মায়ের হাহাকার (পর্ব-০১)|| by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ৩০শে ভাদ্র | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বৃহস্পতিবার | শরৎকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
বিকাল হলেই আকাশে কালো মেঘ ভিড় জমায় আর ধীরে ধীরে চারিদিকে অন্ধকার হয়ে আসে। সাধারণত বৈশাখ মাসে দুপুরের পর থেকে আকাশের কালো মেঘ দেখা যায় আর এই কালো মেঘ থেকেই কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। অনেক সময় কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে বৃষ্টিও মুষলধারে হয়ে থাকে। হঠাৎ একদিন আকাশে প্রচন্ড কালো মেঘ দুপুর বেলায় এমন মেঘ দেখে সবাই ভেবেছে আজকে হয়ত প্রচন্ড বৃষ্টি নামবে তবে প্রথম যাত্রায় মেঘ কেটে গেল কিন্তু বিকেলের মুহূর্তে আকাশে আবার ঘন কালো মেঘ চারদিকে যেন আবারও অন্ধকার হয়ে আসছে। সময় তখন আনুমানিক তিনটা বাজে, বৈশাখ মাসে এরকম মেঘলারা স্বাভাবিক আর এই মেঘ থেকেই মনে হচ্ছিল কালবৈশাখী ঝড় এখনই যেন আঘাত হানবে। ঝড়ের প্রভাব শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামের অঞ্চলে বেশি বোঝা যায় তারপর যদি নদীর পাড় এলাকায় হয় তাহলে সেটা তো আরো বেশি প্রভাব পড়ে কারণ ফাঁকা জায়গা থেকে ঝড় বেশি গতিতে আঘাত হানে।
নদীর ধারে ছোট্ট একটি গ্রাম। সেই সময়ে গ্রামের অনেকগুলো ছেলে একসাথে খেলাধুলা করছিল। সংখ্যায় গোনা যায় তাহলে ৮ থেকে ১০ জন হবে। সবাই সমবয়সী ছিল তাদের বয়স আনুমানিক ১০ থেকে ১২ বছর এরকম হবে। তার মধ্যে একটি ছেলে ছিল তার নাম রিংকু সে ছিল সবার চেয়ে অনেকটাই ছোট। সমবয়সীদের সাথে সে ছোট হলেও সেদিন বিকেলে খেলতে এসেছিল। ছেলেগুলো আকাশে এরকম কালো অন্ধকার মেঘ দেখে ভাবল আজকে তো বৃষ্টি হবে আর আমরা সবাই বৃষ্টির মধ্যে ফুটবল খেলব। প্রচন্ড বাতাস শুরু হলো কিছু সময় পরে তখন একটা ছেলে বলে উঠলো বাতাসের মধ্যে পানির মধ্য নেমে পড়লে আমরা আর ঝড় বুঝতে পারবো না চলো আমরা সবাই নদীতে নেমে গোসল করি তাহলে আর ঝড় আমাদেরকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারবে না। সবাই ভাবল আসলেই ঝড় শুরু হয়েছে আমরা সবাই নদীতে নেমে পড়ি আর সারাদিনের গরমের স্বস্তিটা নদীতে গোসল করে কাটিয়ে দেই এই ভেবে সবাই একসাথে নদীতে নেমে পড়ল।
সবাই একসাথে নদীতে গোসলের জন্য নেমে পড়ে তাদের সবাইকে নদীতে নামতে দেখে ছোট্ট রিংকু নদীতে গোসল করার জন্য নেমে পড়ে। সবাই ভালো মতই সাঁতার জানতো কিন্তু তাদের চেয়ে রিংকু অনেক ছোট ছিল আর রিংকু সাঁতার দিতে পারত না। যদিও ছেলেগুলো প্রথমে রিংকু কে বলেছিল নদীর পাড়েই থাকতে তবে বৃষ্টি হচ্ছিল সেই সাথে ঝড় আর তারা নদীর মধ্যে গোসল করছিল হঠাৎ করেই তাদের সবার খেয়াল অন্যদিকে চলে যায় আরে বৃষ্টিও মুষলধারে নেমে পড়ে। ঝড়ের বাতাস একটু কমলেও বৃষ্টিটা মুষলধারে হচ্ছিল। অন্যদিকে রিংকুর মা চিন্তায় পড়ে গেল ছোট ছেলেটি এই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে কোথায় গেল। মায়ের মন এমন ঝড় উঠলে চিন্তা করা স্বাভাবিক তারপর একদম ছোট্ট ছেলে মাত্র চার বছর বয়স। রিংকুর মা টেনশন করতে লাগলো, ছোট ছেলে কোথায় বিপদে পড়ল নাকি হল এমন ঝড় হচ্ছে সে কখন থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এদিকে প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে যার কারণে রিংকুর মা বাইরে খুঁজতেও যেতে পারছে না। কিন্তু রিংকুর মা বেশি সময় ঘরে স্থির থাকতে পারল না মায়ের মন শান্ত করার জন্য রিংকুর মা নিজে নিজেই একটি ছাতা নিয়ে প্রতিবেশীদের বাড়িতে খুঁজে বেড়াচ্ছে। তাদের কারোর বাড়িতেই রিংকুকে খুঁজে পেল না তখন রিংকুর মায়ের চিন্তা আরো বেড়ে গেল ছোট ছেলেটি কোথায় আছে আর সে কোথায় খুঁজবে।
