পিঁয়াজির টানে

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার বন্ধুরা,

কনকনে ঠান্ডা আবার ফিরে এসেছে। আর ঠান্ডা ফেরার পেছনে দুটো মূল কারণ রয়েছে। দিনে যেমন সূর্য্যের দেখা নেই তেমনি শৈত্য প্রবাহ। সারাদিন ধরে প্রায় ১৮ থেকে ২০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া চলছে। এমনকি রাতেও থামবার জো নেই। মাঝে মাঝে তো মনে হচ্ছে রাত হলে হাওয়ার গতিবেগ আরো বেড়ে যায়। আজ ঠান্ডা নিয়ে আপনাদের বিশেষ বিরক্ত করব না। আসলে কি বিরক্ত না করলেও নয় কারণ ঠান্ডার সময় নিয়েই আজ আমার গল্প। গল্প পিয়াজি খেতে যাওয়ার।

আমরা সবাই মোটামুটি মানি শীত মানেই ভাজাপোড়া খাওয়ার আদর্শ সময়। আমিও তাই ক'দিন পরিকল্পনা করছিলাম ঠান্ডা একটু কমলেই কোথাও গিয়ে ভাজা পোড়া খেয়ে আসবো। এবার আপনারা ভাববেন খেতে যাওয়ার জন্য এত প্ল্যান করছি কেন। ওই যে বললাম ঠান্ডা! আদপে সন্ধ্যা হলে যেমন বীভৎস কনকনে ঠান্ডা আর সাথে দোসর হু হু করে হাওয়া। সেই সূত্র ধরে ইচ্ছে থাকলেও খেতে যাওয়ার সাহস জুটছিল না। তা দুপুর থেকে হাওয়া অল্প কমাতে, সন্ধ্যার দিকে যাওয়া স্থির করে ফেললাম।

PXL_20230115_173511798_copy_1084x775_1.jpeg

পরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ধ্যের আগ আগ দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। বাইরে বেরোতে বুঝলাম অল্প অল্প করে হাওয়া চলছে। তখনও বুঝিনি আমাদের জন্য সামনে কি অপেক্ষা করছে। যাক হাওয়া অল্প বেড়েছে বলে তো আর পরিকল্পনা বদলানো যায় না। আর অল্প হাওয়া বলে সেদিকে গুরুত্ব না দিয়ে হাঁটা দিলাম। ওদিকে আবার পিয়াজি অপেক্ষা করছে। রাস্তাতে উঠে দেখি চারিদিক শুনশান। প্রথমে একটু আশ্চর্য হলাম, ঠিকমত সন্ধ্যে হয়নি অথচ কোনো জন মানুষ নেই। সেসব কথা মাথায় না দিয়ে হাটা শুরু করলাম। ভাবলাম প্রায় তিন কিলোমিটার পথ আছে সেটা যদি হেঁটে যাই তাহলেই গরম লেগে যাবে।

জন বসতির মধ্যে দিয়ে হাঁটার সময় সময় বিশেষ হাওয়া গায়ে লাগলো না তাছাড়া মাফলার জড়িয়ে ছিলাম সে জন্য হয়তো হাওয়াটা বুঝতেও পারি নি। একটু একটু গরম লাগছিলো।বাতাসের হদিস পেলাম বসতি পেরিয়েই যখন সেই দোকানের কাছাকাছি পৌঁছেছি। যেন ঝড় বইছে। জন বসতি পেরোনো মাত্র ঠান্ডায় জড়সড় হয়ে গেলাম। দোকানে গুটিকয়েকের ভিড়। দোকানে অনেক খুঁজে পেয়াজির নাগাল পেলাম না, তাই সুযোগ বুঝে ঘুগনিই বললাম।

