বৃষ্টি ভেজা দিন || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -৭ই আশ্বিন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | শরৎকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
এখন আশ্বিন মাস তবে আবহাওয়া দেখে মনে হচ্ছে যেন আষাঢ় মাস। সবে বর্ষাকাল শুরু হয়েছে এমনটাই মনে হচ্ছে। আষাঢ় মাসের পুরোটাই প্রচন্ড রোদ ছিল তবে আশ্বিন মাসে এসে ভরপুর বৃষ্টি আর একটানা মেঘ আকাশে জমে আছে। যাই হোক গতকালকে আমি সারাদিন এই বৃষ্টিতে ভিজেছি আসলে বৃষ্টিতে ভিজেছি বললে ভুল হবে রেইন কোর্ট ছিল যার কারণে বৃষ্টিতে ভিজিনি তবে বৃষ্টিটা মন ভরে উপভোগ করেছি। আমি সকালবেলা যখন বাসা থেকে বের হলাম তখন মিষ্টি রোদ বের হয়েছিল তবে কিছু দূরে আসার পরে দেখলাম কালো মেঘ চারদিক ঘিরে আসছে তখন ভাবলাম বাসা থেকে গিয়ে রেইনকোর্ট নিয়ে আসি তাই আবার দুই কিলো পথ ব্যাক করে বাসায় গিয়ে রেইনকোট নিয়ে আবার নিজের কাজের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। নিজের কাজ বলতে আব্বু কুষ্টিয়াতে আমাদের ব্যবসার কাজে একটু পাঠিয়েছিল তাছাড়া ছোট চাচার বাসায় আমার নিজের একটু প্রয়োজন ছিল তাই সকাল সকাল বেরিয়ে পড়লাম। সকাল ৯ টার আগেই কুষ্টিয়াতে পৌঁছে গেলাম আব্বু যে কাজগুলো দিয়েছিল সেই কাজগুলো কমপ্লিট করে চাচার বাসায় যাওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু আমি পৌঁছানোর কিছু সময় পর থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হল। আবার বৃষ্টি থেমে রোদ বের হলো ভাবলাম হয়তো আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে। কিন্তু এগারোটা থেকে বৃষ্টি শুরু হল একটানা মুষলধারে বৃষ্টি কোনমতেই থাম ছিল না। প্রচন্ড বৃষ্টিতে রাস্তায় যেন পানি জমে যাচ্ছিল এরকম অবস্থা। কত সময় আমার কাজ শেষ চাচার বাসায় যাব কিন্তু বৃষ্টি কম ছিল না কখন বৃষ্টি কমবে সেই অপেক্ষায় আমি বসে ছিলাম তবে দীর্ঘ এক ঘন্টা বৃষ্টি কমার অপেক্ষায় বসে থাকার পরে রেইনকোর্ট পড়ে ভাবলাম এবারে বেরিয়ে পড়ি তাই রেইনকোর্ট পড়ে পুরোপুরি বৃষ্টি প্রটেক্ট করার প্রস্তুতি নিয়েই বের হয়ে গেলাম। শহরের এক প্রান্ত থেকে অনুপ্রান্তে পৌঁছতে মাত্র দশ মিনিট সময় লেগেছিল কারণ প্রচন্ড বৃষ্টিতে রাস্তায় তেমন একটা গাড়ি ছিল না ফাঁকা রাস্তায় দ্রুত চাচার বাসায় চলে গেলাম। বাসায় গিয়ে দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে কিছু সময় রেস্ট নিয়ে তেল পাম্পে গিয়ে বাইকের এক হাজার টাকার তেল নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ড্রাইভ করছিলাম বেশ মজা লাগছিল। তবে বৃষ্টির ফোঁটা গুলো যখন হাতের উপর পড়ছিল মনে হয়েছিল হাতের মধ্যে কেউ একজন সুচ ঢুকিয়ে দিচ্ছে।
হাইওয়ে রাস্তা তে তেমন কোন গাড়ি ছিল না যার কারণে মনের আনন্দে ড্রাইভ করে আসছিলাম। গড়াই নদী পার হতেই যে টোল প্লাজা আছে সেখানে দাঁড়িয়ে অবশ্য একটু কথা বলতে হয়েছিল কেননা গড়াই নদীর পার হতে ট্রোল ব্রিজে দশ টাকা দিতে হয়। কিন্তু আমি তাকে বললাম বাসা থেকে বের হওয়ার সময় মানিব্যাগ ব্যাগের ভিতরে রেখেছি এখন আপনার দশ টাকা দিতে গেলে আবার সবকিছু খুলে দশ টাকা বের করতে হবে তখন লোকটি বলল আচ্ছা ভাইয়া তাহলে চলে যান এরকম আপনার মত অনেক বাইকারকে ছেড়ে দিয়েছি তাদের বৃষ্টির কারণে সমস্যা হচ্ছে বলে টাকা নেইনি আপনিও চলে যান। লোকটার কথা শুনে বেশ ভালো লাগলো। যাইহোক তারপর সোজা কুমারখালী চলে আসলাম। কুমারখালী এসে পাঁচ মিনিটের একটু কাজ ছিল শহরের মধ্যে, সেই কাজটা মিটিয়ে ভাবলাম বৃষ্টির মধ্যে বাইক নিয়ে ঘুরতে তো বেশ ভালই লাগছে তাহলে নতুন ব্রিজের পাশ দিয়ে একটু ঘুরে আসি তাই সোজা চলে গেলাম কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার গড়াই নদীর উপরে অবস্থিত গোলাম কিবরিয়া সেতুর উপরে। ব্রিজের মাঝামাঝি জায়গায় গিয়ে দেখলাম নদীতে বেশ ভালোই স্রোত আছে আর ব্রিজে অন্য কোন গাড়ি নেই বেশ দারুন লাগছিল আর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিটাও বেশ ভালোভাবে উপভোগ করছিলাম। আমি একদম সোজা ব্রিজ পার হয়ে অর্থাৎ গড়াই নদীর অপরপ্রান্তে গিয়ে দাঁড়ালাম। ব্রিজের অপর প্রান্তে গিয়ে আশপাশের বৃষ্টি ভেজা কিছু ছবি তুলেছিলাম সেগুলোই উপরে আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি।
ছবিগুলো দেখলে বুঝতে পারবেন আসলে রাস্তায় তেমন কোন লোক ছিল না আমি আবার বাইক নিয়ে ব্রিজের মাঝামাঝি জায়গায় এসে দাঁড়ালাম আর সেখানে এসে ভরা নদীর কিছু ছবি তুলেছিলাম। নদীতে পানি মোটামুটি ভালই আছে আবার স্রোত ছিল খুব। বাইক নিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে চারিপাশের এলোমেলো কিছু ছবি তুলেছিলাম যেহেতু গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল তাই বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। তবে যত সময় দাঁড়িয়ে ছিলাম তার মধ্যেই আশপাশের অনেকগুলো ছবি তুলেছিলাম এবং নিজেও সেলফি নিয়েছিলাম সেই সাথে আমার বাইকের ও ছবি তুলেছিলাম। তবে ছবি তোলার সময় লক্ষ্য করলাম ল্যাম্পপোস্টের উপরের দিকে কালো মেঘ আর সেই মেঘ থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে তাই ল্যাম্পপোস্ট নিয়ে কালো মেঘের ছবি তুলেছিলাম সেটাও শেয়ার করেছি আর নদী ভরা জল নিয়ে যে ছবি তুলেছিলাম সবগুলোই তো উপরে শেয়ার করেছি দেখলেই বুঝতে পারবেন।
কুষ্টিয়া থেকে খাওয়া দাওয়া করে বের হয়েছিলাম যার কারণে অনেক দেরি হলেও খাওয়া দাওয়া নিয়ে কোন টেনশন ছিল না তাই সেখানে অনেক সময় কাটিয়েছিলাম। বিকাল তিনটা নাগাদ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল আর আমি তখনও এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছি। বাড়ি আসার পথে কুমারখালী পার হয়েই এক জায়গায় বাইক নিয়ে আবার দাঁড়িয়ে ছিলাম। চাচার বাসা থেকে কিছু ব্যাগ নিয়েছিলাম সেগুলো দেখলাম একটু সাইডে চেপে গিয়েছে যার কারণে বাইকের সাথে আবার নতুন করে সেগুলো ঝুলিয়ে দেওয়ার জন্য সেখানে একটু দাঁড়িয়ে ছিলাম। ভাবলাম যেহেতু একটু দাড়ালাম তাই আশপাশের কিছু ছবি তুলব তবে লক্ষ্য করতে পারলাম বড় একটি গাছ আর দুই দিকে দুইটি রাস্তা চলে গিয়েছে তাই এই দৃশ্যটা আর মিস দিব না ভেবে বেশ কয়েকটি ক্লিক করলাম আর সেগুলোই উপরে তুলে ধরেছি। ছবি তোলা শেষ করে ভাবলাম এবার কোনো বিরতি না নিয়ে সোজা বাড়িতে যাব।
একদম সোজা বাড়িতে আসার পরে রেইনকোট খোলার পড়ে দেখলাম একদম কাপড় গুলা শুকনো আছে। সারাদিন একটানা বৃষ্টি আর আমিও বৃষ্টির মধ্যেই ঘুরেছি কিন্তু ভেতরের কাপড় গুলো একদম শুকনো আছে অর্থাৎ রেইনকোট বৃষ্টি থেকে আমাকে ভালো প্রটেক্ট করেছে। বৃষ্টির দিনে আমার তো বাইক নিয়ে ঘুরতে বেশ ভালো লাগে আর আপনাদের কাছে কেমন লাগে আর বৃষ্টিতে ভিজে ঘুরতে কেমন লাগে সেগুলো কমেন্ট বক্সে জানাবেন। মজার মজার মন্তব্য গুলো পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | সেপ্টেম্বর,২০২৩ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Posted using SteemPro Mobile
