ঠাকুরবিল ভ্রমণ || by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ10 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ -১৯শে আশ্বিন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বুধবার | শরৎকাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



Pastel minimalist Adventure Store Instagram Post_20231001_181633_0000-01.jpeg

Canva দিয়ে তৈরি



অনেকদিন ধরেই আমি আর আমার বান্ধবী তন্নী প্ল্যান করছিলাম কোথাও ঘুরতে যাব তবে কোথায় ঘুরতে যাব সেই জায়গাটাই সিলেক্ট করা হচ্ছিল না। কিছুদিন আগে ও আমাকে বলল ঠাকুরবিল এ নাকি এখন অনেক শাপলা ফুল আছে আর সেখানেই যাওয়ার কথা বলছিল তো আমি বললাম আচ্ছা সময় করে তোকে জানাবো। তবে ও শর্ত দিল শুক্রবারে যেতে হবে শুক্রবার ছাড়া ওর সময় ফ্রি নেই শিডিউল করলাম যেহেতু শুক্রবারে যেতে হবে। ইউটিউবে এই ঠাকুরবিল নিয়ে বেশ কয়েকটি ভিডিও দেখলাম মোটামুটি জায়গাটা ভালোই লাগলো তবে সেখানে ভিডিওতে যখন লাল শাপলা ফুলগুলো দেখলাম তখন সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছিল আর নৌকায় করে সেই লাল শাপলা ফুলগুলো কাছ থেকে দেখা যায়। তাছাড়া আজ থেকে নয় মাস আগে আমরা দুজন সামনাসামনি দেখা করেছিলাম তারপরে আর দুজনের একসাথে দেখা করা হয়নি কারণ কলেজে একসাথে পড়লেও এখন আমরা দুজন আলাদা আলাদা লেখাপড়া করি যেহেতু ও আমার সাথে ইন্টারমিডিয়েট লেভেল পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি আর বর্তমানে সে এখন ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে লেখাপড়া করে।



20230929_152740.jpg

20230929_152745.jpg

20230929_152936.jpg

20230929_152944.jpg



যাই হোক শুক্রবারে সকালবেলায় তন্নী আমার কাছে জিজ্ঞেস করল কখন বের হব তো আমি বললাম যে নামাজ পড়ে এসে বাসায় খাওয়া-দাওয়া করব তারপরে কিছু সময় রেস্ট নিয়ে বাসা থেকে বের হব। সে অনুসারে তুইও বাসা থেকে বের হবি। আমি প্রায় তিনটার দিকে বাসা থেকে বের হলাম তন্নীর বাসা হচ্ছে পাংশা উপজেলার মধ্যে যেটা রাজবাড়ী জেলায় অবস্থিত আর আমাদের গন্তব্য ছিল পাংশার পরবর্তী উপজেলা অর্থাৎ কালুখালী উপজেলায়। আমি বাসা থেকে বের হয়ে সোজা পাংশা এসে তন্নীর জন্য অপেক্ষা করলাম। আনুমানিক আমি বোধহয় ১০ মিনিট মত সেখানে অপেক্ষা করেছিলাম।মাঝে একটু বৃষ্টি হয়েছিল যার কারণে ওর আসতে একটু সমস্যা হয়েছিল যাই হোক খুব একটা বৃষ্টি হয়নি, হালকা গুরগুরি বৃষ্টি হয়েছে। আমি যত সময় সেখানে অপেক্ষা করছিলাম তত সময় কয়েকটা ছবি তুলেছিলাম তারপরে তন্নী সেখানে আসলো। যেহেতু অনেকদিন সামনাসামনি কথা হয় না তাই কিছু সময় কথা বলার পরে গুগল ম্যাপে রাস্তা দেখে দিয়ে আমরা দুজন বাইক নিয়ে ধীরে ধীরে সেখানকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম।



20230929_161800.jpg

20230929_161809.jpg

20230929_161814.jpg

20230929_162357.jpg

20230929_163345.jpg

20230929_163502.jpg

20230929_163520.jpg

20230929_164644.jpg



বাইক নিয়ে হাইওয়ে রাস্তা দিয়ে সোজা পাংশা উপজেলার আজিশ সরদার বাসস্ট্যান্ডে গেলাম এবং গুগল ম্যাপ সেখান থেকে আমাদেরকে ডানদিকে যেতে বলল সে অনুসারে আমরা ডান দিকে যাচ্ছিলাম। প্রথমের দিকে যে পর্যন্ত গিয়েছিলাম সে পর্যন্ত মোটামুটি রাস্তা অনেক ভালো ছিল যেতে বেশ ভালোই লাগতেছিল। কিন্তু অর্ধেক পথ শেষ হওয়ার পরে ভাঙা রাস্তা শুরু হল সেখানকার রাস্তার কাজ চলছে আর রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ যদিও বাইক নিয়ে গিয়েছিলাম তারপরেও একটু কষ্ট হয়েছিল। ভেতরের চিকন রাস্তা দিয়ে গুগল ম্যাপ দেখে দেখে যাচ্ছিলাম মাঝে মাঝে আবার কাঁচা রাস্তাও বেঁধেছিল যাই হোক একটু সমস্যা হয়েছিল তখন আবার স্থানীয় লোকদেরকে জিজ্ঞেস করার পরে তারা যে পথ দেখালো সেই অনুসারে গুগল ম্যাপ দেখে এগোতে লাগলাম এবং ১০ মিনিট মতো যাওয়ার পরে আমরা সেই কাঙ্খিত ঠাকুর গুলো পৌছে গেলাম। যখন দূর থেকে ঠাকুর বিলের এক অংশ দেখতে পেলাম তখন তো বেশ ভালো লাগছিল কারণ এই বিল দেখার জন্যই দুজন প্ল্যানিং করে এত দূরে এসেছি আমাদের বাসা থেকে প্রায় এই বিলের দূরত্ব ২৯ কিলোমিটার। তবে সেখানে যাওয়ার পরে অনেকটাই মন ভেঙে গেল কারণ বিলে খুব একটা পানি নেই আর নৌকাগুলো বেশিরভাগ তুলে নেয়া হয়েছে আবার খুব একটা শাপলা ফুলও নেই যে ভিডিওটা দেখেছিলাম ইউটিউবে সেটা কিছুদিন আগের এখন এসে যে এমন অবস্থা করবো সেটা কল্পনা করতে পারিনি। সেখানে পৌঁছানোর পর দুজনে আফসোস করছিলাম।



