📷🌼শখের ফটোগ্রাফি পর্ব- ৪৮ || প্রকৃতির সৌন্দর্য || by @kazi-raihan

আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নামঃ @kazi-raihan। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

প্রতি সপ্তাহেই একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করার চেষ্টা করি সেই ধারাবাহিকতায় আজকেও আপনাদের মাঝে নতুন একটি ফটোগ্রাফি পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। সাপ্তাহিক ধারাবাহিকতায় আজকে আপনাদের মাঝে ৪৮ তম পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছে। আমি সাধারণত প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো আপনাদের মাঝে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি আসলে ফটোগ্রাফি বলতে কোন নির্দিষ্ট একটি সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলার যে চেষ্টা সেটাকেই বোঝানো হয় বলে আমি মনে করি। যেমন ধরুন আপনি নদীর পাড়ে গিয়েছেন আর নদীর পাড়ে গিয়ে নদীর সৌন্দর্যটা ক্যামেরাবন্দি করে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। যাইহোক কয়েকদিন ধরে যেহেতু বেশ বৃষ্টি হচ্ছে আর আমাদের এলাকায় আজকের দিন দিয়ে একটানা পাঁচ দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে যদিও মাঝে মাঝে কিছু সময়ের জন্য বৃষ্টি বিরতি হচ্ছে তবে প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। মজার বিষয় কালকে সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টিটা কম ছিল আবার আকাশে মোটামুটি চাঁদের দেখাও পেয়েছিলাম ভেবেছিলাম হয়তোবা আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে কিন্তু সকালবেলায় আবার বৃষ্টি হলো। আজকের এই পর্বে পুরনো অ্যালবাম থেকে বেশ কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছি। আবার কয়েকটি ছবি নতুন অর্থাৎ এই সপ্তাহেই ক্যাপচার করেছি যাইহোক নতুন পূরণ মিলে আজকের পুরো পর্বটিই আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।

চলুন তাহলে শুরু করি।

• আমি এর আগে একদিন ফেসবুকে একটি ফটোগ্রাফি গ্রুপে দেখলাম এই জায়গা থেকে সুন্দর ছবি তোলা হয়েছে আর সেদিন থেকেই আমি ধারণা করে রেখেছিলাম কুষ্টিয়া যাওয়ার পথে এই জায়গার ছবি তুলব। তবে মজার বিষয় হচ্ছে কাকতালীয়ভাবে বৃষ্টির দিনে সেই দিন টা পড়ে গিয়েছিল যার কারণে ছবিটা আরও বেশি ভালো হয়েছে। আমাদের এলাকার লোকজন এই জায়গাটাকে ফকিরতলা মোড় হিসেবে চিনে। যাইহোক বাসায় ফেরার সময় তখনও ঘুরে ঘুরে বৃষ্টি হচ্ছিল আমি রাস্তার সাইডে ঠিক ব্রিজের একটু পিছনে বাইক রেখে হাঁটতে হাঁটতে অনেকটা পিছিয়ে গেলাম আর সেখান থেকে দেখতে পেলাম এই বট গাছের দৃশ্যটা পুরোপুরি ভালোভাবে ক্যামেরায় আসছে। বট গাছের দুই সাইডে দুটি রাস্তা চলে গিয়েছে সব মিলিয়ে ফটোগ্রাফি টা আমার কাছে বেশ ভালো মনে হয়েছে তাই সবার প্রথমে শেয়ার করেছি।

• আজ টানা ৫ দিন ধরে আমাদের এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। কখনো আকাশে মেঘ উড়ে বেড়াচ্ছে আবার কখনো ঝলমলে রোদ্দুর। আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে আর এই পরিবর্তনের কারণেই হয়তো এই সময়ে এরকম আষাঢ় মাসের মত বৃষ্টি হচ্ছে। তবে বৃষ্টিটাও অনেকটাই দরকার ছিল কারণ কৃষকের জমিতে ফসল ফলাতে হলে বৃষ্টির প্রয়োজন। গতকালকে বিকেলবেলায় আমাদের দোকানের বারান্দায় বসে ছিলাম তখন ধীরে ধীরে আকাশে মেঘ জমতে শুরু করেছিল আর তখন এই ছবিটা তুলেছিলাম। যদিও ছবি তোলার পর বৃষ্টি শুরু হলেও সেটা প্রায় থেমেছিল রাতের বেলায়। মেঘের অবস্থা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যে প্রচন্ড বৃষ্টি হবে।

• ফটোগ্রাফি তে থাকা ছবিটা দেখে অনেকেই ভাবতে পারেন হয়তো দূর থেকে কোন আলোর প্রতিফলনের ছবি তুলেছি আসলে এটা কোন আলো নয় যদিও দেখতে অনেকটাই আলোর মত লাগছে তবে এটা মাছ রাতের চাঁদের দৃশ্য। ভর দুপুর বেলা সূর্য যেমন একদম পুরোপুরি মাথার উপরে অবস্থান করে ঠিক তেমনি মাঝ রাতে চন্দ্র একদম মাথার উপরে এসে অবস্থান করে। ছবিটা অনেকদিন আগে ক্যাপচার করেছিলাম যখন ভরপুর লোডশেডিং শুরু হয়েছিল। প্রচন্ড গরমে লোড শেডিং এর কারণে আর রুমে থাকতে পারছিলাম না তাই মাঝরাতে বাইরে এসে দেখলাম ধীরে ধীরে ঠান্ডা বাতাস বইছে আর আকাশে ফুটফুটে চন্দ্র যার আলোতে মাঝরাতের সৌন্দর্যটা সত্যি অনেক ভালো লেগেছিল। চাঁদের আলো মনে হচ্ছিল এখন যেন দিন। তবে মাঝে মাঝে আকাশটা মেঘে ঢেকে যাচ্ছিল হয়তো বৃষ্টি হবে।