https://x.com/KaziRai39057271/status/1705238767412687230?s=20
বৃষ্টি ভেজা দিনটি দেখছি আপনি খুব সুন্দর ভাবে উপভোগ করেছেন ভাই। আসলে আপনার সাথে আপনার বাইক বন্ধুটি ছিল বলেই ,সারা রাস্তাতে লোক না থাকায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিটাকে আপনি উপভোগ করেছেন। রাস্তায় খুব বেশি লোক না থাকায় আপনি এই সুন্দর মুহূর্তটিকে আরও বেশি উপভোগ করার জন্য ,গোলাম কিবরিয়া সেতু থেকেও ঘুরে আসলেন দেখছি। দারুন উপভোগ্য একটি দিন ছিল এটি আপনার জন্য।
আসলেই সারা পথের সঙ্গী ছিল আমার এই বাইক বন্ধুটি। সুন্দর মন্তব্য করেছেন পড়ে খুব খুশি হলাম।
এবারের আশ্বিনে যেন মেঘ ভেঙ্গে পড়েছে। বৃষ্টি ভেজা দিনের অসাধারণ বর্ননা দিয়েছেন। এই অসাধারণ বর্ননা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। বৃষ্টিতে ভিজতে বেশ লাগে। আপনি বৃষ্টিমুখর দিনে রেইনকোর্ট চাপিয়ে কাজের পাশাপাশি ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং উপভোগ করেছেন তা আপনার লেখায় সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। ছবি গুলোও বেশ সুন্দর হয়েছে। শুভ কামনা আপনার জন্য।
আপনার মতামত আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
বাদলা দিনে বাইরে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেশ চমৎকার ভাবে উপভোগ করেছেন আপনি। আসলে বৃষ্টির দিনে বাইরে প্রকৃতি বেশ চমৎকার হয়ে থাকে। মেঘলা দিনে গুটি গুটি বৃষ্টিতে মোটর সাইকেলে আহরণ করে বাইরের প্রকৃতি বেশ সুন্দর করে উপভোগ করেছেন। বৃষ্টির দিনে ঘুরতে যাওয়ার চমৎকার কিছু মুহূর্তের অনুভূতি আমাদের মাঝে সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
হ্যাঁ বাইক নিয়ে সারাদিন বেশ ঘোরাঘুরি করেছি আর বৃষ্টিটাও উপভোগ করেছি।
বৃষ্টি ভেজা দিন উপভোগ করতে আমি অনেক বেশি পছন্দ করি। রাস্তা ফাঁকা থাকলে বৃষ্টি উপভোগ করতে অনেক ভালো লাগে, আর বৃষ্টি যদি হয় ধীরে ধীরে তাহলে তো কোন কথা নেই। গোলাম কিবরিয়া সেতুর উপরে গিয়ে ঘুরাঘুরি করেছিলেন এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। সব মিলিয়ে আপনার সম্পূর্ণ পোস্ট বেশ ভালো উপভোগ করেছি আমি।
আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
বৃষ্টির সময় এরকম ভাবে কোথাও গেলে অনেক বেশি ভালো লাগে। বৃষ্টি সময় অনেক ভালো মুহূর্ত অতিবাহিত করা যায়। আপনার সুন্দর অনুভূতিটা আমি তো বেশ ভালোই উপভোগ করলাম সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে। আর ব্রীজটাও কিন্তু অনেক সুন্দর। সেখানেও অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটালেন বুঝতে পারছি।
আসলেই অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম।
বৃষ্টিতে ভিজতে কার না ভালো লাগে বলেন।আমার ও খুব ভালো লাগে। কিন্তু বৃষ্টিতে ভেজা হয় না।কিভাবে ভিজবো বলেন,যেভাবে আজকাল ব্জ্রপাত হয়,বুক কেঁপে উঠে।তাই এখন আর বৃষ্টিতে ভিজতে পারিনা।আপনি সারাদিন বৃষ্টিতে বাইরে রইলেন। অথচ বাসায় এসে দেখলেন রেইন কোট আপনাকে রক্ষা করেছে।বৃষ্টি ভেজা দিনের অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো। দারুন দারুন ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করলেন ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।