বিচার চাই (পর্ব-০২)|| by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ১৭ই ভাদ্র | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | শরৎকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
প্রথম পর্বে মধুর বাড়িতে একজন মহিলা এসে থাকতে চায়। মহিলাটি অনেক দূর থেকে এসেছে বলে মধুর মা মহিলাকে থাকতে দিতে রাজি হয়। মহিলাটি পরের দিন সকালবেলা তার ট্রেন রয়েছে আর সেই ট্রেনে চলে যাবে এই বলে মহিলাটি তাদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। রাতের বেলায় মধুর বাড়িতে ডাকাত দল এসে চারিপাশ ঘিরে নেয় আর তখন মধুর মা বুঝতে পারে আসলে যে মহিলাটিকে আশ্রয় দিয়েছে সে ছিল একজন ডাকার দলের সদস্য আর সে ছিল একজন পুরুষ মানুষ। গেটের সামনে অনেক লোকজন অর্থাৎ ডাকাত দলের কিছু সদস্য ছুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মাঝরাতে একজন মহিলা এরকম দৃশ্য দেখার পরে নিশ্চয়ই তার মনে ভয় হওয়ার কথা আর বাড়ির চারপাশ আটকানো ছিল যার কারণে অন্য পথ দিয়ে বাইরে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না তাছাড়া চারপাশ দিয়েই ডাকাত দলের সদস্যরা পাহারাদার ছিল যাতে বাড়ির মধ্য থেকে কেউ বাইরে যেতে না পারে। এভাবে যখনই মাঝরাত হল অর্থাৎ ঠিক যখন বারোটা বাজল তখন অ্যালার্ম বেজে উঠলো আর তার ঘরের ভিতর থাকা ডাকাত লোকটি উঠে পড়ে।
মাঝরাতে এলার্মের শব্দে যখন ডাকাত লোকটি উঠে পড়ে তখন সে দেখে দরজা তালা দেওয়া তাকে আটকে রাখা হয়েছে। ডাকাত বুঝতে পারে যে মধুর মা বিষয়টি জানতে পেরে গিয়েছে তখন সে দরজা খুলতে বলে কিন্তু মধুর মা ভয়তে দরজা খুলে না। অন্যদিকে গ্রিলে তালা দেওয়া বাইরে গেলে ডাকাত ঘরেও দরজা খুললে আরেক ডাকাত। মাঝরাতে মধুর মা অনেক বড় টেনশনে পড়ে গেল সে এই পরিস্থিতিতে কি করবে আসলে?? কিছু সময় পরে ভিতরে থাকা ডাকাত রুমের মধ্যে গিয়ে দেখে মধু শুয়ে আছে। তখন ডাকাতিটি মধুর মাকে দরজা খুলতে বলে আর বলে যদি দরজা না খুলে তাহলে মধুকে সে মেরে ফেলবে। মধুর গলায় ছুরি দিয়ে হত্যা করবে এই কথা বলে মধুর মাকে ভয় দেখাতে থাকে। ডাকাত দলের একমাত্র লক্ষ্য ছিল তাদের বাড়িতে যা সোনা গহনা সহ টাকা-পয়সা যা কিছু আছে সব কিছু নিয়ে যাবে তাই সে মধুর মাকে বলে যা কিছু সোনাদানা টাকা-পয়সা আছে সব তাকে দিয়ে দিতে তাহলে সে মধুকে ছেড়ে দিবে।
বলতে থাকে সব টাকা-পয়সা আমাকে দিয়ে দাও তবে কাউকে কিছু বলা যাবে না অন্যদিকে মধুর মা বলতে থাকে আমি তোমাকে কিছুই দিব না। এই পরিস্থিতিতে মধু খুবই ভয় পায় সে তার মাকে ডাকে আর বলে মা দরজা খুলে আমাকে বাঁচাও। এভাবে কিছু সময় মধু কান্নাকাটি করতে থাকে অন্যদিকে বাইরে থেকে মধুর মা বলতে থাকে আমার ছেলেকে ছেড়ে দাও আমাদের প্রতি একটু সদয় হও। রাতের বেলায় এমনিতেই শব্দ অনেক দূরে চলে যায় আর তাই নিরিবিলিতে এই কথা গুলো অনেক দূর থেকে সবাই শুনতে পাচ্ছিল তখন হঠাৎ প্রতিবেশী সহ আরো অনেকেই আস্তে আস্তে মধুর বাড়ির আঙিনায় আসতে থাকে কেননা মাঝ রাতে যদি এমন চেঁচামেচি কেউ শোনে তাহলে নিশ্চয়ই সে সেখানে গিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবে। গ্রামের লোকজন যখন তাদের বাড়ির গেটের সামনে আসে তখন দেখতে