অন্যদিকে রিংকু সবাইকে হইচই করে পানির মধ্যে গোসল করতে দেখে সে ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। একটি ছেলে রিঙ্কুকে নদীর গভীরে নামতে দেখে বকা দেয় এবং রিংকু আবার নদীর পাড়ের দিকে ফিরে যায়। রিংকু দূর থেকেই সবার হইচই দেখছিল আর আর ছেলে গুলো পানিতে ডুব দিয়ে খেলা করছিল সেটা দেখছিল। ছেলেগুলো যখন খেলায় মনোযোগী হয়ে যায় তখন রিংকু তাদের কাছে যেতে গিয়ে পানিতে পড়ে যায় আর নদীতে হালকা স্রোত ছিল যার কারণে সে আর উঠতে পারেনি। ছেলেগুলো খেলায় ব্যস্ত ছিল তাই রিংকু পড়ে গিয়েছে সেটা খেয়াল করেনি। তবে অনেকগুলো ছেলে একসাথে নদীতে গোসল করতে নেমেছিল তাই তারা বিভিন্ন দিকে ছুটাছুটি করছিল রিংকু স্রোতে ভাসতে ভাসতে একটি ছেলের পা জড়িয়ে ধরে আর নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে। রিংকু ভেবেছিল পা ধরলে হয়তো আমি কোনমতে পারে উঠতে পারব। যখনই রিংকু ছেলেটির পা ধরেছে তখন ছেলেটি ভেবেছিল নদীতে হয়তো ভয়ংকর কিছু আছে আর সেটা এসে তার পা ধরেছে।
আপাতত গল্পের প্রথম পর্ব এখানেই শেষ করলাম আর দ্বিতীয় পর্বে শেয়ার করব রিংকুর সাথে শেষ পর্যন্ত কি ঘটেছিল। তত সময় সবাই সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন এই কামনাই করি। আর প্রথম পর্বে আলাদা একটু আগ্রহ রেখে দিলাম যাতে সবাই পরবর্তী পর্ব পড়ার প্রতি আকৃষ্ট থাকে।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ছবি আঁকতে, ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও মাঝে মাঝে গুন গুন করে গান গাইতে খুবই ভালোবাসি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Posted using SteemPro Mobile
https://x.com/KaziRai39057271/status/1702368071598612684?s=20
আপনি অনেক সুন্দর একটা গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার লেখা এই গল্পটির প্রথম পর্ব আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। তবে শেষের দিকে পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। ছোট ছেলেটি পানিতে পড়ে গিয়েছে। এখন কি ছেলেটা বেঁচে উঠতে পারবে? অনেক কিছুই মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। দেখা যাক গল্পের শেষে কি হয়। খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্বে শেয়ার করবেন আশা করছি।
বাচ্চাটার কার সাথে কি হতে চলেছে? ওই ছেলেটাও ভেবেছিল হয়তো ভয়ংকর কিছু পানি থেকে তার পা ধরেছে? বাচ্চাটা কি বাঁচবে নাকি বাঁচবে না? আমার তো মাথার মধ্যে অনেক কিছুই আসছে। মায়ের হাহাকার গল্পটার প্রথম পর্ব আপনি দারুন ভাবে লিখেছেন। বাচ্চাটার মা বাচ্চা টাকে খুঁজছে কিন্তু বাচ্চাটা তো অন্য বাচ্চাগুলোকে দেখে পানির মধ্যে নেমে গিয়েছে। আর সাঁতার না জানার কারণে বাঁচতে চাচ্ছে কিন্তু পারছে না। পরবর্তীতে কি হয় এটা জানার অধীর আগ্রহে রয়েছি।
গল্পটা পড়ে প্রথম দিকে ভালো লাগলেও,শেষের দিকে খারাপ লাগলো রিংকুর জন্য। এতো ছোট বাচ্চাকে বাসা থেকে বের হতে দেওয়া উচিত হয়নি। রিংকু সবার আনন্দ উল্লাস দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারেনি। ছেলেগুলোর কোনো দোষ নেই, কারণ তারা রিংকুকে বেশ কয়েকবার নিষেধ করেছে। তবে রিংকু মনে হয় না বাঁচবে। কারণ যার পা ধরেছে রিংকু, সে যদি ভয় না পেয়ে দেখতো পা কিসে ধরেছে, তাহলে রিংকু হয়তোবা বেঁচে যেতো। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়।