Betterlife : The Diary Game ( 14/03/2024) তৃতীয় রোজা মসজিদের ইফতারি প্রস্তুুত করার কিছু মুহূর্ত।

in Incredible India4 months ago

Beige White and Brown Hanging Polaroid Lifestyle Photo Collage.png
Photo edited by canva

আমার আজকের সারাদিনের গল্প

আজ তৃতীয় রোজা, ঘুম ভেঙ্গেছে ৩ টা বাজে ৪০ মিনিট, উঠে হাতমুখ ধুয়ে ওযু করে, সেহরি খাওয়া সম্পূর্ণ করলাম। আজ সেহরি খেয়ে ছিলাম, মুরগির মাংসের ঝোল, তেলাপিয়া মাছ দিয়ে কচুর লতি রান্না, সাথে ছিলো গরম দুধ এবং কলা,খাবার শেষ করার পরে, থানা বাটি ধুয়ে পরিষ্কার করে নিলাম, সেই সাথে ওযু করে রুমে চলে আসি। এর কিছুক্ষণ পরে এই সেহরি খাওয়ার সময় শেষ হলো।

তাই আমি, কিছু সময় বসে একটু দোয়া দরুদ পড়তে ছিলাম। এর মাঝে ফজরের আজান হলো আমিও সাথে সাথে ফজরের নামাজ আদায় করে নিলাম। এরপরে ঘুমিয়ে পড়ে ছিলাম আট টা বাজে ঘুম ভেঙ্গেছে, উঠে মেয়ে কে সকালের নাস্তা করালাম, এরপরে শুরু হলো আমার কাজকর্ম।

মূলত আজ আমরা মসজিদে ইফতারি দিবো আর, সেই কারণে প্রায় মধ্য দুপুর থেকে শুরু করেছি আয়োজন, কারণ আমি এবং আমার শাশুড়ি আম্মাকে সব টা করতে হবে, যদিও কাজের খালাম্মা আসার কথা তবে, ওনার কথার উপরে কোন ভরসা করে থাকতে পারিনা আমি।

প্রতিবছর আমার শ্বশুর বাড়িতে সপ্তম রোজায় ইফতারি দেওয়া হয় তবে, এ বছর আগামী সপ্তাহে ঢাকায় যাওয়া হবে তার কারণে একটু আগে থেকে দেওয়া হচ্ছে।আজ আমরা মসজিদে খিচুড়ি দিবো ইফতারির জন্য সাথে থাকবে খেজুর এবং শরবত।

|

প্রথমে শাশুড়ি আমার কথা মতো আলু,কুমড়া,পেঁয়াজ, এসব কেটে নিলাম, ও বুটের ডাল, মসুরের ডাল, মুরগির গোশত, এগুলো ভিজিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিয়েছি, সাথে আরো ইত্যাদি অনেক কিছু ছিলো।।এখন প্রায় বারো টা বাজে, আমি গোসল করি মেয়ে কে দুপুরের খাবার খাইয়ে দিলাম, এরপরে যোহরের আযান হলো নামাজ পড়ে নিলাম।

তখনো খালাম্মার আসার কোন নাম নেই, তাই আমি আস্তে করে সব কিছু নিয়ে গোছাতে ছিলাম, শাশুড়ি আম্মা বললো তিনি রান্না করবে, অবশ্যয় রান্নায় তিনি অনেক পাঁকা তবে, যেহেতু রোজা রেখেছে তাছাড়া তিনি একটু অসুস্থ তাই আমি চাচ্ছিলাম তিনি না করুক। এরপর আমরা দুই জনে মিলেই রান্নাটা শুরু করি।

আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগছিলো কারণ, এটা ছিলো আমার প্রথম এর আগে যখন ইফতারি দেয়া হতো, কি বা কোন অনুষ্ঠানে রান্না হতো তখন লোক এনে করানো হতো, কিন্তুু আজ ৬০ জন মানুষের রান্নার উপরে একটা নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছে আমার।

প্রতিবছর আমার হাজব্যান্ড রমজানে ছুটিতে বাড়িতে থাকে, তবে এ বছর দুঃখের বিষয় তিনি ছুটি পাননি, তিনি আবার এরকম কাজে বেশ পারদর্শী, আর, তিনি না থাকার কারণে এ বছর ইফতারি তৈরি তে আমাকেও কোন সাহায্য করতে পারছেন না, এ জন্য বেশ আবেগী হয়ে পড়েছি আমি। তবে, আবেগ টা কে স্থায়ী না করে বিবেক দিয়ে কাজটা সম্পূর্ণ করেছি।

এবং ইফতারের খিচুড়ি রান্না সম্পূর্ণ হতে হতে প্রায় আছরের আজান দিয়ে দিলো, এরপরে আমি অজু করে নামাজ পড়ে নিলাম, এবং বাকি যে কাজ গুলো সম্পূর্ণ করলাম, এই কাজ গুলো রেডি করতে করতে প্রায় ইফতারের সময় হয়ে এসেছিলো তাই আমি সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে ইফতারের সামনে নিয়ে বসে পড়ি।

