পুজো পরিক্রমা ২০২৩ : চোরবাগান সার্বজনীন
নমস্কার বন্ধুরা,
সারা উত্তর কলকাতা জুড়েই নানান দুর্গা পুজো রয়েছে যেগুলো প্রায় শতবর্ষের কাছাকাছি। নেতাজির দুর্গা পুজো দেখে আমি চললাম সেরমই আরো এক উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী পুজো মণ্ডপের দিকে। পঞ্চমীতে সন্ধ্যে পেরিয়ে তখন সবে রাত হয়েছে সেই সাথে পথে জনসমাগম যে অনেকটা বেড়েছে তা রাস্তাতেই বোঝা যাচ্ছিলো। আর হাঁটতে হাঁটতে যখন চোরবাগান সার্বজনীনের দুর্গপুজোতে পৌঁছে গেলাম তখন ভীড় টের পেলাম। ৮৮ বছরে পদার্পণ করা ঐতিহ্যবাহী চোরবাগান সার্বজনীনের এবছরের থিম "অনুভূতি"।
আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের বাইরে যা আমরা ছুতে পারি না কিংবা ধরতে পারি না অথচ সেগুলোকে আমরা অন্তরে অনুভব করতে পারি সেটাই হলো অনুভূতি। যা আমাদের পারিপার্শ্বিক বস্তুবাদ এবং ভৌত জগতকে অতিক্রম করে যায়। অনুভূতি হলো আমাদের অনেক প্রকারের আবেগের মিশ্রণ। যা কাউকে ভাষায় বলে বোঝানো সম্ভব হয় না কিন্তু আমরা প্রত্যেকেই অনুভব করতে পারি। হয়তো অনুভূতি আমাদের ইন্দ্রিয় দ্বারা বুঝতে পারি না তবে আমাদের অন্তর আত্মা সেটাকে সহজেই অনুভব করে নেয়।
মন্ডপ পৌঁছে যাওয়ার পরে বেশ কিছুটা সময় লাইনেই কাটাতে হলো। আদপে সন্ধ্যা বাড়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে কলকাতার পথে জনসমাগম বেড়েই চলেছিল তবে মানুষ বেড়েছে বলে পুজো পরিক্রমা থামিয়ে দেওয়া যায় না। তাই বেশ কিছুটা সময় ধরে হলেও লাইনে দাঁড়িয়ে রইলাম। শেষে যখন মূল মণ্ডপে পৌঁছালাম তখন যেন আমার অবাক হওয়ার পালা। চোরবাগান সার্বজনীন যেভাবে তাদের মণ্ডপ সজ্জা দিয়ে তাদের ভাবনা আমাদের সামনে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে সেটাকে অসাধারণ বললেও কম হলো। শিল্পীর ভাবনা উঠে এসেছে কাঠ, লোহা, কাঁচ এর কাজের মধ্যে দিয়ে।
মন্ডপ এবং আলোকসজ্জার মাঝে বিরাজিত মহিষাসুমর্দিনী মা দুর্গা। চোরাবাগান সার্বজনীনের মাতৃ প্রতিমা অন্য সব প্রতিমার থেকে ভিন্ন রকমের। মা এখানে সমস্ত হাতে অস্ত্রের পরিবর্তে দুই হাতে অস্ত্র নিয়ে ও বাকি গুলোতে চুড়ি পড়ে আছেন। ভালো করে লক্ষ্য করে বুঝলাম চুড়ি গুলো আসলে মায়ের বিভিন্ন অস্ত্রের অনুরূপ। পূর্বে শাসকরা নারীদের উপরে অকথ্য অত্যাচার করত সেই কারণে তখন আমাদের দেশের নারীরা তাদের চুরিতেই অস্ত্র লুকিয়ে রাখতেন। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই চোরাবাগান সার্বজনীনের মাতৃ প্রতিমা করা হয়েছে।
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
চোরবাগান সার্বজনীনের থিমটা দারুণ লেগেছে দাদা। আসলেই অনুভূতি কিন্তু ধরাছোঁয়ার বাইরে, তবে মনের মধ্যে আমরা সেটা অনুভব করতে পারি। তাদের সম্পূর্ণ আয়োজন এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে দাদা। প্রতিটি ফটোগ্রাফি দারুণভাবে ক্যাপচার করে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সবমিলিয়ে বেশ উপভোগ করলাম সম্পূর্ণ পোস্টটি। যাইহোক এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।