পায় গিটের সামনে ২০ জন ডাকাত দাঁড়িয়ে আছে আর তাদের হাতে ধারালো সব অস্ত্র এবং ছুরি রয়েছে। এমন দৃশ্য দেখে তারা সবাই ভয় পায় আর নিজেদের ঘরে চলে যায়। বলতে থাকে আগে নিজেদের জীবন বাঁচায় তারপরে দেখা যাবে এই বলে সবাই পর্যায়ক্রমে যার যার ঘরে ফিরে যায়। অন্যদিকে ঘরের মধ্যে থাকা ডাকাত মধুর মাকে টাকা পয়সা সহ সবকিছু দিতে বলে আর মধুর মা অস্বীকার করায় ডাকাত ছুরি দিয়ে মধুর হাত কেটে দেয় কিন্তু তারপরেও মধুর মা দরজা খুলতে রাজি হয় না। তারপরে ডাকাত মধুর পা কেটে দেয় আর মধু চিৎকার করতে থাকে কিন্তু কেউই এগিয়ে আসে না সবাই চুপচাপ ছিল অন্যদিকে মধুর মা বাইরে থেকে কান্নাকাটি করছিল। মধুর মা মনে করে ছোট্ট শিশুর প্রতি ডাকাত হয়তো মানবিক হবে শুধু হয়তো ভয় দেখাচ্ছে কিন্তু কিছু করবে না এই ভেবে সে বাইরে থেকে কান্নাকাটি করতে থাকে আর ডাকাত দলের সদস্যটিকে অনুরোধ করতে থাকে।
কিন্তু ডাকাত দলের সবাই এসেছে বাড়ি থেকে টাকা পয়সা সহ স্বর্ণালংকার ছিনতাই করার জন্য। কয়েকবার মধুর মায়ের কাছে সবকিছুর দাবি করার পরে যখন মধুর মা দিতে অস্বীকার করে তখন ছুরি দিয়ে মধুর গলা কেটে হত্যা করে। কিছু সময় পরে আর মধুর কান্নাকাটির আওয়াজ শোনা যায় না তখন মধুর মা আরো ভয় পেয়ে যায়। যখন মধুর মা চিৎকার করতে থাকে তখন গেটের সামনে থেকে ডাকাত গুলো সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কারণ যে কোন সময় তারা বিপদে পড়তে পারে যেহেতু বাড়ির ভেতরে ঢোকার কোন উপায় নেই সব কিছুতেই তালা দেওয়া আর তালাও ভাঙতে পারছে না তখন ডাকাত দলের সদস্যরা সেখান থেকে চলে যায় কিন্তু ভেতরের ডাকাত দলের সদস্যটি মধুকে গলা কেটে হত্যা করে বড় বিপদে পড়ে যায়। এভাবে ধীরে ধীরে ভোররাত হয়ে যায়। গ্রামের লোকজন চারদিক থেকে ঘিরে নেয় সেই সাথে পুলিশে চলে আসে। সকালবেলা পুলিশ তালা খুলে ঢাকার দলের সদস্যটিকে গ্রেফতার করে আর দেখতে পায় পাশেই ছোট্ট শিশু মধুর দেহ পড়ে আছে আর মধুর মা তার লাশের সামনে গিয়ে বসে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে।
মধুর মা চিৎকার করে কান্না করতে থাকে আর বলতে থাকে আমি তো ভালো মনে তোকে থাকতে দিয়েছিলাম আর তুই আমার কোল খালি করে চলে গেলি। মধুর মা বলতে থাকে আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার চাই , আমি বিচার চাই, বিচার চাই।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Posted using SteemPro Mobile
https://twitter.com/KaziRai39057271/status/1697538582310010928?s=20
বেশ কঠিন একটা গল্প আগের পর্ব টা পড়া হয়নি তাই বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর এই গল্পটা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
বিচার চাই গল্পটার দ্বিতীয় পর্ব পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। মধুর হত্যার কথা শুনে অনেক খারাপ লেগেছে আমার কাছে। আসলে ডাকাতদের মনে কখনো দয়া আসে না আর এই বিষয়টা ভাবাও আমাদের উচিত না। মধুর মা যদি সব শিকার করে গহনা ডাকাতদের দিয়ে দিতে তাহলে এতক্ষণে তার সন্তান বেঁচে থাকতো। এই গল্পটার প্রথম পর্ব পড়া হয়েছিল।
ঠিকই বলেছেন ডাকাতের মনে কখনো দয়া আসে না।