ছোট গল্প : মরিয়ম (পর্ব-০২) || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ২৬শে আশ্বিন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বুধবার | শরৎকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
প্রথম পর্বে মরিয়মের জীবন কাহিনীর কিছুটা তুলে ধরেছিলাম। মরিয়ম একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করে এবং দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় একজন ট্রাক ড্রাইভার এর সাথে তার বিয়ে হয়। মরিয়মের স্বামী পেশার ট্রাক ড্রাইভার ছিল বলে মরিয়মের উপরে বিভিন্ন নির্যাতন করত তাই মরিয়ম বাধ্য হয়ে তার বাবার বাড়িতে ফিরে যায়। পরবর্তীতে মরিয়মের স্বামী মরিয়মের বাবার বাড়িতে মরিয়মকে নিয়ে আসতে চায় তখন মরিয়ম ভেবেছিল হয়তো তার স্বামী তার নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে তার উপর আর কোন অত্যাচার করবে না এই ভেবে তার স্বামীর সাথে আবার শহরে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। কিছুদিন আবার টুকটাক ভালোই ছিল কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে আবার মরিয়মের উপর অত্যাচার বাড়তে থাকে।
অন্যদিকে মরিয়ম সবকিছু সহ্য করে তার ছেলে সন্তানটিকে নিয়ে জীবন যাপন করতে থাকে। মরিয়ম ভেবেছিল এভাবে কষ্টে দিন পার করলেও হয়তো সৃষ্টিকর্তা একদিন তার জীবনে সুখ প্রদান করবে আর তার ছেলেটি একসময় বড় হবে আর তার এই সব দুঃখ কষ্ট দূর করতে পারবে। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছিল মরিয়মের উপরে নির্যাতনের পরিমাণ ততই বেড়ে যাচ্ছিল তাই দিন দিন তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছিল। এভাবে কয়েক বছর চলে যায় মরিয়মের ছেলের বয়স তখন চার বছর। মরিয়ম অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তার স্বামীর সাথে ঝগড়া করে আবার তার বাবার বাড়িতে ফিরে আসে কিন্তু এবারে আর তার স্বামী তাকে নিতে আসে না। তবে মরিয়ম ভেবেছিল হয়তো এবার তার স্বামী নিজের ভুল বুঝতে পেরে তাকে নিতে আসবে।
এভাবে কয়েক মাস কেটে যায় কিন্তু তার স্বামী তার সাথে ফোনে কোন যোগাযোগ করে না বা তাকে নিতেও আসে না। হঠাৎ অনেকদিন পরে মরিয়মের স্বামী মরিয়মের কাছে ফোন দেয় এবং বলে তাকে আর বউ হিসেবে সে রাখবে না অর্থাৎ মরিয়মকে তালাক দিবে। এই কথা শুনে মরিয়মের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে কারণ সে তার স্বামীকে অনেক ভালোবাসতো। তাছাড়া তাদের সংসারে ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তান হয়েছে তার ভবিষ্যৎ কি হবে?? মরিয়ম তার স্বামীকে বোঝানোর চেষ্টা করল এবং তার ছেলের কথা চিন্তা করার কথা বলল কিন্তু মরিয়মের স্বামী কোন কিছুতেই তার সাথে থাকতে রাজি হলো না বলল তোমাকে আমি তালাক দিতে চাই। এক পর্যায়ে অনেক সময় ঝগড়া করার পরে ফোন কেটে দিল আর কোন যোগাযোগ হয় না। এদিকে মরিয়মের বাড়ির সবাই চিন্তায় পড়ে গেল কেননা তাদের একটি মাত্র মেয়ে আর মেয়ের এত সুন্দর ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তান হয়েছে আর এই মুহূর্তে এরকম জামাই তাকে তালাক দিতে চাচ্ছে তাহলে ফুটফুটে ছেলেটার কি হবে আর তাদের একমাত্র মেয়ে মরিয়মের কি হবে। মরিয়মের মামার বাড়ির লোকজন ছেলে পক্ষের সাথে কথা বলতে চাইলো কিন্তু কোন পাত্তা পেল না। মরিয়ম প্রচন্ড মানসিক চাপের মধ্যে থাকল সে সবসময় ঘরবন্দী থাকতো আর তার স্বামীর কথা চিন্তা করত আর তার ছেলেটাকে নিয়ে কান্নাকাটি করত কিন্তু কে জানত তার পরিবারে এরকম বিপদ নেমে আসবে।
