📷🌼শখের ফটোগ্রাফি পর্ব- ৬৩ || প্রকৃতির সৌন্দর্য || by @kazi-raihan

আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নামঃ @kazi-raihan। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালো আছেন আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

প্রতি সপ্তাহেই একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করার চেষ্টা করি সেই ধারাবাহিকতায় এই সপ্তাহেও আপনাদের মাঝে একটি ফটোগ্রাফি পর্ব শেয়ার করব। আর এটা আমার ৬৩ তম ফটোগ্রাফি পর্ব। আমি সাধারণত প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো আপনাদের মাঝে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি আসলে ফটোগ্রাফি বলতে কোন নির্দিষ্ট একটি সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলার যে চেষ্টা সেটাকেই বোঝানো হয় বলে আমি মনে করি। যেমন ধরুন আপনি নদীর পাড়ে গিয়েছেন আর নদীর পাড়ে গিয়ে নদীর সৌন্দর্যটা ক্যামেরাবন্দি করে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। ইদানিং সকালবেলায় একটু হাটাহাটি করতে যাওয়া হয় যার কারণে বেশিরভাগ ছবিগুলোই সকালবেলা ক্যাপচার করা তাছাড়া মাঝে কিছুদিন অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলাম আর সেই মুহূর্তে বেশ কিছু ফটোগ্রাফি পুরাতন অ্যালবামে যুক্ত হয়েছে আর সেগুলো খুব সহজেই এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারছি। আর আজকে আবার নাইট ফটোগ্রাফি অ্যাড করেছি কারণ বিগত কয়েকটি ফটোগ্রাফি পর্বে রাতের সৌন্দর্যটা তুলে ধরেছি তাই ফটোগ্রাফির ভিন্নতা ধরে রাখতে এই পর্বেও একটি নাইট মুড ফটোগ্রাফি শেয়ার করছি। তবে আজকের এই ফটোগ্রাফি পর্বে পুরাতন অ্যালবাম থেকে কয়েকটি ছবি সংগ্রহ করেছি সেই সাথে নাইট মুডের যে ফটোগ্রাফিটা এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেটাও আমার পুরাতন অ্যালবাম থেকে সংগ্রহ করা। নিয়মিত ফটোগ্রাফি করে ছবিগুলো আলাদাভাবে সেভ করে রাখি যেটা পরবর্তীতে বিভিন্ন পর্বে তুলে ধরি।

চলুন তাহলে শুরু করি।

• কয়েকদিনের ব্যস্ততার কারণে ঠিকমত ফটোগ্রাফি ক্যাপচার করা হচ্ছে না তাই কালকে সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজগুলো কমপ্লিট করে বাড়ির পাশে সরিষার মাঠে কিছু ফটোগ্রাফি করতে গেলাম তবে সকালের সূর্যের আলোতে কুয়াশা আরো বেশি ভালো লাগছিল। যারা গ্রামে বাস করেন তারা সরিষা ফুলের গাছ অবশ্য ভালোভাবেই চিনেন। প্রথমে কয়েকটি ছবি তুললাম আর ছবিগুলো দেখার পরে মনে হল যদি সূর্যকে পেছনে রেখে কুয়াশা ভেজা সরিষা ফুলের গাছের ছবি তুলি তাহলে বোধ হয় বেশি সুন্দর হবে। ঠিক তাই, সেরকম কয়েকটি ফটোগ্রাফি করলাম দেখলাম তুলনামূলক অনেক ভালো হয়েছে তার মধ্যে একটি ফটোগ্রাফি আপনাদের সাথে উপরে শেয়ার করেছি।

