শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলির স্মৃতি- আগে কি সুন্দর দিন কাটাতাম II written by @maksudakawsar II
আসসালামু আলাইকুম
আসসালামু আলাইকুম
ইস্ কেউ যদি আমায় বলতো কি চাই আমি? তাহলে বলতাম আবার ছোট হতে চাই। কারন ছোট মানুষের আর যাই থাকুক না কেন কোন যন্ত্রণা থাকে না। থাকে না কোন চিন্তা ভাবনা আর টেনশন। হেসে খেলে জীবন টা পার করে দেয় তারা। আমরাও যখন ছোট ছিলাম আমরাও ঠিক তেমনই ছিলাম। কিন্তু আজ বড় হয়ে হয়েছে এক যন্ত্রণা। না পারি কিছু বলতে আর না পারি সইতে। টেনশনে টেনশনে জীবন শেষ।
কেমন আছেন সবাই? বেশ ভালো আছেন নিশ্চয়। আসলে প্রিয় মানুষগুলো ভালো থাকুক এই কামনাই করি। প্রতিদিনের মত করে আজও চলে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন করে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আসলে সব সময়ই ভাবী যে নিজের মনের মাঝে ঘুরপাক খাওয়া কথা গুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো। তাই তো আজও আবার সেই ছেলেবেলার কিছু স্মৃতি কথা নিয়ে চলে আসলাম আপনাদের মাঝে। আশা করি আমার আজকের পোস্টটিও আপনাদের কাছে বেশ ভালো লাগবে।
CANVA দিয়ে তৈরি
শৈশব আমদের জীবনের সাথে এমন ভাবে জড়িয়ে আছে যে আমরা চাইলেও সেই দিন গুলোকে ভুলতে পারি না। পারি না জীবন থেকে মুছে দিতে। আর পারি না সেই সব শৈশব কে ভুলে যেতে। জীবন চলার পথে বারে বারে সেই সমস্ত শৈশব আমাদের মাঝে উকিঁ দেয় । কি করে ভুলবো? ছেলেবেলা যে মিশে আছে আমাদের রক্তে রক্তে। আজও মনে পড়ে ছেলেবেলার সেই টেলিভিশন দেখার স্মৃতি গুলো। আমাদের সময়ে ছিল না কোন মোবাইল বা কম্পিউটার। তাই তো আমাদের অবসর সময় গুলো পার হতো টিভি দেখে দেখে। আর আনন্দ উল্লাস আর খেলার ছলে।
পড়াশুনা নষ্ট হবে বলে বাসায় কোন টেলিভিশন কেনা হতো না। কিন্তু তাতে কি টেলিভিশিন তো দেখতেই হবে। আমরা বোনেরা বোনেরা চুরি করে চলে যেতাম অন্যের বাসায় টেলিভিশন দেখতে। আর এমন করে কতদিন যে ধরা খেয়ে পিটানী খেয়েছি সেটা হিসাব করলে শেষ হবে না। যাই হোক আমাদের এমন যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে এক সময়ে বাসায় আসলো টেলিভিশন। হায়রে হায়! ঘরে আসছে নতুন টেলিভিশন। পড়াশুনা কি আর হয়। সেই সকালে উঠে টেলিভিশন খুলে দেশের গানের মিউজিক শুনতাম। যেটা কিনা আজও কানে বাজে। আর রাতে কোরআন তেলওয়াতের পর যখন টেলিশন চ্যানেল বন্ধ হতো তখন আমরাও টেলিভিশন বন্ধ করতাম। আর এখন তো টেলিভিশনের কোন খোলা আর বন্ধ নেই। সারাদিন রাত একটানা চলতে থাকে।
যাই হোক তখন টেলিভিশনে বেশ সুন্দর সুন্দর অনুষ্ঠান হতো। বিভিন্ন রকমের কাটুন, আলিফ লায়লা, শুক্রবারের বাংলা ছায়াছবি। আর বাংলা নাটক। পড়ার ফাঁকে ফাঁক সব কিছুই দেখা চাই। বিশেষ করে শুক্রবারের আলিফ লায়লা আর বাংলা ছবি তো কোন ভাবেই মিস করা যাবে না। না দেখলে স্কুলের বন্ধুদের সাথে কি নিয়ে গল্প করবো। সবাই গল্প করবে আর আমি তাকিয়ে তাকিয়ে শুনবো। সেটা কি হয়? তাই তো সবার সাথে পাল্লা দিয়ে আমিও কোন কিছু বাদ দিতাম না। কিন্তু না না আমার পড়া লেখা শেষ করে নিতাম আগে।