একজন রোজাদার ব্যক্তির জন্য এই সময়টুকু সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, হাদিসে এই সময়ে দোয়া কবুলের কথা এসেছে, তাই আপনারা চেষ্টা করবেন এই সময়টা তে বেশি বেশি দোয়া দরুদ পড়া। এরপর আজান হল ইফতারি শেষ করলাম, সেই সাথে মাগরিবের নামাজ আদায় করে নিলাম।


এরপরে, কিছুক্ষণ একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলাম মনে হলো সব ক্লান্তি যেন নিমিষেই দূর হয়ে গিয়েছে। আজ, যেহেতু ইফতারি ছিলো তাই অন্যদিনের তুলনায় একটু ব্যস্ততার মাঝে এই কেটেছে আমার দিনটা। তবে দিন শেষে আলহামদুলিল্লাহ, কোথায় যেন এই কষ্টের মাঝে একটা তৃপ্তি খুঁজে পেয়েছি।

এইতো বিশ্রাম নেওয়ার ফাঁকে পোস্টার লিখে ফেলে ছিলাম, তবে, করার সুযোগ হয়নি এত বেশি ক্লান্ত লাগছিলো রাতে খাবার খাওয়ার পরে তাই শুয়ে পড়েছিলাম। ভালো থাকবেন সবাই আল্লাহ হাফেজ।

Sort:  
Loading...
 4 months ago 

আজ ভোরে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সবাি মিলে সেহেরি করেছিলেন। আজকের সেহেরিতে মুরগীর মাংস এবং তেলাপিয়া মাছের তরকারির ব্যবস্থা করেছিলেন। আজ আপনারা মসজিদে খিচুরি দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন জেনে ভালো লাগলো। সারাদিন কাজের কারনে বিশ্রাম করার সময় পাননি তাই খাওয়া শেষ করার পর বিশ্রাম নিয়েছিলেন।।

ধন্যবাদ আপনাকে আপনার কার্যক্রম তুলে ধরার জন্য।।

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

একদম তাই একটুও বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ হয়নি, কারণ যেহেতু কাজের খালাম্মা দেখা মেলেনি তাই আমাকে, বেশি কাজ করতে হয়েছে।।

 4 months ago 

আপু আমাদের দেশের প্রতিটা বাড়ি থেকে মসজিদে ইফতারি দেওয়ার রীতি বিদ্যমান। আপনার লেখাটি পড়েও ঠিক তেমনটা উপলব্ধি করতে পারলাম। আজ আপনাদের বাসা থেকে মসজিদে ইফতারি দেওয়া হয়েছে। অতি অত্যন্ত সোয়াবের একটি কাজ। আমাদের এলাকাতেও প্রতিটা বাড়ি থেকে প্রতিনিয়ত ইফতারি দেয়া হয় বিভিন্ন মসজিদে।

ভালো থাকবেন আপু শুভকামনা রইল।

 4 months ago 

তৃতীয় রোজায় মসজিদে ইফতার দেওয়া হবে তার বেশ কিছু আইটেম রান্না করা হচ্ছে ৷ আর সেই সব রান্না গুলো আপনি নিজের হাতে করেছেন ৷ দেখে খুবই ভালো লাগলো আপনার আজকের ইফতারের খাবার তৈরির কার্যক্রম ৷

ধন্যবাদ আপনাকে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷

 4 months ago 

আজ মসজিদে ইফতার দিবেন জন্য ব্যস্ত ছিলেন।। আসলে রমজান মাসে মানুষ জনকে যত বেশি খাওয়ানো যাবে সৃষ্টিকর্তা তত বেশি খুশি হন।। ভালো লাগলো মসজিদে ইফতার দেওয়ার বিষয়টি দেখে।।

 4 months ago 

রোজার মাসে ইফতারি করানেটা খুবই সওয়াবের একটা কাজ। আমাদের এলাকাতেও এই জিনিসটা প্রচলিত আছে।
আমি নিজে অবশ্য মসজিদে দেই না তবে এতিমখানায় খাইয়ে দেই প্রতিবছরই।
আপনার শাশুড়ী মা অসুস্থ এর মাঝে তাকে দিয়ে সব রান্না না করিয়ে ভালো একটা কাজ করেছেন।
এতোগুলো মানুষের ইফতারের আয়োজন করাটা বেশ কঠিন কাজ।
এর মাঝেও আপনি যে আপনার দিনলিপিটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

ভালো থাকবেন সব সময় এই শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 4 months ago 

জেনে ভালো লাগলো আপনি এতিমখানায় ইফতারি প্রতি বছর খাইয়ে দেন একজন ব্যক্তিকে ইফতারি খাওয়ানো অনেক সওয়াবের কাজ। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 68523.63
ETH 3260.51
USDT 1.00
SBD 2.66