পুজো পরিক্রমা ২০২৩ : মানিকতলা চালতাবাগান সার্বজনীন

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

নমস্কার বন্ধুরা,

আমাদের জীবনের সবকিছুর সাথেই জড়িয়ে রয়েছে স্পর্শ। কোনো বস্তুর অনুভূতি পেতে গেলে পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে এই বিশেষ ইন্দ্রিয়টির ব্যবহার সবচাইতে বেশি করা হয়। আর এই স্পর্শ দিয়েই আমরা শব্দ উৎপন্ন করি, যা আমাদের মনে উৎপত্তি করে নানান সুর। বাংলার লোক শিল্পের এটাই মাধুর্য যেখানে স্পর্শের মাধ্যমেই তৈরি হয় ভিন্ন ভিন্ন সুর। বাংলার রন্ধ্রে জড়িয়ে থাকা লোক শিল্পের সঙ্গী বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র গুলো আঙুলের স্পর্শ নিয়েই বেজে ওঠে। অথচ বাংলার লোকশিল্পের সাথে সাথে সেই লোকশিল্পীদের ব্যবহার করা বাদ্যযন্ত্র গুলোও আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। লোকশিল্পের হারিয়ে যেতে বসা সুর আমাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই মানিকতলা চালতাবাগান সার্বজনীনের এবারের থিম 'স্পর্শ'।

PXL_20231019_182152886_copy_1209x907.jpg

PXL_20231019_181851865_copy_907x1209.jpg

আধুনিকতার সাথে লড়াইতে নেমে লোক শিল্পের সাথে জড়িয়ে থাকা বাদ্যযন্ত্র গুলো যেন ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে, কিছু কিছু বাদ্যযন্ত্র বিলুপ্ত হয়েও গেছে। বাংলার মানুষের জীবনের সাথে একসময় ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা লোক শিল্পের বাদ্যযন্ত্র গুলোর সুর মাঝে মধ্যে আমরা শুনতে পাই বটে তবে যন্ত্রের দেখা আর পাওয়া যায় না। আমাদের ও বর্তমান প্রজন্মের অনেকে একতারা, দোতারা, খোল-কর্তাল, বাঁশের বাঁশি, খমক চেনে না কিংবা দেখেনি। হারিয়ে যেতে বসা সেই সব বাদ্যযন্ত্রের সাথে বর্তমান প্রজন্মকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ৭৯ বছরে পদার্পণ করা মানিকতলা চালতাবাগান সার্বজনীনের এবারের পুজোর ভাবনা।

PXL_20231019_181908022_copy_1209x907.jpg

PXL_20231019_181915667_copy_1209x907.jpg

চালতাবাগান লোহাপট্টির পুজো দেখে অল্প পথ এগিয়ে যেতে পেয়ে গেলাম চালতাবাগান সার্বজনীনের পুজো। লোহাপট্টির পুজোর মতনই এই পুজো একদম গলির মুখেই করা হয় সেজন্য রাস্তা থেকেই পুজো মন্ডপ চোখে পড়ে যায়। মণ্ডপের কাছে এগিয়ে যেতেই পুজোর ভাবনা বোঝা গেলো। পুরো মণ্ডপ তৈরী করা হয়েছে নানান বাদ্যযন্ত্র দিয়ে। পাশাপাশি পুজো মণ্ডপে মণ্ডপের সাথে মিল রেখে বাদ্যযন্ত্র বেজে চলেছিল। যেটা সত্যি এক অন্য ধরনের অবহ তৈরী করেছিলো। মন্ডপ সজ্জায় জায়গা পেয়েছে একতারা, দোতারা এবং বাঁশি। আলোক সজ্জায় যেটা খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছিলো।

PXL_20231019_182055877_copy_1209x907.jpg

PXL_20231019_182041566_copy_1209x907.jpg

মন্ডপের ভেতরে ঢুকে যেতেই দেখতে পেলাম জগত জননী মা দুর্গা সেখানে বিরাজ করচেন। আর তার বন্দনা হয়ে চলেছে বাংলার লোক শিল্পের বাদ্যযন্ত্র থেকে বের হওয়া মঙ্গলধ্বনি দিয়েই।

PXL_20231019_181958089_copy_1209x907.jpg




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Sort:  
 7 months ago 

বাহ! কী দারুণ থীম! আসলেই, পুরানো দিনের ঐতিহ্য কে আমরা ধরে রাখতে পারছি না, সহজেই হারিয়ে যেতে দিচ্চি অন্য কালচারকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে এ তো আমাদেরই ব্যর্থতা... একতারা/দোতরা/ বাঁশের বাঁশির সুর এখন বিলুপ্তপ্রায় ই। অথচ সেসকল সুর শুনলে মনে হয় অন্তরে গিয়ে দোলা দেয়! সেসকল বাদ্যযন্ত্র এর সম্মিলনে মায়ের বন্দনা নিশ্চিতভাবেই সকলকে বিমোহিত করে রেখেছিলো বলেই আমার বিশ্বাস।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

আধুনিক হতে গিয়ে নিজেদের সংস্কৃতি ভুলতে বসেছি। সেই সাথে নিজস্বতা হারিয়ে ফেলছি।

 7 months ago 

আসলেই দাদা লোকশিল্পীদের ব্যবহার করা বাদ্যযন্ত্র গুলো দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে। এখন তো বাদ্যযন্ত্র চোখেই দেখা যায় না। শুধুমাত্র বিভিন্ন জাদুঘরে ঘুরতে গেলে বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র দেখা যায়। যাইহোক মানিকতলা চালতাবাগান সার্বজনীনের থিমটা দারুণ হয়েছে। তাছাড়া মণ্ডপ, আলোকসজ্জা এবং প্রতিমা সবকিছুই দারুণ লাগছে দেখতে। সবমিলিয়ে তাদের আয়োজন এককথায় দুর্দান্ত হয়েছে। বেশ ভালো লাগলো পোস্টটি দেখে। যাইহোক এতো চমৎকার মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

চালতাবাগানের দুটো পুজোই দারুন থিম করেছে। হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যকে আমাদের সামনে তুলে ধরে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 66930.79
ETH 3268.09
USDT 1.00
SBD 2.64