দুর্ধর্ষ একটি জার্নি।।
স্টিমিট বিশ্বের নাম্বার ওয়ান কমিউনিটি-
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে দুর্ধর্ষ একটি জার্নির বর্ণনা দিবো।
বন্ধুরা আপনারা সবাই জানেন যে আজকে দশই মহরম পবিত্র আশুরার দিন। এই দিনটি ইসলাম ধর্মে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যার ফলে এই দিনটিকে সঠিকভাবে পালন করার জন্য সমস্ত সরকারি বেসরকারি শায়িত্ব শাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।সেই সুবাদে এই দিনটিতে আমাদের অফিসও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজকে বুধবার আগামীকাল বৃহস্পতিবার, এরপরের দিন শুক্রবার। আমি চিন্তা করলাম যদি অফিস থেকে একদিন ছুটি নিতে পারি তাহলে টানা তিন দিন ছুটি কাটাতে পারবো। এই সুবর্ণ সুযোগ কখনোই মিস করা যাবে না। সেই চিন্তা করে বৃহস্পতিবার এপ্লিকেশনের মাধ্যমে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিলাম। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত অফিস করে চারটার দিকে অফিস থেকে বের হয়ে গেলাম।
সাইনবোর্ড এসে এক মহা গ্যাঞ্জাম এর মধ্যে পড়ে গেলাম। মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকা সিটির ভিতরে দূরপাল্লার কোন বাস প্রবেশ করতে পারছে না। এবং বের হতেও পারছে না। ঢাকা ছেড়ে যায়নি কোন ট্রেন। কারণটা কি সেটা আপনার অবশ্যই জানেন, গত পাঁচই জুন থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা এক দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসতেছে। ২০১৮ সালে বাতিল হওয়া এক রায়কে আদালত আবার জীবিত করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোন সমাধান না করে উল্টো আরো তাদেরকে রাজাকারের সন্তান বলে সংবেদন করা হয়েছে। এই কথা আন্দোলনকারীদের আন্দোলনে আগুনে ঘি দেওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে। যার ফলে সারা বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। সরকার সহজ ভাবে এ আন্দোলন না থামিয়ে তাদের উপরে পুলিশ এবং ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদেরকে লেলিয়ে দিয়েছে। গত সোমবারে সন্ত্রাসীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরদের উপরে চড়াই হয়ে তাদেরকে মারধোর করেছ। ঐদিন কয়েকজন ছাত্র নিহত হওয়ার পাশাপাশি প্রায় ৩০০ স্টুডেন্ট আহত হয়েছে। শুধু তাই নয় ঢাকা মেডিকেলে অন্যায় ভাবে প্রবেশ করে আহত স্টুডেন্ট এর উপরেও সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। রাতের বেলা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে প্রবেশ করে তল্লাশি চালিয়ে আন্দোলনে যাওয়ার শিক্ষার্থীদের কে মেরেছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সারা বাংলাদেশে আন্দোলন শুরু করে। ঢাকার মধ্যে স্টুডেন্টরা তীব্র আন্দোলন করে। তারা ঢাকা সিটির ভিতরে দূরপাল্লার কোনো বাস প্রবেশ করতে দেইনি এবং বের হতেও দেইনি। কোন ট্রেনকে ঢাকায় প্রবেশ করতে এবং ঢাকা ছেড়ে যেতে দেইনি। যার ফলে সাধারণ মানুষ অনেক ঝামেলার মধ্যে পড়ে।
এই ঘটনাগুলোর মাধ্যমে আমরা কাদেরকে দোষ দেবো। আন্দোলনকারীদের আন্দোলন ন্যায্য ছিল। যদি সরকার সঠিকভাবে ছাত্রদের সাথে সমঝোতা করতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই দুর্ভোগের মধ্যে পড়তো না।
