ভিন্ন ভাবে পালিত হতে পারে, পবিত্র মিলাদুন্নবী ও সিরাতুন্নবী দিবস।।
সাজাও মন, রাঙাও হৃদয়, ভালোবাসার বন্ধনে-
হ্যালো বন্ধুরা,আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদেরে সাথে পবিত্র মিলাদুন্নবী ও সিরাতুন্নবী দিবস নিয়ে ব্লগ শেয়ার করবো। আশা করি এই বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
অলরেডি আপনারা সবাই দেখেছেন যে, গতকাল সারা বিশ্বে খুবই জাঁগজমক ভাবে পবিত্র মিলাদুন্নবী ও সিরাতুন্নবী দিবস পালিত হয়েছে। সারা বিশ্বের মুসলমানরা এই দিনটির জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করে। এই দিনটি আমাদের জন্য যেমন খুশির দিন, ঠিক তেমনি আবার আমাদের জন্য দুঃখের দিন। আর এটা নিয়েই আমাদের সমাজে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়। আজকে আমি সেই বিষয়টাও ক্লিয়ার করে দিবো।
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ট মহামানব, বিশ্ব শান্তির দূত হযরত মোহাম্মাদ মোস্তফা (সাঃ) ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে পবিত্র ভূমি মক্কা নগরীতে আরবী রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখ রোজ সোমবার জন্মগ্রহন করেন। তিনি পৃথিবীতে এসেই অন্ধকার যুগের অবসান ঘটান। পৃথিবীতে শান্তির বাণী প্রচার শুরু করেন। ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে নবীজির চল্লিশ বছর বয়সে তিনির উপর নাজিল হয় সর্বশ্রেষ্ট মহা গ্রন্থ পবিত্র আল-কোরআন। পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে এখন পর্যন্ত কেউ পবিত্র আল কোরআনের একটি ভুলও খুজে বের করতে পারে নাই। আর ভবিষ্যতেও পারবে না, ইনশাআল্লাহ। সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে প্রিয় নবী পবিত্র আল-কোরআনের বাণী অনুযায়ী মানুষের মাঝে ইসলাম প্রচার করেন। ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মদীনা শহরে হিজরত করেন। আর সেখানে তিনি ১০ বছর জীবন অতিবাহিত করে সৃষ্টিকর্তার ডাকে ৬৩২ খিষ্টাব্দে ১২ই রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার ইহজগত ত্যাগ করেন।
প্রিয় নবীজির জন্ম এবং মৃত্যু একই তারিখে ও একই বারে হয়েছে। সে জন্য প্রিয় নবীজির জন্মদিনে আমরা যেমন খুশি হয়ে থাকি ঠিক তেমনি আবার দুঃখি হওয়ার কথা। কিন্তুু কিছু মানুষ শুধু জন্মদিন উপলক্ষে খুশিতে মিশিল, মিটিং করে দিনটা কাটিয়ে দেয়। তারা ভুলে যায় যে, এই দিনেই নবীজি ইহজগত ত্যাগ করেছেন। আর জন্ম মৃত্যুর দিবস আমরা যেভাবে প্রচলিত নিয়মে পালন করি, এর মাঝে কোন সার্থকতা নেই। আমরা যদি শহরে রাস্তায় মিশিল মিটিং করে মানুষের স্বাভাবিক জীবনে ব্যঘাত ঘঠায়, এটা তো আরো ক্ষতি হলো। একজনের খুশিতে অন্য জনের কষ্ট হলে সেটা অবশ্যই পরিত্যাগ করা উচিত। আমরা তো এই দিবসটা ভিন্ন ভাবে পালন করতে পারি। যেভাবে পালন করলে খুশি সাথে মানুষের যেন উপকার হয়। এমন অনেক পদ্ধতি রয়েছে।
আমরা যদি সাহাবায়ে কেরামের জীবনী দেখি, তাহলে দেখি তারা নবীজির জন্ম ও মৃত্যু দিবস এভাবে পালন করে নাই। তারা এইদিনটিতে নফল রোজা রাখতেন, বেশি বেশি নফল নামাজ পড়তেন, বেশি বেশি কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করতেন। বেশি বেশি দান সদকাহ করতেন। মানুষের উপকার হয় এমন কাজ করতেন। তারা তো মিশিল মিটিং করে নাই, তারা তো শো ডাউন করে নাই, নাচানাচি লাফালাফি করে নাই। সাহাবায়ে কেরাম নবীজিকে দেখেছেন, নবীজির সাথে চলেছেন, সরাসরি নবীজি থেকে আদর্শ শিক্ষা নিয়েছেন। আমরা তাদের থেকে শিক্ষা নিতে পারি।