হঠাৎ একদিন কোর্ট থেকে নোটিশ আসলো যে মরিয়মের স্বামী মরিয়মকে তালাক দিয়েছে আর তার ছেলেটাকে তার স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দিতে হবে তখন মরিয়ম আরো চিন্তায় পড়ে গেল আরো কান্নাকাটি শুরু করল। সে চিৎকার করে কান্নাকাটি করছিল আর বলছিল এতদিন আমি আমার ছেলেকে নিয়েছিলাম এখন আমি আমার এই সম্বল হারিয়ে কাকে নিয়ে থাকবো। মরিয়মের পরিবার থেকে এই সমস্যার সমাধানের জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল তবে মামলা চালাতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন তাই সেটা আর সম্ভব হয়নি তাই মরিয়ম কেউ তার শেষ সম্বল টুকু অর্থাৎ তার ছেলেটাকে তার স্বামীর কাছে দিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। তবে দুপক্ষ সম্মিলিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় মরিয়মের ছেলেটাকে শহরের একটি মাদ্রাসায় রাখবে কেননা মরিয়মের স্বামীর যে দ্বিতীয় বউ ছিল সে মরিয়মের ছেলের উপরে অত্যাচার করতে পারে আর মরিয়মের স্বামীও দেখল ছেলেটাকে বাড়িতে রাখার চেয়ে মাদ্রাসায় রাখলে বেশি ভালো হবে। একদিক থেকে শিক্ষিত হবে অন্য দিকে টাকা বেঁচে যাবে।
এদিকে মরিয়ম তখন একদম একা হয়ে গিয়েছে তার পাশে থাকার মতো নিজের পরিবারের সদস্য অর্থাৎ মা-বাবা ছাড়া কেউই ছিল না। একা ঘর বন্ধু হয়ে সারাদিন কান্না কাটি করতে করতেই তার দিন যাচ্ছিল।
আজ এ পর্যন্তই বাকিটা আবার পরবর্তী পর্বে শেয়ার করব
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Posted using SteemPro Mobile
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
একপর্যায়ে কিন্তু মরিয়মের জীবনটাই নষ্ট হয়ে গেল। তার বাবা মা যদি তাকে এভাবে বিয়ে না দিত, তাহলে হয়তো সে বড় হয়ে ভালো কিছু করতে পারতো। আমি তো ভেবেছিলাম হয়তো সবকিছুর পরে তার স্বামী নিজের ভুল বুঝতে পারবে এবং আবার মরিয়ম কে নিয়ে যাবে কিন্তু এরকম কিছুই হয়নি। খুব খারাপ লেগেছে গল্পটা পড়ে। দেখা যাক এর পরবর্তীতে কি হয়। অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য।
হ্যা আপু পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।
মরিয়মকে এভাবে বিয়ে দেওয়া একেবারেই উচিত হয়নি। এখনতো তার হাজবেন্ড তাকে ডিভোর্স ও দিয়ে দিয়েছে। সব শেষে তার ছেলেটাকেও তার স্বামীর কাছে দিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল। এখন সে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছে, এটা জেনে খুবই খারাপ লেগেছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি এই গল্পের পরবর্তী পর্ব দেখতে পাবো। সেই পর্যন্ত অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকলাম।
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
এই গল্পের প্রথম পর্ব পড়েই বুঝতে পেরেছিলাম এমন কিছু হবে। কারণ বেশিরভাগ ট্রাক ড্রাইভাররা এমনই হয়। নেশা করে এবং ঘরে বউ থাকা সত্ত্বেও একাধিক বিয়ে করে। মরিয়মের কপালটা আসলেই খুব খারাপ। মরিয়মের কাছ থেকে তার ছেলেটাকেও কেড়ে নিয়েছে পাষাণ স্বামী। মরিয়ম আসলেই একা হয়ে গিয়েছে। তবে মরিয়মের স্বামীর কপালেও দুঃখ আছে। কারণ কাউকে এভাবে কষ্ট দিয়ে কেউ ভালো থাকতে পারে না। যাইহোক গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।