পায়ে পায়ে কলকাতা: পর্ব ৯
নমস্কার বন্ধুরা,
সূর্য পুত্র রেবন্তের মূর্তি দেখে অল্প যেতেই আমরা জাদুঘরের প্রথম ঘরটিতে ঢুকে পড়লাম। যেখানে ভারতবর্ষের বিভিন্ন সময়ের শিল্পকলা এবং স্থাপত্য কার্য্য জ্বলজ্বল করছে। জাদুঘরের এই ঘরটিতে মূলত যে মূর্তিগুলো রাখা ছিল তার সবই একাদশ শতাব্দীর বিহারে তৈরি। বেশিরভাগ মূর্তি ব্যাসল্ট পাথরের হলেও কিছু কিছু অন্যান্য পাথর যেমন ক্লোরাইট ও হর্নব্লেন্ড পাথরের মূর্তিও দেখা গেলো। ঠিক এই কারণেই ভারতীয় জাদুঘর ভারতীয় শিল্পকলার আদর্শ নিদর্শন হিসেবে হয়ে উঠতে পেরেছে।
আর তার পাশাপাশি যেহেতু এখানে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন শিল্পকলা রয়েছে সেজন্য সাধারণ মানুষের কাছে এটা যেন এক জ্ঞানের ভান্ডার। বিশেষ করে যারা জিওলজি বা পাথর নিয়ে পড়াশুনা করেন তাদের জন্য জাদুঘরে রাখা বিভিন্ন মূর্তি গুলো যেন কোন খনির ভান্ডারের থেকেও কম নয়। আর তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল হর্নব্লেন্ড পাথরের তৈরি অষ্ট ভুজা মা দুর্গার মূর্তি।
মা দুর্গা বাঙালিদের জীবন যাপনে মিশে গিয়েছে। বাঙালির মননে মা দুর্গা পূজার গুরুত্ব অপরিসীম। মা দুর্গার পুজোর প্রচলন যেহেতু বহু শতাব্দী ধরে হয়ে এসেছে সেটা একাদশ শতাব্দীতে পাওয়া হর্নব্লেন্ড পাথরের তৈরি এই অষ্টভুজা মা দুর্গামূর্তি তার প্রমাণ। আমিও প্রাথমিকভাবে মূর্তিটি দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম কারণ সেই সময়ের মূর্তি হওয়া সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত এত সুন্দরভাবে রয়েছে সেটা সত্যিই আশ্চর্যের।
অষ্টভুজা মা দুর্গা মূর্তির দেখে এগিয়ে যেতেই পেলাম অবলোকিতেশ্বরের ধ্যান রত মূর্তি। একবিংশ শতাব্দীতে বিহারের কুরকিহারে পাওয়া এই মূর্তিটি কিন্তু ক্লোরাইট পাথরে তৈরি। তার আগ পর্যন্ত যেসব অবলোকিতেশ্বরের মূর্তি দেখেছিলাম সবই ছিল ব্যাসল্ট পাথরের আর এই মূর্তিটি ক্লোরাইটের। যেটা ব্যাসল্ট পাথরের তুলনায় অনেকটাই ভঙ্গুর।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |