দাবি আদায়ের লক্ষে পানিপুরি।।

in আমার বাংলা ব্লগlast month (edited)

আমার বাংলা ব্লগ
বাংলা ভাষার মিলনমেলা
-

photo_1_2024-06-28_10-35-31.jpg

আমি এমনিতে বাহিরের খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করি। এর বিভিন্ন কারনও মাঝে মধ্যে আপানাদের সাথে শেয়ার করেছি। তারপরেও মাঝে মাঝে বিপদে পরে বাহিরের খাবার খেতে হয়। ঈদের পরে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। প্রথম দিন বিকালে বউ ও শালিকাকে নিয়ে নদীর পাড় দিয়ে কুমার পল্লিতে মাটির পাতিল কিনতে গিয়েছিলাম। সে বিষয়ে একটি অনুভূতি মূলক পোষ্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম। সেই নদীর পার থেকে নদীর পশ্চিম দিকে খুব সুন্দর একটি দৃশ্য দেখা যায়। সেটা হলো নদীর উপরে বিশাল বড় দুইটি সেতু হয়েছে। ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার মানুষ সেখানে ঘুরতে গেছে। সেতুর দুই পাশে বিশাল এলাকা ফাঁকা, কোন বাড়িঘর নেই,কোন জনবসতি নেই। যার ফলে নদীতে পানি আসার কারনে জায়গাটা দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। এখন বউ শালিকারা বায়না ধরছে সেখানে ঘুরতে যাবে। আর আমাকেই নিয়ে যেতে হবে।

বউকে না হয় ‍বুঝানো যাবে,কিন্তুু শালিকাদের তো আর বুঝানো সম্ভব না। সেখানে না নিয়ে গেলে অনেক ধরনের কমেন্ট শুনতে হবে। যাদের শালি আছে তারা অবশ্যই সেই কমন্টে গুলো শুনেন। আমি আর এখানে নতুন করে উল্লেখ করছি না। সেখানে গত বছরও নিয়ে গেছিলাম। কিন্তুু সেটা ভুলে গেছে, প্রতি বছর যেতে হবে এমন কোন নিয়ম আছে....? যায়হোক পরের দিন বিকাল বেলা আসরের নামাজ পড়ে একটি অটো রিজার্ভ করে সবাইকে নিয়ে রওয়ানা দিলাম সোনার বাংলা সেতু দেখার উদ্যেশ্য। বাসা থেকে বের হয়েই কাউতলী মোড়ে জ্যামের মধ্যে আটকে গেলাম। বেশ কিছুক্ষন ধাক্কাধাক্কি করে সেখানের জ্যাম অতিক্রম করে এগিয়ে গেলাম। কিন্তুু ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ভিতরে ফ্লাইওভারের নিচে এমন ভাবে জ্যামে আটকে গেছি, যা বলে বুঝানো যাবে না। গাড়ি সামনেও যায় না পিছনেও যায় না।

