বরইয়ের টক-ঝাল-মিষ্টি আচার রেসিপি
আস্সালা মুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
হ্যালো আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ বাসি,কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আবার আপনাদের মাঝে সুস্থভাবে হাজির হয়ে গেলাম। বর্তমানে যে গরম যাচ্ছে, অনেক মানুষ সেই গরমে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। গরমের সময় একটি খাবার খুবই ভাল লাগে। আর সেটা হলো টক জাতীয় কোন জিনিষ বা আচার। আজকে আমি আপনাদের সেই সুস্বাদু বরইয়ের টক-ঝাল-মিষ্টি আচার রেসিপি শেয়ার করবো। চলুন শুরু করছি।
আমাদের বাড়ির উঠানের এক কর্নারে একটি বরই গাছ আছে। প্রতিবছরই গাছে প্রচুর পরিমানে বরই আসে। আমাদের গাছের বরই গুালো টক মিষ্টি বরই। আমাদের বাড়ির আশে পাশের বাড়িতেও অনেকের বরই গাছ আছে। তবে তাদের গাছের বরই গুলো হলো মিষ্টি বরই। যে সময় গাছে বরই আসে সেই সময় আমি বাড়িতে থাকি না। যার কারনে বরই এর মৌসুমে আমি নিজের গাছের বরই খেতে পারি না। তবে বাড়িতে তো মা আছে। মায়ের জাতিরা আবার তাদের ছেলে মেয়েদের ছাড়া বাড়ির কোন ফল বা পুকুরের মাছ,শখের কোন জিনিষ খেতে পারে না। পৃথিবীর প্রত্যেক মায়েরাই এমন। আল্লাহ তায়ালা তাদের ভিতরে ছেলে মেয়েদের জন্য আলাদা একটি মায়া সৃষ্টি করে দিয়েছেন।
আমি আবার শুকনা বরই বা বরই এর আচার খুব পছন্দ করি। মা সেই ব্যাপারটা জানতেন। যার ফলে মা বরই এর মৌসুমে গাছ থেকে কিছু বরই সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে আমার জন্য রেখে দিয়েছিলেন। রমজানের সময় যখন বাড়িতে গেছিলাম তখন মা আমার সাথে বরই গুলো দিয়ে ছিলেন। গত কিছুদিন আগে অতিরিক্ত গরম পরার কারনে অফিস থেকে গিয়ে একদিন রাতের বেলা বরই গুলো দিয়ে আচার বানিয়েছিলাম। আচারটা এত স্বাদ হয়েছে যা বলে বুঝানো যাবে না। অফিস থেকে আসা যাওয়ার সময় মাঝে মাঝে রাস্তার পাশ থেকে আচার কিনে খায়। তবে নিজের বানানো আচরের স্বাদই অন্যরকম পেলাম। বেশি স্বাদ হওয়ার কারনে তিন চার দিনের মধ্যেই প্রায় সব গুলো আচার আমি একাই সাবাড় করে দিয়েছি। মনে মনে ভাবলাম যেহেতো আচারটা এত মজা হয়েছে সেহেতো রেসিপিটা আপনাদের সাাথে শেয়ার করা যাক। আজকে সেই ভাবনার প্রতিফন হলো।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- শুকনা বরই ৫০০ গ্রাম।
- খাটিঁ সরিষার তেল পরিমান মত।
- গুড় পরিমান মত।
- বিট লবন পরিমান মত।
- রসুন তিনটি।
- শুকনা লঙ্কা পাচঁটি ।
- পাঁচফোড়ন পরিমান মত।
- মরিচের গুড়োঁ পরিমান মত।
- তেঁতুল পরিমান মত ।
এখন আচার বানানোর প্রক্রিয়াটা বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করছি।
স্টেপ-০১
প্রথমে বরই গুলো ভাল ভাবে ধুয়ে চুলার মধ্যে একটি পাতিলে গরম পানি বসিয়ে তাতে বরই গুলো সেই গরম পানিতে ছেড়ে দিলাম। তারপর বরই গুলো মোটামুটি ভাবে সিদ্ধ করে পানি ছাড়িয়ে একটি খালি পাত্রের মধ্যে রাখলাম।