PXL_20230115_174517734_copy_1191x852.jpeg

গরমাগরম ঘুগনি স্যালাড সহ দিয়ে হাতে আসতেই খানিকটা গরম অনুভূতি হলো। অপেক্ষা না ঘুগনি মুখে দিলাম। আহা! ধড়ে প্রাণ ফিরলো। ঘুগনি উড়িয়ে মূল আকর্ষণ পেয়াজির জন্য অপেক্ষা শুরু করলাম। ওদিকে হু হু করে হাওয়া বইছে। জমে যাওয়ার পরিস্থিতি। মিনিট ১৫ হাওয়ার মধ্যেই দাড়িয়ে থাকার পর দুব্যাচ অন্য ভাজা ভুজি নামলে অবশেষে টপাটপ করে গরম তেলের মধ্যে পেঁয়াজির বল গুলো পড়তে থাকলো।

PXL_20230115_175832783_copy_1209x907_1.jpeg

কিছুক্ষণের মধ্যে পেঁয়াজি কড়া ভাজা হয়ে হাতে চলে এলো। ততক্ষনে আঙ্গুল খসে যাবে যাবে করছে। কোনো মতে গরম পেঁয়াজি তুলে টপাটপ মুখে পুরতে শুরু করলাম।

PXL_20230115_181105373_copy_1171x839.jpeg

কয়েকটা পেঁয়াজি মুখে নিতেই বুঝলাম আরো কিছুটা পেঁয়াজি না নিলে ঠান্ডার মধ্যে এতদূর হেঁটে আসা ব্যর্থ। তাই আরো কিছুটা পেঁয়াজি নিলাম।

PXL_20230115_181627713_copy_1151x822.jpeg




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness


Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Sort:  
 2 years ago 

আসলেই অনেক বেশি ঠান্ডা বাতাস বইছে আজকে কয়েক দিনে। আর যত বেশি ঠান্ডা তত বেশি ভাজাভুঝি খেতে ইচ্ছা করে। আর সত্যিই ঠান্ডার মধ্যে হাঁটলে কিছুটা গরম লাগে। আপনি তো দেখছি অনেক দূর পর্যন্ত হেঁটে তারপর খেতে গিয়েছেন। আপনার কথার স্টাইল দেখে মনে হচ্ছে ভীষণ সুস্বাদু হয়েছে খেতে। আর গরম গরম পেঁয়াজি গুলো দেখে খেতে ইচ্ছে করছিল। এইরকম একটা অনুভূতি শেয়ার করলেন, নিজেরই খেতে ইচ্ছা করতেছে।

 2 years ago 

খাওয়ার জন্য সাত সমুদ্র তেরো নদী পার করেও ফেলবো। হাঃ হাঃ

 2 years ago 

এরকম আপনার খাওয়া দেখে তো খিদে পেয়ে গেল। গরম গরম পেঁয়াজি খেতে ভীষণ ভালো লাগে। আর শীতের মধ্যে একটু হাঁটলে অনেক বেশি গরম অনুভুতি হয়। যদিও আমার হাঁটতে একটুও ভালো লাগেনা। আপনি দেখছি অনেক দূর পর্যন্ত হেঁটে গেলেন। আর ভাজাভুজি খাবার গুলো দেখলে একদমই থাকা যায় না। পেঁয়াজি গুলো দেখে মনে হচ্ছে অনেক মুচমুচে হয়েছে। এরকম শীতের মধ্যে অনেক ভালো একটি সময় কাটালেন।

 2 years ago 

গরম পেয়াজি নিমিষেই ঠান্ডা হয়ে গেলো। দুঃখের শেষ নেই।

 2 years ago 

আমাদের এদিকে ঠান্ডা কিছুটা কমেছে দাদা। তবে আপনাদের ওদিকে মারাত্মক অবস্থা দেখছি। এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন দাদা এই ঠান্ডার সময় তেলে ভাজা কিছু খেতে ভালোই লাগে। বেশ ঘুগনি আর পেঁয়াজু খেয়েছেন দেখছি। এখন আমার পেটে যে টান পরলো 😂

 2 years ago 

মারাত্মক অবস্থাই বটে। হাড় কাপিয়ে দিচ্ছে কদিন ধরে। পেটে যখন পড়েছে টান এক দৌড়ে চলে যান। হাঃ হাঃ