আমাদের নিজের অটো সহ প্রত্যেকটা অটো আইন ভঙ্গ করে উল্টো রাস্তায় প্রবেশ করেছে। অপর পাশ থেকেও গাড়ি এসে আটকে গেছে। যার ফলে অটোতে বসে থাকতে থাকতেই মাগরিবের আজান শুনতে পেলাম। তখন কেমন লাগে চিন্তা করেন। রাতের বেলা আর সেতুতে গিয়ে কি করবো। যার ফলে আর সেতুতে না গিয়ে পাশে একটি পার্ক আছে, সেটাতে প্রবেশ করলাম। পার্কটির নাম হলো ফারুকী পার্ক। এর আগে অনেক বার এই পার্কে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষন পার্কে ঘোরাঘুরি করে কয়েকটি ফটোগ্রাফি করে পাশেই দেখলাম হাজার হাজার মানুষ ফুচকা খাচ্ছে।ফুচকা যে বাংলাদেশের মানুষকে কি পাগল করেছে,আল্লাহই জানে। কি মজা পায় এই ফুচকা খেয়ে,আমি নিজেও জানি না। সবাইকে জিঙ্গেস করলাম এখানে ফুচকা খাবে কি না কোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে অন্য কিছু খাবে। সবাই এক বাক্যে এক কথাই বললো এখানে বসেই ফুচকা খাবে। মেয়ে মানুষ ফুচকা দেখলে লোভ সামলাতে পারে না। আমিও চিন্তা করলাম এখানে ফুচকা খেলে আমারই খরচ কম হবে, রেস্টুরেন্টে গেলে বিল বেশি আসবে,হি হি হি। আমিও বললাম ঠিক আছে চলো এখানেই ফুচকা খায়। ফুচকা খেতেও সিরিয়াল ধরতে হয়েছে,টেবিল ফাঁকা নেই। অনেকক্ষন পরে টেবিল ফাঁকা হওয়ার পরে বসলাম। এখন আবার ফুচকা বানাতে দেরি হচ্ছে। যায়হোক দশ পনের মিনিট পড়ে ফুচক আসলো। সবাই ফুচকা খেলেও আমি চটপটি নিলাম। কিন্তুু ফুচকা চটপটি এত বে-মজা আগে জানা ছিল না। এই অখাদ্য কুখাদ্যই মানুষ সিরিয়াল ধরে খাচ্ছে। আমি অল্প একটু খেয়ে বাকিটা বউ ও শালিকার উপর চাপিয়ে দিলাম। তারা ফুচকা এমন ভাবে ঝাল ঝাল করে খাচ্ছে মনে হচ্ছে, অমৃত খাবার খাচ্ছে। যায়হোক পঞ্চাশ টাকা প্লেট ফুচকা আমাকে দশ টাকা প্লেট দিলেও আর কোনদিন খেতে আসবো না।

সেখান থেকে বের হয়ে অটো নিয়ে বাসায় গেলাম। বাসায় গিয়ে পাঁচ দশ মিনিট রেস্ট নিয়ে বাবুর জন্য ঔষুধ আনতে গেলাম। বাবুর শরীরে হালকা জ্বর বুঝা যায়। বাবুকে এখনো এলোপ্যাথিক কোন ঔষুধ খাওয়ানো হয়নি। প্রথম থেকেই হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করছি। যায়হোক বাবুকে সাথে নিয়ে স্থানীয় বাজার থেকে ঔষুধ নিয়ে বাসায় এসে বসে রেস্ট নিচ্ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ করে ছোট শালিকা আমার সামনে পানিপুরি নিয়ে আসলো। আমি তো এগুলো দেখে অভাক। কখন এগুলো তৈরী করলো...। তারপর বউ বললো যেহেতু আমি বাহিরের ফুচকা,চটপটি,পানিপুরি এগুলো খায় না। তাই শালিকা আমার জন্য স্পেশাল ভাবে ঘরেই পানিপুরি তৈরী করেছে। বাহির থেকে মাত্র ফুচকা চটপটি খেয়ে এসেছে, এখন ঘরে আবার পানিপুরি খাওয়ার আয়োজন করেছে। তারা আমার শ্বশুরকে সর্বসান্ত করেই ছাড়বে।

photo_2_2024-06-28_10-35-31.jpg

ময়দার সাথে বিভিন্ন উপরকরন দিয়ে ঘরের মধ্যেই নিজের হাতে এই ফুচকা গুলো আগে তৈরী করে রেখে দিয়েছে। এগুলো সম্ভবত শুকিয়ে সংরক্ষন করেছে। যখন মন চাই তখনই তেলের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে ভেজে ফেলে। ফুচকা গুলো খুব সুন্দর ভাবেই ফুলেছে। আর সাইজেও মোটামুটি বড়ই ছিল। একটি ফুচকা এক সাথে মুখে দেওয়া কষ্টকর ছিল। যেই তৈল থেকে দুরে থাকতে চাই,সেই লোভনীয় তৈলাক্ত খাবারই সামনে চলে আসে। আমি অতিরিক্তি তৈলাক্ত খাবার ছাড়তে চাইলেও তৈলাক্ত খাবার আমাকে ছাড়ে না।

