অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার পদ্ধতি।।

হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদেরকে দেখাবো কিভাবে ঘরে বসে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করবেন। আশা করি ব্লগটি সবার কাছেই ভালো লাগবে।

মানুষ সাধারনত তিন ভাবে ভ্রমন করে, স্থল পথ, জল পথ ও আকাশ পথ। স্থল পথে বাস, ট্রেন, রিকশা, সিএনজি সহ বিভিন্ন ভাবে যাতায়ত করা যায়। যুগ পরিবর্তন হচ্ছে, মানুষের জীবন যাত্রার মান পরিবর্তন হচ্ছে। অনলাইন বা ইন্টারনেট মানুষের জীবনের বিপুল পরিবর্তন করেছে। ধীরে ধীরে আমাদের জীবন ইন্টারনেট ভিত্তিক হয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেট ছাড়া এখন জীবন প্রায় অচল হয়ে যায়। এর চিত্র আমরা কয়েকদিন আগেই লক্ষ করেছি। এখনো মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ আছে। এখন ব্রডব্যান্ড দিয়ে কোনরকম জীবন পরিচালিত করছে। আমাদের দেশে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই অনলাইনে বাস ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। সব কিছু অনলাইন ভিত্তিক হওয়ার কারনে অফলাইনে তেমন টিকেট বিক্রয় হয় না।

এখন মানুষ ঘরে বসেই যে কোন জায়গায় ভ্রমনের টিকেট সংগ্রহ করতে পারে। গত দুই তিন বছর ধরে আমি বাড়িতে আসার যাওয়ার জন্য আগে থেকেই অনলাইনে ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করে ফেলি। এখন আর স্টেশনে গিয়ে লাইন ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হয় না। তবে এখনো অনেক মানুষ অনলাইনে ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করতে পারে না। তাদের জন্যেই মূলত আমার আজকের ব্লগ। আজকে আমি স্কিনশর্ট সহকারে দেখিয়ে দিবো কিভাবে ঘরে বসেই অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটবেন।

অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার জন্য প্রথমে আমাদের একটি একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। প্রথমে এই Link এ প্রবেশ করে যার যার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার দিয়ে একাউন্ট খুলতে হয়। আপনারা উপরের স্কিন শর্টে লক্ষ করলে দেখতে পারবেন। আমি নিজের জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার, নিজের জিমেইল ও মোবাইল নাম্বার দিয়ে একটি একাউন্ট করেছি। যাদের নিজের পরিচয় পত্র নেই,তারা তাদের মা-বাব দাদা-দাদি বা অন্য কোন আত্বীয় স্বজনের জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার দিয়েও একাউন্ট খুলতে পারবেন। একাউন্ট ক্রিয়েট করার পরে এমন একটি পেইজ আসবে। সেখানে কোথায় থেকে কোথায় যাবেন,সেটা সিলেক্ট করতে হবে। কোন তারিখের টিকেট কাটবেন, সেই তারিখ বসাতে হবে, তারপর কোন ধরনের কোচ বা সিটে ভ্রমন করতে চান,সেটা সিলেক্ট করতে হবে। এখানে এসি, নন এসি, শোভন, কেবিন সহ কয়েক প্রকারের সিট রয়েছে।

আমি ঈদের সময় ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার জন্য টিকেট সংগ্রহ করেছিলাম। গন্তব্য সিলেক্ট করে তারপর শোভন চেয়ার আসন সিলেক্ট করেছিলাম। তারপর তারিখ দিয়ে সার্চ ট্রেন অপশনে ক্লিক করতে হয়। একটি কথা বলে রাখি, ট্রেনে সাধারনত দশ দিন আগের অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করা যায়। যেমন আজকে ২৮শে জুলাই আমি আগামী দশ দিন পরের তথা ৭ই আগষ্টের টিকেট কাটতে পারবো।

আমি মহানগর প্রভাতী ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করেছিলাম। আপনাদের স্টেশনে যে ট্রেন থামবে সেই ট্রেনই এখানে শো করবে। প্রথম স্কিন শর্টে লক্ষ করলে দেখতে পারবেন, এখানে কোন ট্রেনে কয়টা সিট রয়েছে,সেটা দেখা যায়। সিট থাকলে সিলেক্ট কোচে ক্লিক করতে হবে। সেখানে এভেলাবল, ব্লকড ও সিলেক্টেড অপশন থাকবে। অর্থাৎ যে সিট গুলো আমরা কাটতে পারবো সে গুলো সাদা থাকবে। আর যে গুলো কাটা হয়ে গেছে সে গুলো ব্লকড তথা একটু হলুদ বর্ণের হয়ে যাবে। সাদা সিট গুলো সিলেক্ট করলে ব্লো কালার হয়ে যাবে। একটি একাউন্ট দিয়ে এক দিনে সর্বউচ্চ চারটি টিকেট কাটা যায়।

সিট সিলেক্ট করে কন্টিনিউতে ক্লিক করার পরে মোবাইল ফোনে একটি OTP কোড আসবে। সেটা বসিয়ে সাবমিট করার পরে পেসেন্জারের নাম লিখতে হবে। প্রথম নামটা যার নামে একাউন্ট থাকবে,তার নামই দেওয়া থাকবে। পরের তিন জনের নাম বসাতে হবে। প্রতি দুই জনের পরে একজন বাচ্ছার জন্য সিট কাটা যায়। যদি চাইল্ড সিলেক্ট করা হয় তাহলে ভাড়া কিছুটা কম লাগে।

পেসেন্জারের নাম বসিয়ে নিচের দিকে আসলে পেইমেন্ট সিলেক্ট করার অপশন থাকবে। এখানে বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় অ্যাপের মাধ্যমে পেইমেন্ট করা যাবে। আমি রকেট দিয়ে পেইমেন্ট করেছিলাম। প্রতি টিকেটে ২০ টাকা ব্যাংক চার্জ কাটে। তাই নির্ধারিত ভাড়া বাদে প্রতি টিকেটে ২০টাকা করে অতিরিক্ত রাখতে হবে।

পেইমেন্ট অপশন সিলেক্ট করে কন্টিনিউতে ক্লিক করলে একাউন্ট নাম্বার চাইবে। সেটা বসিয়ে পাসওয়ার্ড দিতে হবে। তারপর মোবাইল ফোনে আরেকটি OTP কোড আসবে। সেটা বসিয়ে সাবমিট করলেই মোবাইল একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিয়ে টিকেট দিয়ে দিবে। সাথে সাথে টিকেট ডাউনলোড বা প্রিন্ট করা যায়। আবার তারা নিজ থেকে জিমেইলের মধ্যেও টিকেট পাঠিয়ে দিবে।

এই যে আমার টিকেট পেয়ে গেলাম। অনলাইনে টিকেট সংহগ্র করতে হলে খুব দ্রুত হাত চালাতে হয়। তবে আবার খেয়াল রাখতে হবে,ভুল যেন না হয়। এখানে আরেকটি কথা আছে। অনেক সময় দেখা যাবে,আপনার একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নিয়ে যাবে,তবে আপনাকে টিকেট দেয়নি। তাহলে ঘাবরাবেন না। টিকেট না দিলে কয়েক দিন পরে আপনার টাকা আপনারে একাউন্টে ফেরত চলে আসবে।

বন্ধুরা আজকের ব্লগটি এখানেই সমাপ্ত ঘোষনা করলাম। কারো কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে প্রশ্ন করবেন,আমি সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দেবো। আশা করি ব্লগটি সবার উপকারে আসবে। তো বন্ধুরা সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।