ঝাল ঝাল লইট্টা মাছের শুঁটকি ভুনা রেসিপি।।

হ্যালো বন্ধুরা
আজকে আপনাদের সাথে নতুন একটি রেসিপি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। টাইটেল দেখেই বুঝে গেছেন কোন প্রকারের রেসিপি শেয়ার করতে যাচ্ছি। সাদা ভাতের সঙ্গে ঝাল ঝাল শুঁটকি ভুনার কথা শুনলেই জিভে জল চলে আসে। স্বাদের একঘেয়েমি দূর করতে বা ভিন্ন কিছু ট্রাই করতে মজাদার শুঁটকি ভুনা রান্না করে ফেলতে পারেন অল্প সময়ে। চলুন দেখা যাক সেটা কোন পদ্ধতিতে।

আমাদের ঘরের ফ্রিজে বেশ কয়েক সাপ্তাহ ধরে কিছু লইট্রা শুঁটকি পরে আছে। কয়েকদিন যাবৎ চিন্তা করতেছি এগুলো পেটে চালান করে দিবো। কিন্তু ঠিক ভাবে সময় মিলাতে পারছি না। এক হলো অফিস আরেক হলো অসহ্য গরম। দুইটি মিলিয়ে কিছুটা জামেলায় মধ্যেই আছি। গত কাল অফিস থেকে একদিন ছুটি নিয়েছিলাম ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য। আজকে সকালে ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় এসেছি দুপুর একটার সময়। সকালে যাওয়ার সময় বাসায় কোন প্রকার নাস্তা করে যায়নি, তাই বাহির থেকে আসার সময় নাস্তা করে এসেছি।

বাসায় এসে কাপড় চেন্জ করে খাটের উপর বসলাম। দুপুরের জন্য কি রান্না করা যায় বা কি খাওয়া যায় এমন চিন্তা করছিলাম আর তখনই বাহিরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম আকাশটা অন্ধকার হয়ে আসতেছে। কিছুক্ষনের মধ্যেই বৃষ্টি শুরু হবে। মনে মনে চিন্তা করলাম যেহেতো আজকে বৃষ্টি আসতেছে, সেহেতো আজকে লইট্রা শুঁটকি গুলো ভুনা করে ফেলি। তাছাড়া আগামী সাপ্তাহে পবিত্র ইদুল আজহা উপলক্ষে এক সাপ্তাহের ছুটিতে বাড়িতে চলে যাবো। আজকে না খেলে শুটকি গুলো পড়ে থাকবে। যে চিন্তা সেই কাজ,শুঁটকি গুলো ভুনা করার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করলাম।

প্রয়োজনীয় উপকারন

• লইট্টা শুঁটকি- ৩০০ গ্রাম
• পেঁয়াজ কুচি- ২ কাপ
• রসুন কুচি- এক কাপ
• হলুদ গুঁড়ো- ১ চা চামচ
• জিরে গুঁড়ো-১ চা চামচ
• লাল মরিচ গুঁড়া- স্বাদ মতো
• রসুন বাটা- ১ চা চামচ
• লবণ- স্বাদ মতো
• তেল- ১ কাপ
• কাচা লঙ্কা- ১০ টি

এখন ধাপে ধাপে রন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করছি

ধাপ-০১

প্রথমে শুঁটকি গুলোর কাটাঁ এবং খাওয়ার অনুপযোগী অংশ গুলো ছাড়িয়ে একটি প্লাস্টিকের জালীতে রাখলাম।

ধাপ-০২

তারপর একটি স্টিলের তাওয়াতে শুঁটকি গুলো পাচঁ থকে দশ মিনিট সময় নিয়ে ভাজা ভাজা করে নিলাম। কারন লইট্রা শুঁটকি গুলো ভাজা ভাজা করে নিলে গন্ধটা কমে যাবে।

ধাপ-০৩

শুঁটকি থেকে গন্ধ দুর করার প্রধান পদ্ধতি হলো গরম পানিতে সিদ্ধ করা। আমি শুঁটকি গুলো ভাজা ভাজা করার পরে গরম পানিতে দশ থেকে পনের মিনিট সময় সিদ্ধ করে নিলাম।

ধাপ-০৪

এই পর্যায়ে চুলাতে কড়াই বসিয়ে তাতে পরিমান মত তেল দিয়ে দিলাম। শুঁটকি ভুনা করার সময় একটু তেল বেশি দিতে হয়। ২০৬ টাকা কেজি তেল, সে জন্য তেল বেশি দিতে কষ্ট লাগে।

ধাপ-০৫

তেল গরম হওয়ার পরে তাতে কুচি করে রাখা পেঁয়াজ গুলো ছেড়ে দিলাম। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে গেছে। তাই বেশি করেই দিলাম।

ধাপ-০৬

পেঁয়াজ কুচি দেওয়ার খানিকক্ষন পরে রসুন কুচি গুলো দিয়ে দিলাম। রসুন বেশি খেলে শরীরের জন্য অনেক ভাল।

ধাপ-০৭

এবার কাঁচা লঙ্কা গুলো ছেড়ে দিলাম। যারা ঝাল বেশি খায় তারা পরিমান থেকে কিছুটা কাচাঁ লঙ্কা বেশি দিবেন।

ধাপ-০৮

তারপর মরিচের গুঁড়ো,হলুদের গুঁড়ো,জিরা গুঁড়ো,লবন সহ সমস্ত মসলা গুলো দিয়ে দিলাম।

ধাপ-০৯

এবার কিছুটা পানি দিয়ে সব গুলো মসলা মিক্স করে ঝোলটা গাড় করে নিলাম। কালার দেখতে অসাধারন লাগছে।

ধাপ-১০

এবার ধুয়ে রাখা শুঁটকি গুলো দিয়ে দিলাম। তারপর ঝোলের সাথে শুঁটকি গুলো মিক্স করে নিলাম। আমার তো এখনই খেতে মন চাইতেছে।

ধাপ-১১

এই পর্যায়ে ভালভাবে সিদ্ধ হওয়ার জন্য একটু পানি দিয়ে একটি ঢাকনা মাধ্যমে ডেকে দিলাম। ভাল ভাবে সিদ্ধ হয়ে শুটকির ভিতরে মসলা গুলো প্রবেশ করবে।

ধাপ-১২

ধীরে ধীরে ঝোলটা কমে তৈরী হয়ে গেল আমার ঝাল ঝাল লইট্টা মাছের শুঁটকি ভুনা রেসিপি। মুখে জল চলে আসতেছে তাই না,হা হা হ।

পরিবেশন

বন্ধুরা আজকে এ পর্যন্তই। কেমন হলো আমার আজকের সুস্বাদু ঝাল ঝাল লইট্টা মাছের শুঁটকি ভুনা রেসিপি। অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর বাসায় একবার হলেও রেসিপিটা ট্রাই করবেন। । আশা করি আপনাদের কাছে অনেক ভাল লাগবে। যদি কোথাও কোন প্রকার ভুল হয়,ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।