 2 years ago 

এই শীতের সময় এরকম ভাজাপোড়া খেতে ভালো লাগে আসলেই।আপনি তো বেশ দুর হেঁটে গিয়েছেন পেঁয়াজির টানে।আর অনেক গরম পোশাক পরেছিলেন তাই আর তেমন হওয়া লাগেনি। পেঁয়াজি হাতে পেতে সময় লাগছিল তাই ঘুগনি খেয়ে নিলেন।তারপর সেই কাঙ্খিত পেয়াজি।খেতে নিশ্চয় অনেক সুস্বাদু ছিল,বুঝতে পারলাম আপনার লেখায়।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

উপায় নেই, আবার দাড়িয়ে থাকতেও ভালো লাগে না। তাই ঘুগনি 😁

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি পোষ্টে পিঁয়াজি আর ঘুগনি খাওয়ার বর্ণনা এমন ভাবে দিলেন, পড়ে মনে হচ্ছে মাত্র খেলেন। আর এভাবে বর্ণনা দিলে পাঠকের মুখে জল চলে আসে। মুখে জল চলে আসলে তো এখনই বাহিরে চলে যেতে হবে পিঁয়াজির খুজে,হি হি হি। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

পাঠকের মুখে জল আসুক সেটাই তো দরকার।

 2 years ago 

শীতের সময় ভাজাপোড়া হলে আর কি লাগে।যাক দাদা এত দূর হেঁটে যাওয়া সার্থক হলো।আসলে শীতকালে একটু আকটু শীত না পরলে ব্যপারটা আবার জমে না।ঘুগনিটাকে অনেকটা আমাদের দেশের চটপটির মত লাগছে কিছু ফুচকা দিলেই তো।😉কি লোভনীয় খাবারের ছবি দিলেন।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ

 2 years ago 

শীত চলে গেলেই ভাজাপোড়া বাদ।

ফুচকা দিলেই ঘুগনি চটপটি 🤣🤣

 2 years ago 

আসলেই এই ঠাণ্ডায় মনে হয় ভাজা পোড়া খাই।কিন্তু কম্বল থেকে বেরোনোর অলসতায় সেটা হয়ে ওঠে না। ঘুগনি আমার ভীষন প্রিয় একটা খাবার। ভাজাতে তো অবশ্যই মন টানে কিন্তু ঘুগনি অনেক টেস্টি 🤤।ভালোই হয়েছে প্রথমে পেয়াঁজি চোখে পড়েনি আপনার তাই টেস্টি ঘুগনি খাওয়া হয়ে গেল।

 2 years ago 

ঘুগনি খাওয়ার পোকা আমি। যেখানেই যাই যদি পাই ঘুগনি তাই বাকি সবকিছুই বাদ।

 2 years ago 

আমারও সেই একই ব্যাপার এই জন্যে আগে ঘুগনি দেখে কমেন্ট করলাম 😁।

 2 years ago 

শীত মানেই দাদা গরম গরম ভাজাপোড়া খাওয়ার মজাই অন্যরকম। ভাজাপোড়া খাওয়ার টানে এই ঠান্ডার মধ্যে ছুটে চলে গেছো দেখে অবাক লাগছে না আমার কারণ ভাজাপোড়ার টানই এমন ঘরে থাকতে দেয় না যতই ঠান্ডা পড়ুক না কেন। এমনটা আমার সাথেও মাঝে মাঝে হয়। খেতে এতটা ইচ্ছা করে যতই ঠান্ডা হোক বাইরে বেরিয়ে যাই এবং বাইরে থেকে খেয়ে আসি। আর একটু হাঁটাহাঁটি করা ভালো দাদা গা তো গরম হয় সাথে শরীর ,মন দুটোই ভালো থাকে।

 2 years ago 

অনেক দিন ধরে পরিকল্পনা করে তবেই যেতে পারলাম ভাই। তাও গিয়ে সে কি ঠান্ডা।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 59022.17
ETH 2569.27
USDT 1.00
SBD 2.53