সিয়াম সাধনার মাসে, বাবা-মা নেই পাশে।১০%লাজুক শেয়ালের জন্য।
আসসালামু অলাইকুম,
কেমন আছেন সবাই,আশা করছি ভালো আছেন।আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি।দেখতে দেখতে সিয়াম সাধনার মাস চলে এসেছে।এবারই প্রথম বাবা-মাকে ছাড়া রমজান চলছে।কর্মজীবনের তাগিদে ঢাকা উত্তরায় অবস্থান করছি।বাবা-মাকে ছাড়া এমন রমজান সত্যিই স্মৃতিকাব্য হয়ে থাকবে।
সিয়াম সাধনার মাসে মা-বাবা নেই পাশে।সেই ছোটবেলা থেকে শুরু করে গত বছর পর্যন্ত তোমাদেরর সাথে সিয়ামের প্রতিটা ক্ষেত্র এক অনাবিল আনন্দময় হয়ে ওঠে থাকে।সারাদিন বাবার ছোট্ট দোকানে বসে থাকা,নামাজের সময়গুলোতে নামাজ আদায় করা।ক্রেতাদের ভিড় সামলানো,এই ক্রিয়াকর্ম তোমার এক অনবদ্য সৃষ্টি।জন্ম থেকেই তোমার পাশে থেকে দেখে আসছি,আমরা দুই ভাই যেখানেই থাকি না কেন ঈদের মৌসুমে খুব তাড়াতাড়ি বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসো।
রমজান শুরু হওয়ার সাথে সাথেই বেড়ে যায় তোমার দোকানের কর্মব্যস্ততা।বড় পুত্র হিসেবে তুমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাকে নির্বাচন করে থাকো।টাকা বেশি না থাকলেও ধার-দেনা করে ঈদের আগে দোকানের অনেক মালামাল পাইকারি কিনে আনা হয়।অবসরকালীন সময়ে পুরো রমজান জুড়েই আমি তোমাকে বেশি সময় দিয়ে থাকি।ক্রেতাদের চাহিদার উপর ভরসা রেখে সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের শার্ট-প্যান্ট লুঙ্গি সহ অন্যান্য কাপড়চোপড় পাইকারি কিনে থাকি।নতুন কাপড়ের বিশাল সমারোহে দোকান যেন প্রাণ ফিরে পায়। দোকানে এত বেশি বেঁচাকেনা হওয়ায় তোমার মুখে স্বস্তির হাসি আমি দেখতে পারি বাবা।লাখ টাকা দিয়েও হাসিটা কেনা যেন একেবারেই অসম্ভব।বিকেল হতে না হতেই ইফতারি কেনার ধুম পড়ে যায়।
এতো আগে ইফতারি কিনতে তোমাদের আগ্রহ না থাকলেও আমার কিন্তু কোনো কমতি থাকেনা।ইফতারের আগ মুহূর্তে সবকিছু সাজিয়ে রাখা অন্যদিকে ক্রেতাদের সামাল দেওয়া সবকিছু কেমন যেন এক চমৎকার আমার কাছে মনে হয়। রমজান মাসে অনেক দেরিতে দোকান বন্ধ করে তোমাকে বাড়িতে ফিরতে হয়।
কখনো ভাবিনি,কি করে এমন কিছু সম্ভব হয় একজন বাবার পক্ষে। কিন্তু আজ ভাবছি।জন্মের পর থেকে প্রতিটি রমজান তোমার পাশ থেকেই পালন করেছি।দেখেছি সংসার এবং দোকানে তোমার বাস্তব অভিজ্ঞতা।কাছে থাকায় হয়তো বা তেমন খেয়াল করিনি কিন্তু আজ বুঝছি।জীবনের তাগিদে কর্মের পেছনে ছুটতে গিয়ে এবারের রমজানটা তোমার সাথে আমার দূরত্ব তৈরি করে দিয়েছে।আমি জানি শুধু তুমি একা ইফতার করার জন্য তেমন বেশি আয়োজন করবে না।হয়তো অল্প কিছুর মধ্যেই ইফতার সেরে নেবে।কারণ রমজান মাসে ক্রেতাদের ভিড়ে বিক্রেতাদের তেমন ইফতার করার সময় হয়না।
বিকেল পড়তে না পড়তেই বাড়ি থেকে আসতো মায়ের হাতের পাঠানো ইফতার সামগ্রী।হাতে বানানো সেমাই,লুচি,সিদ্ধবুট,ফল-মুল আরো কতো কি? হয়তো আমরা দুই ভাই এবার বাড়িতে রোজা পালন না করার কারণে তেমন একটা আয়োজন করা হয় নাই।
মনে পরে যায় শেষ রাতে সেহরি খাওয়ার জন্য মায়ের ডাকাডাকি।উঠছি উঠছি বলেও কতবার বিরক্তি করি।তোমার শেষ অপেক্ষাটাও আমার জন্যই হয়ে থাকে।
সেই রাত দুটোয় উঠে রান্নাবান্না করতে হয়।সব বুঝেও না বোঝার মতো করে কতোই না কস্ট দিয়ে থাকি।
সেহরি খাওয়ার পর নামাজ আদায় করে তুমি ঘুমাতেও যাও না।গ্রামে থাকা মানুষগুলো সেহরি খেয়ে নামাজ আদায় করে গরুবাছুর ঘড় থেকে বের করে খোয়ারে বেঁধে রাখে।বেলা ওঠার আগে একটু আধটু ঘুম।এতেই হয়ে যায় মায়ের।আর সেহরি খেয়ে নামাজ আদায় করে আমরা ঘুমাই ৯ টা অবধি।
