শুভ নববর্ষ ১৪৩১

in আমার বাংলা ব্লগlast month

নমস্কার বন্ধুরা,

বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। ইশ্বরের কৃপায় আমিও ভালো আছি। আজ বাংলা নববর্ষ। আপামর বাঙালি বাঙালা সনের আরো একটি বৎসর সমাপ্ত করে নতুন বৎসরে পদার্পণ করলো। তাই শুরুতেই আমার বাংলা ব্লগের প্রত্যেক বাঙালি সদস্যকে জানাই নববর্ষের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।

GridArt_20240414_201625347.jpeg

Image : Pixabay | Edit : Snapseed

গ্রীষ্মের দাবদাহে নতুন বছরের প্রাক্কালটা একটু অন্যরকম ভাবে হলো। কদিন রোদের তাপ এতোটাই বেশি যেন দুপুরে রীতিমতো আগুন ঝরছে। পূর্বে যেখানে চৈত্র মাসের শেষ থেকে গ্রীষ্ম কাল শুরু হতো সেখানে বর্তমানে তাতে অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে বিগত বছর থেকে। ক্লাইমেট বদলের প্রভাব পড়ছে সব জায়গাতেই। জানিনা বরুণ দেব কবে এই পরিস্থিতি থেকে আমাদের মুক্তি দেবেন। সূর্য্য দেবের রোষানল থেকে বাঁচতে নববর্ষের দিনটা ঘরেই কাটালাম। যদিও ছোটবেলার পয়লা বৈশাখের স্মৃতি অন্য রকমের ছিলো। তখন অন্যরকম ভাবেই পয়লা তারিখটা কাটাতাম। খুব সকাল বেলাতে বাড়িতে শ্রী নারায়ণ পুজো হতো তার পরই বেরিয়ে যেতাম নানান আত্মীয় স্বজন ও পরিচিতদের দোকানে হালখাতা করতে।


আসলে পয়লা বৈশাখের দিনে বাঙালি নতুন বছর শুরু করে তাই প্রত্যেক দোকানে দোকানে হয় দেবী লক্ষ্মী ও গণপতির পুজো। সেই সাথে হয় হালখাতা অর্থাৎ দেবী লক্ষ্মী ও গণপতির আশীর্বাদ নিয়ে ব্যবসায়িক সালের শুরু করে নতুন হিসাবের খাতা শুরু। নানান দোকান থেকে এই হালখাতার নিমন্ত্রণ পাওয়া যায়। আর সেই সব হালখাতার নিমন্ত্রনের সুবাদে পুরো দিনটা কাটাতাম আত্মীয় ও পরিচিতদের দোকানে দোকানে ঘোরাঘুরি করে। হালখাতা করতে গিয়ে প্রত্যেক দোকান থেকেই পাওয়া যেতো নতুন বছরের একটি করে ক্যালেন্ডার ও ঠাঁসা মিষ্টির প্যাকেট। ছোটবেলায় এই নতুন নতুন ক্যালেন্ডার জমানো আমার শখ ছিলো, আর মিষ্টির প্যাকেট ছিলো উপরি পাওনা।

সারাদিন নতুন নতুন বাংলা ক্যালেন্ডার নেওয়া, পুজোর প্রসাদ খাওয়া। সাথে ঝাল মিষ্টি ঝুড়ি ভাজা আর নানা ধরনের মিষ্টি বাড়িতে নিয়ে আসা। এই নিয়ে সারাটা দিন দারুণ আনন্দ করতাম। আর ক্যালেন্ডার ও মিষ্টির সাথে আরেকটা বিশেষ জিনিস বাড়িতে নিয়ে আসা হতো তা হলো বাংলা পঞ্জিকা।

pexels-sharath-g-19151502_copy_2496x1664.jpg

Image : Pexels

বর্তমান সময়ে অনেক কিছুই বদলে গেছে। অনেক রীতিনীতি বদলেছে। আগে যেমন অনেক আত্মীয় পরিচিতদের নিমন্ত্রণ পাওয়া যেতো এখন সেসবে অনেক ভাটা এসেছে। এখন ক্যালেন্ডার ও মিষ্টির প্যাকেট পাওয়া গেলেও তবে হৃদ্যতা কমে গেছে অনেক। বর্তমানে বাংলা তারিখের পরিবর্তে ইংরেজি তারিখের চলই বেশি। তার পাশাপাশি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে বাঙালি জাতির সত্ত্বা। থাক সেসব অন্য দিনের কথা।

নতুন বছর মানে নতুন ভাবে শুরু করা। তাই চলুন সবাই মিলে পুরনো বছরের দুঃখ কষ্ট গুলো ভুলে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। নতুন ভাবে স্বপ্ন গড়ি। আসন্ন সময়ের জন্য শুভ কামনা জানিয়ে সব কিছু নতুন রূপে শুরু করি।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 last month 

