"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগীতা -৩৬ || “ইউনিক লাভ ক্যান্ডেল তৈরির DIY প্রোজেক্ট"

কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি আকাশের মনটা খারাপ, চারপাশ কিছুটা অন্ধকার। ঠান্ডা বাতাস বয়তেছে,মূহর্তটা ভালই লাগছিলো। মনে মনে ভাবলাম যদি একটু বৃষ্টি হয় তাহলে আরো অনেক ভাল হবে। কারন অনেক দিন যাবৎ গরমে ভুগতেছি,বৃষ্টির জন্য অনেক দোয়া করতেছি। অবশেষে সাড়ে নয়টার দিকে আকাশ থেকে রহমতের বৃষ্টি বর্ষণ হয়েছে। এখন মোটামুটি ওয়েদারটা কিছুটা ঠান্ডা হয়েছে। মনটাও খুব ভাল,সেজন্য নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি আজকের ডাই প্রজেক্ট পোষ্টের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা-৩৬ এ অংশ গ্রহন করলাম।

বন্ধুরা আপনারা জানেন যে বর্তমানে আমাদের কমিউনিটিতে একটি কনটেস্টে চলতেছে। এবারের কনটেস্টের বিষয়টি খুবই ইউনিক। শেয়ার করো তোমার ইউনিক "ক্যান্ডেল তৈরির DIY প্রোজেক্ট"। বর্তমানে গ্রীষ্মকাল চলছে আর গ্রীষ্মকাল মানেই হচ্ছে লোডশেডিং। লোডশেডিং হলেই বাসার মধ্যে জ্বলে উঠে নানারকম ক্যান্ডেল। আর এই ক্যান্ডেল কয়েক ভাবে বানানো যায়। ছোট সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে মোম সংগ্রহ করে আমরা মোমবাতি বানিয়ে জ্বালাতাম। এবারের প্রতিযোগিতার বিষয়টি দেখে চিন্তা করলাম তেমন কিছুই একটি তৈরী করবো।

কয়েকদিন যাবৎ চিন্তা করে মোম দিয়ে লাভ ক্যান্ডেল তৈরী করার সিদ্ধান্ত নিলাম। প্রথমে লাভ ক্যান্ডেল তৈরী করা যতটা সহজ মনে করেছিলাম বাস্তবে ততটা সহজ নয়। কল্পনার চেয়েও অনেক কঠিন। আবার অন্য দিক দিয়ে একটু রিক্সের ব্যাপার আছে। প্রথমদিন আমি ময়দার উপর ফরমেট রেখে বানানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তুু ময়দা নরম হওয়ায় সেদিন আমি ব্যার্থ হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম কনটেস্টে অংশগ্রহন করবো না। কিন্তুু আবার পরে রাতের বেলা শুয়ে শুয়ে প্লাস্টার করার বালুর উপর ফরমেট রেখে ক্যান্ডেল বানানোর চিন্তা করলাম। অনেক খুজাঁখুজি করে পরের দিন রাতের বেলা প্লাস্টারের ভিজা বালু সংগ্রহ করলাম। তারপর বালুতের ফরমেট রেখে লাভ ক্যান্ডেলটি তৈরী করলাম। ক্যান্ডেলটি তৈরী করতে আমার অনেক সময় ব্যয় করতে হয়েছে। আমি যেভাবে চেয়েছিলাম শতভাগ সেভাবে হয়নি। তবে আমি চেষ্টার কোন ত্রুটি করি নাই। তারপরও অনেক ‍সুন্দর হয়েছে। চলুন নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করছি।

প্রয়োজনীয় উপকরন

• বড় সাইজের দশটি মোমবাতি।
• ককসিট
• কাচিঁ
• ছুরি
• প্লাস্টারের বালু
• ফেব্রিক্স কালার
• মোমবাতির সুতো
• প্লাস্টিকের বড় একটি গামলা
• একটি চায়ের কাপ

এখন লাভ ক্যান্ডেল বানানোর প্রক্রিয়া গুলো স্টেপ বাই স্টেপ বর্ণনা করছি।

প্রথমে প্লাস্টিকের একটি গামলায় পরিমান মত প্লাস্টারের ভিজা বালু সমান করে রাখলাম। তারপর ককসিট দিয়ে L,U আর রেডিমেট একটি লাভের ফরমেট বানিয়ে বালুর মধ্যে বসিয়ে দিলাম।

এবার মোম গুলো ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করে দুইটি কাপে নিয়ে নিলাম। রঙিন মোম না পাওয়ায় সাদা মোম কিনে এনেছি।

এখন গ্যাসের চুলাতে কড়াই বসিয়ে মোম গুলো দিয়ে তাতে লাল রঙের ফেব্রিক্স কালার দিয়ে দিলাম। তারপর মোম গুলো গলে যখন পানির মত হয়ে গেল তখন একটি চায়ের কাপে নিয়ে নিলাম।

এই পর্যায়ে মাঝখান থেকে লাভের ফরমেটটা তুলে ফেললাম। এখন লাভের দুই পাশে দুইটি সুতো দিয়ে তাতে গলিয়ে রাখা মোম গুলো দিয়ে দিলাম।

এই পর্যায়ে আবার কড়াইতে মোম দিয়ে নীল ফেব্রিক্স কালার দিয়ে দিলাম। মোম গুলো গলে পানির মত হয়ে গেলে একটি চায়ের কাপের মধ্যে নিয়ে নিলাম।

প্রথমে U এর ফরমেটটি তুলে তাতে সুতো দিয়ে গলিয়ে রাখা মোম দিয়ে দিলাম।

তারপর L এর ফরমেট তুলে তাতেও সুতো দিয়ে গলিয়ে রাখো মোম দিয়ে দিলাম। তারপর সব গুলোর একটি পিক নিলাম দেখতে ভালই লাগছে। এমতস্থায় মোম ‍গুলো শুকানোর জন্য কিছুক্ষন অপেক্ষা করলাম।

উপরের তিনটি অক্ষর শুকিয়ে যাওয়ার পরে নিচের ককসিট টি ধীরে ধীরে তুলে ফেললাম। তারপর আবার কড়াইতে মোম দিয়ে তাতে অরেন্জ কালার রঙ দিয়ে দিলাম।

এই পর্যায়ে অক্ষর গুলোর নিচের অংশে গলিয়ে রাখা মোম গুলো দিয়ে দিলাম। এখন অপেক্ষা ছাড়া আর কোন কাজ নেই। বসে বসে দেখলাম আর অপেক্ষা করলাম। ত্রিশ মিনিট অপেক্ষা করলাম।

এইযে হয়ে গেল আমার কাংখিত লাভ ক্যান্ডেল। তিনটি অংশে তিন রকম কালার দিয়ে দিলাম। দেখে ভালই লাগছে। এখন ক্যান্ডেল জ্বালানোর পালা।

উপস্থাপনা

বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই। কেমন হলো আমার আজকের ইউনিক লাভ ক্যান্ডেল তৈরির DIY প্রোজেক্ট। অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি আপনাদের কাছে অনেক ভাল লাগবে। যদি কোথাও কোন প্রকার ভুল হয়,ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।