• এর আগে আমরা সুন্দরবন ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানে ঘুরতে গিয়ে সুন্দরবনের পাশেই একটি পার্কে গিয়েছিলাম পার্কটি মূলত সুন্দরবন এলাকায় যে নদী আছে সে নদীর পাড় ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে। নদীতে সব সময় জোয়ার ভাটার কারণে পানি কম বেশি উপরে উঠে নামা করে। নদীর পাড় থেকে পার্কের মধ্যে প্রবেশ করার জন্য হোক বা পার্ক থেকে নদীতে নৌকায় ঘুরতে যাওয়ার জন্য হোক যে কোন কারণবশতই সেখানে ছোট্ট একটি কাঠের সেতু তৈরি করা হয়েছে। কাঠের সেতুর উপর দিয়ে নৌকায় ওঠা হয় আর আমরা নদীর সাইডে একটু গিয়েছিলাম আর সেই সময়ই এই ফটোগ্রাফিটা করেছিলাম।

• আমাদের পাশের উপজেলায় গড়াই নদীর উপর দিয়ে নতুন একটি ব্রিজ হয়েছে আর তার নাম শহীদ গোলাম কিবরিয়া সেতু। সেদিনে কুষ্টিয়া থেকে বাসায় ফেরার সময় ব্রিজের উপর গিয়েছিলাম আর সেখানে গিয়ে যে ছবিগুলো তুলেছিলাম সেগুলো দিয়ে অবশ্য আপনাদের মাঝে একটি ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করেছি। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল আবহাওয়াটা বেশ ভালো লাগছেনা আমার কাছে আর সেই বৃষ্টি ভেজা আবহাওয়া আকাশে অনেকটাই মেঘ ছিল। মেঘলা আকাশকে কেন্দ্র করে সেখানকার ল্যাম্পপোস্ট নিয়ে ছবি তুলেছিলাম। রাতের বেলায় এই সেতু টাকে আলোকিত করার জন্য সেখানে অনেকগুলো ল্যাম্প পোস্ট সেট করা হয়েছে। অবশ্য এই ল্যাম্পপোস্টে লাইট জ্বলা কালীন সময়ে যদি রাতের বেলায় ছবি তোলা যায় তাহলে সেটা আরো বেশি সুন্দর হয় ভাবছি একদিন গিয়ে ঘুরে আসব।

• সুন্দরবনের ঘুরতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো ফটোগ্রাফি আপনাদের মাঝে ইতিমধ্যে শেয়ার করেছি তবে পুরোটা কাহিনী নিয়ে একটি ভ্রমণ পোস্ট শেয়ার করবো ভাবছি। আমরা যে নৌকায় সুন্দরবনের কিছু অংশ ঘুরেছিলাম সেই নৌকায় জ্বালানি যখন শেষের দিকে হয়ে গিয়েছিল তখন মোহনার পাশে একটি বাজার থেকে মাঝি তেল কিনতে গিয়েছিল সেই মুহূর্তে আমরা নদীতে নেমেছিলাম। অনেক সময় পানির মধ্যে হেঁটেছিলাম আর সেখানকার নোনা পানি থেকে অনেকগুলো শামুক তুলেছিলাম। সেই শামুক গুলো হাতে নিয়ে আবার ফটোগ্রাফিও করেছিলাম যদিও নৌকা রানিং হওয়ার পরে এই ছবি তুলেছিলাম।

• উপরের যে ফটোগ্রাফি টা দেখতে পাচ্ছেন তার সাথে হয়তো সবাই পরিচিত। সকাল বেলায় বেশ ভালই বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ার কারণে কচুর গাছের উপরে বৃষ্টির পানি গুলো জমেছিল। সকালে ফটোগ্রাফি পর্ব টা সাজিয়েছিলাম কিন্তু একটি ফটোগ্রাফি কম পড়েছিল সাধারণত সাতটি ফটোগ্রাফি নিয়ে একটি ফটোগ্রাফি পর্ব সাজানোর চেষ্টা করি। বাড়ির সামনে দেখলাম কচুর গাছের পাতার উপরে এরকম বৃষ্টির পানি জমে আছে আর ঠিক তার পেছনে একটি লতা এই ফটোগ্রাফিটার সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তুলেছে। যাইহোক প্রকৃতির মাঝে থেকে এরকম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাদের মাঝে ক্যাপচার করে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি কেমন লেগেছে সেটা অবশ্যই মন্তব্য করে আমাকে জানাবেন।

আজ এই পর্যন্তই ছিল, চেষ্টা করেছি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে তবে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে অন্য কোন ফটোগ্রাফি পর্বে বা নতুন কোন বিষয় নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।