ছোট গল্প : মরিয়ম || by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ - ১৮ই আশ্বিন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | মঙ্গলবার | শরৎকাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



Screenshot_20231002_215553_Canva-01.jpeg

Canva দিয়ে তৈরি



শহরের ছোট্ট একটি বস্তির মধ্যে মরিয়ম নামের একটি মেয়ের জন্ম হয় মরিয়মের বড় একটি ভাই ছিল আর মরিয়ম ছিল ছোট তবে কিছুদিন পরে মরিয়মের আরও একটি ছোট ভাই হয়। যেহেতু তারা বস্তিতে বাস করত তাদের প্রতিদিনের খরচ কোনমতে চলে যেত এক কথায় দিন এনে দিন খাওয়া অবস্থা। মরিয়মের বাবা পেশায় ছিল একজন রিকশাওয়ালা আর তার মা শহরের বিভিন্ন বাসায় কাজ করে কিছু অর্থ পেত আর কিছু খাবার পেতে সেগুলো নিয়ে এসে ছেলেমেয়েদের খেতে দিত। ধীরে ধীরে মরিয়ম বড় হতে থাকলো আর মরিয়মের ভাই বড় ছিল তাই সে বড় হয়ে তার বাবার মতই রিক্সা চালানো শুরু করল। শহরের অভাব অনটন দেখে মরিয়মের মা চিন্তা করল তার বাপের বাড়িতে একটু জমি পাবে সেখানে গিয়ে তারা ছোট একটি ঘর তুলে সেখানে বসবাস করবে। কেননা শহরে সবকিছুর দাম অনেক বেশি আর তাদের পরিবার এখন বড় হতে যাচ্ছে তাই খরচটা আরো বেড়ে গিয়েছে তবে তারা যে গ্রামে গিয়ে একটি ঘর তুলবে সেই টাকাও তাদের ছিল না তাই বাধ্য হয়ে আরো কিছুদিন শহরের বস্তিতে থাকতে হলো।

ধীরে ধীরে মরিয়ম বড় হতে থাকলো আর একপর্যায়ে তার বিয়ের বয়স হয়ে গেল তবে তারা অনেক দরিদ্র হওয়ায় হুট করেই মরিয়মকে তার পরিবার বিয়ে দিতে পারছিল না কারণ বিয়ে দিতে হলে অনেক টাকার প্রয়োজন। অন্যদিকে মরিয়মের বড় ভাই বিয়ে করে আলাদা সংসার গুছিয়ে নিয়েছে তাই শুধু মরিয়মের বৃদ্ধ বাবার রিক্সা চালানোর টাকা দিয়ে তাদের পরিবার চলতে থাকে যদিও মরিয়মের একটা ছোট ভাই ছিল সে তখনও আয় রোজগার তেমনটা করতে শেখেনি। বস্তির পাশেই মরিয়মের বাবা একটি ছেলের খোঁজ পেল আর ছেলেটি ছিল পেশায় ট্রাক ড্রাইভার মরিয়মের সাথে তার বিয়ের কথা চলছিল।



women-3051614_1280.jpg

Source



যখন মরিয়মের বিয়ের কথা চলছিল তখন মরিয়মের নানা বাড়ির লোকজন মরিয়মের হবু বরকে দেখতে আসে যদিও মরিয়মের মামা বাড়ির লোকজন মোটামুটি টাকাওয়ালা ছিল তবে মরিয়মের বিয়ে উপলক্ষে তারা বেশ সচেতন ছিল কারণ তাদের একটা মাত্র ভাগ্নী আর মরিয়মের চেহারাও ছিল খুবই সুন্দর তাই তারা একটি ভালো পাত্র খুঁজতেছিল। যেহেতু মরিয়মের বাবার আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না তাই তারা ভালো পাত্র খুঁজলেও তাদের মন মত পাত্র জুটে নাই সবশেষে মরিয়মের একজন ট্রাক ড্রাইভার এর সাথেই বিয়ে হয়। এভাবে কিছুদিন চলার পরে মরিয়মের বাবা মা কিছু অর্থ গুছিয়ে মরিয়মের মায়ের বাড়িতে কিছু জমি পায়। আর সেখানে এসে ছোট্ট একটি ঘর তুলে বসবাস করতে থাকে আর অন্যদিকে মরিয়ম তার পরিবারকে ছেড়ে শহরে তার স্বামীর সাথে বসবাস করতে থাকে। হঠাৎ কিছুদিন পরে মরিয়ম তার মায়ের কাছে বলে তাদের ঘরে নতুন অতিথি আসছে অর্থাৎ মরিয়ম মা হতে চলছে। মরিয়মের মায়ের পরিবার তো খুবই খুশি ছিল তারা অপেক্ষায় ছিল কবে নাগাদ সেই খুশির সংবাদ পাবে।



