আগেই জোনাকির ছোট ভাই তার সাঙ্গু পাঙ্গু সহ রাস্তায় ধরে ফেলে।তারপর জোনাকি কে বাসায় পাঠিয়ে সেলিমে কে অনেক মারে এবং আটকে রাখে।
এরপর জোনাকিকে বাসায় নিয়ে যায়। তারপর জোনাকির চেয়ারম্যান ভাই জোনাকিকে একদিনের মধ্যে অন্য জায়গায় বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। জোনাকির বিয়ে সব ঠিক করে ফেলে। এদিকে জোনাকি তার দুই ভাইয়ের কথা শুনে ফেলে যে তারা সেলিম কে খুন করে ফেলবে। জোনাকি ভাবে যে তার ভাইয়েরা সেলিম কে খুন করে ফেলেছে। এ কথা শুনে জোনাকি নিজেই বিষ খায় এবং মারা যায়। তখন আর সবার মত করে সেলিমও আসে জোনাকি কে দেখতে । কারন তখন জোনাকির ভাইয়েরা সেলিম কে ছেড়ে দেয়। কিন্তু সেলিম জোনাকির লাশ দেখে সহ্য করতে পারে না। সেলিম অনেক কাঁদে। কাঁদতে কাঁদতে এক সময়ে সেলিম তার স্মৃতি হারিয়ে পাগল হয়ে যায়।
এরপর থেকে সেলিম সব সময় জোনাকির কবরের পাশেই থাকে। কবরের পাশের গাছ গুলোতে তার এবং জোনাকির নাম লেখে। একা একা জোনাকির সাথে কথা বলে। সেলিমের দিন কাটে পাগল হয়ে জোনাকির কবরের পাশেই দিন রাত। জোনাকির ভালোবাসার জন্য সেলিম আজ পাগল। সেলিম এর একমাত্র জায়গা হলো এখন জোনাকির কবরের পাশে থেকে জোনাকিকে পাহাড়া দেওয়া।
ব্যক্তিগত মতামত
আমি জানিনা আমার রিভিউ করার পর আপনারা কেউ নাটকটি দেখবেন কিনা। তবে আমি কিন্তু এ পর্যন্ত নাটকটি ১০ বারের মত দেখেছি। আমার কাছে নাটকটি অসাধারণ লেগেছে। তাই তো আমি যতবার নাটকটি দেখেছি ততবার কান্নায় বুক ভাসিয়েছি। পরিচালক নাটকটিতে একদম বাস্তবতার ছোঁয়ায় ভরে দিতে পেরেছে। দুজন মানুষের মধ্যে সত্যিকারের ভালোবাসা থাকলে এবং তারে মধ্যে কেউ বাধাঁ হয়ে দাঁড়ালে যে কি ঘটতে পারে সেটাই ফুটিয়ে তুলেছেন এখানে।তাছাড়া নাটকের মধ্যে যে গানটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটাও কিন্তু একেবারে হৃদয় ছোঁয়া।
ব্যক্তিগত রেটিং
ব্যক্তিগত রেটিং
১০/১০
নাটকটির লিংক
নাটকটির লিংক
শেষ কথা
শেষ কথা
কিছু কিছু নাটক থাকে একেবারে মনের সাথে মিশে যায়। সাদিয়া আয়মান এবং খায়রুল বাশার এর আজকের নাটকটিও কিন্তু আমার কাছে তেমন একটি নাটক। তাই তো আজ বহু খুঁজে নাটকটি আপনাদের জন্য রিভিউ করেছি। আপনাদের ভালো লাগলেই আমি স্বার্থক।
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
আমার ব্লগটির সাথে থাকার জন্য এবং ধৈর্য সহকারে আমার ব্লগটি পড়ার জন্য সবাই কে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সেই সাথে সবার প্রতি আমি আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
অনেক সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ পোস্ট করেছেন আপনি, যেটা আমার খুবই ভালো লেগেছে। এরকম নাটক গুলো আমার অনেক বেশি পছন্দের। এই নাটকের পুরো কাহিনী একটু বেশি ভালো লেগেছে আমার কাছে। আসলে দুজন মানুষের মধ্যে সত্যিকারের ভালোবাসা যদি থাকে তাহলে, তাদের মধ্যে বাঁধা হয়ে কখনোই কেউ আসতে পারবে না। আর বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে যে কি ঘটাতে পারে, এটা এই নাটকের মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে দেখে ভালো লেগেছে।
ভাইয়া এমন সুন্দর একটি মন্তব্য করে আমাকে আরও বেশী উৎসাহিত করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Tweet
নাটক দেখতে মাঝেমধ্যে ভালোই লাগে তবে সময়ের অভাবে দেখা হয় না। সুন্দর একটি নাটকের রিভিউজ শেয়ার করেছেন আপনি। পুরো নাটকের রিভিউ পড়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। সময় করে নাটকটা দেখার চেষ্টা করবো ।এত সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপু সময় করে নাটকটি দেখে নিয়েন। ভালো লাগবে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু বর্তমানে বাংলা নাটক দেখতে খুব ভালো লাগে। তারজন্য আমি যখনই সময় পাই তখনই নাটক দেখা শুরু করি। যাই হোক আপনি খুব সুন্দর নাটক রিভিউ করেছেন। আপনার এই রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। সময় পেলে অবশ্যই দেখবো। ধন্যবাদ এত সুন্দর নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
আপু এত সুন্দর করে মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আপু আপনি এত ব্যস্ততার মাঝেও নাটক দেখার সময় বের করে এত সুন্দর একটি নাটক রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন জন্য অনেক ধন্যবাদ জানাই। এই ধরনের নাটক গুলো দেখতে খুবই ভালো লাগে। খুবই চমৎকারভাবে নাটকটির রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
কি যে বলেন না আপু । নাটকটি না হলেও এ পর্যন্ত ৪-৫বার দেখা হয়ে গেছে। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
আপু খুব সুন্দর একটা নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন। নাটকটি দেখি নাই কিন্তু আপনার রিভিউ পড়ে খুবই ভালো লাগলো।সময় করে নাটক টি দেখে নিবো।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু সুন্দর ভাবে নাটকটির রিভিউ শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকেও এমন সুন্দর করে আমার নাটকটি পড়ে রিভিউ দেওয়ার জন্য।
আপনি খুব সুন্দর একটি রিভিউ পোস্ট শেয়ার করেছেন।সাদিয়া আইমান এবং খায়রুল বাসার এর নাটকগুলো আমার বেশ ভালো লাগে।আপনার রিভিউ পড়ে নাটকটি দেখার আগ্রহ অনেকটা বেড়ে গেল।সময় করে দেখে নিব নাটকটি।নাটকের গল্পটি ভালো লেগেছে।ধন্যবাদ সুন্দর রিভিউ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আমি তো কম করে হলেও নাটকটি ৫-৬ বার দেখেছি। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করে উৎসাহিত করার জন্য।