আমি অফিস থেকে বের হয়ে সাইনবোর্ডে এসে এক মহা ঝামেলায় পড়ে গেলাম। একদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসার কোন গাড়ি পাচ্ছিনা। আবার অন্যদিকে কমলাপুরেও যেতে পারছিনা। এক মোটরসাইকেল ড্রাইভার কে জিজ্ঞেস করেছিলাম কমলাপুর যাবে কিনা। মোটরসাইকেল মামা আমার কাছে ৪৫০ টাকা ভাড়া চেয়েছে। অথচ সাইনবোর্ড থেকে কমলাপুরের ভাড়া মাত্র ২০ টাকা। যেহেতু কমলাপুরে যেতে পারছি না তাই খোঁজখবর নিলাম কমলাপুর থেকে কোন ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে কি না। বরং কমলাপুরের যাত্রীরা অনেক কষ্ট করে সাইনবোর্ড এসেছে। কারণ এখান থেকে কোন না কোনভাবে সবাই গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে।
তারপর চিন্তা করলাম ভেঙ্গে ভেঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে হবে। সেজন্য রাস্তার ওপর পাশে গিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরে একটি বাস পেলাম। আগে পিছনে কোন কিছু চিন্তা না করে সাথে সাথে বাসে উঠে বসলাম। পরে জানতে পারলাম এই বাসটি কাউন্টার থেকে ছাড়েনি। লোকাল ভাবে যাত্রী নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাবে। যেহেতু কোন উপায় ছিল না তাই লোকাল ভাবেই যাওয়ার চিন্তা করলাম। প্রায় এক ঘণ্টার মতো সাইনবোর্ডে বসে থেকে অল্প কিছু যাত্রী নিয়ে বাস গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছাড়লো। চিটাগাং রোড এসে আবার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী নিতে লাগলো। এখানেও প্রায় আধাঘন্টা লেট করলো।
কাঁচপুর পার হয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তার জ্যামের মধ্যে বাসসহ আমরা আটকে গেলাম। কোন উপায় বুদ্ধি না পেয়ে বাসের ড্রাইভার ডেমরা দিয়ে না গিয়ে মদনপুরের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। মদনপুর দিয়ে প্রবেশ করে নোয়াবপুর বাজারের নিকট গিয়ে গাড়ি একেবারে সুপার গ্লুর আঠার মত রাস্তায় আটকে গেলো। সামনের দিকে যাওয়ার সুযোগ নেই আবার পিছনের দিকে যাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। তখন ভেবেছিলাম হয়তো আজকে আর বাড়িতে আসা হবে না। উপরের যেই ছবিটা দেখতে পাচ্ছেন এটা নোয়াবপুর বাজারের নিকট জ্যামের মধ্যে আটকে বাস থেকে নিচে নেমে ক্যাপচার করেছিলাম।
সেখান থেকে প্রায় রাত আটটার সময় যানজট কেটে বের হলাম। এভাবে গাউছিয়া, ভুলতা, মাধবদী পাঁচদোনা, ভেলেনাগর জ্যামের মধ্যে আটকে ছিলাম।জায়গায় জায়গায় যানজট কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসতে আসতে রাত প্রায় একটা বেজে গেছিলো। এত কষ্টের জার্নি জীবনে আমি এই প্রথম করলাম। গতকালকের জার্নি টা আমার জীবনের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
আমি সহ সাধারণ মানুষের এই কষ্ট দুর্ভোগের কারণ কি। যদি সরকারের পক্ষ থেকে সহজভাবে আন্দোলনকারীদের সাথে সমঝোতা করা হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এত কষ্ট হতো না। যারা সমাধান করবে, উপর মহলের দাদারা, তারা তো পাবলিক গাড়িতে চরে না। তারা তো জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পার্সোনাল ভাবে এসি গাড়িতে চলে। তারা জনসাধারণ মানুষের কষ্ট কোনদিন বুঝেনি আর বুঝবেও না।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | দুর্ধর্ষ একটি জার্নি ।। |
স্থান | নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ১৬/০৭/২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.