women-2115405_1280.webp

Source



হঠাৎ একদিন মরিয়মের ফোন আসে মরিয়মের মায়ের কাছে আর মরিয়ম তার সমস্যার কথা তার মায়ের কাছে সবকিছু খুলে বলে। মরিয়মের মা সব কাজ ফেলে রেখে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় আর দীর্ঘ ছয় ঘন্টা যাত্রা শেষে মরিয়মের বাড়িতে পৌঁছায়। সন্ধ্যাবেলায় মরিয়মকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া হয় আর রাতের বেলায় মরিয়ম ছেলে সন্তানের মা হয়। মরিয়মের পরিবার খুবই খুশি ছিল কারণ সে একজন ছেলে সন্তানের মা হয়েছে আর মরিয়মের মায়ের পরিবারও খুব খুশি ছিল কারণ তার মেয়ে তাদেরকে নাতি ছেলে উপহার দিয়েছে। দিন যেতে থাকে আর মরিয়মের ছেলে বড় হতে থাকে তবে ততদিনে মরিয়মের সংসারে অশান্তি শুরু হয় কেননা মরিয়মের স্বামী ছিল একজন পেশাল ট্রাক ডাইভার আর সে বেশিরভাগ সময় বাইরে বাইরে থাকত আর বিভিন্ন ধরনের নেশা করতো আর বাসায় ফিরে মরিয়মের উপরে নির্যাতন করত। হঠাৎ এমন পরিবর্তন হওয়ায় মরিয়ম কিছুটা আন্দাজ করতে পারে যে তার স্বামী হয়তো অন্য কোন মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে এ জন্যই তার প্রতি এমন অত্যাচার আর দূর ব্যবহার করে।

যখন খুব বেশি অত্যাচার শুরু করে তখন মরিয়ম সিদ্ধান্ত নেয় সে তার বাবার বাড়িতে ফিরে যাবে যেহেতু তার বাবারা এখন গ্রামের বাড়িতে থাকে আর সেখানে ছোট ঘর তুলেছে আর গ্রামের কিছু জমি চাষ করে আগের থেকে অনেকটাই স্বাবলম্বী হয়েছে তাই সে গ্রামে চলে যায়। প্রায় এক সপ্তাহ পর মরিয়মের স্বামী সেখানে আসে আর মরিয়মের পরিবারের সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে মরিয়মকে আবার শহরে নিয়ে যায় তখন মরিয়ম ভেবেছিল হয়তো তার স্বামী নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে আর এই জন্যই তাকে আবার শহরে নিয়ে যাচ্ছে।

আজ এ পর্যন্তই বাকিটা আবার পরবর্তী পর্বে শেয়ার করব





🔚সমাপ্তি🔚




এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


20230713_182314.jpg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 11 months ago 

আমার কাছে আপনার লেখা আজকের এই গল্পটা পড়তে অনেক ভালো লেগেছে। এই গল্পটার প্রথম দিক দিয়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল তবে শেষের দিকটা অনেক খারাপ লাগলো। মরিয়মের স্বামী নেশা করে এসে তাকে মারধর করত জেনে অনেক খারাপ লেগেছে। তারপরে দেখছি মরিয়ম তার বাবার বাড়িতে চলে আসার পর তার স্বামী সবার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে শহরে নিয়ে এসেছে। পরবর্তীতে কি হয় এটা জানার অপেক্ষায় থাকলাম।

 11 months ago 

আসলে এই নিম্নবিত্ত পরিবারের মধ্যে এ ধরনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। তাদের মারামারি লেগেই থাকে। তবে মরিয়ম তার বাবার বাড়িতে যেয়েই ভালো করেছিল ।স্বামীর বাড়িতে আবার যেয়ে নতুন করে আবার অত্যাচারের সম্মুখীন হবে হয়তো। যাই হোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।ধন্যবাদ।

 11 months ago 

মরিয়মের ছোট গল্পটা পড়ে ভালো লেগেছে আবার খারাপ লেগেছে। আসলে এরকম মানুষগুলোকে বেশিরভাগ সময় দেখা যায় নেশা করে স্ত্রীকে মারধর করে। তাদের উপর অনেক বেশি অত্যাচার করে যার কারণে স্ত্রীরা চলে যায়। মরিয়ম ও তেমনভাবে চলে এসেছিল বাবার বাড়িতে, তবে তার স্বামী দেখছি আবারো তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। তার স্বামী ভালো হয়েছে নাকি এগুলো অভিনয় করছে এটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

 11 months ago 

এই পর্যন্ত কোনো ট্রাক ড্রাইভার দেখিনি যে নেশা করে না। যারা নেশা করে তারা হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে যায় এবং ঘরের বউকে অযথা নির্যাতন করে। মরিয়মের ভাগ্যটাই খারাপ। নয়তো কেনো এমন লোকের সাথে বিয়ে হবে। মরিয়মকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেও কোনো লাভ হবে না। আবারো একইভাবে নির্যাতন করবে। কারণ মরিয়মের স্বামী প্রথমত নেশা করে এবং দ্বিতীয়ত কোনো মেয়ের সাথে মনে হয় সম্পর্কে জড়িয়েছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

 10 months ago 

গল্পটা খুব চমৎকার ভাবে গুছিয়ে উপস্থাপন করলেন।আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।আসলে এমন নিম্নবিত্ত মানুষ গুলোর আচরন এমনি হয়।তারা নেশা করে বউদের উপর অত্যাচার করে।মরিয়ম বাবার বাড়ি গিয়ে ভালো ই করেছিল।কিন্তু তার স্বামী ক্ষমা চেয়ে তাকে নিয়ে গেলো। আসলে এ ধরনের মানুষ গুলো কিছুতেই ভালো হয় না।দেখা যাক সামনে কি হয়।তবে খুব সুন্দর ছিল গল্পটি।ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে সুন্দর এই গল্পটি শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59907.23
ETH 2647.48
USDT 1.00
SBD 2.43