• এই ছবিটা দেখেই চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায় এটা শীতের মৌসুমে ক্যাপচার করা। আমার মনে হয় প্রতিটা মানুষই শীতের সময় খেজুর গাছের কথা স্মরণ করে আর গরমকালে কখনোই মনে হয় খেজুর গাছের কথা মনে করে না। সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি একগ্লাস ঠান্ডা খেজুরের রস পাওয়া যায় তাহলে কিন্তু মন্দ হয় না। শীতের মৌসুমে স্কুল কলেজ ছুটি ছিল তাই ঢাকা থেকে মামার পরিবার গ্রামে এসেছিল। মামাতো ভাই পুরোটা ছুটির দিনগুলো বলতে গেলে আমাদের সাথে কাটিয়েছে। মামাতো ভাই আবির বললো ভাইয়া খেজুরের রস খেতে যায় চলেন। সকালবেলা খেজুরের রস খেতে গিয়েছিলাম আর সেখানে গিয়ে গাছ থেকে খেজুরের রসের হাড়ি নামিয়ে আনার পরে খেজুর গাছের দিকে লক্ষ্য করলাম আর দেখলাম ফোঁটা ফোঁটা তাও রস পড়ছে। তবে ফোঁটা ফোটা রসের ছবি না আসলেও খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য গাছ কেটে যে রস বের করার মাধ্যম সেই দৃশ্যটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি মাত্র।

• রাতের বেলায় চারিদিকে কুয়াশায় অন্ধকার আর চাঁদের আলোয় আকাশের সৌন্দর্যটা কিছুটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও কুয়াশার তীব্রতা তেমন বৃদ্ধি পায়নি তাই চাঁদের সৌন্দর্যটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমি ফটোগ্রাফি করার পাশাপাশি কিছু ফটোগ্রাফি আবার পুরাতন অ্যালবামে যুক্ত করে রাখি যাতে পরবর্তীতে সেই ফটোগ্রাফি গুলো আবার শেয়ার করা যায় যেমন সামনে শীতের মৌসুম আর এই শীতের মৌসুমে চাঁদের সৌন্দর্যটা খুব মিস করব। ধরুন এখন শীতের মৌসুম চারিদিকে প্রচন্ড কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীত পরছে তখন যদি এরকম সুন্দর চাঁদের ফটোগ্রাফি কেউ দেখে তাহলে নিশ্চয়ই গরমের আবহাওয়া তার মনে অটোমেটিক্যালি চলে আসবে কেননা গরমের সময় এরকম চাঁদের সৌন্দর্য সবসময়ই প্রায় লক্ষ্য করা যায়।

• উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন একটি গাভী তার বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছে। এই ছবিটা তুলেছিলাম বেশ কিছুদিন আগে যখন আমরা সবাই মিলে পদ্মার চড়ে ঘুরতে গিয়েছিলাম তখন। পদ্মারচরে ঘুরতে গিয়েছিলাম তখন দেখতে পেলাম রাখাল গরু চড়াচ্ছে আর আমরা সেদিকে এগিয়ে গেলাম। যিনি গরু চড়াচ্ছিল তার সাথে গিয়ে কিছু সময় কথা বললাম পরবর্তীতে লক্ষ্য করলাম একটি গাভীর বাছুর দুধ খাচ্ছে আর আমিও সেই দৃশ্যটা ক্যাপচার করার জন্য কাছে গেলাম। আমি যখন ছবি তুলছিলাম তখন গাভী সামনের দিকে তাকিয়ে ছিল। তবে এই ছবিতে আমার মনে হয় সবচেয়ে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেটা হচ্ছে মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসা। কেননা এই ছবিতে গরুটি তার বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছে। আর এর মাধ্যমে মায়ের প্রতি সন্তানের যে একটা ভালোবাসা সেটার একাংশ ফুটে উঠেছে।