শুক্রবার আসলে বেশ তাড়াতাড়ি দুপুরের খাবার খেয়ে নিতাম। কারন তিনটে বাজেই শুরু হয়ে যাবে বাংলা ছায়াছবি। তাই তো আগে থেকেই বাংলা ছায়াছবির ফাঁকে, মানে যখন এ্যাড হবে তখন খাওয়ার জন্য চাল আর ছোলাবুট ভেজে রেখে দিতাম খাওয়ার জন্য। আর যখন সিনেমার ফাঁকে এ্যাড হতো তখন খেয়ে নিতাম। অবশ্য এ নিয়ে আবার ঝগড়া যে হয়নি তা কিন্তু না। আমি তো চুরি করে খেতাম। সেটা যখন অন্যরা দেখতো তারা খেতে চাইতো। কিন্তু আমি দিতাম না। আর এই নিয়ে তো চুলাচুলি হয়েও যেত মাঝে মাঝে। এক সময়ে সবাই বিরক্ত হয়ে আমাদের কে রুম থেকে বের করে দিতো। হি হি হি
আর আলিফ লায়লার কথা কি বলবো। প্রতি সপ্তাহেই বেশ কৌতূহল কাজ করতো ভিতরে কি হবে আজ। কতদিন যে কত টেনশন করেছি সেই আলিফ লায়লা কে নিয়ে। আচ্ছা আপনাদের কারও কি ম্যাকগাইভারের কথা মনে আছে। তখন যে কোন ক্লাসে পড়ি সেটাই মনে নেই। কিন্তু আজও মনে পড়ে। ম্যাকগাইভার না দেখলে পেটের ভাত হজম হতো না। বেশ ভালো লাগতো সেই ম্যাকগাইভার সিরিজের ইনট্রো মিউজিকটি। আজও কানে মাঝে মাঝে বেঝে উঠে সেই মিউজিক। এরকম হাজারও স্মৃতি আজ আমায় পিছু টানে।আজও মনে হয় যদি ফিরে যেতে পারতাম সেই দিন গুলোতে। তাই তো বলি আগে কি সুন্দর দিন কাটাতাম।
শেষ কথা
শেষ কথা
সত্যি বলতে মুছে যাওয়া দিন গুলো আমায় যে পিছু ডাকে। তাই তো মনে ইচ্ছে জাগে একবার যদি সুযোগ পেতাম তাহলে আবার শৈশবে ফিরে যেতাম। আপনাদের ইচ্ছে কি একটু জানাবেন তো। অপেক্ষায় রইলাম আপনাদের মতামতের।
আমি মাকসুদা আক্তার। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @maksudakawsar হিসাবে পরিচিত। ঢাকা হতে আমি আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত আছি। আমি একজন গৃহিনী এবং চাকরিজীবী। তারপরও আমি ভালোবাসি আমার মাতৃভাষা বাংলায় নিজের মনের কথা গুলো আমার বাংলা ব্লগের প্লাটফর্মে শেয়ার করতে। আমি ভালোবাসি গান শুনতে এবং গাইতে। আমি অবসর সময়ে ভ্রমন করতে এবং সেই সাথে সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি নিজের ক্যামেরায় বন্দী করতে ও ভালোবাসি। মাঝে মাঝে নিজের মনের আবেগ দিয়ে দু চার লাইন কবিতা লিখতে কিন্তু আমার বেশ ভালোই লাগে। সর্বোপরি আমি ভালোবাসি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে।
আলিফ লায়লার কথা মনে পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমিও ছোটবেলায় অনেক দেখতাম এই আলিফ লায়লা। খুব ভালো লাগতো। তবে আপনাদের মতো এত সুন্দর স্মৃতি নেই। আপনার ছোটবেলার কথাগুলো জেনে খুবই ভালো লাগলো। খুব সুন্দর ছিল আপনার শৈশব। আমাদের সবারই শৈশব জীবন অসাধারণ। ফেলে আসা দিনের গল্প গুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জি আপু সত্যি কিন্তু সুন্দর ছিল আমার শৈশব। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ছেলেবেলার স্মৃতিকে বেশ সুন্দর করে আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার স্মৃতিগুলো পড়ে হাসবো না কি করবো বুঝতে পারছি না। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। কিন্তু চুলাচুলি কার সাথে করেছেন আপু?
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।