সত্যি কথা বলতে কি মা-বাবারা সবসময়ই চান নিজের খরচ বাঁচিয়ে সন্তানের জন্য ভালো কিছু করানো।যদিও ফোন দিয়ে বারবার তাদেরকে এবারের রোজা রমজান-খাবার সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে।রোজা কিংবা ঈদ আসলে কোনটাই ভালো লাগেনা,পিতা-মাতার সঙ্গ ছাড়া।প্রতিটি সময় যেন অস্থিত্বহীন মনে হয়।আজ দূর থেকে খুব বেশি মনে পড়ছে মা।প্রথম রোজাতে তোমার হাতের বানানো অনেক কিছুই খাওয়া হতো।দূরে থাকায় তেমন করে কিছু খাওয়া হয়নাই।খুব তাড়াতাড়ি দেখা হবে কর্মজীবনের পরিসংখ্যান শেষে,আমি আবার ফিরছি তোমাদের কোলে। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা মা।
সোর্স
তোমাদের প্রার্থনা কবুল হোক।ভাল থাকুক,সকল বাবা-মায়ের সন্তানেরা।তোমাদের সকল আশা পুরনহোক।দোয়া করো,সকল সন্তানেরা তোমাদের যেন ঠিক সন্তানের মতো করেই আগলে রাখে।ভালবাসি তোমাদের শ্রদ্ধেয়।
বিষয় | বাবা-মা |
---|---|
বর্ণনায় | @kamrul8217 |
ডিভাইস | Samsung A32 |
লোকেশন | w3w |
তারিখ | ০৪ এপ্রিল ২০২২ |
এতক্ষন সাথে ছিলাম আমি@kamrul8217
পেশায় একজন সাংবাদিক,উপস্থাপক ও ক্ষুদ্রলেখক। চারপাশে যা দেখি ভাবনায় তাই ফুটিয়ে তুলি।কালি ও কলমে আমার ছুটেচলা।জ্ঞানের জগতে ক্ষুদ্র একজন শিক্ষার্থী।ভালবেসে মানুষের পাশে আজীবন কাজ করে যেতে চাই।সর্বদাই ভালো মানুষ হয়ে ওঠার চেস্টা।আমার জ্ঞানের পরিসীমাকে বিকশিত করতে সাহস জুগিয়ে যাচ্ছে,দুই বাংলার এক অবিচ্ছেদ্য প্রাণ@amarbanglablog
দুনিয়াতে কেউ সুখী নয়, দুনিয়াতে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রত্যহ সংগ্রাম করে চলতে হয়। তবে তার মধ্যে নিজেদের ধর্মকে বজায় রেখে চলার চেষ্টা করা একজন মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। তবে বাস্তব জগতে আপনজন কারো পাশে থাকে অথবা চিরতরে বিদায় হয়ে যায়। এটাই দুনিয়ার লীলা খেলা।
ধন্যবাদ।
সত্যি আমাদের এই রমজান মাসে মা বাবাকে ছাড়া কাটানো অনেক কষ্টকর। আপনার মা বাবাকে নিয়ে মুহূর্ত গুলো পড়ে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো । সত্যি মায়ের হাতে ইফতার সেহরি খাওয়ার জন্য ডাকাডাকি, বিষয়গুলা কতইনা আনন্দের ছিল। আগের বছরের মুহূর্তগুলো আপনার মনে পড়ে গেল। এইরকম মুহূর্তগুলো অনেক কষ্টকর। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
রমজান মানেই ইবাদতের অন্যতম অনুভূতি।রমজানে সেহরির থেকে শুরু করে ইফতার প্রতিটি মুহুর্ত মায়ের স্পর্শ।মায়ের ডাকাডাকি ছাড়া সেহরিরতে ঘুম ভাংগে না।মায়ের হাতে বানানো ইফতারি ছাড়া অনেকটা অসম্পূর্ণ।
খুব মিস করছি,মা-বাবাসহ পরিবারকে।
অত্যন্ত চমৎকার ও গঠনমূলক মন্তব্য করেছেন শ্রদ্ধেয়।
রমজান মাসের রোজা গুলো ভাইয়া আসলে বাবা মা কে ছাড়া ভালো কাটে না। আপনি আপনার বাবাকে নিয়ে খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আসলে মা-বাবা-ভাই-বোন পরিবারের সবার সাথে ইফতার করার মজাটাই অন্যরকম। যাইহোক ভাইয়া আপনাদের গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
দারুন বলেছেন,আপনজন ছাড়া কোন উৎসবই আসলে ভালো লাগে না।প্রিয়জনদের নিয়ে একসাথে কাটানো মুহুর্তগুলো সত্যিই স্মৃতিকাব্য হয়ে থাকে।
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় অনেক সময় দিয়ে ভালো মন্তব্য করেছেন।
আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আপনি অনেক মূল্যবান কিছু কথা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনি দূরে থেকেও মা-বাবার অনেক কাছাকাছি ছিলেন। আসলে রমজান মাসে বাবা-মাসহ পরিবারের সকলকে নিয়ে একসাথে বসে ইফতার করার মজাটাই আলাদা। আপনি খুব দ্রুত বাইরের কর্মব্যস্ততা শেষ করে বাকি রমজান গুলোতে বাবা-মার সঙ্গে ইফতার করবেন এই প্রত্যাশা করছি। অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
সত্যিই পিতামাতার সাথে ইফতার করার মজাটাই আলাদা। এই অনুভূতি লিখে বোঝানো সম্ভব নয়। আপনার প্রত্যাশা শুভ হোক দ্রুত কর্মরত ছেড়ে বাবা-মার কোলে ফিরে যাই।
বাবা রা সন্তানের জন্য সব কিছু করতে পারে। আপনার পূর্বের রমজানের কাহিনী টা পড়ে আমার মন খারাপ হয়ে গেল। আসলে ভাই আমরা সবাই পরিস্থিতির স্বীকার। পরিবারকে ছেড়ে রমজান মাস ঈদ পালন খুবই কষ্টের। অনেক সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন।।
আপনি অনেক সুন্দর করে পড়ার পর ব্যাপারটি অনুধাবন করেছেন।সত্যিই আপনজন ছেড়ে প্রথম রমজান অনেক খারাপ লাগছে।
আসলে বাবা মা আমাদের জীবনে সবচেয়ে বড় নিয়ামত।যার নাই সেই বুঝে।আসলে বাবা, মা, ভাই, বোন সব এক সাথে ইফতারি করতে মজাই আলাদা।সেই এক অন্যরকম অনুভূতি। ভালো ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।
বাবা-মার সাথে কাটানো মুহুর্ত সত্যিই চমতকার।তাদের সাথে বিভিন্ন উৎসব পালন করা আরো বেশি মজাদার।এমন অনুভূতি আমাকে বারবার ফিরে নিয়ে যেতে চায়।
ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়,সুন্দর মন্তব্য করেছেন।
বাবা-মা চিরদিন বেঁচে থাকে না। প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। তাই আমাদের সবারই উচিত এই পবিত্র রমজান মাসে তাদের জন্য প্রার্থনা করা। যেন অনন্ত জীবনে তারা সুখী থাকে।
আপনি ঠিকই বলেছেন। তবে আমার লেখাটি পরিপূর্ণ পড়েন নাই।
প্রিয় মানুষগুলোর সাথে এই মাসে কাটানো সময় গুলো সব সময় মনে পড়ে। এই মাসে আপনার বাবা-মা আপনার পাশে নেই এটা শুনে সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। দোয়া করি যেন সৃষ্টিকর্তা আপনা বাবা ও মাকে আমাকে হেফাজতে রাখে।
আপনাদের দোয়া ও ভালবাসা আমাকে দ্রুত ফিরিয়ে নিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। বাবা-মা যেন ভালো থাকে সেই প্রত্যাশা চিরদিনের।সত্যিই প্রিয় মানুষদের সাথে কাটানো মুহুর্তগুলো অনেক মজার হয়।
খুবই সুন্দর ছিল ভাই আপনার উপস্থাপনা টি। পড়ছিলাম আর মনে হচ্ছিল এগুলা যেন আপনার কথা নয় আমারও কথা। আমার নিজের সাথে ও এই কথাগুলোকে আমি রিলেড করতে পারছিলাম। আসলে বাবা-মা গুলো এমনই হয়।
আপনি বরাবরই খুব চমৎকার সহমর্মিতায় দারুন মন্তব্য করে থাকেন। বাবা-মা ও প্রিয়জন ছাড়া জীবন যেন এক অচল ট্রেনের যাত্রী। অর্থহীন জীবন যেন নিজের কাছে প্রতিদিনই বীভৎস হয়ে ওঠে। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা -মা।
জীবিকা নির্বাহের তাগিদে আমরা সবাই অনেকেই আমাদের মা-বাবার কাছ থেকে দূরে থাকি। কিন্তু কিছুই করার নেই থাকতে হবে। তবুও আমরা এই রহমতের মাসে আমাদের মা বাবার জন্য দোয়া করতে পারি। আপনার মা-বাবার জন্য অনেক দোয়া রইল ভাই আপনার জন্য শুভকামনা।
আপনি সত্যি বলেছেন, জীবন-জীবিকার তাগিদে কর্মব্যস্ত মানুষ আপনজনদের থেকে অনেক সময় দূরে থাকে। মানুষ যত দূরে যায় ততই আপনজনদের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পেতে থাকে। মাহে রমজান উপলক্ষে সকল মা বাবার জন্য ভালোবাসা ও দোয়া রইল।