• শীতের সময় মাঠের দিকে তাকালেই শুধু হলুদ সরিষা ফুলের সৌন্দর্য লক্ষ্য করা যায় আবার মাঠের মধ্যেও গেলে হলুদ সরিষা ফুলের দৃশ্য টাই বেশি ভালো লাগে। যখন আপনি হলুদ সরিষা ফুলের মাঠে নেমে যাবেন তখন লক্ষ্য করবেন মৌমাছি মধু সংগ্রহে ব্যস্ত। এই মৌসুমে মধুর দামও অনেক বেশি থাকে কারণ সরিষা ফুলের মধু তুলনামূলক অনেক ভালো আর দামও বেশি। যাই হোক যখন সরিষা ফুলের মাঠে গিয়ে মৌমাছির মধু সংগ্রহের ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করছিলাম তখন বারবার মৌমাছি উড়ে যাচ্ছিল। প্রথমে অনেক চেষ্টা করছিলাম কিন্তু কিছুতেই সম্ভব হচ্ছিল না পরে লক্ষ্য পরিবর্তন করে একটি নির্দিষ্ট মৌমাছির পিছু নিলাম আর সবশেষে সফল হলাম। উপরের যে ছবিটা দেখতে পাচ্ছেন এই ছবিটা তুলতে গিয়ে অনেক সময় দিতে হয়েছে আর অনেক সময় ধরে মৌমাছির পিছে পিছে দৌড়াতে হয়েছে।

• উপরের ছবিতে যে ফুলের ছবিটা দেখছেন সেটা একটি ঘাসের উপরে ফুটে থাকা ফুল। নদীকেন্দ্রিক এলাকায় যদি ঘুরতে যান তাহলে কিন্তু বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন ফুলের সাথে পরিচিত হতে পারবেন। এর আগে আমরা সবাই মিলে পদ্মা নদীর তীরে ঘুরতে গিয়েছিলাম আর সেখানে গিয়ে অনেকগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির ফুলের ছবি তুলেছিলাম যার মধ্যে এই ছবিটাও একটি। তবে এই ফুলের নাম জানিনা ছোট একটি ঘাসের উপরে এই ফুলটা ফুটেছে। প্রথমে ফোন ক্যামেরায় তুলতে গিয়ে ছবিটা ক্লিয়ার আসলো না পরে আবার ম্যাক্রো লেন্সে এই ছবিটা তুলেছিলাম। আমার মনে হয় কমিউনিটিতে এমন ভিন্ন ধরনের ফুলের ছবি খুব কমই দেখা যায় যাই হোক ভিন্ন ধরনের কিছু তুলে ধরতে পারলে তো নিজের কাছেও ভালো লাগে। যদি এই ফুলের নাম বা আগে কেউ এই ফুলের ছবি দেখে থাকেন তাহলে সে সম্পর্কে মতামতটা নিচে জানাবেন।

• উপরের যে ফুলটি দেখতে পাচ্ছেন সেটা হয়তো অনেকের কাছে পরিচিত আমাদের এলাকায় এই ফুলটি বা এই উদ্ভিদটি বাজারি ফুল নামে পরিচিত। তবে বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে common vetch বলা হয়। তাছাড়াও এটাকে কালাই জাতীয় উদ্ভিদ বলা হয়। এই উদ্ভিদের যে বীজ হয় সেটা দেখতে অনেকটা কালাই এর মত সেজন্যই হয়তোবা এই উদ্ভিদটা কালাই জাতীয় উদ্ভিদ নামে পরিচিত। বর্তমান সময়ে জমিতে খেসারি আবাদ শুরু হয়েছে আর এই উদ্ভিদটা বেশিরভাগ সময়ে খেসারির জমিতে দেখা যায়। এর আগে আপনাদের সাথে খেসারি ফুলের ছবি শেয়ার করেছিলাম ঠিক একই দিনে খেসারি ফুলের ছবি তোলার পাশাপাশি এই উদ্ভিদের ছবিও তুলেছিলাম যাইহোক এই উদ্ভিদটি কোন এলাকায় কি নামে পরিচিত সেটা অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন তাছাড়া এই উদ্ভিদের সৌন্দর্যটা কেমন লেগেছে সেটা ও অবশ্যই বলবেন।

আজ এই পর্যন্তই ছিল, চেষ্টা করেছি সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে তবে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করে দিবেন। দেখা হবে পরবর্তী কোন পোস্টে অন্য কোন ফটোগ্রাফি পর্বে বা নতুন কোন বিষয় নিয়ে ধন্যবাদ সবাইকে।