বৈশাখ মাস আসলেই দোকানদাররা নতুন করে আবার খাতা তৈরি করে। আর হালখাতা উপলক্ষে থাকে একটি করে ক্যালেন্ডারও মিষ্টির প্যাকেট। ঠিক বলেছেন দাদা বর্তমানে বাংলা তারিখের পরিবর্তে ইংরেজি তারিখের চলই বেশি ।ধন্যবাদ দাদা নববর্ষের কিছু কথা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ।আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

Posted using SteemPro Mobile

 last month 

শুভ নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল দাদা। শুভ নববর্ষে আপনার ছোটবেলার স্মৃতি বিজড়িত গল্প পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ছোটবেলায় শুভ নববর্ষের দিনে মিষ্টি খাওয়া ক্যালেন্ডার গোছানো সত্যি আপনার শৈশবটা বেশ সুন্দর ছিলো। অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা সুন্দর পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 last month 

যাক তাহলে আর একজন মানুষ পাওয়া গেল। যে কিনা আমার মত করে নববর্ষ টা ঘরে বসেই কাটিয়েছে। শুভ নববর্ষ দাদা। সুন্দর করে আজ আপনি আমাদের মাঝে নববর্ষের স্মৃতি চারণ করলেন। মনে হচিছলো যে লেখার মাঝে ডুবে গেছি। ধন্যবাদ দাদা এমন সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে তুলে ধরায়।

 last month 

নববর্ষের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল দাদা। নতুন বছর অনেক ভালো কাটুক এই কামনা করি। বাংলা তারিখের থেকে ইংরেজি তারিখটা এখন অনেক বেশি চলে। বাংলা পঞ্জিকা তো একদম দেখাই যায় না। বাঙালি জাতির সত্তা আসলেই দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।

 last month 

প্রিয় দাদা আপনাকে জানাই নতুন পহেলা বৈশাখের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। প্রিয় দাদা আপনার লেখা পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। বিশেষ করে এটা খুবই সত্য কথা যে পূর্বে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নিকটতম আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকে নিমন্ত্রণ পাওয়া যেত এবং তাদের নিকট থেকে উপহারও পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমান সময়ে এরকম রীতি আর নেই। আমাদের সকলের উচিত আমাদের বাঙালি সমাজের পূর্বের নিয়ম রীতিগুলো পুনরায় চালু করার জন্য যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

 last month 

গরম এতটা চরমে যে দুপুরে আমার বাইরে বের হতে ভয় করে। কখন যেন ভিমড়ি খেয়ে পড়ে যায় হা হা। এই অতিরিক্ত গরমের মাধ্যমে যেন প্রকাশ ঘটল না বৈশাখ এসে গেছে হা হা। বৈশাখের সেই পুরাতন রীতিমতো আর নেই দাদা। এখন তো এইদিন হালখাতা খুব কম হয়। সময়ের সাথে এগুলোও যেন চাপা পড়ে যেতে শুরু করেছে। যাইহোক আপনাকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 last month 

শুভ নববর্ষ দাদা। গতকালকে প্রচন্ড গরম ছিলো আমাদের এখানেও। তবুও রমনা পার্কে গিয়েছিলাম নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান দেখতে। তারপর আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘুরাঘুরি করেছিলাম। নববর্ষের দিন বাহিরে গিয়ে একটু ঘুরাঘুরি না করলে আসলেই ভালো লাগে না। যাইহোক ছোটবেলায় সবকিছুতেই অনেক আনন্দ পেতাম। কিন্তু এখন আর তেমন আনন্দ লাগে না নববর্ষ বা অন্যান্য যেকোনো উৎসবে। সামনে হয়তোবা আনন্দ আরও কমে যাবে। এটা ঠিক সবাই এখন ইংরেজি নববর্ষ নিয়ে মাতামাতি করে। থার্টি-ফাস্ট নাইটে কতো আনন্দ উল্লাস করে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last month 

ভালোই করেছো দাদা, নববর্ষের দিনটা ঘরে কাটিয়ে। কারণ বাইরে যে গরম ছিল তাতে না বেরোনোই উচিত। আসলে দাদা ছোটবেলায় নববর্ষের দিনটা আমার নিজেরও দোকানে দোকানে হালখাতা খেয়ে কিংবা নতুন নতুন ক্যালেন্ডার পেয়ে কাটতো ।

এখন ক্যালেন্ডার ও মিষ্টির প্যাকেট পাওয়া গেলেও তবে হৃদ্যতা কমে গেছে অনেক।

এটা ঠিক যে, এখনকার মানুষের ভিতর সেই আন্তরিকতা আর খুঁজে পাওয়া যায় না। যাইহোক, নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো দাদা তোমার জন্য ।

Coin Marketplace

STEEM 0.28
TRX 0.12
JST 0.033
BTC 70893.40
ETH 3659.70
USDT 1.00
SBD 3.76