পায়ে পায়ে কলকাতা: পর্ব ৮
নমস্কার বন্ধুরা,
কলকাতা জাদুঘরের আদলটা সেই ব্রিটিশ সময় থেকে একই রকম রয়েছে। তার বিশেষ একটা পরিবর্তন আসেনি যদিও সময়ের সাথে সাথে সব কিছুর পরিবর্তন দরকার। বিশেষ করে ভেতরের, যে পরিমাণে ভারতীয় সভ্যতার স্থাপত্য কার্য ও স্থাপত্য শিল্প রাখা রয়েছে তা কল্পনাতীত। দন্ডায়মান অবলোকিতেশ্বর মূর্তি দেখার পরেই যে মূর্তিটি দেখলাম সেটা হলো ষড়ভুজ অবলোকিতেশ্বর।
দশম শতাব্দীর ব্যাসল্ট পাথরের তৈরি এই মূর্তিটি ভারতের বিহার রাজ্যের নালন্দা শহর থেকে পাওয়া গিয়েছে। আগের পর্বে বলেছিলাম বৌদ্ধ ধর্মালম্বী মানুষদের মধ্যে অবলোকিতেশ্বর রূপেরই বেশি পূজা হয়ে থাকে তাই পাশাপাশি এই দুই রূপের মূর্তি রাখা হয়েছে। সারা বিশ্বে বৌদ্ধদের মধ্যে অবলোকিতেশ্বর মূর্তি দেখতে পাওয়া যায়। ভগবান শ্রী বিষ্ণুর স্নিগ্ধ রূপ এবং অবলোকিতেশ্বর গৌতম বুদ্ধের রূপের মধ্যে বিশেষ মিল রয়েছে তা হলো ভগবান বিষ্ণুর এক হাতে যেমন পদ্ম থাকে ঠিক তেমনি ষড়ভুজ অবলোকিতেশ্বর এক হাতে পদ্ম।
এরপরে যে মূর্তিটি দেখলাম সেটি হচ্ছে সূর্যদেবের কনিষ্ঠ সন্তান রেবন্তর। যদিও বর্তমানে হিন্দুদের মধ্যে রেবন্তের পুজোর দেখা যায় না তবে ষষ্ঠ শতাব্দীর এবং তার পরবর্তী কিছু সময় ধরে বাংলায় এবং বিহারের বেশ কিছু অংশে রেবন্তের পুজোর প্রচলন ছিলো। আর সেটারই বহিঃ প্রকাশ এই মূর্তি, যা একাদশ শতাব্দীর বিহারের নালন্দা শহর থেকে পাওয়া গিয়েছে। আমিও প্রথম সূর্যপুত্র রেবন্তর মূর্তিটি দেখলাম। আর এমনকি এই লেখার সময়ে প্রথম জানতে পারলাম যে সূর্যের কনিষ্ঠ পুত্রেরও একদময় পুজো করা হতো।
তারপর যে মূর্তিটি দেখলাম সেটা ভগবান শ্রীবিষ্ণুর তৃতীয় অবতার, বরাহ অবতারের। যে অবতারে ভগবান শ্রী বিষ্ণু দস্যু হীরন্যকে হত্যা করেছিলেন। খুবই বিরল মূর্তিটি কলকাতা জাদুঘরে খোলা অবস্থায় দেখে আমি অল্প বিস্মিতই হয়েছিলাম। সুরজকুন্ড, বিহারে পাওয়া ব্যাসল্টের এই মূর্তিটিও যে সর্বসম্মুখে খোলা অবস্থায় রাখা থাকবে সেটা হয়তো ভাবিনি কিন্তু ভারতীয় জাদুঘরের কাছে এর থেকে বেশি আর কি বা আশা করা যায়।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
কলকাতা জাদুঘরে থাকা বেশ কয়েকটি মূর্তির ফটোগ্রাফি দেখতে পেলাম দাদা। প্রতিটি ফটোগ্রাফি জাস্ট অসাধারণ হয়েছে। তবে ষড়ভুজ অবলোকিতেশ্বর এর মূর্তিটি দেখে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। কক্সবাজারের রামুতে গিয়ে গৌতম বুদ্ধের ১০০ ফুট লম্বা মূর্তি দেখেছিলাম। আমার খুবই ভালো লেগেছিল সামনাসামনি মূর্তিটি দেখে। যাইহোক সবমিলিয়ে আপনার পোস্টটি খুব ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।