গল্প- রোজার জীবনের জন্য কে দায়ী?

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামু আলাইকুম

কেমন আছেন বন্ধুরা?আশা করি সবাই বেশ ভালই আছেন। আমিও বেশ ভাল আছি। তবে বেশ ব্যস্ততার মধ্যে দিন যাচ্ছে। কিভাবে যে দিন চলে যাচ্ছে তা বুঝে উঠার সময়ই যেন পাচ্ছি না। এই যেমন নতুন জায়গায় পোস্টিং হওয়ার পর হতে প্রায় শুক্রবারও ডিউটি করতে হচ্ছে। বেশ পেরেশানীর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যেন আমার সময় গুলো। তারপরও প্রতি দিনই আপনাদের মাঝে না আসলে কেন জানি ভাল লাগে না। কেমন যেন ‍শূণ্যতা অনুভব করি। আর তাই তো আজ আবার চলে আসলাম একটি বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে।

আজ আমি আপনাদের মাঝে বাস্তব জীবনের ঘটে যাওয়া একটি গল্প শেয়ার করতে বসলাম। আসলে আমরা যে সমাজে বসবাস করি প্রতিনিয়ত সেখানে কত যে ঘটনা ঘটে তা হিসেব করে বলার নয়। মানুষের জীবনে যে কখন কি হয় তা কেউ বলতে পারে না। আর তা যদি হয় ভুল মানুষকে ভাল বাসা তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। এই যেমন হলো আজ রোজার জীবনে। তাহলে চলুন বন্ধুরা কি ঘটনা ঘটল রোজার জীবনেতা যেনে আসা যাক।

Add a heading (57).png

ছবি সোর্স
Made By-@maksudakawsar

রোজা বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। পরিবারে তার বাবা মা আর একটি মাত্র ভাই আছে। রোজার বাবা ব্যবসায়ী। আর মা চাকুরী জীবি। তো রোজা ছেলেবেলা থেকে পড়াশুনায় তেমন ভালো নয়। বাব ব্যবসায়িক কাজে আর মা চাকুরীর কারনে সারাদিন বাহিরে থাকায় ছেলেমেয়ে গুলোর দিকে তেমন নজর দিতে পারে না। তবে সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের ভালবাসার কোন কমতি নেই। যখন যা চায় বাবা মা তাই দেয় সন্তানদের কে।

দেখতে দেখতে রোজা ক্লাস নাইনে উঠে গেছে। কিন্তু বাবা মায়ের অজান্তে রোজা এত অল্প বয়সেই নিলয় নামের একটি ছেলের সাথে প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এক সময়ে রোজা আর নিলয়ের সম্পর্ক এতটাই গনিষ্ঠ হয়ে পড়ে। রোজার বাবা মা বিষয়টি জানতো। কিন্তু ঐ যে অতি আহলাদ বলে কথা। মেয়ে প্রেম করছে সেটা যেন বাবা মায়ের কাছে গর্ব করার বিষয়। আর গর্বই বা করবে না কেন নিলয় যে এলাকার নামি দামি লোকের ছেলে। স্থানীয় এলাকায় নিলয়ের বাবার অঘাত সম্পত্তি আছে। কিন্তু নিলয়ও তেমন পড়াশুনা করেনি। এইচএসসি ২য় বর্ষের ছাত্র।

যাই হোক এক সময়ে রোজা আর নিলয় সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা বিয়ে করবে। কিন্তু এত অল্প বয়সে বিয়ে রোজার বাবা মা রাজি থাকলেও নিলয়ের বাবা মা কিন্তু তা মেনে নিতে পারে না। কিন্তু একমাত্র সন্তানের কথা ভেবে তারা নিলয়ের বিয়েতে রাজি হয়। কারন নিলয় ছিল একটু দূরন্ত স্বভাবের ছেলে। এক সময়ে নিলয় আর রোজার বিবাহ সম্পন হয়। বিয়ের পরে তাদের সময় ভালই যাচ্ছিল। রোজা কিন্তু বিয়ের পর তার মায়ের কাছেই বেশী থাকে। এমনকি রোজা এবং নিলয়ের অনেক চাওয়া পাওয়া রোজার বাবা মা পূরণ করে। এভাবেই চলছে তাদের জীবন চলছিল অনেক ভালবাসায়।