photo_5_2024-06-28_10-35-31.jpg

photo_4_2024-06-28_10-35-31.jpg

ফুচকার সাথে আবার দিলো ঘুগনি। পেয়াজ, শসা, কাঁচা মরিচ ও ধনিয়া পাতা দিয়ে খুব সুন্দর ভাবেই মিশ্রনটা তৈরী করেছে। আবার আরেকটি পাত্র দিয়ে একটু পানিও দিলো। জিঙ্গেস করলাম এই পানি দিয়ে কি হাত ধুয়ে খেতে হবে...? শালিকা বললো আরেহ দুলাভাই কি যে বলেন, এটা হলো ঝাল টক। ফুচকার মধ্যে ঘুগনি দিয়ে তারপর এখান থেকে একটু পানি দিয়ে খেতে হবে। আমি বললাম আগে বলবা না...? আমি তো ভাবলাম এটা হাত ধুয়ার পানি,হে হে হে। পানির নিচে তেঁতুল আর উপরে দেখলাম কাঁচা মরিচ, শুকনো মরিচ ও বিভিন্ন মসলা সাঁতার কাটতেছে,হা হা হা😛।

প্রথমে ফুচকাকে উপর দিয়ে ফুঁটো করে, চামচ দিয়ে সেখানে ঘুগনি দিয়ে তারপর অল্প একটু মরিচ পানি দিয়ে খেতে হয়। খুবই লোভনীয় খাবার। লোভ সামলোনো বড় দায়। তাদের পদ্ধতি অনুসরন করে আমিও পানি পুরি খেলাম। মোটামুটি ভালোই লেগেছে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে শালিকা বললো দুলাভাই আজকে তো সময় আর জ্যামের কারনে সোনার বাংলা সেতুতে যাওয়া হলো না। আগামীকাল যাবো,রেডি থাকবেন। আমি বললাম আগে জানলে পানিপুরি খেতাম না,হা হা হা।

সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলrealme-53
শিরোনামদাবি আদায়ের লক্ষে পানিপুরি।।
স্থানব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, বাংলাদেশ।
তারিখ২৩/০৬ /২০২৪
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@joniprins

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG_20190907_175336_618.JPG

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।

FNeY1coMNUL9WkErUPeUKmtGszS37qoEdLJEhh8bj8LkMZg4ZnLbSCPtsqdFwbPFaU6vxamfJRhKsAXwWBZmAwtf2KFjktn9asDsnKpUF6cbBcNYFzwcTbFb5dfFf7N5Lt5j8KUqpB64Bhu5yFCR9Qn5uG4sQo8t4PYbc7VJq37PW7258mLRbFTrsBTtbAnos9AJnU46Lv3HqXsN7s.gif

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

KNoz79cGRt58XHcjM3shjWsSEtKgRtxoVdChppmw4FvW2CQtZxVJGen4yBCeRMj2Y2h9ttHevCs9rtWncvn3FXAHo5MrkNBCbLay5LtH7wgCA27mBRvWM5GDKNQKzJk62Dz8KRvqdiFsZ66guzvyhyBYqJu6KB21dLiPDmtFGR2yvqBCtUPp3Rscm37PwtDEWYMtuKM5v3qhNod24L.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9VRjuxKSTKuNvqEk1nfiYiKKnHbcTuABq9Fu2qE77V9BjGsoqkb23ngKUAk2mCBmjpG3wz3go7Vd2YW.png

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WP87ckB6VoL3UD42BtkosJzLXYjuCC4ws3sxuihZ3nhDfd815qMJiiETpWAiutfN7bjurhaBbivMFVTYEDiv.png

download-03.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য

download-044.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP

RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png

Click Here For Join Heroism Discord Server

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7J8W9NZEbNsUTLEMkrtgqwUMHmRbAh6UqX4xVw4ivcS7bbpBquT2w2543nYruerj3XBGzuKvCPijibJe6h1hHzcjF.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.12
JST 0.026
BTC 56095.11
ETH 2533.38
USDT 1.00
SBD 2.23