20230929_170036.jpg

20230929_170526.jpg

20230929_163544.jpg

20230929_165444.jpg

20230929_170045.jpg

20230929_170258.jpg



যাইহোক, যেহেতু সেখানে গিয়েছি তাই একটু হলেও সময় কাটানোর ইচ্ছা ছিল তারপর আবার তন্নী আগে থেকেই বলে রেখেছিল আমার নৌকার উপর বসে থাকার ছবি তুলে দিস তাই আমি ওকে বলছিলাম আর হাসছিলাম কিরে নৌকায় বসে ছবি উঠবি না হা হা হা। ও তখন দুঃখ প্রকাশ করছিল আর বলছিল তুই আমাকে নিয়ে মজা করিস না এমনি আমার খুব মন খারাপ। যদিও ও বলছিল চল এখান থেকে চলে যাই এখানে আর থাকবো না আমি তখন বললাম এত দূর কষ্ট করে এসেছি তো ঘাটে যে নৌকাগুলো বাধা আছে সেখানে গিয়ে কিছু সময় বসি। তো ঘাটে বাঁধা নৌকার উপর আমরা দুজন গিয়ে বসলাম আর তার পাশেই একটি ছেলে নৌকার উপর বসে নৌকা চালানোর চেষ্টা করছিল। তন্নী তখন ওই ছোট্ট পিচ্চিকে বলছিল তুমি আমাকে একটু নিয়ে নৌকা চালাবে। আসলে নৌকাগুলো তালা দেওয়া ছিল তাই আমরা চাইলেও নৌকাগুলোকে চালাতে পারছিলাম না। কিছু সময় পর একটা বড় ছেলে আসলো আর আমরা তার কাছে বললাম পুরো বিষয়টা এবং ছেলেটা বলল আচ্ছা ভাইয়া তাহলে আমি বাসায় গিয়ে নৌকার চাবি নিয়ে আসি।

কিছু সময় পরে ছেলেটা বাসা থেকে নৌকার চাবি নিয়ে আসলো এবং অনেক কষ্টে নৌকার তালা খুললাম কারণ পানি যাওয়ার কারণে নৌকার তালা অনেকটাই জ্যাম হয়ে গিয়েছে। ছেলেটা আমাদেরকে নৌকায় অনেক দূর নিয়ে গিয়েছিল আমরা সেখানে গিয়ে শাপলা ফুল তুলেছিলাম আরো বেশ কিছু ছবিও তুলেছিলাম শাপলা ফুলের যে ছবি গুলো উপরে তুলে ধরেছি। নৌকায় বসে দুজন গল্প করছিলাম আর বিলের শেষ প্রান্তে প্রায় চলে গিয়েছিলাম। আকাশে প্রচন্ড মেঘ ছিল আর খুব মেঘ ডাকছিল গুড়ুম গুড়ুম করে তাই আর বেশি দেরি না করে ছেলেটিকে বললাম আচ্ছা তাহলে এখন পাড়ের দিকে নিয়ে যাও তো ছেলেটি নৌকা পাড়ে গিয়ে আসলো। নৌকা পাড়ে নিয়ে আসার পরে ছেলেটিকে আমি মাত্র ১০০ টাকা দিলাম আর তাতেই ছেলেটি খুব খুশি হলো। পরবর্তীতে আমরা আর সেখানে দেরি না করে বাসার উদ্দেশ্যে চলে এসেছিলাম।



⬇️📥⬇️📥
ডিভাইসSamsung galaxy A52
ফটোগ্রাফার@kazi-raihan
লোকেশন
সময়অক্টোবর,২০২৩



🔚সমাপ্তি🔚




এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


20230226135443_IMG_2201-01.jpeg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 10 months ago 

দারুন একটি জায়গা ভ্রমণ করতে গিয়েছেন দেখছি। খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। অবশ্য এভাবে বিলে নৌকায় চড়ে ভ্রমণ করতে আমারও ভালো লাগে। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলো শাপলা ফুল আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন দেখে। অনেকদিন শাপলা ফুল এভাবে কাছ থেকে দেখা নেই।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59907.23
ETH 2647.48
USDT 1.00
SBD 2.43