গতকাল ঢাকা চট্রগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন শহরে বড় বড় মিশিল হয়েছে, এর মাধ্যমে সাধারন মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়েছে। জ্যাম সূষ্টি হয়েছে। এগুলো না করে যদি অসহায় মানুষকে সাহায্য করতো। যাদের ঘর নাই,তাদেরকে ঘর বাড়ি নির্মাণ করে দিতো, যে গরীব বাবারা তাদের মেয়েদেরকে অর্থের অভাবে বিয়ে দিতে পারে না, তাদেরকে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতো, বস্তিবাসীদের একবেলা খাবারের আয়োজন করে দিতো। যে গরীব স্টুডেন্টরা অর্থের অভাবে ঠিকভাবে পড়াশোনা করতে পারে না, তাদেরকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করতো। যারা টাকা অভাবে চিকিংসা করতে পারে না, তাদেরকে চিকিংসার ব্যবস্থা করে দিতো। এগুলো হলো নবীজির আদর্শ, এগুলো হলো সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ। এগুলো করলে মানুষের উপকার হতো। তাদের মন থেকে দোয়া অসতো। অন্যান্য ধর্মালম্বীরাও আমাদের অনুসরণ করতো।
আগামী বছর থেকে এই উদ্যোগ নিলে দেশের সব মানুষ খুশি হবে। যারা বলেন নবীজিকে অনেক ভালোবাসেন, এই কাজ গুলো করে নবীজির ভালোবাসার প্রমান দেন। আগামী বছর থেকে ভিন্ন ভাবে পবিত্র মিলাদুন্নবী ও সিরাতুন্নবী দিবস পালন করার উদ্যোগ নেন। এর মাধ্যমে দেশ ও জাতি সবাই উকৃত হবে, সাওয়াব পাওয়া যাবে। আল্লাহ এবং রাসূল খুশি হবেন। ইহজগতে এবং পরজগতে শান্তি পাবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
ভাই আপনার পোস্ট পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন এবং মৃত্যুদিন নিয়ে অনেক সুন্দর কথা লিখেছেন। আমরা নবীজির জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান না করে যদি নিজেরা নিজেদের মত করে পালন করি যেমন নফল নামাজ পড়া রোজা করা এগুলো কিন্তু বেশি ভালো হয়। আপনার সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে ভীষণ ভীষণ ভালো লাগলো ধন্যবাদ।
জী আপু এভাবে মিশিল মিটিং না করে, সবাই মিলে জনকল্যান মূলক কাজ করে দিনটি পালন করতে পারি। ধন্যবাদ।
ভাইয়া আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মশতবার্ষিকী প্রিয় নবীর প্রতি হাজার কোটি দরুদ সালাম বর্ষিত হোক। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেদিন এই ভবানী এসেছিলেন সেদিন সকলের অনেক খুশি ছিলেন। আবার তিনি একই দিনে মৃত্যুবরণ করেন। তবে একদিকে আমাদের যেমন এটি আনন্দের দিন ঠিক তেমনি একটু দুঃখের দিন। তবে আপনার পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম ঢাকার ঐদিকে মিছিল হয়েছিল। এতে করে সাধারণ মানুষের জীবনে ব্যাহত হয়েছিল। আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া, এই মেশিন না করে যদি অসহায় মানুষদের সাহায্য করা হতো তাহলে ব্যাপারটা আরো ভালো হতো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া ভিন্ন ভাবে দিনটি উৎযাপন করা যেতো। তাহলে আরো বেশি আনন্দ হতো। ধন্যবাদ।
এই ব্যাপার টা দেখলে আসলেই খারাপ লাগে ভাই। আমাদের নবিজী যতদিন বেঁচে ছিলেন একবারও তিনি তার জন্মদিন পালন করেন নি। তিনি মারা যাওয়ার পর সাহাবি রাও এমন কাজ করেন নাই। অথচ বতর্মান সময়ে এটার নামে ছড়িয়ে পড়েছে বিদআত। আমরা শরিয়তের বাইরে গিয়ে উনার জন্মদিন উৎযাপন করছি। যেটা মোটেই কাম্য না।