স্টেপ-০২
তারপর শুকনা লঙ্কা আর পরিমান মত পাঁচফোড়ন একটি কড়াইতে ভেজে নিলাম। এগুলো ভাল ভাবে ভাজা ভাজা করলে মিশ্রনটা খুব সুন্দর হয় আবার খাওয়ার সময় গন্ধও থাকে না।
স্টেপ-০৩
পাঁচফোড়ন আর শুকনা লঙ্কা ভাজা ভাজা হলে সে গুলো শীল পাটায় বেটে মিশ্রন তৈরী করে নিলাম। আচার খেতে কষ্ট করতে হয়,হা হা হা।
স্টেপ-০৪
এখন শুরু হবে আসল প্রক্রিয়া। প্রথমে চুলাতে একটি কড়াই বসিয়ে তাতে পরিমান মত খাটিঁ রাধুঁনী সরিষার তেল দিয়ে গরম করে নিলাম। কালার দেখেই বুঝা যাচ্ছে তেলটা কত খাটিঁ।
স্টেপ-০৫
তারপর রসুন কুচি,তিনটে শুকনা লঙ্কা আর কিছু কালো জিরে গরম তেলে ছেড়ে দিলাম। কালো জিরে যে কোন খাবারের সাথে খাওয়া যায়। এটার কোন নিয়ম নেই। যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই খাওয়া যায়।
স্টেপ-০৬
তারপর মসলা গুলো ভাল ভাবে মিক্স করে বরই গুলো সেই মসলাতে দিয়ে দিলাম।
স্টেপ-০৭
সব কিছু মিক্স করে কিছুক্ষন কুক করে তার পরে পরিমান মত মরিচের গুড়োঁ দিয়ে দিলাম।
স্টেপ-০৮
মরিচের গুড়োঁটা দিয়ে কিছুক্ষন কুক করার পরে বরই এর কালারটা আচারের কালারে পরিবর্তন হচ্ছে। এই পর্যায়ে পরিমান মত গুড় দিয়ে দিলাম।
স্টেপ-০৯
গুড়টা ভাল ভাবে মিক্স করে কিছুক্ষন কুক করার পরে পুরোপরি ভাবে আচারের কালার চলে এসেছে। এই পর্যায়ে পরিমান মত বিট লবন,মিক্স করা পাঁচফোড়ন আর তেঁতুলের সাথে হালকা একটু পানি মিক্স করে তাতে দিয়ে দিলাম।
স্টেপ-১০
সব উপকরন দেওয়া শেষ। আচারও তৈরী হয়ে গেছে। কি সুন্দর একটি কালার এসেছে দেখেন। দেখেই জিহ্বে জল চলে এসছে তাই না...হা হা হা। কি যে সুস্বাদু একটি ঘ্রান ছড়িয়েছে সেটা লিখে বুঝানো সম্ভব না। চলুন পরিবেশন করি।
পরিবেশন
বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই। কেমন হলো আমার আজকের বরইয়ের টক-ঝাল-মিষ্টি আচার রেসিপিটি। অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর বাসায় একবার হলেও আচারটা ট্রাই করবেন। । আশা করি আপনাদের কাছে অনেক ভাল লাগবে। যদি কোথাও কোন প্রকার ভুল হয়,ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
রেসিপির নাম | বরইয়ের টক-ঝাল-মিষ্টি আচার রেসিপি |
স্থান | নিজের বাসা |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আচার মানে জিভে জল চলে আসা। বরই এর আচার আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আপনার আচার দেখে তো লোভ সামলাতে পারছি না। এই আচার খিচুড়ির সাথে খেতে অনেক ভালো লাগে।প্রতিটা ধাপ খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। ধন্যবাদ জিভে জল চলে আসা রেসিপি দেখে।
আপু আচার খেতে ভালই লাগে। বিশেষ করে বরই আচার আমার খুব প্রিয়। ধন্যবাদ আপু।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
