যাত্রার দূর্ভোগ

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

নমস্কার বন্ধুরা,

দূরের যাত্রা মানেই কোনো না কোনো ঘটনার সম্মুখীন হওয়া, এবারেও তার বৈপরীত্য দেখলাম না। আবার নতুন এক ঘটনা ঘটলো যা সিনেমার চিত্রনাট্যের থেকে কম নয়। হেঁয়ালি না করে মূল ঘটনা আপনাদের শুরু থেকেই বলছি। সোমবার সন্ধ্যার আগ দিয়ে হঠাৎ জানতে পারলাম, মঙ্গলবারে বিশেষ কাজে আমাকে কলকাতায় যেতে হবে। আর কিছু বাদেই সন্ধ্যে হয়ে যাবে সেই মুহূর্তে রিজার্ভ টিকিট পাওয়া মুশকিল কিন্তু ওদিকে কলকাতা যাওয়াটা খুবই আবশ্যিক। দোটানায় পড়ে ভাবলাম ভোরের ট্রেনে যাওয়াটাই শ্রেয় হবে। সেক্ষেত্রে সারাদিন বসে থাকলেও সমস্যা নেই। তাছাড়া ব্যাগ পত্র গুছিয়ে নেওয়ার সময় হাতে পাবো। আর ভোরের ট্রেন ধরার সাহস একটা আছে তা হলো, ভোর ৫ টা ৩০ মিনিটের বাস। যা ধরলে আমাদের সবচেয়ে কাছের স্টেশনে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়।

20230117_052626_copy_2016x1512.jpeg

কোলকাতা যাওয়ার কথা শুনে তাই প্রথমে বাস ওয়ালা কাকুকে ফোন করলাম। ফোন ধরা মাত্রই জিজ্ঞেস করে ফেললাম, কালকে যাবেন কিনা? উত্তর পেলাম আমরা যাব না। মনটা তখনই ভেঙে গেলো, আবার সেই টোটো ওয়ালার পা ধরা। পায়ে ধরতে হবে কারণ, শীত। বিগত কদিন ধরে চরম শীত পড়ছে। আর কাউকে ভোরে নিয়ে যাওয়া মানে তাকেও কষ্ট দেওয়া সাথে নিজেও টোটোর হাওয়া লাগিয়ে কষ্ট পাওয়া। তারপর সেই কাকু আশ্বস্ত করে বললেন, তুমি আমাদের অন্য আরেকটা গাড়ি পেয়ে যাবেন। তখন সেই অন্য বাসওয়ালা কাকুর ফোন নাম্বার নিয়ে তাকে ফোন করে কনফার্ম হয়ে নিলাম যে তারাও ভোর সাড়ে পাঁচটায় যাবেন। শান্তি। চিন্তাটা অনেকটাই কমে গেলো। রাতে যথারীতি ব্যাগ পত্র গুছিয়ে রাখলাম আর সময়ের আগেই ঘুমোতে চলে গেলাম।

20230117_052631_copy_2016x1512.jpeg

ভোর সাড়ে চারটায় অ্যালার্ম বাজতেই ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পড়লাম যাবো বাস ধরার জন্য। কনকনে শীত সেজন্য গরম পোশাক পড়তেই হলো। বাইরে দাঁড়িয়ে সেই বাস কাকুর ফের ফোন করলাম। কাকু কতদূর?

আগের তারিখের মতন ওপার থেকে উত্তর এলো, আজকে তো আমরা যাবো না। আমার মাথায় বাজ ভেঙে পড়লো। খুব রাগ হচ্ছিলো আবার ভাবছিলাম এইবার কিভাবে যাবো। মাথা কাজ করছিলো না। সৌভাগ্যবশত এক দাদা কিছু মালপত্র কলকাতা পৌঁছের দেবার জন্য স্কুটার নিয়ে এসেছিল তাকেই পাকড়াও করলাম, স্টেশন পৌঁছে দেবার জন্য। ঠান্ডা দেখে দাদা প্রথমে নানা করলেও শেষ পর্যন্ত যাওয়ার জন্য তৈরী হয়ে গেলো।

PXL_20230117_053239940_copy_1704x1216.jpeg

মুহূর্ত নষ্ট না করে স্কুটারে চেপে বসলাম ঘড়িতে তখন ভোর সাড়ে পাঁচটা তাপমাত্রা ছয় কিংবা সাত ডিগ্রি চারিদিকে ঘন কুয়াশায় রাস্তা ঢেকে আছে। স্টেশনে পৌঁছানোর তাড়নায় সেসব মোটেও খেয়ালে ছিলো না। স্কুটার চলতেই সব খেয়াল হলো। কিলোমিটার খানেক রাস্তা পেরিয়েছি কিনা, ভেতরে কাঁপ দেওয়া শুরু হলো সাথে হাত পায়ের আঙুলে জ্বালা।

PXL_20230117_053241852_copy_1811x1292.jpeg

এভাবে কোনোমতে কিলোমিটার আটেক রাস্তা পার করে যাওয়ার পর এক মফঃস্বলে টোটো দেখে দাড়িয়ে পড়লাম। টোটো ওয়ালা স্টেশনের দিকে যাওয়ার জন্য হাঁক পাড়ছে। সেই শুনে স্কুটার থেকে নেমে দাড়ালাম। তখন আঙ্গুল যেন খসে যাবে। বাকি পথ স্কুটারে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে কাঁপতে কাঁপতে টোটো তে চড়ে বসলাম। তারপর শুরু হল ট্রেন এবং স্টেশন পৌঁছানোর রেস। কেন রেস বলছি, সেটা বলবো পরের পর্বে।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness


Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Sort:  
 2 years ago 

দাদা শীত যেন পরছেই না ৷ আর এই শীতের ঠান্ডায় বাইরে যাওয়া যে কতটা কষ্ট বুঝি ৷ যা হোক শেষ মেষ যে রেল স্টেশনে পৌছেন এটাই বড় কথা ৷

 2 years ago 

বাপরে ছয়, সাত ডিগ্রি তাপমাত্রা । চারদিকে আবার ঘন কুয়াশায় রাস্তা ঢাকা। এর মধ্যেই আপনাকে বের হতে হলো। ভ্যাগিস যে সে স্কুটি ওয়ালা আপনাকে নিয়ে যেতে রাজি হয়েছিল। তা না হলে কি হতো। যাক সব বাধা বিপত্তি কাটিয়ে আপনি তাহলে কলকাতায় পৌছোতে পারলেন।

 2 years ago 

তাই তো দেখছি দাদা সিনেমার চেয়ে কোন অংশে কম হয়নি। এত বড় কনকনে শীতে বাসে গেলে হয়তো একটু তৃপ্তি পেতেন কিন্তু বাস আলা আপনার কথা না রেখে অনেক বড় একটি বিপদে ফেলিয়ে দিয়েছিল। যাইহোক, চেষ্টা কখনো বিফলে যায় না স্কুটার এবং টটোতে স্টেশনে পৌঁছাতে পেরেছেন যেটা সত্যিই অনেক সৌভাগ্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 58757.77
ETH 2554.49
USDT 1.00
SBD 2.52