বিয়ের প্রায় এক বছর পার হয়ে গেল। রোজার কুল জুড়ে আসলো একটি ফুট ফটে সন্তান। সন্তান আশার পর থেকে যাবতীয় খরচ রোজার বাবা মা বহন করে যাচ্ছে। এমন কি নিলয়ের ও অনেক খরচ রোজার বাবা মা চালায়। রোজা মাঝে মাঝে শ্বশুড় বাড়ী গেলেও মায়ের বাসায় কাটে রোজার বেশীর ভাগ সময়। এবার বেশ কিছুদিন পর রোজা শ্বশুড়বাড়ী গেল। বেশ ভালোই কাটছিল রোজা আর নিলয় এর সংসার জীবন। কিন্তু হঠাৎ একদিন রোজার চোখে পড়ে যায় নিলয়ের কিছু জিনিস। হঠাৎ এক রাতে নিলয় যখন গভীর ঘুমে মগ্ন তখন রোজা খেয়াল করলো যে নিলয় এর মোবাইলে কিসের যেন একটি মেসেজ আসছে।

রোজা নিলয় কে না ডেকে একটু মোবাইল হাতে নিয়ে তো রোজার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল। কে একজন মেয়ে নিলয় কে ইমো তে একটি ম্যাসেজ পাঠিয়েছে। রোজা এসব কিছু দেখে বেশ কষ্ট পেল। কিন্তু রোজা সিদ্ধান্ত নিলো যে এ বিষয়টি কাউকে বলবে না। তবে সে নিলয়ের উপর এখন থেকে চোখ রাখবে। এভাবে দিন যাচিছল। বেশ কিছুদিনের মধ্যে রোজা বুঝতে পাড়লো যে নিলয় অন্য মেয়ের সাথে পরকীয়ায় জড়িত। আর এক সময়ে রোজার সাথে নিলয়ের সাথে এসব বিষয় নিয়ে বেশ ঝগড়া হয়। এক সময়ে রোজা রাগ করে তার বাবার বাড়িতে চলে গেল। এরপর নিলয় তার বাবা মায়ের চাপে দুই একবার রোজা কে নিতে আসে।কিন্তু রোজা নিলয় কে এক কথাই জানায় যে সে যদি সেই মেয়ের সাথে সম্পর্ক শেষ করে তবে রোজা তার বাসায় যাবে। কিন্ত নিলয় রোজাকে পরিস্কার জানিয়ে দেয় যে সে সেই মেয়েরে সাথে সম্পর্ক নষ্ট করতে পারবে না। এসব কথা শুনে রোজা নিলয়ের সাথে আরও রাগারাগি করে। এরপর নিলয় চলে যায় রোজাদের বাসা হতে।

বেশ কিছুদিন পর রোজা জানতে পারে নিলয় সেই মেয়েটিকে নিয়ে লং টুরে গেছে। এসব কথা শুনে রোজা পাগলের মত হয়ে যায়। রোজার বাবা মা নিলয় কে ফোন করলে নিলয় সাফ জানিয়ে দেয় যে নে আর রোজার সাথে সংসার করবে না। এ কথা শুনে রোজার বাবা মাও বেশ ভেঙ্গে পড়ে। তারা নিলয়ের বাবা মায়ের সাথে যোগাযোগ করলে তারা আশ্বাস দেয় যে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু নিলয় কারো কোন কথা শুনে না। এদিকে অনেক কষ্ট করে সেই মেয়ের নম্বর যোগাড় করে তাকে ফোন করা হলে, সে সাফ জানিয়ে দেয় যে, আমাকে কেন ফোন করেছেন? পারলে নিলয় কে ঠেকান।

নিজের মেয়ের এই অবস্থা দেখে রোজার বাবা মা আর রোজা প্রায় পাগলের মত হয়ে যায়। তারা কি করবে কোন কুল কিনারা পায় না। তারপর তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা মানবাধিকার সংস্থায় নিলয়ের বিরুদ্ধে মামলা করবে। এরপর তারা মানবাধিকা সংস্থায় মামলাও করে। এরপর মানবাধিকার সংস্থা তাদের নিয়ম অনুযায়ী নিলয় কে নোটিশ পাঠায়। এরপর চলতে থাকে তাদের আইনি কার্যক্রম। যেটা এখনও চলমান।

বন্ধুরা আপনারাই বলেন তো কেউ যদি মন থেকে কাউকে নিয়ে সংসার করতে না চায় তাহলে মানবাধিকার সংস্থা কি করবে? আর আজকের গল্পটি পড়ে আপনাদের কি মনে হচেছ, আসলে রোজার জীবনের এই অবস্থার জন্য দায়ী কে?
কেমন লাগলো আপনাদের কাছে আমার আজকের গল্পটি ? অপেক্ষায় রইলাম আপনাদের অনূভূতি গুলো জানার।
সবাই ভাল এবং সুস্থ্য থাকবেন।

❤️ধন্যবাদ সকলকে।❤️

@maksudakawsar

image.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.09
TRX 0.32
JST 0.033
BTC 108414.97
ETH 3828.36
USDT 1.00
SBD 0.60