বরই এর আচার আমার খুবই পছন্দের। তবে এইবার আচার করা হয়নি। যে পরিমাণ গরম ছিল সে মধ্যে আচার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল বাবু তো আছেই। তবে আমার আম্মু আচার করে আমার জন্য পাঠিয়ে দিয়েছিল। আর এটা ঠিক বলেছেন ভাই মায়েরা কখনোই তার সন্তানদের ছেড়ে গাছের হোক বা কোনো প্রিয় জিনিস খেতে চায় না। হয়তোবা একদিন এই প্রতিফলন গুলো আমাদের মাঝেও দেখা যাবে।যাইহোক রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আপু যে গরম পড়ছে,ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। এই আচার টা সহজ তাই বানালাম। ধন্যবাদ আপু।
বরইয়ের আচার আমার খুবই ভালো লাগে। আপনি টক ঝাল মিষ্টি বরইয়ের আচার রেসিপি খুবই সুন্দর ভাবে তৈরি করে আমাদের সাথে বর্ণনা করেছেন। সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
জী ভাইয়া বরই আচার আমার খুবই প্রিয়। তাই ঐদিন বানিয়ে খেলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমার মন্তব্যের সুন্দর ফিডব্যাক দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
যেহেতু বরই এর সিজনে আপনি বাহিরে থাকেন তাই আপনার আম্মু আপনার জন্য বরই গুলো শুকিয়ে রেখে দেয়। আসলে ঠিকই বলেছেন পৃথিবীর প্রত্যেকটা মা এরকম হয়। মায়েরা সন্তানকে ছাড়া কিছুই খেতে পারে না। বরই এর আচার খেতে আমিও ভীষণ পছন্দ করি। আপনি বরই এর আচার খুবই মজাদার ভাবে তৈরি করেছেন। দেখে বুঝতে পারছি বেশ মজা করে খাওয়া হয়েছে। আপনার তৈরি আচার দেখে আমার তো জিভে জল চলে এসেছে। ভালো লাগলো আপনার আচার তৈরি করার পোস্ট।
জী ভাইয়া গাছের যে কোন ফল আমার জন্য রেখে দেয়। পুকুরের মাছও ফ্রিজ করে রাখে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
নিজের গাছের শুকানো বরই দিয়ে বেশ মজার করে আচার বানালেন অনুভূতি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। আসলেই মায়েরা এমনই হয়। তারা সন্তানদের ছাড়া কোন কিছুই খেতেই চাইনা। অনেক দূর থেকে পাঠালেন বরই গুলো। আমার ও অনেক ভাল লাগে টক ঝাল মিষ্টি আচার। রেসিপি আপনি দারুণ তৈরি করে শেয়ার করলেন ভাইয়া।
জী আপু মায়েরা এমনই হয়। তারা একা একা খেতে পারে না। ধন্যবাদ আপু।
বরই এর টক-ঝাল-মিষ্টি আচার রেসিপি দেখেই তো জিভে পানি চলে এলো ভাই। বরই আচার ছোটবেলা থেকেই আমার খুব পছন্দ। বরই শুকিয়ে আচার তৈরি করে সারা বছর খাওয়া যায়। আমাদের বাসায়ও এভাবেই বরই আচার তৈরি করা হয়। রেসিপিটা দেখে খুব ভালো লাগলো ভাই। যাইহোক এমন মুখরোচক একটি রেসিপি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
জী ভাইয়া আচার তৈরী করে কয়েকদিন লাগিয়ে খেয়েছি। অনেক মজা হয়েছিলো। ধন্যবাদ ভাইয়া।
বড়ই এর আচার আমার খুব পছন্দ। আপনার রেসিপিটি দেখে জিভে জল চলে আসলো। আপনি অনেক সুন্দর করে ধাপগুলো গুছিয়ে লিখেছেন। এত সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ আপু কমেন্ট পড়ে অনেক ভাল লাগলো।